হোম কোয়ারেনটাইন: পরিবারের বয়স্কদের যত্ন নিচ্ছেন তো?
২ এপ্রিল ২০২০ ১০:০০
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহ আতঙ্ক নিয়ে দিন কাটাচ্ছে সারা বিশ্বের মানুষ। হোম কোয়ারেনটাইনে থাকার পরও মনে হচ্ছে, নিরাপদে আছি তো? সবচেয়ে শঙ্কার ব্যাপার হলো, এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মধ্যে বয়স্ক ব্যক্তির সংখ্যাই বেশি। ফলে পরিবারের বয়স্ক ব্যক্তিদের নিয়ে উদ্বিগ্ন সবাই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন বয়স্কদের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার। তাদের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার পাশাপাশি মানসিক দিকের প্রতিও নজর রাখতে হবে। কোনভাবেই তারা যেন মনোবল হারিয়ে না ফেলেন সেই ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
এইসময় বয়স্ক ব্যক্তিদের সুরক্ষায় করণীয় সম্পর্কে কিছু কথা জেনে নেই-
ঘরে থাকুন
বয়স্ক ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। ফলে এই সময় তাদেরকে বাইরে যেতে না দেয়াই ভালো। পারিবারিক প্রয়োজন যেমন বাজার করা কী ওষুধ কেনা- এসব দায়িত্ব পালন করবেন পরিবারের অন্য সদস্যরা। বয়স্ক ব্যক্তিদের এসব কাজে যেতে দেওয়া যাবে না।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জরুরী
করোনা সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার কোন বিকল্প নেই। বার বার সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া, পোশাক ও ঘর পরিষ্কার রাখা দরকার। বাইরে থেকে কেউ এসে বয়স্ক ব্যক্তির কাছাকাছি যাবেন না। হাত ধুয়ে জামাকাপড় বদলে, পারলে গোসল সেরে তারপর যাবেন।
হালকা খাবার দিন
খেয়াল রাখতে হবে, বয়স্ক ব্যক্তি যেন সবদিক থেকে সুস্থ থাকেন। পেটের সমস্যাতেও যেন না ভোগেন। এজন্য কম তেল ও মশলা দিয়ে রান্না করতে হবে। ভাজাভুজি বাদ দেওয়াই ভালো। শাক-সবজি ও ফলমূল ভালো করে ধুয়ে নিন। মাংস ও ডিম ভালোভাবে সেদ্ধ করুন।
গল্প করুন
সামাজিক জীব হওয়ার কারণে হোম কোয়ারেনটাইন আমাদের ভালো লাগার কথা না। বয়স্ক ব্যক্তিরা এইসময় আরও অসহায়বোধ করতে পারে। ফলে পরিবারের সকল সদস্যের উচিত বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতি যত্নশীল হওয়া। তাদের সঙ্গে গল্প করতে হবে। হাসি-তামাসা সবই করতে পারেন।
উৎসাহিত করুন
একেকজনের একেকরকম ভালোলাগার বিষয় থাকে। অনেকে বই পড়তে ভালোবাসেন। আবার কেউ কেউ আছেন নাতি-নাতনিদের নিয়ে সময় কাটাতে ভালোবাসেন। ঘরের টুকটাক কাজের প্রতিও কারো কারো আগ্রহ থাকতে পারে। যেমন- গাছের যত্ন নেয়া, বড়ি তৈরি করা, মুখরোচক খাবার বানানো, আচার করাসহ নানা ধরনের শখ থাকতেই পারে। বাড়ির বয়স্ক ব্যক্তিটি কিসে আনন্দ পায় তা নিশ্চয়ই পরিবারের অন্য সদস্যরা বোঝেন। ফলে এই সময় সেই কাজগুলোতে তাকে উৎসাহিত দিন। তাহলে অন্তত কিছু সময় আনন্দে পার করতে পারবেন তিনি।
ছাদে যেতে পারেন
বাসায় একঘেয়েমি লাগলে বয়স্ক ও শিশুদের নিয়ে পড়ন্ত বিকেলে একটু ছাদে যেতে পারেন। ছাদবাগান থাকলে সময় আরও ভালো কাটবে। বাসায় ফিরে সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। তবে, ছাদেও অন্য ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। ছাদে যদি লোকজন থাকে তাহলে না যাওয়াই ভালো।
এই পরিস্থিতিতে বয়স্ক ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক সুরক্ষা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। নিয়মিত চেকআপের অংশ হিসেবে বয়স্ক ব্যক্তিকে চিকিৎসকের কাছে নিতে হলে যথাযথ সুরক্ষা মেনে যেতে হবে।