Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোভিড-১৯ পরবর্তী ফ্যাটিগ সারাতে ন্যাচারোপ্যাথি- ০২


৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:১৬

আমার এক পরিচিত ভদ্রলোকের বয়স প্রায় ৬০, পেশায় চিকিৎসক। আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধার এই ব্যক্তি  ৩ জুলাই করোনা পজিটিভ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। একমাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে করোনার সঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হয়ে বাসায় ফিরেছেন। ১০ আগস্ট ওনার সঙ্গে যখন কথা বলছিলাম, ‍ওনার কথা জড়িয়ে যাচ্ছিলো, কথা বলতে কষ্ট হচ্ছিলো, খুব ক্লান্ত ছিলেন তিনি। গত ২৭ আগস্ট কথা বলে জানলাম ‍উনি আগের চেয়ে ভালো আছেন তবে ক্লান্তি আর অবসাদ এখনও রয়েছে। বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকতে পারেননা, ভুলে যাচ্ছেন, কথা বলতে ক্লান্ত লাগে।

বিজ্ঞাপন

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও একজন করোনাজয়ী ব্যক্তি উপরের লক্ষণগুলো ছাড়াও ভুগছেন নানান যন্ত্রনাদায়ক সমস্যায়, যেমন-
– মাংসপেশী ও হাঁড়ে অসহ্য ব্যথা
– শরীর জ্বালাপোড়া
– কোন বিষয়ে মনোযোগি হতে না পারা
– ভুলে যাওয়া
– খাবারে অরুচি
– চোখে ঘোলা দেখা
– শ্বাসকষ্ট
– বুকে চাপ অনুভূত হওয়া
– মাথাব্যথা
– মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়াসহ
– দুশ্চিন্তা ও ভয়
– বিষাদও হতাশা ইত্যাদি

বিজ্ঞাপন

৮ মার্চ ২০২০ বাংলাদেশে প্রথম ৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরই মধ্যে কেটে গেছে প্রায় সাত মাস। এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে প্রায় ৩১৯,৬৮৬ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন প্রায় ৪,৩৮৩ জন। আশার কথা হলো, ঘাতক এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে উঠেছেন ২১৩,৯৮০ জন যোদ্ধা মানুষ। তবে যারা সুস্থ হয়েছেন, তাদের অনেকেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে পারছেননা উপরে বর্ণিত অস্বাভাবিক ক্লান্তি আর অবসাদসহ নানান শারীরিক জটিলতার কারণে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘Post-Viral Fatigue Syndrome’ যার বাংলা করলে হয় ‘ভাইরাস সংক্রমণ পরবর্তী অবসাদের উপসর্গসমূহ’। এই উপসর্গসমূহ ব্যক্তিভেদে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। করোনার আক্রমণে শরীরের ভাইটাল অর্গান ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াসহ অন্যান্য ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণে জীবন বাঁচাতে শক্তিশালী ঔষধ প্রয়োগ করতে হয়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উপর চাপ পড়ে তা দুর্বল হয়ে যায়। শরীর তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার চেষ্টা চালাতে থাকে। ন্যাচারোপ্যাথি ব্যবস্থাপনাগুলো মেনে চললে কোভিড-১৯ পরবর্তী লক্ষণ এবং সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠা যায় সহজে।

ন্যাচারোপ্যাথি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা

ন্যাচারোপ্যাথি ব্যবস্থাপনা
অসুস্থতা পরবর্তী রিকভারির জন্য ন্যাচারোপ্যাথিতে চারটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়।
১. পর্যাপ্ত খাবার
২. পর্যাপ্ত বিশ্রাম
৩. পর্যাপ্ত ব্যায়াম এবং
৪. পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা

এই চারটি বিষয় সঠিক ভাবে মেনে চললে শরীর স্বাভাবিক শক্তি এবং কর্ম ক্ষমতা ফিরে পায়। যার ফলে –
– রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়
– শরীর পুনর্গঠন করে ক্লান্তি দূর করে
– শরীরে পুষ্টির সঠিক যোগান দেয়
– শরীরের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাসমূহের মধ্যে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে
– মানসিক হতাশা এবং ক্লান্তি দূর করে

১. পর্যাপ্ত খাবার
নিউট্রিশন এন্ড ডায়েট প্ল্যান
করোনার সাথে লড়াই করার ফলে শরীর ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে শক্তিহীন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় সঠিক নিউট্রিশন এন্ড ডায়েট প্ল্যান খুব জরুরি। শক্তি সঞ্চয়ের পাশাপাশি ক্ষয়পূরণে দুই-তিন ঘন্টা পর পর খাবার খেতে হবে। খেতে ইচ্ছা না করলেও অল্প পরিমাণে বা তরল খাবার খেতে হবে।

