৭ টাকায় পূজার পোশাক
৭ অক্টোবর ২০১৯ ১২:২২
অন্যের ব্যবহৃত, পুরনো আর মলিন কাপড়ই যাদের সম্বল, তারা নিজের উপার্জনের টাকায় নতুন জামা কিনে ঘরে ফিরছে। পূজার আনন্দ এর চেয়ে বেশি আর কী হতে পারে?
দোকানের নাম- ‘৭ টাকায় পুজোর বাজার’। সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ফ্রক, ফতুয়া, টি-শার্ট, শাড়িসহ আরও অনেক পোশাক। বাংলা একাডেমির বিপরীত দিকের গেইট দিয়ে ঢুকলে রমনা পার্কের কালী মন্দিরের সামনে দেখা মিলবে এই দোকানের। গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে এই দোকান চালু করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
আয়োজকরা জানালেন, মূলত সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্যই এই উদ্যোগ। এক বছরের কম বয়সী থেকে শুরু করে ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য পোশাক আছে। তবে বৃদ্ধ ও নারীদের জন্যও কিছু পোশাক রাখা হয়েছে। ‘৭ টাকায় পূজোর বাজার’ বলা হলেও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল সুবিধাবঞ্চিত শিশু এখান থেকে পোশাক কিনতে পারবে। আগামীকাল পর্যন্ত এই স্টল থাকবে।
দোকানে পোশাক বিক্রির দায়িত্বে ছিলেন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক সুলতানা জান্নাত। তিনি বলেন, ব্যবসায়িক স্বার্থে নয়, বরং সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা যাতে নতুন পোশাক পরতে পারে সেজন্য এই ধরনের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পোশাকের জন্য সাত টাকা করে নামমাত্র শুভেচ্ছামূল্য ধার্য করা হয়েছে। এতে শিশুদের মনে হীনন্ম্যতাবোধ তৈরি হবে না।
মায়ের সাথে ফুল বিক্রি করে জীবিকা চালায় ৯ বছরের কাজলী। গতকাল এসেছিল এই দোকানে। রোজার ঈদে মায়ের কাছে লাল রঙের একটি জামা চেয়েছিল। কিন্তু টাকার অভাবে কেনা হয়নি। এই দোকানে এসে সাত টাকায় লাল রঙের ফ্রক কিনতে পেরে সে আনন্দে আটখানা।
২০১৬ সালে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য ‘এক টাকায় আহার’ নামের কর্মসূচীর মাধ্যমে এই সংগঠনের কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে ‘৫ টাকায় বাসন্তী স্যানিটারি প্যাড’ ২০১৯ সালে অমর একুশে বইমেলায় ‘বিক্রেতাবিহীন স্টল’ নিয়ে হাজির হয়েছিল বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের দান করা অর্থেই এই সংগঠন চলে। সংগঠনের মূল উদ্যোক্তা কিশোর কুমার।