Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শ্রীমঙ্গলে বিশ্বজ্যোতি চৌধুরীর ছাদকৃষি


১২ জুন ২০২০ ১০:০০

প্রকৃতিকন্যা শ্রীমঙ্গলের উপজেলা শহরের মৌলভীবাজার সড়কে নিজ আবাসিক ভবনের ছাদে সবুজ বাগান গড়ে তুলেছেন বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী। পেশায় সাংবাদিক বিশ্বজ্যোতি তার ছাদ বাগানে ফল, ফুল ও সবজিসহ দুই শতাধিক বাহারি গাছ রোপন করেছেন। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা নিজ হাতেই গাছের পরিচর্যা করেন তিনি। তার এ বাগান দেখলে মনে হবে গাছ, প্রকৃতি আর মানুষ যেন একই সূত্রে গাঁথা।

করোনাভাইরাসের কারণে সবাই যখন ঘরবন্দি জীবন কাটাতে কাটাতে অতিষ্ঠ তখন বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী ছাদকৃষি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যার ফলশ্রুতিতে করোনাকালীন এই কয়েকমাসেই নিজের ছাদ রাঙিয়ে তুলেছেন বিভিন্ন প্রকার ফুল, ফল ও সবজিতে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে তার ছাদ বাগানে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন রকম সবজি ও ফলে বাগান ভরে আছে। তার ছাদ বাগানে চাষ হচ্ছে মাল্টা, লেবু, লাল শাক, পটল, পুঁইশাক, কুমড়ো, ঢেঁড়স, মরিচ, করলা, কচু, লাউসহ বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজি। নিজেদের চাহিদা মেটানর পর বাড়তি থেকে যায় সেসব সবজি ও ফলমূল। এই ছাদ কৃষি আরও ব্যাপক পরিসরে বিস্তৃতি করার ইচ্ছে আছে বলেও বাগান মালিক বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী সারাবাংলাকে জানিয়েছেন।

ছাদকৃষি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী বলেন, করোনার সাধারণ ছুটি চলাকালীন ঘরে থাকতে থাকতে যখন খুব অস্বস্তি অনুভব করছিলাম তখন ঠিক করি ছাদে বাগান করে অবসর সময়টাকে কাজে লাগানোর। ভাবতে না ভাবতেই ভবনের ছাদের প্রায় দুই শতাংশ জায়গাজুড়ে বিভিন্ন ফল ও সবজির চাষ শুরু করি।

ছাদ মালিকদের তাদের ছাদ পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে না রেখে ছাদকৃষি করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ছাদ কৃষির মাধ্যমে বিষমুক্তভাবে বিভিন্ন শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদন করা যায়। আবার নিজেদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিক্রি করে আর্থিকভাবেও লাভবান হওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী জানান, বিষ ও ভেজালমুক্ত এবং শতভাগ নিরাপদ অরগানিক খাবারের জোগান নিশ্চিত করতে এমন আয়োজন। তিনি বলেন, নিজের লাগানো শতাধিক গাছের কাছে যখন আসি, মন প্রশান্তিতে ভরে যায়।

বর্তমানে তার বাগানে ফল, ফুল ও সবজিসহ দুই শতাধিক গাছ রয়েছে। ফলের মধ্যে রয়েছে আম, আঙুর, আনার, ডালিম, পেপে, পেয়ারা, মাল্টা, কামরাঙ্গা, জামরুল, করমচা ইত্যাদি। ফুলের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রঙের গোলাপ, রক্তজবা, বেলি, জুঁই, হাসনেহেনা, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, নাইট কুইন ইত্যাদি।

আর সবজির মধ্যে রয়েছে লাউ, চাল কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, বরবটি, বেগুন, ঝিঙ্গে, ছিচিঙ্গা, করলা, টমেটো, সিম, ঢেঁড়শ ইত্যাদি। ফল, ফুল ও শাকসবজি ছাড়াও রয়েছে ঘৃতকুমারি, মেহেদী, চিরতা ও তুলসীসহ নানা প্রজাতির ঔষধি গাছও। রয়েছে কিছু বনসাইও।

বৃক্ষপ্রেমী বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী বেশকিছু জাতীয় দৈনিকে কাজ কর বর্তমানে কালের কন্ঠের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। করোনার এই বন্দি সময়ে বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী ছাদকৃষি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি বলেন, ‘প্রকৃতি আমাকে সহযোগিতা করেছে। আমি ছাদের চাষাবাদে গোবর মেশানো মাটি অর্থাৎ জৈব সার ছাড়া কিছুই ব্যবহার করছিনা। ছাদ কৃষির মাধ্যমে আমরা সহজেই নিজেদের দোরগোড়ায় ভেজালমুক্ত খাদ্য পাচ্ছি। ফলে আমার কোনো ফলমুল, শাক-সবজি আর বাজার থেকে তেমন কিনতে হয় না। তাই আমাদের সকলকে এ ধরনের উদ্যোগে এগিয়ে আসা উচিত। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করা উচিত।’

এ প্রসঙ্গে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি সারাবাংলাকে বলেন, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী এক বছরের মধ্যে সিলেট অঞ্চলের ২০ শতাংশ ছাদকে কৃষির আওতাধীন আনার কাজ করছেন। বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী যেভাবে সময়কে কাজে লাগিয়েছেন সেটা দেখে শহরের অন্যান্য বিল্ডিং মালিকরা উৎসাহিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ছাদকৃষি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর