Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আপেল সাইডার ভিনেগারে এত কিছু !


২৩ মার্চ ২০১৮ ১৩:৫৭

লাইফস্টাইল ডেস্ক।।

আমাদের দেশে অতটা পরিচিত না হলেও পশ্চিমা দুনিয়ায় আপেল সাইডার ভিনেগার রান্নার উপকরণ হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। রান্না ছাড়াও নানারকম ঘরোয়া চিকিৎসাতেও বেশ কাজে লাগে এটি। অমিশ্রিত আপেল সাইডার ভিনেগারে থাকে নানারকম উপকারী এনজাইম, খনিজদ্রব্য; এছাড়া কিছু বন্ধুসুলভ ব্যাকটেরিয়াও থাকে। যার ফলে এই ভিনেগারটি দেখতে কিছুটা ঘোলাটে লাগে। এই উপকরণকেই বলা হয় ‘মাদার’ যা বোতলের নিচে ঘন মেঘের মত পড়ে থাকে। ধারণা করা হয়, এই মাদারই সমস্ত স্বাস্থ্যগত উপকারিতা এনে দেয়।

বিজ্ঞাপন

আপেল সাইডার ভিনেগার কীভাবে তৈরি হয়

এইধরণের ভিনেগার দুইধাপে তৈরি হয়। প্রথমেই আপেল থেকে রস বের করে নেওয়া হয়। এরপর গাঁজন প্রক্রিয়ার জন্য ব্যাকটেরিয়া আর ইস্ট যোগ করা হয়। এতে করে চিনি এলকোহলে রূপান্তরিত হয়।

দ্বিতীয় ধাপের গাঁজন প্রক্রিয়ায় এতে থাকা ব্যাকটেরিয়া এলকোহলকে এসিটিক এসিডে রূপান্তরিত করে ভিনেগারে পরিণত করে।

তবে এই এসিটিক এসিডই কিন্তু ভিনেগার নয়। এটা আসলে গাঁজন প্রক্রিয়ার ফলে উৎপাদিত একধরণের বাইপ্রোডাক্ট বা উপজাতক। আপেল সাইডারের যা উপকার তা মূলত তাতে থাকা ব্যাকটেরিয়ার জন্যই। আপেল সাইডারের নানারকম উপকারিতা থাকলেও আজ আমরা বিশেষ ছয়টি উপকারিতা নিয়ে জানব।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে আপেল সাইডার

  • দিনের প্রধান তিনটি খাবার গ্রহনের আগে ১ টেবিলচামচ আপেল সাইডার ভিনেগার এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। এটা একধরণের এন্টি-গ্লাইসেমিক এফেক্ট হিসেবে কাজ করবে ও ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে খাবার গ্রহণের মাঝে রক্তে চিনি গ্রহণের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
  • উচ্চমাত্রার কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের সময় পানির সাথে আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে খাওয়া ভালো। এতে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে। ফলে কার্বোহাইড্রেট থেকে রক্তে চিনি মিশ্তে বাঁধা দেয়।
  • রুটি খাওয়ার সময় রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • ঘুমের আগে দুই টেবিলচামচ আপেল সাইডার ভিনেগার পানির সাথে মিশিয়ে খেলে এটা রক্তে চিনির মাত্রা কমানোর পাশাপাশি ভালো ঘুম হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেয়।

স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে 

বিজ্ঞাপন

আপেল সাইডারে থাকা এসিটিক এসিড খাবার খেলে একধরণের তৃপ্তি আনে। এতে করে খাবার গ্রহণের পরিমাণ কমে যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

৩ ক্রেভিংস বা হুটহাট পাওয়া তীব্র ক্ষুধা দমায়

আপেল সাইডার ভিনেগারে থাকা রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা মিষ্টি খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা দমন করে। আপনার যদি চিনি বা মিষ্টি খাওয়ার জন্য তীব্র আসক্তি থাকে তাহলে ৮ আউন্স পানির সাথে ১ টেবিলচামচ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে খেয়ে নিন। মিষ্টি খাওয়ার তীব্র ইচ্ছাটা চলে যাবে।

কোলেস্টেরল মাত্রায় উন্নয়নে

উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলের সবচাইতে ভয়ানক ব্যাপার হচ্ছে এটা অক্সিড্যান্টে পরিণত হয়ে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। আপেল সাইডার ভিনেগার কোলেস্টেরলকে ড্যামেজ হওয়া থেকে বাঁচায়।

