মজার পাহাড়ি ফল- রক্ত গোলাপ
২৯ জুন ২০১৯ ১৭:১৬
রোজার ঈদের চাঁদ রাত, ঈদের দিন, দুর্গা পূজার নবমীর রাত আর দশমির দিনে বাঙালিরা আনন্দে মেতে ওঠেন। অন্যদিকে পাহাড়ের মানুষ আনন্দমুখর সময় কাটান বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু আর চাংক্রান উৎসবে। নতুন বছর বরণ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আয়োজন চলে এসময় পাহাড়জুড়ে।
এই সময় আদিবাসী মারমারা জল-উৎসব করেন। দেখার মতো একটি আনন্দ পরব। আর চাকমারা করেন ফুল ভাসানো পবিত্র পরব। বলি খেলাও হয়ে থাকে এই উপলক্ষে।
এপ্রিলে রাংগামাটির ছন্দ চাকমা আমাকে এই উৎসবের বিস্তারিত জানিয়ে রাঙামাটি বৈসাবির সময় রাঙামাটি যাওয়ার আমন্ত্রণ জানালেন। বললেন ‘চলে আসুন, সব যোগাযোগ করে রেখেছি’।
১২ এপ্রিল পৌছে গেলাম সবুজ শ্যামল রাঙামাটি। সকালে বাস থেকে নেমে দেখি এলাহি কারবার। চারদিকে সাজ সাজ রব। সবখানে আনন্দ আয়োজন। এই সময় পাহাড়ের মানুষ প্রচুর কেনাকাটা করেন। তাই বাজার থাকে জমজমাট। রান্না হয় বিয়াল্লিশ রকম সবজির পাজন। সব বাড়ির দুয়ার খোলা থাকে। ঘরের ভেতর গেলেই আন্তরিক অভিবাদন। একান্ত সম্পর্ক না থাকলেও এই আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নাই।
বাজারে নানান পণ্যের পশরা। শুধুমাত্র বাজার দেখাও যেন বিচিত্র আনন্দের। আমি গিয়েছিলাম- ঘাঘরা বাজার, বনরূপা বাজার, রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি বাজার আর আসামবস্তি বাজার। বাজারের বিচিত্র সব পণ্য, ফল-ফসল দেখে অবাক হয়েছি।
বনরূপা বাজারে চোখে পড়ে চমৎকার এক ফল। টকটকে লাল ফলটার নাম- রক্ত গোলাপ। আগে কখনো দেখিনি। রক্ত গোলাপ সম্পর্কে আরও জানতে আলাপ জুড়লাম চাকমা বিক্রেতার সঙ্গে। পাকলে ফলটা প্রথমে লাল, পরে কালো হয়। জানলাম, স্থানীয়রা একে রসকো নামে ডাকেন।
বিক্রেতা আমাকে দেখিয়ে দিলেন কেমন করে খেতে হয় অদ্ভুত সুন্দর এই ফল। একটা খেলাম। দারুণ মজার। সাথে সাথেই ১৫০ টাকায় কিনে নিলাম কেজি খানেক রক্ত গোলাপ।
গুগলে এই ফল সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য পেলাম না। শুধু জানলাম টকটকে লাল রসালো এই ফলের নাম-রক্ত গোলাপ। দেখতে অনেকটা লুক লুকি বা পেলা ফলের মতো। খাবার সময় হাত দিয়ে চেপে চেপে নরম করতে হয়। তারপর ফলের মুখের দিকে ছিলে পুরোটা মুখে ঢুকিয়ে খেতে হয় এই ফল। শাঁসসহ রস খেয়ে বিচি ফেলে দিতে হয়।
লেখক – সাংবাদিক
সারাবাংলা/আরএফ