ব্যস্ত জীবনে নাস্তার সময় পান না? জেনে নিন উপায়
৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:২৫
অনেকেই সকালের নাস্তা করেননা বা খুবই কম খান। কিন্তু সারাদিন আপনার শরীরকে কর্মক্ষম রাখার জন্য সকালের নাস্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সকালে পুষ্টিকর খাবার খেলে তা পরিপাক ক্রিয়া সচল রাখে, ক্ষুধা কমায়, এবং স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়া দিনভর ঘন ঘন ক্ষুধা লাগাও কমায়। নিচের পরামর্শগুলো আপনাকে স্বাস্থ্যকর নাস্তার অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
১. সকালের নাস্তা বাদ দেবেন না কিছুতেই
সকালের খাবার সারাদিনের জন্য পরিপাক ক্রিয়াকে সচল করে। তাই প্রতিদিনের জীবনযাপনে সকালের নাস্তাকে গুরুত্ব দিন। যারা নিয়মিত নাস্তা করেন না, তাদের পেট দীর্ঘক্ষণ খালি থাকার জন্য নানারকম স্বাস্থ্যসমস্যা বেশি দেখা যায়।
২. সকাল শুরু হোক এক গ্লাস পানি দিয়ে
রোজ সকালে খালি পেটে স্বাভাবিক তাপমাত্রা বা কুসুম গরম এক গ্লাস পানি পান করুন। এটি পরিপাকক্রিয়ার জন্য খুবই ভালো। পানির সঙ্গে লেবুর রস যোগ করতে পারেন। লেবুর রসে থাকা ভিটামিন সি আপনার শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করতে সাহায্য করবে।
৩. খেতে হবে ঘুম থেকে ওঠার একঘণ্টার মধ্যে
সকালের খাবার সারাদিন ব্লাড সুগার লেভেল স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। তাই ঘুম থেকে ওঠার পর দ্রুত খাবার খেয়ে নিন।
৪. দ্রুত এবং সহজে তৈরি খাবার খান
অনেকেই সকালের খাবারে অভ্যস্ত না বা, সকালে কিছু খেতে পারেন না। অনেকের আবার সকালে নাস্তা তৈরির মতো যথেষ্ট সময় নেই। এমন হলে খুব সহজ কিছু নাস্তার চিন্তা করা যেতে পারে। যেমন, ফলের সঙ্গে দই, বাদাম ও বীজ, ওটস অথবা আপনার পছন্দের যেকোন স্বাস্থ্যকর খাবার। এভাবে শুরু করলে আপনি খুব দ্রুত নাস্তা করায় অভ্যস্ত হতে পারবেন। কিছু নাস্তা আগের দিন রাতেই তৈরি করে রাখতে পারেন। যেমন, ফলের সালাদ, ভিজিয়ে রাখা শস্য, ইত্যাদি।
৫. দিনের শুরুতেই স্বাস্থ্যকর খাবার
নাস্তায় প্যাকেটজাত খাবার পরিহার করুন। সকালবেলায় স্বাস্থ্যকর এবং প্রয়োজনীয় খাবারগুলো হতে পারে গমজাতীয় খাবার, চর্বিছাড়া প্রোটিন, কম চর্বিযুক্ত দুধ, ফল, শাকসবজি ইত্যাদি। এছাড়া সম্পৃক্ত চর্বি, সোডিয়াম ও অল্প পরিমানে চিনি যোগ করুন। যেমন, গমের রুটি, সিরিয়াল, দই, ফল, ডিমসিদ্ধ, ওটস ইত্যাদি।
৬. নাস্তায় রাখুন প্রোটিন
প্রোটিন হজম হতে সময় বেশি লাগে। তাই আপনি সকাল আর দুপুরের মাঝামাঝিতে হালকা কিছু খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব নাও করতে পারেন। চর্বিহীন প্রোটিন এবং আঁশযুক্ত খাবার যেমন, কম চর্বিযুক্ত টক দইয়ের সঙ্গে চিনিবিহীন সিরিয়াল ও ফল দিয়ে খুবই স্বাস্থ্যকর একটি নাস্তা হতে পারে। এছাড়া ডিম, পনির, চর্বিছাড়া মাছ-মাংস এবং বাদাম হতে পারে উপকারী প্রোটিনের অন্যতম উৎস।
৭. খাবার গরম অবস্থায় খান
আপনি যদি ঠান্ডা খাবার খান, তাহলে তার সঙ্গে অবশ্যই সঙ্গে চা, কফি বা গরম কোন পানীয় রাখুন। পানীয়টি হতে হবে আপনার নাস্তারই অংশ। খাবার ছাড়া শুধু পানীয় আমাদের শরীরের পর্যাপ্ত চাহিদা মেটাবে না। পানীয়সহ গরম খাবার আপনার পরিপাক ক্রিয়াকে সচল রাখবে। তবে কফি খেলে সেটা অবশ্যই বাসায় তৈরি করে খান। কারণ বাসায় বানানো কফিতে আপনি চিনি এবং অন্যান্য ক্যালরির পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারছেন। কোন কফিশপ থেকে কফি কিনলে, অবশ্যই কম ক্যালরিযুক্ত বা ব্ল্যাক কফির অর্ডার করুন।
৮. নাস্তায় ভিন্নতা আনুন
সকালের নাস্তায় প্রতিদিন একই ধরনের খাবার না খাওয়ার চেষ্টা করুন। কিছুদিন পর পর নাস্তার পদে ভিন্নতা আনুন। নাস্তার অন্তত দু-একটি পদ মাঝেমধ্যে পরিবর্তন করুন। প্রতিদিন একই ধরনের খাবার একদিকে যেমন ওজন কমাতে বাঁধা সৃষ্টি করে, অন্যদিকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যারও কারণ হতে পারে। সব ধরনের পুষ্টি পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই কয়েক ধরনের খাবার খেতে হবে। এর কারণ, কোন খাবারেই সব ধরনের পুষ্টিগুণ থাকে না।
৯. সময় নিয়ে খাবার খান
সকালের নাস্তা দ্রুত না খেয়ে একটু সময় নিয়ে বসে খান। খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খান। এটি আপনাকে কম খেতে সাহায্য করবে এবং হজমশক্তি বাড়াবে।