Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দ্য লাস্ট প্যারাডাইজ অন আর্থ ।। ২য় পর্ব: বালি যাত্রা


১৯ অক্টোবর ২০১৯ ১০:৩০

ইন্দোনেশিয়া ট্যুরে আমরা দুটো পরিবার- চার বাচ্চা ও তাদের বাবা-মা মিলিয়ে মোট আট জনের একটি ছোট্ট দল। আমরা ছাড়া দ্বিতীয় পরিবারটি ছিলেন আমার স্বামীর বন্ধু (সবির আহমেদ।পেশায় চার্টার্ড একাউনট্যান্ট।একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের CFO) ও তার স্ত্রী সুলতানা রচনা এবং তাদের এক মেয়ে ও এক ছেলে। আমাদেরও এক মেয়ে এক ছেলে তাই বাচ্চাদের পরস্পরের সাথে বন্ধুত্ব বেশ ভালো হয়েছিল। তাছাড়া চারজনই কাছাকাছি বয়সের।

ট্যুর এজেন্টের মাধ্যমে আমরা বালি ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলাম। যদিও অনেকে বলেন বালি ভ্রমণে এজেন্ট লাগে না, নিজেরাই ব্যবস্থা করে নেওয়া যায়। কিন্তু আমরা চিন্তা করেছি, যেহেতু আমরা অল্প দিনের জন্য যাচ্ছি তাই সময় বাঁচানো প্রয়োজন হবে আমাদের। বার বার ট্যাক্সি খোঁজা, এলোমেলোভাবে ঘুরে সময় নষ্ট করতে চাইনি। কম সময়ে যত বেশি স্থান ঘুরে দেখা যায় আর কি।

বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়া বা বালিতে সরাসরি কোন ফ্লাইট নেই। মালয়েশিয়া বা সিংগাপুর ট্রানজিট ব্যবহার করে যেতে হয়।
এয়ার এশিয়া, মালিন্দো, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের বিমান বালিতে যায়। আমরা মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসে গিয়েছিলাম। তাই আমাদের ট্রানজিট মালয়েশিয়াতে ছিল। ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যেতে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা থেকে চারঘন্টার মতো সময় লাগে। আমাদের সাড়ে তিন ঘন্টা লেগেছিল। আমাদের কানেকটিং ফ্লাইট যেহেতু একই এয়ারলাইনসে তাই লাগেজ নেওয়ার ঝামেলা ছিল না।

মালয়েশিয়ান এয়ারপোর্ট বিশ্বের সবচেয়ে ভালো এয়ারপোর্টগুলোর মধ্যে একটি। বিশাল বড়। ভেতরের শপগুলোতে ঘোরাঘুরি করে যে কেউ অনায়সে সময় পার করে দিতে পারবেন। যাদের বই পড়ার অভ্যাস আছে তারা বইয়ের দোকানে ঢুকে যেতে পারেন। আমরা এয়ারপোর্টের ওয়াইফাই ব্যবহার করে ফেসবুকে ঢুকে তিন ঘন্টা সময় সহজেই পাড় করে দিয়েছি। বাচ্চারা সময় পাড় করেছে বুক শপে ও এয়ারপোর্টে ঘোরাঘুরি করে।

দ্য লাস্ট প্যারাডাইজ অন আর্থ ।। ১ম পর্ব: ভ্রমণ প্রস্তুতি

কানেকটিং ফ্লাইটে মালয়েশিয়া থেকে তিন ঘন্টা লাগল বালিতে যেতে। তখন স্থানীয় সময় রাত বারোটার মতো। একই সময় আরও দুটো ফ্লাইট নেমেছে। তাই ইমিগ্রেশনে বিশাল লাইন। কিন্তু ইমিগ্রেশন অফিসাররা এতো বেশি করিৎকর্মা যে আধঘন্টার মধ্যেই ৩ টা ফ্লাইটে আসা পর্যটকদের ভিসা দিয়ে দিল। যেহেতু ইন্দোনেশিয়ায় ভিসা এক্সেমশন সিস্টেম (Visa exemption System) তাই শুধুমাত্র হোটেল বুকিং এর ডকুমেন্ট, রিটার্ণ এয়ার টিকিটের আইটিনারি প্রিন্ট কপি ইমিগ্রেশনে দেখানো মাত্রই ভিসা দিয়ে দিল। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা লাগেজও পেয়ে গেলাম।

এয়ারপোর্ট থেকে বের হওয়ার মুখে দেখি শতাধিক ট্যুর গাইড। পর্যটকদের নেইম বোর্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। গাইডকে খুঁজে নিয়ে আমরা এয়ারপোর্ট থেকেই গাড়িতে উঠলাম। রাস্তা পার হয়ে আর বাইরে যেতে হয়নি। যদি এজেন্টের মাধ্যমে না যান তবে রাস্তা পার হয়ে নীল রঙের ট্যাক্সি ক্যাব নেবেন। নাম: ব্লু বার্ড। অন্য কোন ট্যাক্সিতে গেলে ভাড়া গুনতে হবে অনেক বেশি।

আমরা ৮ জনের গ্রুপ ছিলাম তাই গাড়ি চেয়েছিলাম আট সিটের। এজেন্ট দিয়েছে নয় সিটের গাড়ি। তাই বেশ আরাম করে বসলাম। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা পৌঁছে গেলাম হোটেলে। নাম ‘নাতিয়া হোটেল, কুতা’।

হোটেলের লবি দেখে খুব হতাশ হলাম। মোটামুটি মানের হোটেল। আসলে আমরা দুজন নারী চাচ্ছিলাম এজেন্ট ছাড়া যেতে। কিন্তু আমাদের স্বামীরা ঝামেলা এড়ানোর জন্য আগে থেকেই এজেন্টের পক্ষে ছিল।

বাংলাদেশ থেকে সকাল ৯ টায় বাসা থেকে বের হয়ে রাত ২ টায় হোটেল রুমে পৌঁছালাম। অর্থাৎ ৬ থেকে সাড়ে ৬ ঘণ্টার বিমান জার্নিতে লাগলো প্রায় ১৩ ঘন্টা। বালির সাথে বাংলাদেশ সময়ের পার্থক্য ২ ঘন্টা। বাংলাদেশে যখন রাত ১০ টা বালিতে তখন রাত ১২ টা।

স্বাভাবিকভাবে দীর্ঘ ভ্রমণের কারণে সবাই খুব ক্লান্ত। নরম বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়ার প্রাণপন চেষ্টা সবার। বাচ্চারাও খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লো।

পরেরদিন একটু দেরিতে গাইডকে আসতে বলা হলো। ভ্রমণ ক্লান্তি কাটানোর জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন সকলের।

ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ বালি ভ্রমণ বালি যাত্রা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর