Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ন্যাচারোপ্যাথি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা- ০১


২৯ আগস্ট ২০২০ ১৯:০৩

‘ন্যাচারোপ্যাথি’ চিকিৎসা বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে প্রাকৃতিক উপাদান বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে প্রয়োগের মাধ্যমে রোগ প্রতিকার, প্রতিরোধ এবং নিরাময় করা হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা যেমন, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, ইউনানি, ইত্যাদির মত ন্যাচারোপ্যাথিও প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরনো চিকিৎসা পদ্ধতি। এটি অল্টারনেটিভ এবং হলিস্টিক (Holistic) মেডিসিন হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত এবং সমাদৃত।

বিজ্ঞাপন

ন্যাচারোপ্যাথিতে স্বাস্থ্য মানে শুধু শরীর নয় বরং ‘স্বাস্থ্য হলো শারীরিক, মানসিক, আত্মিক, সামাজিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে পূর্ণ সুস্থতা’। বিজ্ঞানের অন্যতম কেন্দ্র হলো প্রকৃতি। মানুষ প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ উপাদান। প্রকৃতিতে রয়েছে মাটি, পানি, বাতাস, আগুন আর আকাশ। আর আমাদের শরীরেও রয়েছে প্রাকৃতিক এই ভৌত শক্তিসমূহ। শরীরের অভ্যন্তরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জৈব বিদ্যুৎ শক্তির ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে শরীর তার উপাদানসমূহের সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে নিজেই নিজেকে সুস্থ রাখে। এজন্যই প্রাচীন প্রবাদ রয়েছে Body Heals Itself. অর্থাৎ শরীর প্রাকৃতিকভাবে নিজেই নিজেকে ঠিক করে।

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্যসেবার এই শাখাকে প্রাতিষ্ঠানিক এবং পেশাগতভাবে চর্চার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ‘ব্যাচেলর অব ন্যাচারোপ্যাথি এন্ড ইয়োগিক সায়েন্সেস (BNYS)’ কোর্সটি চালু করেছে। এশিয়ার বিভিন্ন দেশ যেমন, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভূটানসহ ইউরোপ, আমেরিকার দেশগুলোতে এই চিকিৎসার ব্যাপক প্রচার, প্রসার, চাহিদা, এবং ব্যবহার রয়েছে। বাংলাদেশেও ন্যাচারোপ্যাথি চিকিৎসার কয়েকটি শাখার প্রয়োগ এবং ব্যবহার রয়েছে। আমি ভারতের উত্তর প্রদেশের মিরাটে অবস্থিত মহাঋষি অরবিন্দ সুভারতী কলেজ এন্ড হসপিটাল অব ন্যাচারোপ্যাথি এন্ড ইয়োগিক সায়েন্সেস থেকে পড়াশোনা করেছি। আপনাদের জন্য ন্যাচারোপ্যাথি বিভিন্ন চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় নিয়ে ধারবাহিকভাবে আলোচনা করব। আজ রইল ন্যাচারোপ্যাথি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা।

এই সম্পর্কিত কোর্সটি দুইভাগে বিভক্ত- ১. ন্যাচারোপ্যাথি এবং ২.ইয়োগা

ন্যাচারোপ্যাথি চিকিৎসার শাখাগুলো সম্পর্কে আগে জেনে নেই চলুন-

১. আকুপাংচার (Acupuncture)
আকুপাংচার মূলত একধরনের চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব দেশে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। এই পদ্ধতিতে শরীরের সুনির্দিষ্ট মেরিডিয়ান চ্যানেলের বিভিন্ন বিন্দুতে সূঁচ প্রয়োগ করে রোগের চিকিৎসা করা হয়।

২. আকুপ্রেশার (Acupressure)
আকুপ্রেশার হলো আকুপাংচারের পরিবর্তিত রূপ, যেখানে মেরিডিয়ান চ্যানেলের বিন্দুগুলোতে সূঁচ না ফুটিয়ে বরং ভোতা কাঠি জাতীয় বস্তু দিয়ে সঠিক নিয়মে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে রোগ নিরাময়ে থেরাপি করা হয়।

