বিভিন্ন ধরনের মাথাব্যথা ও ন্যাচারোপ্যাথি ব্যবস্থাপনা- ০৩
১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৬:২৪
২০১৪ সালের কথা, আমি তখন ভারতের উত্তর প্রদেশের মিরাট শহরে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একজন নারী অফিসার আমাকে তার বাসায় ডেকে পাঠালেন। বাসায় যেয়ে দেখি, উনি বিছানায় শোয়া, বিছানা এলোমেলো, চোখ বন্ধ করে চুল চেপে ধরে শুয়ে আছেন। ঘর অগোছালো, মাথার কাছে কফি মগ, ক্যান্ডির খোসা, ওষুধের পাতা ইত্যাদি। আমি ওনার মাথার কাছে দাঁড়ালাম। ইশারায় আমাকে বসতে বললেন। অবস্থা দেখে বুঝলাম উনি বেশ অসুস্থ। ওনার হাজব্যান্ড আমাকে বললেন, ‘আমরা জানি যে, তুমি তোমার দেশে অল্টারনেটিভ মেডিসিন নিয়ে অনেকদিন কাজ করছ আর এখানেও এই বিষয়ের উপরই পড়াশোনা করতে এসেছো। আমার স্ত্রী বহু বছর থেকে মাইগ্রেনের রোগি। অনেক চিকিৎসা করেও ভালো হচ্ছে না। কাল রাত থেকে তীব্র ব্যথা, কোন কিছুতেই ব্যথা সারছে না। অল্টারনেটিভ মেডিসিনের মাধ্যমে কি ওর ব্যথা কমাতে পারবে?’
আমার অবস্থা বুঝুন! একেতো ভীন দেশ, তার উপর আমি সেখানে ছাত্র। ২৫০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো মাথার মধ্যে আমি এক ক্ষুদ্র সত্ত্বা হলেও এই পরিস্থিতিতে ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়ার কোন উপায় আমার ছিল না। বাংলাদেশের প্রেস্টিজ বলে কথা। ৭ বছরের অভিজ্ঞতা আমার জন্য আর্শিবাদ ছিল সেদিন। আল্লাহর নাম নিয়ে রোগির মাথায় হাত রাখলাম। উনার সাথে ধীরে ধীরে কথা বলে ব্যথা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিলাম। তারপর ন্যাচারোপ্যাথির বিশেষ পদ্ধতি আকুপ্রেসার এর পয়েন্টে থেরাপি প্রয়োগ করি এবং উনার অসহ্য ব্যথা লাঘব হয়। পরপর কয়েকদিন উনাকে থেরাপি দেই এবং ডায়েট প্ল্যান দেই এবং তা মেনে চলতে বলি। থেরাপির পাশাপাশি একটি লাইফস্টাইল গাইডলাইন ফলো করার মধ্য দিয়ে উনি ৭ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরে যেতে সক্ষম হন। এখন উনি ন্যাচারোপ্যাথি এবং লাইফস্টাইল মেডিসিনের একজন ফলোয়ার এবং ভক্ত।
‘মাথা আছে যার ব্যথা আছে তার’, কথাটি প্রায়ই শুনে থাকি আমরা। প্রায় সবাই জীবনের কোন না কোন সময়ে মাথা ব্যথায় ভুগেছি বা ভুগছি। অনেকেই আবার ব্যথা শুরু হলেই নাপা বা প্যারাসিটামল খেয়ে ফেলি। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, নাপা বা প্যারাসিটামল খেয়েও ব্যথা কমছে না বা কমলেও কিছুক্ষণ পর আবার ব্যথা ফিরে আসছে। কেন এমন হচ্ছে! কেউ কেউ আবার মাথার যন্ত্রণায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে, মানে যন্ত্রণায় বিছানা থেকে উঠতে পারে না। কেন এমন হয়? প্রাকৃতিক উপায়ে কীভাবেই বা নিরাময় করা যায়, অর্থাৎ ন্যাচারোপ্যাথির মাধ্যমে মাথাব্যথা নিরাময়ের উপায় ও জীবনযাপন পদ্ধতিই আজকের আলোচনার বিষয়।