এ সময় খাদ্য তালিকায় ব্যালেন্সড ডায়েট বিশেষত কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটের পাশাপাশি প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেলস্ সমৃদ্ধ খাবারের উপর জোর দিতে হবে। প্রতিদিন ৭৫-১০০ গ্রাম প্রোটিন খেতে পারলে ভালো। এতে শরীরের কোষ এবং মাংসপেশি শক্তি ফিরে পাবে। প্রোটিনের চাহিদা পূরণে দেশি মুরগী, কবুতর, মাছ, ডিম, বিভিন্ন ধরনের ডাল, এবং সয়াবিন ভালো উৎস।

শরীরকে কর্মক্ষম অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালি করতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবারের পাশাপাশি ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-ই এবং জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ওমেগা-৩ আছে এমন খাবার দৈনিক খাদ্যতালিকায় থাকতে হবে। এসবের ভালো উৎস হলো সবুজ শাকসবজি যেমন, কলমি শাক, পালং শাক, লাল শাক, বেথো শাক, লাউ, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মিষ্টি কুমড়া, গাজর, টমেটো, মাশরুম, মিষ্টি আলু ইত্যাদি এবং মৌসুমি ফলমূল যেমন, আপেল, কলা, কমলা, জাম, আঙুর, তাল, আম, লিচু, তরমুজ, আমড়া, জাম্বুরা, নাশপাতি ইত্যাদি। বাদাম এবং শস্য বীজ জিঙ্ক, সেলেনিয়াম এবং ওমেগা-৩ এর ভালো উৎস। এছাড়াও  কুমড়ো বিচি, তিসি, তোকমা, আলমন্ড, আখরোট, ইত্যাদি।

‘Eat With The Rainbow’. রঙধনুর সাত রঙের খাবারে প্লেট সাজালে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেলের চাহিদা পূরণ হয়। কারণ, প্রতিটি রঙ ভিন্ন ভিন্ন ভিটামিন এবং মিনারেলের চাহিদা পূরণ করে।

প্রতিদিন অল্প করে ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। কারণ এটি হ্যাপি হরমোন ডোপামিন এবং সেরেটোনিন নিঃসরণে সাহায্য করে ফলে বিষন্নতা এবং হতাশা কাটাতে উপকারি। শরীর হাইড্রেট রাখতে প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস তরল পান করতে হবে। পানি, দুধ, ফলের রস, হারবাল চা, স্যুপ এসব গ্রহণের মাধ্যমে এই চাহিদা পূরণ করা যেতে পারে।

একটি নমুনা খাদ্য তালিকা:
– সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে এক টেবিল চামচ লেবুর রস আর এক চিমটি গোল মরিচ গুড়ো দিয়ে পান।
– ১০ মিনিট পর সারারাত ভিজানো ৫টি কাঠবাদাম, ২ টি আখরোট, একমুঠো ছোলা এবং মুগ ডাল ভিনেগার অথবা খাঁটি মধু দিয়ে খাবেন।
– নাস্তায় রুটি, সব্জি, ডিম সিদ্ধ, কলা, গাজর এবং টমেটোর জুস বা স্যুপ।
– বেলা ১১-১২ টার মধ্যে এক বাটি মৌসুমি ফল।
– দুপুরের খাবারে ভাত, কালোজিরা-রসুন ভর্তা, মাছ/গোশত, সবজি, মুগ ডাল। খাবার শেষে একগ্লাস ঘোল।
– বিকেলে মুরগি বা কবুতরের স্যুপ এবং ছোট এক বাটি মিক্সড সালাদ।
– রাতের খাবারে নরম ভাত বা রুটি, সবজি, সয়াবিন ভর্তা, ডাল।
– শোবার আগে একগ্লাস পাতলা দুধে দুই চিমটি হলুদ গুড়ো ‍দিয়ে পান।
খাবার মেন্যু অবশ্যই তাজা, সতেজ এবং ঘরে তৈরি হতে হবে। যাদের ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, কিডনির অসুখসহ জটিল শারীরিক সমস্যা রয়েছে তারা যে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন তার সঙ্গে পরামর্শ করে খাবার তালিকা সাজিয়ে নেবেন।