৩. রিফ্লেক্সোলোজি (Reflexology)
আমাদের শরীরের সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং গ্রন্থির কেন্দ্র রয়েছে হাতের তালু এবং পায়ের তলায়। রিফ্লেক্সোলজিতে তাই হাত এবং পায়ের তলায় থেরাপি করে চিকিৎসা করা হয়। একে জোন থেরাপিও বলে।

৪. নিউট্রিশন এন্ড ডায়েট (Nutrition & Diet)
একজন মানুষের দৈনিক খাদ্যতালিকায় সঠিক পরিমাণে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, মিনারেলস এবং পানির সমতা না থাকলে অনেক জটিল রোগ দ্বারা মানবদেহ আক্রান্ত হয়ে থাকে। দৈনিক খাদ্যতালিকায় খাদ্য ও পুষ্টির সুষম পরিমাণ নির্ধারণের মাধ্যমে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে নিউট্রিশন এন্ড ডায়েট থেরাপি।

৫. কাপিং/হিজামা থেরাপি (Cupping Therapy)
কাপিং থেরাপির ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৪০০ বছর আগে এলোপ্যাথি শাস্ত্রের জনক হিপোক্রেটস্ মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর কাছ থেকে এই থেরাপি শিখেছিলেন। এতে রোগাক্রান্ত স্থানের দূষিত রক্ত অপসারণের মাধ্যমে রোগ আরোগ্য করা হয়।

৬. মক্সিবাশন (Moxibustion)
এটিও চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি। এতে মেরিডিয়ান চ্যানেলে ‍সূঁচ ফুটিয়ে সূঁচের উপর বিশেষ হারবাল প্রয়োগ করে চিকিৎসা করা হয়।

৭. হারবাল মেডিসিন (Herbal Medicine)
প্রকৃতির ঔষধি গুণ সম্পন্ন গাছ, লতাপাতা, ফুল, শিকড়, ক্যাটারপিলার ইত্যাদির বিজ্ঞানসম্মত প্রয়োগ করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীনভাবে রোগ আরোগ্য নিশ্চিত করা হয়।

৮. মাসাজ থেরাপি (Manipulative Therapy)
রক্ত প্রবাহকে গতিশীল এবং দেহের প্রতিটি কোষে কোষে পুষ্টি এবং অক্সিজেন পৌঁছে ‍দিয়ে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে কাজ করে মাসাজ থেরাপি।

৯. চৌম্বক চিকিৎসা (Magneto Therapy)
Earth is the Biggest Magnet, পৃথিবী নিজেই একটি বিরাট চৌম্বক। মানুষ পৃথিবীর অংশ, আর তাই পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্ব অনুসারে মানুষের রোগ নিরাময়ে চৌম্বক শক্তির প্রয়োগ কার্যকরী।

১০. রঙ চিকিৎসা (Chromo therapy)
শরীরের প্রতিটি অঙ্গ, গ্রন্থি এবং তরল পদার্থ নির্দিষ্ট রংয়ের প্রতি ক্রিয়াশীল। যেমন, রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে গেলে লাল রঙের খাবার খেতে বলা হয়।

১১. হাইড্রোথেরাপি (Water Therapy)
মানুষের শরীরের ৭০ ভাগ হলো পানি। পানির ভারসাম্যহীনতা নানা রোগের জন্ম দেয়। স্টিম বাথ, ফুট বাথ, কোলন থেরাপি, পুল থেরাপিসহ পানির নানাবিধ বৈজ্ঞানিক ব্যবহারের মাধ্যমে রোগ সারানো হয়।

১২. উপোস থেরাপি (Fasting Therapy)
ফাস্টিং থেরাপি শরীরের পুরনো কোষগুলো অপসারণ করে নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে এবং বার্ধক্য রোধ করে। Yoshinori Ohsumi নামে একজন জাপানি জীববিজ্ঞানী ২০১৬ সালে ফাস্টিং থেরাপীর উপর গবেষণা করে নোবেল প্রাইজ পান।

১৩. ফিজিওথেরাপি (Physiotherapy)
স্ট্রোক পরবর্তী পুণর্বাসন, হাঁড়ের অসুখ, প্রদাহজনিত রোগ সহ নানাবিধ জটিলতা নিরসনে ফিজিওথেরাপি পরীক্ষিত চিকিৎসা পদ্ধতি।

১৪. রেইকি/এনার্জি হিলিং (Reiki/Pranic Healing)
আমাদের শরীর মহাশক্তির আঁধার। জন্মলগ্ন থেকেই বায়ো ইলেকট্রিসিটি শরীরে প্রবাহিত হয়ে চলেছে, যার দ্বারা আমরা জীবনীশক্তি পাই। এই এনার্জি সরবরাহ ব্যাবস্থায় ভারসাম্য থাকলে শরীর সুস্থ থাকে। রেইকি শরীরের বায়ো এনার্জির উপর কাজ করে।

১৫. মাটি চিকিৎসা (Mud Therapy), বায়ু চিকিৎসা (Air Therapy), সূর্যরশ্মি থেরাপি (Sun Therapy)
মাটি, বায়ু, সূর্য সবই প্রকৃতির মৌলিক উপাদান এবং শক্তি। এদের রয়েছে শক্তিশালী রাসায়নিক উপাদান, যা মানব দেহের রোগ নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। যেমন, সূর্যরশ্মি ভিটামিন ’ডি’ সংশ্লেষণে সাহায্য করে।

১৬. কায়রোপ্র্যাকটিস (Chiropractic)
এটি এক ধরনের স্পাইনাল থেরাপি, যেখানে মেরুদন্ডের কশেরুকা এবং স্নায়ুর উপর থেরাপি প্রয়োগ করে রোগ সারানো হয়। পাশাপাশি শরীরের জয়েন্ট এবং হাঁড়ের থেরাপিও করা হয়।

১৭. ন্যাচারোপ্যাথি ডায়াগনোসিস (Naturopathy Diagnosis)
কোন প্রকার যন্ত্রপাতি ছাড়াই সম্পূর্ন প্রাকৃতিক উপায়ে পর্যবেক্ষণ, নিরীক্ষণ এবং শ্রবণের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা হয়।

ইয়োগা বা যোগ
ইয়োগার যে চর্চা আমাদের দেশে দেখা যায় সেগুলো মূলত, ইয়োগার একটি অংশ, ইয়োগা আসনসমূহ। প্রকৃত অর্থে ইয়োগা বা যোগের ক্ষেত্রটি ব্যাপক। BNYS কোর্সে ইয়োগার দর্শন, উৎপত্তিসহ সকল শাখার তাত্ত্বিক অধ্যয়ন এবং ব্যবহারিক অনুশীলন শেখানো হয়। প্রাচীন ইয়োগা গুরু মহাঋষি পতঞ্জলীর মতে, ইয়োগার ৮ টি অনুশীলন ধাপ রয়েছে । সেগুলো হলো –

১. ব্যাক্তিগত এবং সামাজিক মূল্যবোধে বিশ্বাস এবং চর্চা
এটি ইয়োগার প্রথম ধাপ। এখানে একজন ইয়োগা শিক্ষার্থীকে ক. অহিংসা, খ. সত্য, গ. অন্যের সম্পদে লোভ না করা, ঘ. সংযম, ঙ. প্রয়োজনের অতিরিক্ত মজুদ না করা, এই পাঁচটি মূল্যবোধের তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক অভ্যাস শেখান।

অর্থাৎ একজন সামাজিক জীব হিসেবে আমার দ্বারা অন্য একজন সামাজিক জীব যেন কোন প্রকার ক্ষতির মুখে না পড়ে। যারা এই পাঁচটি ধাপের প্রতিটিতে সফলকাম হয়, তাদের জন্য দ্বিতীয় ধাপে যাওয়ার অনুমতি মিলে।

