বাবার জন্য উপহার
২০ জুন ২০২০ ১৮:৫৭
ভালোবাসা, ভয়, শ্রদ্ধা, অভিমান— বাবার সঙ্গে কতকিছুই না মিশে থাকে। সবকিছুর মিশেলে সন্তানরা যে বাবাকে দেখে, দিনশেষে সেই বাবাই সন্তানদের পরম ভরসার জায়গা। সন্তানের মুখ থেকে যখন ‘বাবা’ শব্দটি বেরিয়ে আসে, বাবার সারাদিনের ক্লান্তি ও কষ্টগুলো তখন নিমেষেই দূর হয়ে যায়। বাবাকে ভালোবাসার কথা মুখ ফুটে অনেক সন্তানই বলতে পারেনা। তারপরও সন্তান মাত্রই জানে তার হৃদয়ে বাবার স্থান কত গভীরে।
প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হয় বাবা দিবস। সেই হিসেবে আগামীকাল (২১ জুন) আন্তর্জাতিক বাবা দিবস পালিত হবে।
বাবা দিবস ঘোষণার বিষয়টি প্রথম ১৯১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সনোরা স্মার্ট ডোড নামের এক তরুণীর মাথায় আসে। ১৯১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পিতৃ দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণার বিল উত্থাপন করা হয়। অবশেষে ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন দিনটিকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেন।
বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা চিরন্তন ব্যাপার। তবে যুগের পরিবর্তনে ভালোবাসার প্রকাশভঙ্গিতেও এসেছে পরিবর্তন। বাবাকে ভালোবাসতে কোন বিশেষ দিনের দরকার হয়না। তারপরও সকল বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ‘বাবা দিবস’।
করোনাভাইরাসের মহামারীর কারণে এখন যেহেতু বাইরে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ, ফলে এবারের বাবা দিবসে অনলাইনেই উপহার কিনতে পারেন বাবার জন্য। আর বাবার পছন্দের কিছু খাবার ঘরেই বানিয়ে ফেলা যায়।
বাবাকে এমন উপহার দিতে পারেন যা এখন বাবার কাজে আসবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় যে জিনিসগুলো এখন দোকানে গিয়ে বাবা কিনতে পারছেন না, সেই জিনিসগুলো অনলাইনে অর্ডার করতে পারেন। যেমন ব্যাগ, সানগ্লাস, টি-শার্ট, ট্রাউজার, ঘড়ি, গ্রুমিং কিট ইত্যাদি।
সন্তানের হাতে লেখা চিঠি বাবা দিবসের চমৎকার একটি উপহার হতে পারে। অনেকে দেশের বাইরে থাকেন বলে বাবাকে হাতে লেখা চিঠি দিতে পারবেন না। তারা অবশ্যই বাবাকে একটি ডিজিটাল বার্তা পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে পারেন। এছাড়া বাবাকে কার্ড উপহার দিতে পারেন। এজন্য বাসায় যদি রঙিন কাগজ থাকে তাহলে নিজেই ইউটিউব দেখে সুন্দর কার্ড বানিয়ে ফেলা সম্ভব।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে এখন বাইরের খাবার অনেকেই খাচ্ছেন না। সেক্ষেত্রে ঘরেই বাবার জন্য কেক বানাতে পারেন। সহজ উপায়ে বাসায় থাকা উপকরণ দিয়েই কেক বানানো যায়। এছাড়া বাবার পছন্দের ডেজার্ট বানাতে পারেন।
বাবার পছন্দের খাবার বানানোর এটাই উপযুক্ত দিন। যদিও অনেক বাবা নিজের মুখে পছন্দের খাবারের কথা বলেন না। তারপরও সন্তান হিসেবে আমরা অনেকেই তা বুঝি। সেই অনুযায়ী বাবার পছন্দের কিছু খাবার বানালে দারুণ হবে।
করোনাকালে বেশিরভাগ সময় ঘরে থাকছেন সবাই, ফলে বাবা যদি বই পড়তে পছন্দ করেন তাহলে কিছু বই বাবাকে উপহার দিতে পারেন। বইপ্রেমীদের কাছে এর চেয়ে ভালো উপহার আর কিছুই হয় না। কারো বাবা যদি বাগান পরিচর্যায় আগ্রহ পান, তাহলে বাবা দিবসে কিছু গাছ কিনে ফেলতে পারেন।
ভালোবাসাই সবচেয়ে বড় উপহার। বাবার প্রতি সন্তানের যে ভালোবাসা, তাতেই বাবার সকল ক্লান্তি ও কষ্ট দূর হয়ে যায়। দিবস কেবল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। বাবার প্রতি সত্যিকার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা তখনই দেখানো যায় যখন বাবার দায়িত্ব নেন সন্তানরা, বুঝতে পারেন বাবার ভেতরের কথাটি।