কাজের চাপে সম্পর্কে অস্থিরতা; ঠেকাতে যা করবেন
১৭ মার্চ ২০২০ ১০:৩০
কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ ও নেতিবাচক পরিবেশ যদি মনের ওপর চাপ ফেলে তবে, তার প্রভাব পড়ে আমাদের সম্পর্কেও। যাদের দীর্ঘসময় অফিস করতে হয় ও ঘন ঘন ভ্রমণ করতে হয় তাদের জন্য স্ট্রেসড হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক না। এমন হলে শুধু কাজেই বিঘ্ন ঘটে না, ব্যক্তিগত সম্পর্কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আসুন দেখে নেই কেন এমন হয় ও কীভাবে সুন্দর সম্পর্ক রক্ষা করে চলতে পারেন।
সবার আগে জেনে নেই কারণগুলো।
১. ক্লান্তি
অতিরিক্ত কাজ করলে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রেস ভর করবে। এতে করে কাজের আগ্রহ কমে যাওয়ার পাশাপাশি সঙ্গীর জন্য সময় বের করার শক্তিও থাকবে না। একটা সম্পর্ক সুন্দর রাখতে কিছু অতিরিক্ত চেষ্টা করতেই হয়।
কিন্তু দিনের পর দিন যদি সামান্যতম চেষ্টাও না করেন, স্বাভাবিকভাবেই সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকার ক্ষেত্রে সময় না দেওয়ার কারণে মানসিক দূরত্ব আসাও বিচিত্র নয়। কর্মক্ষেত্রে ঝামেলার প্রভাব পড়ে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কেও।
২. বিরক্তি ও খিটখিটে মেজাজ
কাজের চাপে শুধুমাত্র স্ট্রেসডই হবেন না, শারীরিক ও মানসিকভাবেও ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। এতে করে আপনি অল্পেই বিরক্ত হবেন, খিটখিটে আচরণ করবেন এবং নিজেকে সবার থেকে দূরে সরিয়ে ফেলবেন। কারণ, কেউই বিরক্তিকর সঙ্গি পছন্দ করে না। তাছাড়া একজন সঙ্গীর কাছে সবাই কিছুটা হলেও আবেগীয় সমর্থন আশা করে। দীর্ঘদিন ধরে সেটা না পেলে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়। স্ট্রেসের কারণে মানসিক সম্পর্কের পাশাপাশি শারীরিক সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এমন মনে হলে সতর্ক হতে হবে নিজের আচরণে।
৩. নিসঙ্গতার প্রবণতা
শারীরিক ও মানসিক চাপের জন্য নিজেকে সবকিছু থেকে দূরে সরিয়ে রাখার প্রবণতা তৈরি হবে। নিজেকে অসহায় মনে হতে শুরু করবে এবং ভালবাসার মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে থাকতে ইচ্ছা করবে। এভাবে সম্পর্কের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি হবে। সত্যি বলতে ইতিবাচক চিন্তা থাকলে যেকোন সময়েই যেকোন পরিস্থিতি থেকে বের হওয়া যায়। তাই পরিস্থিতি নেতিবাচক হতে শুরু করলে, চেষ্টা করুন ইতিবাচক মানসিকতা ফিরিয়ে আনতে ও সঙ্গীর সঙ্গে খোলামেলা কথা বলতে।
আসুন এবার দেখে নেই কাজের চাপ সামলেও কীভাবে সম্পর্কের তিক্ততা দুর করতে পারবেন।
১. সঙ্গি নিজেই বুঝবে এই চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসুন
ভেবে নেবেন না যে, আপনার সঙ্গি সব পরিস্থিতি নিজ থেকেই বুঝবে। আপনার পরিস্থিতি আপনি নিজেই পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে বলুন। কাজের জায়গায় কী কী চ্যালেঞ্জ ও নেতিবাচক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন, সেটি আপনার সঙ্গিকে বুঝিয়ে বলুন। আপনি কিছুই বলবেন না কিন্তু আপনার সঙ্গি সব নিজ থেকে বুঝে নেবে এটা ভাববেন না। তাছাড়া শেয়ার করলে আপনার মানসিক চাপও কমবে ও আপনি ভালো অনুভব করবেন।
২. সঙ্গীর চাহিদা সম্পর্কে জানুন
কর্মক্ষেত্র থেকে ক্লান্ত ও বিষণ্ণ হয়ে ফিরলে আপনার জন্য ব্যক্তিগত সম্পর্কে পূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে অংশ নেওয়া সম্ভব হবে না। কিন্তু ভালবাসার মানুষগুলোর জন্য অবসর সময় খুঁজে নিতেই হবে আপনাকে। তাদের কাছেই জিজ্ঞাসা করুন তারা কী চায় আপনার কাছ থেকে। এতে করে আপনিও যে যত্ন করেন তা স্পষ্ট হবে। শক্তিশালী হবে আপনাদের সম্পর্কের বন্ধন।
৩.কিছুটা বিরতি খারাপ নয়
এমন দিনও আসবে যখন কাজ ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের মধ্যে কিছুতেই সমন্বয় ঘটাতে পারবেন না। এমন হলে সঙ্গির সঙ্গে কথা বলে কিছুটা বিরতি নিন। যেদিন কাজের চাপে একদমই সময় বের করতে পারবেন না সেদিন অপর সঙ্গিকে আপনার কাজের ভার নিতে হবে। অল্প এই বিরতি আপনার সম্পর্কের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সুফল বয়ে আনবে।