২. নিয়ম
এই ধাপেও রয়েছে পাঁচটি স্তর।
ক. অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা
এই বিশ্বাস যোগে কঠোরভাবে অনুশীলন করা হয়। একজন যোগীকে বাহ্যিক পরিচ্ছন্নতা (যেমন, নিয়মিত গোসল করা, নখ কাঁটা ইত্যাদি) এবং অভ্যন্তরীণ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা (যমন, শ্বাসযন্ত্র, হজমপ্রণালী ইত্যাদি) অর্থাৎ প্রতিটি গ্রন্থি এবং সিস্টেমকে বিশেষ নিয়মে পরিশুদ্ধ করতে হয়। এই নিয়মকে যোগে ক্রিয়া বলে। ক্রিয়ার রয়েছে ছয়টি শুদ্ধ প্রক্রিয়া, নেতি, ধৌতি, বস্তি, ত্রাটকা, নৌলি ও কপালভাতি।

খ. সন্তুষ্টি
আমার যা রয়েছে তাতেই তৃপ্ত থাকা। এতেই রয়েছে সুখ আর প্রশান্তি- এই বিশ্বাস করতে শেখা।

গ. তাপস
সংস্কৃত তাপস শব্দের বাংলা অর্থ দায়িত্ববোধ অনুশীলন। যেমন: সন্তান হিসেবে পিতামাতার প্রতি সকল দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা।

ঘ. নিজেকে জানার অনুশীলন
নিজেকে বিশ্লেষণে মনোনিবেশ করা। নিজের প্রতিটি কথা, কাজ, আচরণ, চিন্তাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করে নিজের প্রকৃত সত্ত্বাকে উপলব্ধি করা।

ঙ. ঈশ্বরে সমর্পন
একজন যোগী যখন নিজেকে জানতে এবং বুঝতে অভ্যস্ত হয় তখন সে নিজের প্রতিটি কর্ম সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টির জন্য নিবেদন করে থাকে। প্রত্যাশা বা ফলাফল পাবার আশায় সে কোন কর্ম করে না। নিজেকে ঈশ্বরে সমর্পণের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় ইয়োগার দ্বিতীয় ধাপ।

৩. ইয়োগা আসন বা যোগাসন
রক্তপ্রবাহ সঠিকভাবে সঞ্চালন, হাঁড় এবং জয়েন্টের পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিতকরণ, মাংসপেশির শক্তি এবং সঞ্চালন, সঠিক মাত্রায় হরমোন এবং এনজাইম নিঃসরণসহ শরীরের যাবতীয় কার্যাবলী সুষ্ঠ ও সঠিকভাবে হওয়া এবং শরীরের নমনীয়তা বজায় রাখতে ইয়োগা আসনগুলো অনুশীলন করতে হয়।

৪. প্রাণায়াম
শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক গতি এবং শ্বাসযন্ত্রের সুস্থতা নিশ্চিত করে প্রাণায়াম। এর পাশাপাশি মনকে স্থির, একাগ্র, এবং শান্ত রাখে।

৫. ত্যাগ
ভোগ মানুষকে লোভী এবং হিংস্র স্বভাবের করে তোলে। নিজের প্রয়োজনটুকু মিটিয়ে অতিরিক্ত অংশ অন্যকে দেওয়ার অভ্যাসের মধ্য দিয়ে একজন যোগী ত্যাগের মতো মহৎ গুণের অধিকারী হয়ে ওঠে।

৬. ধ্যান/মেডিটেশন
অতিরিক্ত এবং অপ্রয়োজনীয় কথা, অযথা কর্মচাঞ্চল্য, অহেতুক বিষয়ে মনোনিবেশ ইত্যাদি মানুষের জীবনের মূল্যবান সময় এবং শক্তি নষ্ট করে। ধ্যান মানুষের সামনে স্বল্পভাষী, পরিপক্ক এবং জ্ঞানী হওয়ার রাস্তা খুলে দেয়।

