দেহের ক্ষতিকর উপাদান দূর করে যেসব খাবার
১৬ আগস্ট ২০১৯ ১২:১৮
অনিয়মিত ঘুম, খাদ্যাভ্যাস ও পরিচর্যার অভাবে আমাদের দেহে জন্ম নেয় ক্ষতিকর উপাদান বা টক্সিন। এর ফলে ওজন বেড়ে যাওয়া, লিভার, হার্ট, কিডনীর সমস্যাসহ নানা রোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
ঈদের কয়েকদিন বেহিসেবি খাওয়াদাওয়াও স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। ঈদের পর অনেকের ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যায়। ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে দেহের ক্ষতিকর উপাদান বা টক্সিন সক্রিয় হয় এবং ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
টক্সিন দূর করতে কিছু খাবারের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। এই খাবারগুলো শরীরের বাড়তি ওজন ঝেড়ে ফেলতেও সাহায্য করবে।
আসুন জেনে নেই খাবারগুলো সম্পর্কে-
লেবু
সকালে ঘুম থেকে উঠে উষ্ণ গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে হবে। শরীরের ক্ষতিকর উপাদান দূর করতে ও বাড়তি মেদ ঝেড়ে ফেলতে সাহায্য করে লেবু। খাবার হজম করতে ও ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে লেবু বেশ কার্যকর।
দেহের স্নায়ু সচল রাখতে সাহায্য করে লেবু। এছাড়া লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা দাঁত ও ত্বকের জন্যও উপকারী।
শাক-সবজি ও ফলমূল
এই সময় বাজারে পাওয়া যায় এমন ফলমূল ও শাক-সবজি প্রতিদিন খেতে হবে। ফলমূল ও শাক-সবজিতে থাকে খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফাইবার ও নানা ধরনের ভিটামিন। এই পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। একইসঙ্গে দেহের ক্ষতিকর উপাদানগুলো দূর করে। ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়ায়।
পরিমিত পরিমাণে শাক-সবজি ও ফলমূল খেলে মোটা হওয়ার ভয় থাকে না। তবে যেসব শাকসবজিতে শর্করা থাকে, সেগুলো এড়িয়ে যেতে হবে।
কার্বোহাইড্রেট কম খেতে হবে
কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার যতটা সম্ভব কম খেতে হবে। মনে রাখা ভালো, টক্সিন দূর করতে কার্বোহাইড্রেট কখনই উপকারি নয়।
সকালের নাস্তায় পাউরুটি বাদ দিতে হবে। প্রোটিনজাতীয় খাবারের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে, যা শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি মেটাবে এবং শরীরের ওজন বাড়াবে না।
তবে প্রোটিনও খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে। ডিম, মাছ, মাংস ও সামুদ্রিক মাছ প্রোটিনের ভালো উৎস। সামুদ্রিক মাছে আছে ওমেগা-৩। সামুদ্রিক মাছ নিয়মিত খেতে হবে।
আপনার শরীরের জন্য কতটুকু প্রোটিন দরকার তা চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন।
মধু, আদা ও লেবুর মিশ্রণ
বাড়তি ওজন কমানোর জন্য রাতে ঘুমানোর আগে মধু, আদা ও লেবু মিশ্রিত রস খেতে পারেন। এই মিশ্রণ শরীরের ক্ষতিকর উপাদান নির্মূল করে।
আদা কুচি করে পানিতে দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ফুটাতে হবে। পানি চুলা থেকে নামিয়ে একটু ঠান্ডা করে অর্ধেক লেবুর রস ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। রাতে ঘুমানোর আগে নিয়মিত খেতে হবে এটি।
লেবু, গাজর ও আদার মিশ্রণ
লেবুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি থাকে। গাজরে আছে বেটা ক্যারোটিন এবং ফাইবার, যেগুলো ওজন কমাতে সহায়ক। প্রদাহ দূর করতেও সাহায্য করে গাজর। গাজর, লেবু ও আদার রস মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
গ্রিন টি
গ্রিন টি তে আছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। দেহের ক্ষতিকর উপাদান নির্মূলে এটি বেশ কার্যকর। ওজন কমাতেও অনেকে গ্রিন টি খেয়ে থাকেন।
মনে রাখা ভালো, বিকেলের নাস্তায় কেক, বিস্কুট ও মিষ্টিজাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। শুকনো মুড়ি, চিড়া, শসা ও বাদাম খেতে পারেন বিকেলে।
ডালিম
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় শরীরের টক্সিন দূর করতে ডালিমের রস খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ডালিমের রসের সাথে অ্যালোভেরা মেশালে তা আরও কার্যকর। সকালে নাস্তার পর ডালিম ও অ্যালোভেরার জুস খেতে পারেন।
ব্যায়াম করুন
মনে রাখা ভালো, দেহের ক্ষতিকর উপাদানগুলো দূর করতে ব্যায়াম হলো অন্যতম ভালো উপায়। ব্যায়াম করলে শরীর থেকে ঘাম ঝরে। ঘামের মাধ্যমেই টক্সিন বের হয়।
ব্যায়াম শেষে যোগাসনে বিশ্রাম নিন। ব্যায়াম করলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে।
পরিমিত খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম ও ব্যায়াম- সুস্থ থাকার ভালো উপায়। তবে আপনার শরীরের জন্য কোন খাবার কতটুকু পরিমাণে দরকার এবং কী ধরনের ব্যায়াম উপযোগী সেগুলো চিকিৎসকের কাছে জেনে নিতে হবে।
সারাবাংলা/টিসি