অফিসে স্বস্তি চান? এই বিষয়গুলো এড়িয়ে চলুন
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৯:৫৫
আজকাল কি প্রায়ই কর্মক্ষেত্রে বা অফিসে মনোযোগ হারাচ্ছেন? সেখানকার ছোট ছোট সমস্যা নিয়ে বেশি ভাবছেন? সেটা আবার পারিবারিক জীবনেও প্রভাব ফেলছে কি? চলুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে এ ধরনের সমস্যাগুলোে এড়িয়ে স্বস্তিতে অফিস করতে পারবেন।
প্রায় প্রতিটি অফিসেই ব্যক্তিত্বের সংঘাত বা দ্বন্দ্ব খুবই সাধারন একটি সমস্যা। প্রথম থেকেই ছোট সমস্যাগুলোর সমাধান না হলে পরে তা জটিল পরিস্থিতির দিকে মোড় নেয়। কারণ এসব ক্ষেত্রে মানুষ সমস্যা সমাধানের চেয়ে ব্যক্তিত্বকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়। অফিসে এমন দ্বন্দ্ব বেড়ে গেলে একসময় তা বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি করে, যা অফিসের কর্মপরিবেশ, মানুষের নৈতিকতা ও জীবনমানে প্রভাব ফেলে।
তাই এ ধরনের সমস্যা এড়ানোর জন্য দুপক্ষকেই তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে কিছু বিষয়ে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হয়। যদিও আমরা অন্যের ব্যক্তিত্বকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না, কিন্তু অবশ্যই আমরা নিজেদের আবেগ, অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এমন কিছু কৌশল অবলম্বন করলে আমরা কর্মক্ষেত্রে অবশ্যই সহকর্মীদের সঙ্গে ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব এড়িয়ে চলতে পারবো।
অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলোচনা এড়িয়ে যান
অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে আপনার সমস্যা নিয়ে কথা বলবেন না। এটি পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলতে পারে। যে সমস্যাটি নিয়ে আপনি দুশ্চিন্তায় আছেন, সেটি আপনার সহকর্মীদের মাঝে অস্বস্তি ও ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানের জন্য সমস্যার সমাধান করা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রয়োজনে আপনার সুপারভাইজারকে জানাতে পারেন। তবে নিজে থেকেই সমস্যার সমাধান করে নেয়া সবচেয়ে ভালো উপায়।
তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া থেকে বিরত থাকুন
যারা আপনার ক্ষতি চাইতে পারে তারা বিভিন্ন সময় কাজে বাধা তৈরি করতে পারে। এসব পরিস্থিতিতে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে নিজেকে সময় দিন। একটু ভেবে নিতে পারেন আপনার কেমন প্রতিক্রিয়া দেওয়া উচিত। এই বিরতি দু’পক্ষের মধ্যে অনাকাঙ্খিত ব্যক্তিত্বের সংঘাত এড়িয়ে যেতে খুব ভালোভাবে সাহায্য করতে পারে।
নিজের দিকে তাকান
তর্ক-বিতর্কের সময় আপনি কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পারিপার্শ্বিক দিকগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিজেকে নিয়ে ভাবুন। আপনি চাইলেই পরিস্থিতি খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এমন পরিস্থিতিতে আপনি কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারলে নিজের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।
পরিস্থিতিকে ভিন্নভাবে দেখার চেষ্টা করুন
কর্মক্ষেত্রে কারো সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়লে সাধারণত সে আপনার সামনে তাকে সঠিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। এক্ষেত্রে রাগান্বিত বা খারাপ ব্যবহার না করে তাকে মনে মনে শিশু হিসেবে চিত্রায়িত করতে পারেন। ধরে নিতে পারেন ডায়াপার পরা একটি শিশু খুব রেগে আছে এবং চিৎকার করছে। এটি আপনাকে ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখবে।
সহকর্মীদের দলগত শক্তির দিকে নজর দিন
কর্মক্ষেত্রে আপনার টিমের সদস্যদের যোগ্যতা ও দলগত শক্তির দিকে মনোযোগ দিন। পরিস্থিতি খারাপ হলে আমরা সাধারণত এমন কিছু করার চেষ্টা করি যা খুব বেশি কাজ করে না। অনেকসময় নেতিবাচক চিন্তা করি। এক্ষেত্রে ইতিবাচক ভাবনা আপনাকে অন্তত মধ্যবর্তী জায়গায় থাকতে সাহায্য করবে।
সহযোগী মনোভাব দেখান
সহকর্মীকে আপনার পরিকল্পনার বিষয়ে বুঝিয়ে বলুন এবং তার মতামত নিন। তার কোন পরিকল্পনা থাকলে তাও জানার চেষ্টা করুন। কোন সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে তার মতামত নিন। এতে দুপক্ষের মধ্যে সম্পর্ক ভালো হয়। ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব কমে আসে।
মধ্যবর্তী অবস্থান থেকে সবকিছু বোঝার চেষ্টা করুন
সবকিছু দুপক্ষের বোঝাপড়ার মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। তবে যদি দ্বন্দ্ব নিয়ন্ত্র্রণ করতে ব্যর্থ হন তাহলে অবশ্যই আপনার সুপারভাইজার, মানবসম্পদ বিভাগ বা এমন কারো সঙ্গে কথা বলুন যে কিনা মধ্যবর্তী অবস্থানে থেকে এর সমাধান দিতে পারবে।
কর্মক্ষেত্রের সমস্যাগুলো অনেক সময় পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব ফেলে। তাই অফিসের সমস্যাগুলো জটিল হওয়ার আগেই সমাধান করে নিন। আপনি যদি কোন প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার বা ম্যানেজার হয়ে থাকেন এবং সহকর্মীদের মধ্যে ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব দেখতে পান, তাহলে প্রথমে তাদের বলুন, নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করার জন্য। সেটা কাজ না করলে অবশ্যই সে সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব আপনার ওপরই বর্তায়।
সারাবাংলা/এসএসএস
অফিসে স্বস্তি অফিসের সমস্যা কর্মক্ষেত্রে সমস্যা ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব ব্যক্তিত্বের সংঘাত লাইফস্টাইল সারাবাংলা সুন্দর যাপন