আপেল সাইডারে থাকে ক্লোরোজেনিক এসিড যা এলডিএল বা কম ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন বা খারাপ মানের কোলেস্টেরলকে রক্তপ্রবাহের মাঝে দানা বাঁধতে দেয়না।

পিএইচ লেভেলে ভারসাম্য ও পেটের গ্যাস তাড়াতে

এসিটিক এসিড থাকা স্বত্ত্বেও/স্বত্বেও আপেল সাইডার লেবু পানির মতই শরীরে একধরণের এলকালাইজিং প্রভাব ফেলে। এটা আমাদের শরীরের পিএইচ ব্যালান্স বা জলীয় ভারসাম্য বজায় রাখে।

যাদের নিম্নমাত্রার এইচসিএল উৎপাদন হয় তাদের ক্ষেত্রে এই ভিনেগারে থাকা এসিটিক এসিড পেটে গ্যাস উৎপাদনে সাহায্য করে। এটা এমনকি আমরা যে খাবার খাই সেটা থেকে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান শোষণে ভুমিকা রাখে।

 

 

সংক্রমণ রোধ ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসে

প্রাচীন গ্রীক চিকিৎসক হিপোক্রেটস খীস্টপূর্ব দুইহাজার বছরেরও আগে ক্ষত সারতে ভিনেগার ব্যবহার করতেন। আধুনিক গবেষণা দেখাচ্ছে ভিনেগার ই. কোলি আর এস. অরিয়াস ধরণের ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে সক্ষম। তাই ক্ষত সারতে ঘরোয়া ব্যবহারের জন্য এটা বেশ নিরাপদ পদ্ধতি।

 

চলুন এখন জেনে নেই আরও কীভাবে এই ভিনেগার ব্যবহার করা যায়

 

  • দিনের প্রধান খাবারের আগে এক কাপ পানিতে এক টেবিলচামচ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে খেলে তা সারাদিনের জন্য পিএইচ মাত্রায় ভারসাম্য বজায় রাখে।
  • সিংক বা বড় গামলায় পানি ভরে কয়েক চামচ ভিনেগার মেশান আর তাতে শাক সবজি মিনিট পাঁচেকের জন্য ভিজিয়ে রাখুন আর হালকা করে নাড়ুন। এরপর এগুলো ডলে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। শাকসবজি তাজা থাকবে।
  • ঘর পরিষ্কার করতে পানির সাথে আপেল সাইডার মিশিয়ে পরিষ্কার করুন।
  • সালাদে টক আর চটপটা ভাব আনতে সালাদ ড্রেসিং এ আপেল সাইডার ভিনেগার মেশান।

কিছু সতর্কতা

  • গর্ভবতী ও বাচ্চাকে দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মায়েদের জন্য আপেল সাইডার নয়।
  • আপেল সাইডার রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করলেও যারা ডায়াবেটিসের রোগী তাদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া আপেল সাইডার না খাওয়াই ভালো।
  • যারা ইনসুলিন নিচ্ছেন তাদের জন্য আপেল সাইডার গ্রহনে সতর্ক হতে হবে। কারণ অধিক পরিমাণ আপেল সাইডার পটাসিয়ামের মাত্রা কমায়। বিশেষ করে ইনসুলিন যদি ডিগোক্সিন বা ডিউরেকটিক ধরণের হয় তাহলে আরও বেশি সতর্কতা প্রয়োজন।

উপরের বর্ণনা পড়ে আপেল সাইডার ভিনেগারকে কোন ধন্বন্তরি ওষুধ না ভাবাই ভালো। এটা শুধু স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কিছুটা ভূমিকা রাখে মাত্র। চেষ্টা করুন একদম ‘র’ বা অমিশ্রিত আপেল সাইডার ব্যবহার করতে। যাতে ব্যাকটেরিয়া আর এনজাইমের মাত্রা ঠিকঠাক থাকে।

 

 

ছবি- ইন্টারনেট

সারা বাংলা/আরএফ/এসএস

 

 

অ্যাপল সাইডার ভিনেগার

বিজ্ঞাপন

নতুন বার্সেলোনায় মুগ্ধ মেসি
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১০:৫৫

মাদকের টাকার জন্য মা'কে খুন
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭

আরো

সম্পর্কিত খবর