রোজায় যা খাওয়া যাবে আর যা খাওয়া যাবে না
১৪ এপ্রিল ২০২১ ১৬:০৬
আরবি হিজরি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আজ বুধবার (১৪ এপ্রিল) শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। এমাসে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা স্রষ্টার নৈকট্য লাভের আশায় তাঁর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে একমাস ধরে রোজা পালন করে থাকেন। পুরো বছরজুড়ে আমরা যে সময়ে খাবার খেয়ে অভ্যস্ত রোজার মাসে তার ব্যতিক্রম ঘটে। এমাসে সূর্যোদয়ের পূর্ব থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ফাস্টিং বা উপবাস করতে হয়। পুরো দিন সব ধরনের শক্ত এবং তরল খাবার খাওয়া থেকে বিরত থেকে রোজা পালন করা হয়। রোজার মাসে ধর্মীয় উপাসনার পাশাপাশি সেহরি এবং ইফতারে সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে খাবার খেলে সারাদিনের পবিত্র রোজা যেন হয়ে ওঠে রোগ প্রতিরোধ এবং নিরাময়ের এক অব্যর্থ উপায়।
রোজা রেখে যেভাবে সুস্থ থাকবেন
রোজার সময় সারাদিন কোন খাবার এবং পানীয় গ্রহণ না করলেও আমরা আমাদের ব্যক্তিগত, সাংসারিক এবং পেশাগত দৈনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যাই নিয়মিত। জীবনের গতিশীলতার প্রয়োজনে শরীরের অভ্যন্তরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং প্রতিটি সিস্টেমকেই সচল থাকতে হয়। আর এই সচলতার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত শক্তি। আর এই শক্তির জন্য যে জ্বালানী প্রয়োজন তা আসে খাবার থেকে। প্রশ্ন আসতে পারে রোজার সময় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকলে সেই জ্বালানী আসবে কোথা থেকে!
আমরা সারা বছর যে সমস্ত খাবার খেয়ে থাকি তার সবটাই শরীরের কার্যক্রম চালাতে প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজনের অতিরিক্ত শক্তি শরীর লিভার এবং মাংসপেশীতে জমা করে রাখে। ফাস্টিং বা রোজা পালনের সময় শরীর সেই জমিয়ে রাখা জ্বালানী পুড়িয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে। পাশাপাশি রোজার সময় আমরা সেহরি এবং ইফতারে যে খাবার খেয়ে থাকি তা থেকেও শরীর সারাদিনের জন্য শক্তি পেয়ে থাকে। ফুয়েল বা শক্তি হিসেবে জমা থাকা অতিরিক্ত চর্বি পুড়ে যাওয়ার ফলে শরীর হালকা ও ভারমুক্ত হয়। সেহরি এবং ইফতারে সঠিক খাদ্য নির্বাচন রোজার মাসে আমাদের শরীর পুনর্গঠন হতে সাহায্য করে। পুরাতন কোষ এবং বর্জ্য ধ্বংস করে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে। ওজন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নানা ধরনের অ-সংক্রামিত রোগ যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, থাইরয়েড এমনকি ক্যানসার প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
শুধু অসংক্রামিত রোগব্যধিই নয়, রোজায় সঠিক এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস সংক্রমিত রোগ প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সংক্রমিত রোগ কোভিড-১৯ নিয়ে সারা বিশ্ব এখন অস্থিতিশীল স্বাস্থ্য পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ সৃষ্টিকারী করোনা ভাইরাসকে নির্মূল করা এখনও নাগালের মধ্যে আসেনি। শতকরা বিশ জন মানুষ প্রতিদিন এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হচ্ছে। আশার কথা হচ্ছে করোনা মোকাবেলা করে তারাই জয়ী হচ্ছে যাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী। যারা স্বাস্থ্যকর সুষম খাবার খান এবং নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম বা শরীরচর্চা করেন, শরীরে রোদ লাগান, তাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অন্যদের তুলনায় রোগ জীবানু ধ্বংসে বেশি কার্যকরী। তাই রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সচেতনতার পাশাপাশি অবশ্যই সঠিক পুষ্টি চাহিদা অনুযায়ী সেহরি এবং ইফতারে খাদ্য নির্বাচন করতে হবে। আসুন দেখে নেই সুস্থতার জন্য সেহরি ও ইফতারে কিধরণের খাবার খেতে পারেন।
