বায়ুদূষণেও শরীর থাক রোগমুক্ত
৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:৩০
দেশে বায়ুদূষণের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় দূষিত বায়ু রীতিমতো দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে ভয়ঙ্কর স্বাস্ত্যঝুঁকিতে পড়েছে মানুষ। চিকিৎসকরা বলছেন, বায়ুদূষণের ফলে শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সার, স্নায়ুজনিত সমস্যাসহ নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। বায়ুদূষণের ফলে শিশুরাই সবচেয়ে স্বাস্থ্যগত হুমকির শিকার হচ্ছে। শিশুদের স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যাহত হবার পাশাপাশি নানা শারীরিক জটিলতাও দেখা দিচ্ছে।
বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়ে গেলেও দূষণের উৎস থেমে নেই। এ ছাড়া শীতকালে বায়ু দূষণের মাত্রা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। তাই বায়ুদূষণ প্রতিরোধক ব্যবস্থা প্রত্যেকেরই নিতে হবে। বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। আর দূষণের প্রভাব থেকে বাঁচার জন্য কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এই খাবারগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের ক্ষতিকর উপাদান বা টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।
আসুন জেনে নেই সেই খাবারগুলো সম্পর্কে-
ওমেগা ৩ গুরুত্বপূর্ণ
ওমেগা ৩ সমৃদ্ধ খাবার হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত উপকারি। সামুদ্রিক মাছ, শাকসবজি, ছোটমাছ দুধ, মাখন, আখরোট, পেস্তা ইত্যাদিতে ওমেগা ৩ থাকে। বায়ু দূষণের ফলে ফুসফুস ব্যাপকভাবে হুমকির সম্মুখীন হয়। ওমেগা ৩ জাতীয় খাবার ফুসফুসের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। বায়ুদূষণের অন্যান্য প্রভাব থেকেও দেহের সুরক্ষা যোগায়।
রোগ প্রতিরোধ করে ভিটামিন সি
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস হলো ভিটামিন সি। টকজাতীয় ফল যেমন লেবু, মালটা, কমলালেবু, আমড়া, আমলকি ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। প্রতিদিন দুই থেকে তিন প্রকার ভিটামিন সি জাতীয় ফল খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ই কার্যকর
দুধ, ডিম, ভুট্টা, মিষ্টি আলু, গাজর, সয়াবিন, চীনা বাদাম, সূর্যমুখী বীজ বা তেল, পালং শাক ইত্যাদি ভিটামিন ই এর ভালো উৎস। ক্যান্সার, স্ট্রোকসহ নানা রোগ প্রতিরোধে ভিটামিন ই কার্যকর। দেহের কোষ গঠন করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই এই খাবারগুলো প্রতিদিন খেতে হবে।
আয়ুর্বেদিক উপাদানগুলো উপকারি
রাসায়নিক পদার্থের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে প্রকৃতির ওপর আজকাল অনেকেই নির্ভর করছেন। আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে জীবনযাপনের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।
বায়ুদূষণের প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে বেছে নিতে পারেন আয়ুর্বেদিক উপাদান। আমলকি, হলুদ, তুলসী, গ্রিণ টি, গুড়, টমেটো, আদা, ঘি- এই উপাদানগুলো বায়ুদূষণ প্রতিরোধে শারীরিক ‘রক্ষাকবচ’ হিসেবে কাজ করে। তাই এগুলো খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।
দুটি পানীয় বেশ কার্যকর
তুলসীপাতা, আদা ও আখের গুড় একগ্লাস পানিতে মিশিয়ে চুলায় দিন। মিশ্রণটি ১৫ মিনিট ফুটিয়ে নিন। পানি কমে আসলে চুলা থেকে নামিয়ে একটু ঠান্ডা হলে পানি ছেঁকে নিন। সকালে খালি পেটে ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই পানি পান করুন। এই পানীয়টি শরীরের জীবাণু ধ্বংস করতে বেশ কার্যকর।
লেবুর রস (অর্ধেক), মধু ১ চা চামচ ও সামান্য লবণ পানিতে মিশিয়ে সকালবেলা খালিপেটে খেতে পারেন। লেবু ও মধুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। ফলে শরীরের ক্ষতিকর উপাদান বের করতে এই মিশ্রণটি বেশ কার্যকর। এ ছাড়া শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করতেও লেবু, মধুর জুড়ি নেই।
বায়ুদূষণের কারণে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা (যেমন মাস্ক ব্যবহার) গ্রহণ করার পাশাপাশি সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতি ও খাবারদাবারের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
(এনডিটিভি অবলম্বনে)