এবার আসুন জেনে নেই মাথাব্যথার কারণ, ধরন এবং সমাধান। মাথাব্যথাকে একটি নিওরোলজিক্যাল সমস্যা বলে ধরা হয়। ব্যথা মাথায় হলেও এর উৎসমূল কিন্তু মাথা ছাড়াও অন্য নানান কারণে হতে পারে।
মাথাব্যথার কারণ
– মাইগ্রেন
– হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ
– দুশ্চিন্তা
– সাইনোসাইটিস
– কোষ্ঠবদ্ধতা
– ডিহাইড্রেশন/পানিশূন্যতা
– ক্লান্তি এবং অবসাদ
– ক্ষুধা লাগলে
– জ্বর
– চোখের সমস্যা
– অতিরিক্ত পরিশ্রম
– হতাশা, বিষন্নতা
– ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস সংক্রমণজনিত কারণে
– হরমোনজনিত সমস্যায়
– গর্ভাবস্থায়
– মাথায় আঘাত লাগা
– ব্রেন টিউমার ইত্যাদি
কারণ অনুযায়ী মাথা ব্যথার লক্ষণ এবং ধরনও ভিন্ন ভিন্ন। কারণ জানা থাকলে সহজেই ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। মাথাব্যথার কয়েকটি ধরন এবং লক্ষণ তুলে ধরছি।
মাথাব্যথার ধরন এবং লক্ষণ
মাইগ্রেন
মাইগ্রেনের ব্যথা বোঝার উপায় হলো, এতে মাথার যেকোন একপাশে ব্যথা হবে এবং যে পাশে ব্যথা হবে সে পাশের চোখও ব্যথা করবে। তীব্র মাইগ্রেনের ব্যথায় বমি ভাব বা বমি হতে পারে। দীর্ঘদিনের মাইগ্রেনের রোগি ব্যথা শুরু হওয়ার আগে চোখে আলোর ঝলকানি দেখে বা কোন শব্দ শুনতে পায়, কারো কারো হাত পায়ে কুটকুট করে। এগুলো নিওরোলজিক্যাল সিম্পটম। মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হওয়ার সাথে কতগুলো বিষয় জড়িত চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যেগুলোকে ট্রিগার বলা হয়। যেমন, কোন বিশেষ খাবার, অতিরিক্ত শব্দ, তীব্র লাইটের আলো, কোন বিশেষ গন্ধ বা ঘ্রাণ, ক্ষুধা লাগা, এলার্জি, দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত কাজের চাপ, হঠাৎ তাপমাত্রার পরিবর্তন, ঋতুস্রাব, ইত্যাদির প্রভাবে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়। এই ব্যথা ১-৭ দিন এমনকি ১৫ দিন পর্যন্ত স্থায়ি হতে পারে।
হাইপারটেনশন
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপে মাথার পিছনে ঘাড়সহ তীব্র ব্যথা হয়। এই অবস্থায় রোগি চোখে ঝাপসা দেখে, কথা জড়িয়ে যেতে পারে। ব্লাডপ্রেসার বেড়ে গেলে এবং দুশ্চিন্তা, কাজের চাপ থেকে এ ধরনের মাথাব্যথা হয়।
দুুশ্চিন্তা বা স্ট্রেস
কোন কারণে কেউ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হলে মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। যেমন, পরীক্ষার চাপ, পারিবারিক কোন ঘটনা, ইত্যাদি। এই ধরনের ব্যথা মাথার পেছনেসহ কপালের চারপাশে হয়।
সাইনোসাইটিস
এতে নাকের চারপাশসহ চোয়াল, চোখ এবং দুই ভ্রুর মাঝামাঝি তীব্র ব্যথা হয়। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। নাসাল ক্যাভিটির প্রদাহ থেকে এই ব্যথা হয়।
ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা
দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকলে, ডায়রিয়া, অতিরিক্ত ঘাম ইত্যাদি কারণে শরীর পানিশূন্য হয়ে গেলে মাথাব্যথা শুরু হয়। এ ধরনের ব্যথা মাথার এক পাশে, পিছনে বা পুরো মাথাজুড়ে শুরু হতে পারে। ব্যথার পাশাপাশি তীব্র পানির পিপাসা, অল্প এবং গাঢ় রঙের প্রস্রাব বিশেষ লক্ষণ।
কোষ্ঠবদ্ধতা
যাদের নিয়মিত পেট পরিষ্কার হয়না তারাও মাথাব্যথায় ভুগে থাকেন। কোষ্ঠবদ্ধতার রোগিরা মাথাব্যথার পাশাপাশি পেট ভার হয়ে থাকা, পায়ুপথে ঘনঘন বায়ু বের হওয়া, ক্লান্তি এবং অবসাদে ভোগেন।
হরমোনজনিত সমস্যায় মাথাব্যথা
যাদের শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা রয়েছে তারাও মাথাব্যথায় ভুগে থাকেন। যেমন, মাসিকের সময় ইস্ট্রোজেন হরমোন লেভেল ওঠানামার কারণে এই ব্যথা হয়। মাসিক ভালো হয়ে গেলে ব্যথা আর থাকে না। অনেকের আবার প্রেগন্যান্সির সময়েও হরমোনের আধিক্যের কারণে মাথাব্যথা হয়।
ক্লাস্টার হেডেক
এ ধরনের মাথাব্যথা সাধারণত ঘুমাতে যাবার ১ থেকে ২ ঘন্টা পর শুরু হয়। মাথার এক পাশে চোখসহ তীব্র ব্যথা শুরু হয়ে মুখ, ঘাড় এবং পুরো মাথায় ছড়াতে পারে। ব্যথা ১৫ মিনিট থেকে ৩ ঘন্টা এমনকি সপ্তাহ থেকে মাস পর্যন্ত স্থায়ি হতে পারে। ব্যথার সময় আক্রান্ত চোখ লাল হয়ে ফুলে যায় এবং চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে, মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যায়, ব্যথার পাশের নাক দিয়ে অনবরত পানি পড়তে থাকে। এ ধরনের ব্যথা বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে হয় যেমন, শীতের শুরুতে বা গরমে। এই ধরনের ব্যথার কারণ হিসেবে শরীরের জৈব ঘড়ি হাইপোথ্যালামাসের ত্র্রুুটিকে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও ব্রেন টিউমার, কিছু ওষুধেরে প্রভাব, কোন জটিল অসুখ থেকেও ক্লাস্টার হেডেক হতে পারে।
মাথাব্যথা প্রতিকার এবং নিরাময়ে ন্যাচারোপ্যাথি ব্যবস্থাপনা
মাথাব্যথার যন্ত্রণা থেকে প্রতিকার এবং নিরাময়ে ন্যাচারোপ্যাথিতে রয়েছে কার্যকরি কিছু পদ্ধতি। তবে চিকিৎসা শুরু করার আগে অবশ্যই সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করতে হবে। অর্থ্যাৎ, মাথাব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করে সে অনুযায়ী থেরাপির পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োজন হলে রোগ নির্ণয়ের জন্য MRI, CT Scan করতে হবে। কারণ, অনেক সময়ই মাথাব্যথা হতে পারে জটিল কোন রোগের লক্ষণ। এসব ক্ষেত্রে ব্যথা কমানোর পাশাপাশি মূল রোগের চিকিৎসা করাতে হয়। লাইফস্টাইল পরিবর্তন এবং থেরাপির মাধ্যমে মাইগ্রেন, দুশ্চিন্তা, কোষ্ঠবদ্ধতা ইত্যাদির কারণে যে মাথাব্যথা হয় তা সহজে সেরে যায়।