ইফতার
সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারের প্রথম খাবার হলো পানীয়। পানীয় নির্বাচনে সতর্ক হতে হবে। আমরা সাধারণত ইফতারে নানা ধরনের শরবত পান করে থাকি। এসব শরবতে থাকে চিনি এবং নানান প্যাকেটজাত ফলের পাউডার। এসব কৃত্রিম উপাদান শরীরের কোন উপকারেতো আসেই না বরং সারাদিন রোজা রেখে শরীরের যে উপকারটুকু হয় দিনশেষে তাও অপকারে পরিণত করি হয়।
সুষম পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার নির্বাচন
পানীয়
১. ইফতারের প্রথম পানীয় হতে হবে কয়েক ঢোঁক সাধারণ খাবার পানি।
২. এরপর এক গ্লাস পানিতে এক টেবিল চামচ লেবুর রস দিয়ে পান করতে হবে। তবে যাদের এসিডিটি বা আলসার রয়েছে তারা লেবু পানির পরিবর্তে খাঁটি আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পানি খাবেন।
৩. শরবত হিসেবে এই গরমে বেলের শরবত খুবই উপকারি। বেলের শরবত চিনির পরিবর্তে খাঁটি গুঁড় দিয়ে বানাতে হবে। বেল মিষ্টি হলে গুড় মেশানোরও প্রয়োজন নেই।
৪. ডাবের পানি ইলেকট্রোলাইটেরর ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ইফতারে মাঝে মাঝে ডাবের পানি পান করা ভালো।
৫. তরমুজ এবং খেঁজুরের জুস ইফতারে একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়। কয়েক টুকরো তরমুজেএ সঙ্গে এক বা দুইটি খেঁজুর ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে ছেঁকে নিলেই চমৎকার স্বাদের এই পানীয়টি তৈরি হয়ে যায়। অতিরিক্ত চিনি ব্যবহার না করায় এটি খুবই স্বাস্থ্যকর পানীয়।
৬. ডালিমের রসের সঙ্গে তোকমা এবং গুড় মিশিয়ে তৈরি করা যায় ইফতারের জন্য মজাদার একটি পানীয়।
৭. গরমের সময় দিন শেষে ইফতারে তরমুজ, বাঙ্গি, মালটা, আনারস ইত্যাদি রসালো ফলের রস পান করলে শরীরে প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নানারকম ভিটামিন এবং মিনারেলের চাহিদাও পূরণ হয়।
৮. টক দই, খেঁজুর, কলা, আর বাদাম এক সাথে ব্লেন্ড করে নিলে এটিও ইফতারের একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু পানীয় হিসেবে পরিবেশন করা যায়।
৯. গরমের সময় ইফতারে টক দইয়ের ঘোল পান করলে শরীরে ক্যালসিয়াম সরবরাহ হয় যা হজম প্রক্রিয়ায় প্রোবায়োটিকস্ (গুড ব্যাকটেরিয়া) এর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ফলে রোজার সময়ও হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে।
পুরো রমজান মাস জুড়ে উপরের পানীয়গুলোর মধ্য থেকে পছন্দ অনুযায়ী ইফতারে পরিবেশন করা যায়। এতে দিনশেষে যেমন তৃষ্ণা মিটবে তেমনি শরীরের পুষ্টি চাহিদাও সঠিকভাবে পূরণ হবে।
খেজুর এবং শুকনো ফল
১. ইফতারে খেঁজুর খেয়ে রোজা ভাঙা ইসলামিক ঐতিহ্যের অংশ। খেঁজুরে রয়েছে শুদ্ধ প্রাকৃতিক চিনি যা পর্যাপ্ত ক্যালরি সরবরাহ করে। পটাশিয়াম, কপার, ম্যঙ্গানিজ নামক মিনারেলসের পাশাপাশি খেজুরে রয়েছে যথেষ্ট ফাইবার। তাই খেঁজুর দিয়ে ইফতার শুরু করার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। তবে খেঁজুর একটি বা দুটির বেশি খাওয়া উচিত নয় কারণ এতে প্রচুর ক্যালোরি রয়েছে। ডায়াবেটিস রোগিদের একটি ছোট খেঁজুর বা বড় হলে একটি খেঁজুরের অর্ধেক খাওয়া ভালো।
২. খেজুরের পাশাপাশি ইফতারে অন্যান্য শুকনো ফল যেমন, বারো ঘন্টা ভিজানো কিসমিস, ডুমুর, খোবানী, কাঠ বাদাম ইত্যাদি খাওয়াও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
ফল বা ফলের সালাদ
১. রোজায় শরীরে ভিটামিন এবং মিনারেলসের ঘাটতি পূরণে ইফতারে এক বাটি ফল খাওয়া ভালো। পেয়ারা, নাসপাতি, আঙ্গুর, গাব, সফেদা, ডালিম ইত্যাদি ফল পছন্দ অনুযায়ী খাওয়া যেতে পারে। অথবা তিন চার রকমের ফল একসাথে মিশিয়ে সালাদ বানিয়েও খাওয়া যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে মিষ্টি এবং টক ফলের মিশ্রণ যেন একসাথে না হয়।
২. ফলে পঁচাশি শতাংশের বেশি তরল থাকায় ইফতারে ফল বা ফলের জুস খেলে রোজায় শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ হতে সাহায্য করে।
ছোলাজাতীয় খাবার
বিভিন্ন ছোলা, বুট, ডাবরি সিদ্ধ করে হালকা মশলা দিয়ে রান্না করে মুড়ির সাথে ইফতারে পরিবেশন করলে খেতেও সুস্বাদু হয় আবার দিনশেষে একটি ভালো পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবারও খাওয়া হয়। ছোলা প্রোটিন আর মুড়ি কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা পূরণ করে।
দই-চিড়া
গরমে দিনশেষে ইফতারে একটি উৎকৃষ্ট খাবার হতে পারে দই-চিড়া। ভেজানো চিড়ার সঙ্গে টক দই, কলা ও খাঁটি গুড় বা মধু দিয়ে মাখিয়ে খেলে একটি পরিপূর্ণ ইফতার যেমন হয় তেমনি প্রায় সব ধরনের পুষ্টি চাহিদাও পূরণ হয়। এতে হজম প্রক্রিয়া শক্তিশালী হয় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও দূর হয়।
প্রায় বারো থেকে চৌদ্দ ঘণ্টা না খেয়ে থাকার পর প্রথম খাবারই হল ইফতার। তাই অবশ্যই ইফতারের খাবার হতে হবে নরম, সহজে হজমযোগ্য ও পুষ্টিকর। সহজলভ্য, খাঁটি দেশি খাদ্য উপাদান দিয়ে ঘরে এমন খাবার তৈরি করুন যেন তা থেকে সকল পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়। একটি ভালো পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ইফতার দিন শেষে রোজার ক্লান্তি মিটানোর পাশাপাশি ক্ষুধা নিবারণ করে এবং শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে।
রাতের খাবার
রাতের নামাজ এবং তারাবি পড়ে আমরা রাতের খাবার খেয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেই। রোজায় রাতের খাবারে ম্যাক্রো নিউট্রিয়েন্টসসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যাতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাটের চাহিদা পূরণ হয়।
রোজায় রাতের খাবারের বিভিন্ন মেন্যু-
১. রাতের খাবারে ভাত, শাক, সবজি, মাছ এবং ডাল খাওয়া যেতে পারে।
২. কোন কোন দিন রাতের মেন্যুতে ভাত, ভর্তা, সব্জি, ডিম, ডাল খাওয়া যায়।
৩. আবার কখনো ভাত, সবজি, মাংস খাওয়া যেতে পারে।
৪. যারা ভাত খেতে চান না তারা রুটি, সবজি, ডিম বা রুটি, ডাল, সবজির সাথে মাংস খেতে পারেন।
৫. ভাত বা রুটির পরিবর্তে মাঝে মাঝে খিচুড়ি-মাংস বা কম তেলে রান্না করা বিরিয়ানীও খাওয়া যেতে পারে।
রাতের খাবার ভারি খেলে সেহরিতে হালকা খাবার খেতে হবে যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। রাতে বিরিয়ানী বা মাংস খেলে সাথে সালাদ খেতে হবে। এবং খাওয়া শেষে লেবু পানি খেতে হবে। এতে খাবার ভালো হজম হতে সাহায্য করে এবং চর্বি জমাট বাঁধা রোধ করে।
সেহরি
সেহরির মেন্যু নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক মেন্যুর সেহরি সারাদিন সুস্থ্য এবং এনার্জিটিকভাবে রোজা পালনে সাহায্য করে। সেহেরিতে নরম এবং সহজ পাচ্য খাবার খাওয়া ভালো।
রোজায় সেহরির বিভিন্ন মেন্যু-
১. সেহরিতে এক গ্লাস দুধের সাথে খোরমা বা খেঁজুর হতে পারে একটি ভালো সেহরি মেন্যু।
২. এক বাটি সবজি এবং স্টিম মাছ সেহরির জন্য খুবই উপাদেয় খাবার।
৩. স্টিমড্ সালাদের সঙ্গে মুরগির মাংস বা ডিম খাওয়া যেতে পারে।
৪. একবাটি স্যুপ বা নেহারি এবং পুডিংও হতে পারে সেহরির মেন্যু।
সেহরিতে ভাত, রুটি, ডাল জাতীয় খাবার না খেয়ে তরল এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া ভালো।
রোজায় পানি পানে সতর্কতা
ইফতার শেষে ঈশা এবং তারাবির নামাজের প্রস্তুতি নিতে হবে। নামাজের আগ পর্যন্ত আধা ঘন্টা পর পর পানি পান করতে হবে। কেননা দীর্ঘ সময় পানি পান না করার ফলে শরীর পানিশূন্য হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এর ফলে রোজার সময়ে অনেকেরই মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরানো, ক্লান্তি এবং মনোসংযোগ করতে সমস্যা হয়। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ইফতার এবং সেহরির মধ্যকার সময়ে পানি পান করে আমাদের সারাদিনের পানির চাহিদা পূরণ করতে হবে। আবার ঘুমানোর আগে পানি পান করতে হবে। সেহরিতে তরল খাবার যেমন স্যুপ খেতে হবে। কার্বোহাইড্রেট বা ফ্যাটের মতো খাবার আমাদের শরীর পানি জমিয়ে রাখতে পারে না। তাই রোজার সময় কিডনী ইউরিন আউটপুট কম করার মাধ্যমে শরীরে পানি ধরে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু তার পরেও ঘাম, প্রস্রাব পায়খানার মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। তাই পানিশূন্যতা রোধ করতে রোজার সময়ে সচেতনভাবে নিয়ম মেনে তরল পান করতে হবে।
যা খাওয়া যাবে না
১. রোজার সময় ইফতারে আমরা নানা রকম ভাজাপোড়া খাবার, ফাস্টফুড খেয়ে থাকি। এসব খাবার ঘরে বানানো হোক বা বাইরে থেকে কেনা হোক কোনটাই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি নয়। সারাদিন রোজা রাখার ফলে হজম প্রক্রিয়া এবং শরীর পরিশুদ্ধ হবার সুযোগ পায়। দিনশেষে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে সারাদিনের রোজার স্বাস্থ্য উপকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।
২. রাতের খাবার শেষে কমপক্ষে আধঘন্টার মধ্যে পানি পান করা যাবে না। এতে খাবার হজম হতে সমস্যা হয়।
৩. খাবারে বাড়তি কাঁচা লবণ খাওয়া যাবে না।
৪. চিনি এবং চিনি জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। কারণ চিনি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির জন্য চিনি জাতীয় খাবার দরকার হয় তাই এ ধরনের খাবার ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ায়।
৫. কোল্ড ড্রিংকস্, ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না।
৬. রোজার সময় চা বা কফি না খাওয়াই ভালো। কারণ এতে থাকা ক্যাফেইন প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যা পানিশূন্যতা এবং ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তবে হারবাল চা, গ্রিন টি খাওয়া যেতে পারে।
৭. ইফতার, রাতের খাবার এবং সেহরি প্রতিবেলার খাবার মেন্যুতে তিন থেকে চার আইটেমের বেশি খাবার খাওয়া ঠিক নয়। অতিরিক্ত খাবার গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করে দিনভর রোজা রাখাকে কষ্টকর করে তোলে।
‘ভবিষ্যতের চিকিৎসকেরা ঔষধ নয় বরং পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে রোগ সারাবে এবং রোগের প্রতিরোধ করবে’, ১৯০৩ সালে উক্তিটি করেন প্রখ্যাত আমেরিকান উদ্ভাবক থমাস এডিসন। করোনা ভাইরাসের এই মহামারির সময়ে এই কথাটি যেন অকাট্য সত্যরূপে প্রমাণিত হলো। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। তাই রোজার সময়ে খাদ্য তালিকায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি সমৃদ্ধ খাবার যেমন, ভিটামিন সি, এ, ডি, জিংক ও সেলেনিয়াম যুক্ত খাবার রাখতে হবে। কারণ এসব খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। উপরের আলোচিত খাদ্যগুলোর মধ্যে সব ধরনের ম্যাক্রো এবং মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টসের সমন্বয় রয়েছে। রোজার মাসে প্রতিদিন এগুলোর মধ্য থেকে পছন্দ অনুযায়ী খাবার মেন্যু বেছে নিয়ে খাবার খেলে রোজা রাখা সুস্বাস্থ্যের অংশ হয়ে উঠবে।
সারাবাংলা/আরএফ