ঘরের কোণ রাঙাবে শাহনাজের ‘হুপ আর্ট’
২ জানুয়ারি ২০২০ ১০:১৫
ঢাকা: হুপ (Hoop) শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো চক্র। সাধারণত গোল চাকতিকে হুপ বলা হয়। আমরা সেলাই করার সময় কাপড়টা যে ফ্রেমে আটকে নিই সেটাকেও বলে হুপ। এই ফ্রেমে কাপড় আটকে তাতে সুই-সুতা দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয় নানার ধরনের নকশা। তারপর সেই ফ্রেমসহই নকশাটি ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ঘরের কোণে। শিল্পের এই ধারাটির নাম হুপ আর্ট।
বাংলাদেশে হুপ আর্টের ব্যবহার কম। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি বেশ জনপ্রিয় শিল্প। বিশেষ করে গৃহসজ্জার রঙিন অনুসঙ্গ হিসেবে এর জনপ্রিয়তা রয়েছে। এছাড়া উপহার হিসেবেও হুপ আর্টের কদর আছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশেও কাজ শুরু হয়েছে হুপ আর্ট নিয়ে। তাও একেবারে বাণিজ্যিক পরিসরে। এদের মধ্যে অনলাইন শপ রংধনু ক্রিয়েশনের উদ্যোক্তা শাহনাজ সুলতানার হাতের কাজ নজর কেড়েছে।
শাহনাজ মূলত পেইন্টিং করে। ক্যানভাস আর কাপড়ে রঙ নিয়ে খেলা করেন তিনি। দারুণ সব ছবি আঁকেন শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, কুর্তি, ওড়না ইত্যাদির ওপর। সেই তিনিই এখন খেলছেন সুই-সুতা নিয়ে।
হঠাৎ করে হুপ আর্টের প্রতি কেন আগ্রহী হলেন?
জবাবে শাহনাজ বলেন, ‘হুপ আর্ট বাইরের দেশে খুব পপুলার। কিছুদিন ধরে বেশ কয়েকজনের হুপ আর্ট এম্ব্রয়ডারি দেখছিলাম। তার মধ্যে রাশিয়ার আর্টিস্ট ভেরা শিমুনিয়ার কাজ দেখে খুব আকৃষ্ট হই। যেহেতু ছবি আঁকতে ভালোবাসি, আগে রং এবং বিডস নিয়ে কাজ করেছি তো ভাবছিলাম সুই-সুতাকে এবারে মিডিয়া হিসেবে নিলে মন্দ হয়না। সেলাই করার টুকটাক কাজ অনেক আগে থেকেই করেছি। কিন্তু বহুবছর করা হয়নি। তাছাড়া সেলাইয়ে সময়ও লাগে বেশ।’
শাহনাজ জানালেন, তার মেয়ের স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা ছিল। ফলে তাকে সেখানে প্রচুর সময় দিতে হচ্ছিলো। মেয়েকে পড়াতে বসলে রং-তুলি নিয়ে বসা যায় না। কারণ তাতে অনেক জায়গা আর প্রস্তুতি লাগে। সেই সময়ই হাতে সেলাইয়ের ফ্রেম নিয়ে বসে পড়তেন। মেয়েকে পড়ানো আর নিজের হুপ আর্ট চলতো একসাথে।
এমনও দিন গেছে যখন জ্যামে বসেই সেলাই করেছেন। বুনেছেন নতুন নতুন নকশা। যেখানেই গেছেন ব্যাগে নিয়ে গেছেন সুই-সুতা আর ফ্রেম। সুইয়ের ফোঁড়ে ফুটিয়ে তুলেছেন পছন্দের দৃশ্য। এমনকি বন্ধুদের যে কোনো ছবিকে হুপবন্দী করেছেন।
শাহনাজের করা চমৎকার সব হুপ আর্ট হাতে নিয়ে দেখে কিনতে চাইলে ৩ ও ৪ জানুয়ারি চলে যেতে হবে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারের রাঙতা মেলায়। মেয়ে নেটওয়ার্ক আয়োজিত এই মেলায় প্রথমবারের মতো হুপ আর্ট নিয়ে অংশ নিচ্ছেন শাহনাজ।
যেহেতু এই মেলায় কোনো পাকিস্তানি পণ্য বিক্রি হয় না, তাই রাঙতায় অংশ নিয়ে খুব গর্বিত শাহনাজ। বললেন, এখানে যে ক্রেতারা আসেন তারা দেশি পণ্য ভালোবেসেই আসেন। তাই রাঙতার জন্য কাজ করতে ভালো লাগে। তবে রাঙতার পরেও পাওয়া যাবে এসব হুপ আর্ট। তবে তার জন্য শাহনাজের অনলাইন দোকান রংধনু ক্রিয়েশনে যোগাযোগ করতে হবে।