ন্যাচারোপ্যাথি ব্যবস্থাপনা
১. আকুপাংচার
তাৎক্ষনিক মাথাব্যথা কমাতে যাদুকরি আকুপাংচার পয়েন্ট হলো Hegu (LI-4), Baihui (DU-20), Sishencong (Ex-6), Shaochong (H-9). যাদের Needle Phobia রয়েছে অর্থ্যাৎ সূঁচ ফোটাতে ভয় পায় তারা এসব পয়েন্টে আকুপ্রেসার করলেও মাথাব্যথা কমে যাবে।
২. রিফ্লেক্সোলজি
হাতের এবং পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে মস্তিষ্ক সংক্রান্ত ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট রয়েছে। তীব্র মাথাব্যথার সময় এসব পয়েন্টে একনাগাড়ে ২ মিনিট থেরাপি নিলে মাথাব্যথা কমে যায়। যারা পয়েন্টগুলো চেনেননা, তারা যদি শুধু হাতে-পায়ের সম্পূর্ণ বৃদ্ধাঙ্গুলে ২ মিনিট চেপে ধরে রাখেন, তাতেও ব্যথা ভালো হয়।
৩. যোগাসন
হস্তপদাসনা, সেতুবন্ধাসনা, শিশুআসনা, মারজারিআসনা, পশ্চিমোত্তাসনা, অধোমুখো শবাসনা, পদ্মাসনা, শবাসনা নিয়মিত করলে ব্যথা সেরে যায়।
৪. প্রাণায়াম
নিয়মিত ভ্রামরী প্রাণায়াম, অনুলম বিলম, কপালভাতি এবং ভ্রস্তিকা প্রাণায়াম করলে মাইগ্রেন সহ যেকোন মাথাব্যথা নিরাময় হয়। এছাড়াও Deep Relaxation Technique (DRT), Yoga Nidra এসব রিলাক্সেশন এক্সারসাইজ মাথাব্যথা সারাতে খুবই উপকারি।
৫.মাসাজ
অ্যারোমা থেরাপি (Lavender or Peppermint Oil Massage), হেড মাসাজ, ফুট মাসাজ মাংসপেশিকে রিলাক্স করে রক্তনালী এবং নার্ভের উপর চাপ কমিয়ে মাথাব্যথা সারাতে সাহায্য করে।
৬. হাইড্রোথেরাপি
কপাল, মাথার পিছনে এবং মাথার যে অংশে ব্যথা হচ্ছে সেখানে ঠান্ডা-গরম পানির সেক দিলে ব্যথা কমে যায়। একে অল্টারনেটিভ হট এন্ড কোল্ড প্যাক বলে। এছাড়াও ১০ মিনিট হট ফুট বাথ নিলেও উপকার পাওয়া যায়।
৭. ক্রোমোথেরাপি বা রঙ চিকিৎসা
ব্যথার সময়ে ঘরের আলো নিভিয়ে ঘাড় আর মাথায় নীল আলোর রশ্মি ৫ থেকে ১০ মিনিট দিলে ব্যথার যন্ত্রণা কমে আরাম পাওয়া যায়।
৮. অক্সিজেন থেরাপি
বিশুদ্ধ অক্সিজেন ইনহেলেশন মানে শুদ্ধ বাতাস গ্রহণ মাথাব্যথা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় দেখা গেছে, মাইগ্রেন এবং ক্লাস্টার হেডেক এর সময় মাথায় রক্তপ্রবাহ অনেক বেশি থাকে, অক্সিজেন ইনহেলেশন এই চাপ কমিয়ে আনে এবং ব্যথা কমায়।
৯. নিউট্রিশন এন্ড ডায়েট
আধা কাপ পালং শাকের রস এবং আধা কাপ গাজরের রস একসাথে মিশিয়ে সকালে খালিপেটে দুইমাস খেলে মাথাব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে। এছাড়াও ভিটামিন বি-২, বি-৬, ভিটামিন ডি, ম্যাগনেসিয়াম এবং কো এনজাইম কিউ ১০ (Coenzyme Q10) সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
১০. হারবাল উপায়ে
ক. হারবাল প্যাক
– ব্যথার সময় আদা বেটে বা বাঁধাকপি বেটে কপালে এবং মাথার দু’পাশে প্রলেপ লাগিয়ে ১০ মিনিট রাখলে ব্যথা কমে।
– চন্দন এবং কর্পূরের গুড়ো পেস্ট করে কপালে প্রলেপ দিলেও ব্যথা কমে।
– তাৎক্ষনিক ব্যথা কমাতে আমলকি এবং হলুদের গুড়ো পানিতে গুলে এই প্যাক কপালে লাগালে ব্যথা কমে যায়।
– দুটো লেবু পাতা থেতলে হাতের তালুতে নিয়ে শুকলে তাৎক্ষনিক মাইগ্রেনের ব্যথা কমে।
খ. হারবাল পানীয়
– ক্যামোমাইল ফুলের পাউডার ১ চা চামচ এক কাপ পানিতে ফুটিয়ে ছেঁকে পান করলে সাথে সাথে মাইগ্রেনের মাথাব্যথা সেরে যায়। এই পানীয় টানা ২ মাস খেলে মাইগ্রেনের ব্যথা ভালো হয়।
– আমলকি মাথাব্যথা সারাতে খুব উপকারি। প্রতিদিন আমলকি গুড়ো খেলে মাইগ্রেনের মাথাব্যথা থেকে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব।
– যে পাশে মাথাব্যথা হচ্ছে সে পাশের নাকে ৭ ফোঁটা খাঁটি সরষের তেল দিলে মাইগ্রেনের ব্যথা সেরে যায়। এভাবে দিনে দু’বার করে টানা ৫ দিন দিলে মাথাব্যথা ভালো হয়।
১০. আইসোলেসন এন্ড হাইড্রেটিং
মাইগ্রেনের মাথাব্যথা শুরু হলে থেরাপির পাশাপাশি কোলাহলবিহীন শান্ত নিরব রুমে, লাইট নিভিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। ঘুমানোর আগে পানীয় পান করে শুতে হবে যাতে শরীর হাইড্রেটেড থাকে। এছাড়াও প্রতিদিন রাতে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যেতে হবে এবং ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
যা করা যাবে না
– চা-কফি, সিগারেট, অ্যালকোহল, নেশাদ্রব্য, চকোলেট, ক্যান্ডি, ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড, কোমল পানীয় এসব খাওয়া এবং পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
– রাত জেগে মোবাইল, কম্পিউটার চালানো যাবে না।
– যেহেতু রাগ, ক্ষোভ, দুশ্চিন্তা, হতাশা কোন বিষয়ের সমাধান দেয় না, তাই এসব এড়িয়ে চলতে হবে।
– মাথাব্যথার ট্রিগারগুলো জানতে হবে এবং সেগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে।
– রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
– অপ্রয়োজনীয় কথা, কাজে জড়ানো যাবে না।
মানুষের শরীর কম্পিউটার হলে মস্তিষ্ক হল তার সিপিইউ। সকল কাজ নিয়ন্ত্রিত হয় মাথা থেকে। মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে ইতিবাচক চিন্তার অভ্যাস, জীবনযাপন পদ্ধতি এবং সুষম খাদ্যাভ্যাসের কোন বিকল্প নেই। ন্যাচারোপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রাকৃতিক উপায়ে ইতিবাচক জীবনশৈলীর দিক নির্দেশনা দেয় যার মাধ্যমে রােগ নিরাময়ের পাশাপাশি ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক কল্যাণ সাধিত হয়।
আরও পড়ুন,
পর্ব-০১।। ন্যাচারোপ্যাথি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা
পর্ব-০২।। কোভিড-১৯ পরবর্তী ফ্যাটিগ সারাতে ন্যাচারোপ্যাথি
ডা. ঐন্দ্রিলা আক্তার ন্যাচারোপ্যাথি ন্যাচারোপ্যাথি ব্যবস্থাপনা মাইগ্রেন মাইগ্রেনের ব্যথা মাথাব্যথা