৭. একাগ্রতা অনুশীলন
এটি ধ্যানের পরবর্তী ধাপ। এতে যোগীকে একটি বিষয় নির্ধারণ করতে হয় এবং তা অর্জণের জন্য পূর্ণ মনোনিবেশ করতে হয়। যতক্ষণ নির্ধারিত বিষয়ে সাফল্য না আসে যোগী তার একাগ্রতা চালিয়ে যাবেন।

৮. আধ্যাত্মিক জগত ভ্রমণ
উপরের সাতটি ধাপ সফলভাবে পার করলেই কেবল আধ্যাত্মিক শান্তির খোঁজ পাওয়া যায়। এই শান্তির পথের যাত্রীকে বিশেষ অনুশীলনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যোগে একটি ধাপ ডিঙিয়ে আরেক ধাপে যাওয়ার কোন রাস্তা নেই।

বিশ্বব্যাপী ইয়োগার আসনভিত্তিক যে অনুশীলনগুলো দেখা যায়, সেগুলো কেবল মানুষের শারীরিক রোগব্যধি সারানোর প্র্যাকটিস। একজন যোগীর যোগ অনুশীলন হবে উপরের আটটি ধাপে। যার মধ্য দিয়ে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, অত্মিক, আধ্যাত্মিক সকল স্তরের শান্তি নিশ্চিত হবে।

ন্যাচারোপ্যাথি মেডিসিনের একজন শিক্ষার্থীকে তার কোর্স সিলেবাসের আওতায় এলোপ্যাথি মেডিসিনের আওতাভূক্ত বিষয়াবলীর অন্তর্ভূক্ত অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, কমিউনিটি মেডিসিন, প্যাথলজি, গাইনোকোলোজি এন্ড অবস্টেট্রিক, সাইকোলজি এন্ড সাইকিয়াট্রি, ফরেনসিক মেডিসিন, হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট, রিসার্চ মেথোডলোজি, মডার্ন ডায়াগনোসিস বিষয়গুলো অধ্যয়ন করতে হয়। এই বিষয়গুলো একজন চিকিৎসককে মানবদেহের গঠন কাঠামো, কার্যাবলী, রাসায়নিক ক্রিয়াসহ রোগ কি, কেন হয়, রোগের গতিপ্রকৃতি, বংশবিস্তার, এমন কি মৃত্যু পরবর্তী একজন মানুষের অবস্থা বিশ্লেষণের জ্ঞান এবং দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে।

উল্লিখিত বিষয়গুলো থেকে অর্জিত জ্ঞান একজন ন্যাচারোপ্যাথিষ্ট রোগ নির্ণয় এবং বিশ্লেষণে কাজে লাগায় কিন্তু চিকিৎসায় অর্থাৎ রোগ নিরাময়ে ন্যাচারোপ্যাথির উল্লিখিত শাখাগুলো থেকে রোগ প্রতিকার, প্রতিরোধ এবং নিরাময় করে থাকে।

অল্টারনেটিভ এবং হলিস্টিক মেডিসিন হিসেবে ন্যাচারোপ্যাথি আজ বিশ্বব্যাপি সমাদৃত। এই ব্যবস্থায় রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি রোগের মূল কারণ অনসন্ধান করে তার মূলোৎপাটন করা হয়। ফলে রোগি তার স্বাস্থ্য এবং ঝুঁকিগুলো সম্বন্ধে জানতে পারে এবং পরবর্তীতে নিজেই নিজের স্বাস্থ্যের সঠিক যত্ন নিতে পারে। প্রাকৃতিক শক্তির বিজ্ঞানভিত্তিক প্রয়োগের ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন এই চিকিৎসা ব্যবস্থা সুস্থ সমাজ গঠনে অনবদ্য ভূমিকা পালনে সক্ষম।

অল্টারনেটিভ মেডিসিন ন্যাচারোপ্যাথি হলিস্টিক মেডিসিন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর