Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পরিপূর্ণ স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পুষ্টি নিশ্চিতের দাবি

লাইফস্টাইল ডেস্ক
৩ আগস্ট ২০২১ ১৯:৩৪

নিরাপদ স্বাস্থ্যের লক্ষ্যে পুষ্টি সুরক্ষার দিকটিকে আরও জোরদার করার প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞগণ। একইসাথে প্রয়োজন ভিন্ন ভিন্ন অংশীদারদের নিয়ে সমন্বিত একটি পদ্ধতি প্রণয়ন যা দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টির চাহিদা পূরণে ভুমিকা রাখবে  ‘খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি সুরক্ষা’ বিষয়ক এক ওয়েবিনারে এই দাবি উঠে আসে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির অর্জনকে উদযাপন করছে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভিশন কনসালটিং লিমিটেড। ‘বাংলাদেশের বিস্ময়: বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ৫০ বছর উদযাপন’ শিরোনামের এই সিরিজ ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে যার অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) আয়োজিত হয় খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি সুরক্ষা বিষয়ক ওয়েবিনার। আয়োজক ইনোভিশন কনসালটিং ও গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন (গেইন), বাংলাদেশ। জাতিসংঘের ফুড সামিট- ২০২১ এর সাথে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই ওয়েবিনারটি জাতিসংঘের বিশ্বব্যাপী ফুড সামিট অ্যাকশন ট্র্যাকের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে আশা করা যায়। ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, বর্তমানে করোনভাইরাসের প্রকোপে স্বাস্থ্য ও পুষ্টিখাত ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ প্রবণতার কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেণ ও বলেন, এর ফলে নারী ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণ ঝুঁকির মুখে পড়বে।

বিজ্ঞাপন

গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন (গেইন), বাংলাদেশের পরিচালক রুদাবা খন্দকার স্বাগত বক্তব্য রাখেন। দেশের মানুষের পুষ্টি নিশ্চিতকরণের চ্যালেঞ্জ এবং সেটি মোকাবিলায় একসাথে কাজ করার গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি বক্তব্য দেন।

বিজ্ঞাপন

গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন (গেইন) এর লার্জ স্কেল ফুড ফর্টিফিকেশন- গ্লোবাল ক্লাস্টার লিড পেনজানি মাকাম্বালা বলেন, বিশ্বের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে প্রাথমিকভাবে দুই বিলিয়ন মানুষ যথেষ্ট পরিমাণে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ খাদ্য উপাদানের পুষ্টি থেকে বঞ্চিত। অপুষ্টি হ্রাসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করলেও পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন ও বৃদ্ধি এবং একইসাথে নারী-শিশু-কিশোরদের পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যতে আরও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিসেস (এনএনএস)-এর লাইন ডিরেক্টর এস এম মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘গত দুই দশকে প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল, শিশু মৃত্যুহার কমানো, টিকাদান ইত্যাদি সূচক বিবেচনায় বাংলাদেশ অসাধারণ উন্নয়ন অর্জন করেছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্য বিবেচনা করলে অগ্রগতির হার এখনও সন্তোষজনক নয়।’

বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটি (বিএফএসএ)-এর সদস্য মো. আবদুল আলিম বাংলাদেশের পুষ্টিবিদদের বিভিন্ন কার্যক্রমের দিকটি তুলে ধরেন।

সেভ দা চিলড্রেনের সূচনা প্রোগ্রামের প্রধান শেখ শাহেদ রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে অপুষ্টি মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে বর্তমানে মূল সমস্যা হিসাবে নতুন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উত্থান একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে।’ জাতীয় অর্থনীতিতে মহামারির প্রভাব আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী ভয়াবহতায় রূপ নিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের হেড অফ প্রোগ্রাম রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমানে জনসাধারণের জন্য খাদ্য বিতরণ প্রধানত চাল বিতরণে সীমাবদ্ধ। গত দুই বা তিন বছরে বার্ষিক খাদ্য বিতরণের সামাণ্য অংশ গম হিসেবে ছিল।’ তবে স্কুলগামী শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিতের জন্য তাদের সরকারিভাবে বিস্কিট দেওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এখন প্রতি বছর বাংলাদেশে তিন মিলিয়ন স্কুলগামী শিশুদের ৪০,০০০ টন পুষ্টিকর বিস্কুট বিতরণ করা হয়।’

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির গ্লোবাল হেলথ ইন্সটিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. আহমেদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে পুষ্টি সুরক্ষা নীশ্চিত করতে একাডেমিয়া, গবেষণা সংগঠন এবং নীতিনির্ধারকদের সহযোগিতা জরুরি। সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা গ্রহণ ও সেই সাথে সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্ত প্রকাশের আহ্বান জানান তিনি।

কেয়ার নিউট্রিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এডি বেয়ারনট ‘ফোর্টিফাইড প্যাকেটজাত খাবার’ এবং বাংলাদেশে এর অগ্রগতি ও সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।

ইনোভেশন কনসালটিং প্রাইভেট লিমিটেডের অ্যাডলেসেন্ট প্রজেক্টের টিম লিড আনিকা তাহসিন খান বলেন, বর্তমানে দেশে কিশোরীদের মধ্যে পুষ্টি ঘাটতি অনেক বেশি। তিনি বলেন, এই বয়সের শিশুরা দ্রুত মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় যার জন্য তাদের খাদ্যের ক্ষেত্রে বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত।

এমপাওয়ার সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজের ইনোভেশন ডিরেক্টর জাকি হায়দার তার বক্তব্যে পুষ্টি কর্মকর্তা ও কর্মীদের সক্ষমতা উন্নয়নের প্রতি জোর দেন। গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রোভড নিউট্রিশন (গেইন), বাংলাদেশ এর সিনিয়র পলিসি অ্যাসোসিয়েট মন্দিরা গুহ নিয়োগী সম্পূর্ণ ওয়েবিনারটি মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

‘বাংলাদেশ মিরাকল’ সিরিজটিতে ইনোভিশন কন্সালটিং লিমিটেডের পার্টনার হিসেবে আরও আছে উইন্ডমিল অ্যাডভারটাইজিং, সারাবাংলা ডট নেট, কালারসএফএম ১০১.৬, ফাইনানশিয়াল এক্সপ্রেস, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যায়ের অর্থনীতি বিভাগ ও ইয়াং ইকোনমিস্টস ফোরাম, পাঠাও, অ্যাঙ্করলেস বাংলাদেশ, প্রিন্টাগ্রাফি, কেয়ার বাংলাদেশ, আইসিসিও বাংলাদেশ, গেইন বাংলাদেশ, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ, নেক্সটজেনএডু, সিমপ্রিন্টস, বিআইআইডি এবং এম পাওয়ার।

সারাবাংলা/আরএফ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর