নাক ডাকিয়েদের জন্য সুখবর
১ নভেম্বর ২০১৯ ১৩:৩৭
নাক ডাকার কথা শুনলে একজনও বলবেন না—এতে তিনি বিরক্ত নন। আর নাক ডাকার কথা গল্প, কবিতায়ও স্থান পেয়েছে। কাজী নজরুল লিখেছেন— ‘দাদুর নাকি ছিল না মা অমন বাদুর নাক। ঘুম দিলে ওই সাধের নাকে বাজতো সাতটা শাঁখ। দিদিমা তাই থ্যাবরা মেরে ধ্যাবরা করেছেন।’
তা থ্যাবরা মেরে আর ক’জনেরই নাক ডাকা বন্ধ করা যাবে! তবে সেদিন বুঝি এবার গত হলো। নতুন একটি ডিভাইস তৈরি করে বাজারে আনা হয়েছে যা নাক ডাকার সমাধান দেয়।
ডিভাইসটির পরিচয় তুলে ধরার আগে আরো একটু তথ্য জানিয়ে রাখা ভালো। গবেষকদের মতে, মধ্য বয়সে এসে বিশ্বের দুই জন পুরুষের মধ্যে অন্তত একজন আর প্রতি চারজন নারীর মধ্যে অন্তত একজন ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে।
কারো কারো নাক ডাকার শব্দ এতটা উচ্চ হয় যে, শব্দের মাত্রায় তা ৭০ ডেসিবল, যা একটি চলন্ত ট্রাকের শব্দের সমান। নাক ডাকার অন্যতম কারণগুলো হচ্ছ টনসিল বেড়ে যাওয়া, পলিপস কিংবা নাসিকারন্ধ্র বেঁকে যাওয়া। এছাড়াও কারও যদি আলজিভ মাত্রাতিরিক্ত লম্বা হয়, তিনিও নাক ডাকেন। পঞ্চাশোর্ধ পুরুষের ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ নাক ডাকার এইসব সিনড্রমের কোনো না কোনোটিতে ভোগেন এবং নাক ডাকেন।
আগে এই নাক ডাকাকে স্রেফ বিরক্তি উদ্রেক করার কারণ হিসেবেই দেখা হতো বলে শয্যাসঙ্গী কিংবা সঙ্গিনী তা উপেক্ষা করলেই ল্যাঠা চুকে যেতো। কিন্তু এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, নাক ডাকাকে উপেক্ষা করা যাবে না। শারীরিক অসুস্থতার কারণেই মানুষ ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে। আর তা মৃত্যুরও কারণ হতে পারে।
এবার আসা যাক ডিভাইসের প্রসঙ্গে। নতুন ডিভাইসটির নাম সাইলেন্ট স্নোর। নিরবে নাক ডাকা। নাক ডাকিয়েদের জন্য বড় উপকারের হবে বলেই জানাচ্ছে এর প্রস্তুতকারীরা। ব্যবহারকারীরা বলছেন, ডিভাইসটি নাকে পড়ে ঘুমিয়ে উপকার পেয়েছেন। এটি স্রেফ একটি নরম সিলিকন রিং। আলগোছে নাকের ভেতর ঢুকিয়ে রাখুন। এর থেরাপিউটিক চুম্বক দুটিও বেশ কাজের। ডিভাইসটি পরা থাকলে ঘুমের মধ্যেও নাকের স্পর্শকাতর ইন্দ্রিয়গুলো নিজের মতো সক্রিয় থাকে। নাসিকারন্ধ্র প্রশস্ত থাকে ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস খুব সহজেই ভেতরে যেতে ও আসতে পারে। ফলে নাক ডাকা বন্ধ হয়ে যায়। ডিভাইসটি এতটাই নরম যে ঘুমের মধ্যে পরে থাকতে সামান্য অস্বাভাবিকতাও বোধ হয় না। এতে নিরবচ্ছিন্ন ঘুম হয়। আর নিরবচ্ছিন্ন গভীর ঘুম শরীরকে অনেক বেশি চাঙ্গা করে তোলে। চিকিৎসকরা এই ডিভাইসের আটটি সুবিধা চিহ্নিত করেছেন।
– অপেক্ষাকৃত ভালো শ্বাস-প্রশ্বাস
– নাক ডাকা কমায় কিংবা বন্ধ করে
– মুখ শুকিয়ে যাওয়া কমায়
– এটি কোনো ওষুধ নয়
– এতে অ্যালার্জি হয় না
– একই ডিভাইস বারবার ব্যবহার করা যায়
– ভ্রমণের সময় সহজেই সঙ্গে রাখা যায় ও ব্যবহার করা যায়
– ব্যবহারে স্বস্তিদায়ক, হালকা ও নিরাপদ।