খাওয়া যাবে না:
বাসি, পঁচা, অনেকদিনের পুরনো ফ্রিজে রাখা খাবার
তৈলাক্ত, ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার
কৌটাজাত এবং প্যাকেটজাত লবণাক্ত খাবার
দুধ চা, কফি, সফট্ ড্রিঙ্কস্, কোন প্রকার ক্যাফেইনজাতীয় পানীয় পান করা যাবে না

হারবাল:
– আদা, তুলসী আর গোলমরিচের চা
– গোল্ডেন মিল্ক (হলুদ মেশানো দুধ)
– ত্রিফলা পানীয়
– মধু-লেবু পানি
– জয়তুন, তিল
– যজ্ঞডুমুর ইত্যাদি
এছাড়াও বাজারে ইমিউন বুস্টিং এবং রোগ নিরাময়ে বিভিন্ন হারবাল পাওয়া যায়।

২. পর্যাপ্ত বিশ্রাম:
প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা, প্রয়োজনে ১০ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। ঘুমের মধ্যে আমাদের শরীর রিপেয়ার হয়। কাজের অজুহাতে কোনভাবেই রাত জাগা যাবে না। রাতে ঘুমের মধ্যে মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরন হয়। এই হরমোন অনিদ্রা কাটায়। করোনা পরবর্তী সময়ে শরীর ক্ষয়িষ্ণু এবং দুর্বল থাকে। এ অবস্থায় কোনভাবেই শরীরের উপর চাপ দেওয়া যাবেনা। শরীরেরও ওয়ার্ক লোড নেয়ার একটা সীমা রয়েছে। এই সীমা অতিক্রম করলেই ধীরে ধীরে শরীর ভাঙতে শুরু করে এবং এক পর্যায়ে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে। অবসাদ পরিপূর্ণ না কাটলে বাসা থেকে বের হওয়া যাবে না।

৩. পর্যাপ্ত ব্যয়াম:
ওয়ার্ম আপ
– সকালে পাঁচ মিনিট ওয়ার্ম আপ করতে হবে। একটি চেয়ারে পিঠ সোজা করে বসে, হাঁটুর উপর হাত রেখে বসতে হবে।
– এবার শ্বাস নিতে নিতে মাথা সামনে থেকে পিছনে আবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পিছন থেকে সামনে চিবুক ছোঁয়াতে হবে। এভাবে ৫ বার করতে হবে।
শ্বাস নিতে নিতে মাথা ডান পাশে কাঁধ বরাবর নিয়ে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে সামনে আনতে হবে, একইভাবে বাম পাশে নিয়ে আবার সামনে আনতে হবে। এভাবে ৫ বার করতে হবে।
– শ্বাস নিতে নিতে কাঁধ ঝাঁকিয়ে উপরে তোলা আর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কাঁধ নীচে নামানো ৫ বার।
– মেঝে থেকে ডান হাঁটু ৫ বার উপরে তোলা এবং নামানো, একইভাবে বাম হাঁটু উপরে তোলা এবং নামানো ৫ বার।
– গোড়ালি এবং কব্জি ডানে-বামে ভাঙা এবং চারপাশে ঘোরানো ৫ বার করে।

সিড়ি বেয়ে ওঠানামা
প্রতিদিন ৫ স্টেপ ‍সিড়ি বেয়ে ওঠানামা করা। প্রতিটি স্টেপ দেবার আগে শ্বাস নেয়া এবং একটি সিড়িতে উঠে শ্বাস ছাড়া। এভাবে পাঁচ সিড়ি পর্যন্ত রেলিং ধরে ধরে ওঠানামা করা।

হাঁটাহাঁটি করা
ঘরের মধ্যে ১৫ মিনিট হাঁটাহাঁটি করতে হবে প্রতিদিন।

যোগাসন
ফ্যাটিগ অবস্থায় ঘাম ঝরিয়ে, ক্লান্ত হয়ে যোগাসন অনুশীলন করা যাবে না। এ সময় অনুশীলন করতে হবে এমন সব আসন যেগুলো বডি সিস্টেমকে পুনরুজ্জীবিত হতে সহায়তা করে। ফ্যাটিগ কাটাতে উপকারি আসনসমূহ হল- ভূজঙ্গাসন (Cobra Pose), শলভাসন (Locust Pose), অর্ধমৎসেন্দ্রাসন (Half Lord of the Fishes Pose), Cat Breathing, বালাসন (Child Pose), শশাঙ্কাসন (Rabbit Pose), শবাসন (Corpse Pose)।

প্রাণায়াম
ফুসফুস এর স্বাস্থ্য পূনরুদ্ধারে নাড়িশুদ্ধি প্রাণায়াম অনুশীলন করা খুব জরুরী। এতে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। পাশাপাশি নিয়মিত ভ্রামরী প্রাণায়াম অনুশীলন করলে মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, ভীতি থেকে বের হওয়া যায় সহজে।

মেডিটেশন
মেডিটেশন যোগব্যায়ামের একটি শাখা। নানা ধরনের মেডিটেশন রয়েছে। এ অবস্থায় ডিপ রিলাক্সেশন টেকনিক, ট্রান্সিডেন্টাল মেডিটেশন, মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন, এবং ইয়োগা নিদ্রা এই মেডিটেশনগুলো ফ্যাটিগ এবং এর সাথে সম্পর্কিত জটিলতাগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে।

ওয়ার্ম আপ, সিড়ি বেয়ে ওঠানামা, হাঁটাহাঁটি, প্রাণায়াম সকালে আর ইয়োগা আসন এবং মেডিটেশন বিকেলে করা ভালো। এর পাশাপাশি বিশ্রামরত অবস্থায় একজন কেয়ার গিভারের কাছ থেকে রিফ্লেক্সোলজিএবং আকুপ্রেশার থেরাপি নিলে উপকার হয়।

রিফ্লেক্সোলজি
হাতে এবং পায়ের তলায় হালকা করে তেল দিয়ে ম্যাসাজ করে দিলে রিফ্লেক্সোলজির পয়েন্টেগুলো সক্রিয় হবে এবং শরীরের এনারজি ব্যবস্থা চাঙ্গা হতে সাহায্য করবে।

আকুপ্রেশার থেরাপি
হেগু (Li4), কুচি (Li11), বাইহুই (DU20) তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। এই পয়েন্টগুলোতে খালি পেটে দিনে ৫০ বার করে চাপ দিলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি শরীর ব্যথা এবং ক্লান্তি কাটে।

সান থেরাপি এন্ড এয়ার থেরাপি
দিনে ২০ মিনিট সুর্যতাপ শরীরে লাগাতে হবে। ভিটামিন ডি এর সর্বোৎকৃষ্ট উৎস হলো সূর্যতাপ। যাদের শরীরে সরাসরি সূর্যতাপ লাগাতে সমস্যা হয় তারা পায়ের পাতায় তাপ নিবে। সকালের খোলা হাওয়ায় বসে প্রাণায়াম করতে পারলে ভালো হয় কারণ এ সময় বাতাসে ওজন স্তর খুব ভালো থাকে। বিকেলে খোলা জায়গা বা বারান্দায় ইয়োগা করলে ভালো তাতে গায়ে মুক্ত বাতাস লাগবে। বিশুদ্ধ অক্সিজেন ফ্যাটিগ রোগির জন্য জরুরি।

পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা
রোগ প্রতিকার, প্রতিরোধ এবং নিরাময়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কোন বিকল্প নেই। করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হওয়া রোধ করার জন্য যেমন হাইজিন মেনে চলা জরুরি তেমনি এর থেকে সুস্থ হওয়ার পর ভঙ্গুর শরীরে যেন সহজেই রোগ-ব্যাধি আক্রমণ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিধি নিষেধ মেনে চলতে হবে।

– খাওয়ার আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া
– নাকে, মুখে, চোখে, কানে হাত না দেওয়া
– প্রতি সপ্তাহে বাড়তি নখ কেটে ফেলা
– টয়লেট ব্যবহারের পর ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। পায়ে পানি দেওয়া, মুখ ধোয়া
– প্রতিদিন গোসল করা। সপ্তাহে একদিন নিম বাথ নেওয়া
– সপ্তাহে একদিন স্টিম ইনহেলেশন করা
– খোলা খাবার না খাওয়া
– ময়লা ব্যবহৃত কাপড় জমিয়ে না রাখা
– ভেজা কাপড় ঘরের মধ্যে না শুকানো

সঠিক খাদ্যাভাস, নিয়মিত শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অনুশীলন শরীর পুণর্গঠন করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত করে শরীরকে কর্মক্ষম করে তোলে। ন্যাচারোপ্যাথি ব্যবস্থাপনার দিক ‍নির্দেশনাগুলো যথাযথ ভাবে মেনে চললে কোভিড-১৯ পরবর্তী ফ্যাটিগ (অবসাদ এবং ক্লান্তি) সহ অন্যান্য শারীরিক জটিলতাগুলো কাটিয়ে ওঠা যায় সহজে।

কোভিড-১৯ পরবর্তী অবসাদ কোভিড-১৯ পরবর্তী ফ্যাটিগ ন্যাচারোপ্যাথি ফ্যাটিগ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর