Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

’বৈশাখ মানেই লাল সাদা- এটা আমি ধরে রাখতে চাই’- লিপি খন্দকার


৭ এপ্রিল ২০১৮ ১৪:৫৬

খুব ছোটবেলাতেই দেখেছেন মা ঘর সাজাচ্ছেন হাতের কাজের জিনিস দিয়ে। খুব সুন্দর হাতের কাজ পারতেন  মা। আর ফ্যাশন জগতে পা রাখার পর সবচেয়ে উৎসাহ জুগিয়েছেন এই মা-ই। তার সব সাক্ষাৎকার তিনি মনোযোগ দিয়ে দেখতেন, পড়তেন। চার বছর আগে মা গত হয়েছেন। এখনো মায়ের স্মৃতিই ফ্যাশন হাউজ  বিবিয়ানার স্বত্ত্বাধিকারী লিপি খন্দকারের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।

চারুকলায় পড়ার সময় থেকেই মনে মনে ভেবে নিয়েছিলেন তিনি ফ্যাশন ডিজাইনার হবেন। সেসময় প্রবর্তনা, আড়ং, কে ক্রাফট, কুমিদিনী সহ আরো বেশ কয়েকটি দেশি ফ্যাশন হাউজ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তিনি পাশ করে বের হয়েই আড়ংয়ে চাকরি শুরু করেন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে। বিবিয়ানার কথা তখনো তার মাথায় ছিলোনা। আড়ং থেকে চাকরি ছাড়ার তিনদিনের মাথায় নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা প্রথম মাথায় আসে। আর সেখান থেকেই আজকের বিবিয়ানা। বিবিয়ানা এখন সহস্রাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের জায়গা। চাকরি ছেড়ে দিয়ে এখন লিপি খন্দকার অনেক মানুষকে চাকরি দিচ্ছেন। তাই চাকরি ছেড়ে দেয়াটা সবসময় খুব একটা খারাপ না বলেই বোধ হয় তার। 

বিজ্ঞাপন

লিপি খন্দকারের দুই ছেলের কারো ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের প্রতি তেমন আগ্রহ নেই। তবে লিপির ধারনা মেয়ে হলে তিনি হাতে ধরে মেয়েকে ফ্যাশন ডিজাইনিং এর জগতে নিয়ে আসতে পারতেন।    

বৈশাখের ঠিক আগে আগে ফ্যাশন হাউজগুলো সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় কাটায়। তেমনই একটা ব্যস্ত দিনে রুদ্ধশ্বাস কাজের মাঝেও লিপি খন্দকার আলাপচারিতায় মেতেছিলেন সারাবাংলার সাথে। সাক্ষাৎকারটি নিচে প্রকাশিত হল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জান্নাতুল মাওয়া।

 

প্রথমেই বৈশাখের গল্প শুনতে চাই। নববর্ষে বিবিয়ানা এবার কী মোটিফ নিয়ে কাজ করছে?

বিজ্ঞাপন

বিবিয়ানা প্রতি বছরই নতুন থিম নিয়ে কাজ করে। আর সেটা অবশ্যই আমাদের দেশীয় ঐতিহ্যের সাথে মিল রেখেই হয়। এ বছর আমরা লোকজ মোটিফ নিয়ে কাজ করছি। সেটা শুধু আমাদের দেশের মোটিফ নয় আমরা ইন্টারন্যশনাল ফোক মোটিফ নিয়েও কাজ করছি। ইন্টারন্যাশনাল ফোক মোটিফের মধ্যে অনেক বৈচিত্র্য আছে। আমি মূলত আমাদের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের সাথে যায় এমন মোটিফ বেছে নিয়েছি। ফুল, লতা-পাতা, গাছ ইত্যাদি প্রাকৃতিক লোকজ ঐতিহ্যের মোটিফ ব্যবহার করছি। এর একটা কারণ হল ফুল লতা পাতার মোটিফ অনেক রঙিন হয় এবং পয়লা বৈশাখের সাথে এই রঙের বৈচিত্র্যটা বেশ যায়। অর্থাৎ একদিকে লোকজ ঐতিহ্যকে সামনে আনা অন্যদিকে পোশাকে যথেষ্ট রঙ ব্যবহার করার সুবিধার জন্যে এই মোটিফ ব্যবহার করছি।

এই নতুন নতুন মোটিফের আইডিয়াগুলো কীভাবে মাথায় আসে?

একজন শিল্পী কিন্তু চলতে, ফিরতে, ঘুরতে যা-ই দেখে তার মাধ্যমেই নতুন আইডিয়া পায়। যেহেতু আমি ডিজাইনার আমার মাথায় সারাক্ষণই নতুন ডিজাইনের আইডিয়া নিয়েই চিন্তা খেলা করে। সারাক্ষণই হয়তো মনে ক্রিয়েটিভ কিছু করার একটা তাগাদা থাকে। এই ভাবনাগুলো ঠিক কখন ক্লিক করে নিজেও হয়তো টের পাইনা। তবে আমার মাথায় যা-ই আসে আমি নোট করে রাখি। যেমন এবারের এই লোকজ মোটিফটার কথাই বলি। একদিন আমি অনেকগুলো বই ঘাটছিলাম, তখন চোখে পড়লো নানান দেশের ফোক মোটিফের কাজ। এই কাজগুলো এত সুন্দর! আবার দেখা যায় বিশ্বের নানান দেশের মোটিফের মধ্যে বেশ একটা মিলও আছে। অনেকেই হয়তো প্রশ্ন করতে পারে যে কেন ইন্টারন্যাশনাল ফোক মোটিফ নিয়ে কাজ করেছি, কেন শুধু দেশীয় মোটিফ নিয়ে করিনি। আসলে আমি ফোক মোটিফগুলোর মধ্যে যে অদ্ভুত মিল আছে সেটি তুলে ধরতে চেয়েছি। যেমন কোন কোন মোটিফ দেখলে আপনার মনে হবে এটা আমাদের দেশেরই মোটিফ। আর বৈশাখের কাজ যেহেতু তাই রঙ নিয়ে অনেক কাজ করার সুবিধাও রয়েছে এই মোটিফে, এটাও মাথায় ছিলো আমার।

 

 

আচ্ছা রঙের কথা যেহেতু আসলো, পয়লা বৈশাখ মানেই আমরা বুঝি সাদা আর লাল। সাদা-লাল থেকে বেরিয়ে অন্য কোন রঙ কি ব্যবহার করা যেতে পারে?

এমনিতে তো আমরা সব রঙই পরতে পারি। কিন্তু আমাদের কিছু কিছু উৎসবে এবং জাতীয় দিবসে দেখা যায় বিশেষ বিশেষ কিছু রঙ দিনটির প্রতিনিধিত্ব করে। এই ব্যাপারটা কিন্তু আমার ভালোই লাগে। তেমনি পয়লা বৈশাখ মানেই হচ্ছে সাদা-লাল সেই প্রচলনটাকে আমি ধরে রাখতে চাই। একটা সময় যখন এত ফ্যাশন হাউজ বা এত ডিজাইনার প্রোডাক্ট ছিলোনা তখন কিন্তু পয়লা বৈশাখে দেখা যেতো সবাই মোটা লাল পাড় দেয়া একটা তাঁতের বা গরদের সাদা শাড়ি পরতো। এর সাথে আর কোন রকমের অন্য কোন রঙ ব্যবহার করা হতনা। সেই সাদা লালের জায়গাটা আমি হারাতে দিতে চাইনা। তবে এখন যেহেতু মানুষ বৈচিত্র্য পছন্দ করে তাই সাদা লালের বেসিসেই অন্য কোন রংগুলো ব্যবহার করি। তবে মূল রং থাকবে সাদা লালই।

বৈশাখে শাড়ি ছাড়া আর কী কী আসছে বিবিয়ানায়?

আমরা একটা পরিবারের সবার পড়ার জন্যেই প্রয়োজনীয় পোশাক আনি। বাচ্চাদের পোশাক, সালোয়ার কামিজ, শাড়ি, পাঞ্জাবী সবই আছে আমাদের পোশাক তালিকায়। একটা পরিবারের সবাই যদি মিলিয়ে পোশাক পরতে চান তাদের জন্যে যেই সুযোগও আছে। আর পোশাক ছাড়াও আছে গয়না, ঘর সাজানোর উপকরণ সবই রাখছি বৈশাখ উপলক্ষ্যে।

 

এবার বৈশাখে নতুন গয়না কী এসেছে?

আমরা মূলত পোশাকের সাথে মিলিয়েই গয়না করে থাকি। এবারে সুতোর গয়না বেশি চলছে। আমাদের বেশিরভাগ গয়নাই সুতোর তৈরি। পয়লা বৈশাখে আমরা চাই পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেশীয় জিনিস দিয়ে সাজতে। এইজন্যে এইদিন মাটির গয়নাও বেশ চলে। যেহেতু আমরা সবসময় চাই নতুন কিছু করতে তাই আমরা এবার সুতোর গয়নার দিকে জোর দিচ্ছি বেশি।

ফেব্রিক্সের ক্ষেত্রে আপনারা কোনটায় প্রাধান্য দেন?

আমরা সুতিকেই প্রাধান্য দিই। একসময় আমাদের দেশ সুতো উৎপাদনে বেশ ভালো  অবস্থানে ছিলো। কিন্তু এখন আমাদেরকে সব সুতো আনতে হয় ভারত অথবা চায়না থেকে। সুতো বাদে আমাদের ফ্যাশন হাউজের বাকি সব কিছুই দেশের।

এখন তো পয়লা বৈশাখেও অনেককে কাজে যেতে হয় বা অনেক দূর হাঁটতে হয়, তাই অনেকেই শাড়ি সামলানোর ঝামেলায় না গিয়ে অন্য পোশাক পরতে চান। সেক্ষেত্রে কী পোশাক পরা যায়?

এখন তো পয়লা বৈশাখে সব ধরণের কাপড়ই পরে। যদিও এখনো শাড়ির প্রাধান্য আছে। সালোয়ার কামিজও বেশ চলে এই দিনে। যেহেতু এইদিনে আমরা ঐতিহ্যের কাছে ফিরে যেতে চাই তাই কেউ যদি জিন্স টিশার্ট পরে এইদিন উদযাপন করতে চায় সেটিকে আমি খুব একটা এপ্রিশিয়েট করবো না। চাইলে ধুতি সালোয়ারের সাথে ফতুয়া বা  বিভিন্ন রকমের টপস পরা যায়।

অনলাইন শপিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেক অনলাইন শপ বেশ ভালো নামও করেছে। যারা ফ্যাশন সচেতন তারা এখন ডিজাইনার প্রোডাক্টের জন্যে দেশি শোরুমের পাশাপাশি এসব অনলাইন শপেও হানা দিচ্ছে। এই অনলাইন ব্যবসার বিষয়ে আপনার কী ভাবনা?

আমাদের নতুন নতুন সব প্রযুক্তি আসছে এবং এর সর্বোচ্চ ভালো ব্যবহারটাই আমরা করতে চাই। অনলাইন ব্যবসা মোটেই খারাপ কিছু নয়। তবে আমাদের ক্ষেত্রে যেটা হচ্ছে আমাদের ব্যবসায় এর প্রভাব পড়ছে। ঢাকায় এখন ব্যস্ততার কারণে অনেকেই শপিংয়ের জন্য আলাদা সময় বের করতে পারেন। এছাড়া ঢাকার বাইরের লোকেরা ঢাকায় এসে শপিং করার ঝামেলায় যেতে চায়না অনেকেই। আর এই শ্রেণির ক্রেতারাই অনলাইন শপগুলোর দিকে ঝুঁকছে। অনেকেই আর দোকানে এসে কেনাকাটা করেনা। সেদিক থেকে আমাদের ব্যবসায় একটু নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও আমরাও এখন অনলাইন কেনাকাটার সুবিধা দিচ্ছি ক্রেতাকে। তবে হ্যাঁ, অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে এই অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে যা অবশ্যই ইতিবাচক দিক।

বিবিয়ানার অনলাইন কেনাকাটার বিষয়ে জানতে চাই

আমরা হোম ডেলিভারি সার্ভিস দিচ্ছি ক্রেতাদের। শপের পাশাপাশি আমাদের নতুন প্রোডাক্টের ছবি আমাদের ফেসবুক পেইজে আপলোড করছি। সেখান থেকে দেখে ক্রেতারা পছন্দ করে নিচ্ছেন। আর আমাদের হোম ডেলিভারি সার্ভিস পণ্য নিয়ে ক্রেতাদের বাসায় পৌঁছে দিচ্ছে।

আমাদের অনলাইন শপ বলুন আর ডিজাইনার শোরুমই বলুন এগুলো সবই ঢাকাকেন্দ্রিক। বিবিয়ানা কি ঢাকার বাইরে কাজ করছে?

ঢাকার বাইরে আমাদের সিলেট আর নারায়ণগঞ্জে আউটলেট আছে। সামনে বগুড়ায়ও আমরা শোরুম দেয়ার পরিকল্পনা করছি। এছাড়া হোম ডেলিভারি সার্ভিস তো ঢাকার বাইরেও যে কোন জায়গায় যেতে পারে।  আমাদের কিন্তু প্রোডাক্টের দামের সাথে বাড়তি ভ্যাট যোগ হয়না। হোম ডেলিভারি সার্ভিসের বিল যা আসে সেটাতো যদি চিন্তা করি রিকশা ভাড়া দিয়ে শপিংয়ে গেলেও তো সেই রকম টাকাই ব্যয় করতে হতো। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি দেশের যে কোন জায়গা থেকেই ক্রেতারা আমাদের পণ্য পেতে পারেন।

আমাদের সবার মধ্যে একটা ধারণা আছে যে খুব কম সংখ্যক মানুষ এই ডিজাইনার প্রোডাক্ট বা দেশীয় শোরুমগুলো থেকে কেনাকাটা করে। বেশিরভাগ মানুষই বিদেশি পণ্যের প্রতি বেশি আকৃষ্ট থাকে। এই ধারণাটা কি সত্যি?  

এটা তো একদমই সত্যি। আমাদেরকে প্রতিনিয়ত বিদেশি পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। এখন আমাদের মার্কেট বাইরের পণ্যের ভরে গেছে। আগে শুধু প্রতিযোগিতা করতে হত ভারতীয় পণ্যের সাথে এখন সেই প্রতিযোগিতাটা পাকিস্তানি পণ্যের সাথেও করতে হয়। পয়লা বৈশাখ আর ঈদের আগে পাকিস্তান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে ওপেন এক্সিবিশন করার সুযোগ পাচ্ছে, খুব চুটিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। এই প্রতিযোগিতাটা অসম। কারণ ওরা আনছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পণ্য আর আমরা করছি ডিজাইনার পণ্য। পাইকারি পণ্যের দাম তুলনামূলক কম। ডিজাইনার পণ্যের দাম সবসময়ই বেশি। আমাদের ডিজাইনার পণ্যের দামের সাথে তুলনা করা উচিৎ বাইরের দেশের ডিজাইনার পণ্যের। তাহলেই বোঝা যাবে আমাদের জিনিসের দাম আসলে এত বেশি না।

 

 

সেইদিক থেকে আমাদের শোরুমগুলো কি  পিছিয়ে পড়ছে?

পাইকারি পণ্যের সাথে ডিজাইনার পণ্যের অসম প্রতিযোগিতা যেহেতু হচ্ছে সেক্ষেত্রে আমরা হেরেই যাচ্ছি। আজ থেকে পাঁচ বছর আগে আমাদের দেশি ফ্যাশন হাউজগুলো যত ভালো জায়গায় গিয়েছিলো এখন সেই জায়গাটা আর নেই। এখন কাঁচামালের দাম বেড়েছে। বাড়ি ভাড়া বেড়েছে। বিশেষ করে বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে কোনরকম নিয়মকানুনই মানা হচ্ছেনা। এক লাফে দুই তিন গুন ভাড়া বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে যার ফলে আমাদের ব্যবসা প্রচন্ডরকম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এই অবস্থার মোকাবেলায় কী পদক্ষেপ নেয়া যায়?

এখানে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। আমি ক্রেতাদের দোষ দেবনা। আমাদের ক্রেতাদের সামনে এত বেশি অপশনস দেয়া হচ্ছে, বাইরের পণ্য এত গণহারে ঢুকছে দেশে; এই জায়গাটায় সরকারকে কঠোর হতে হবে। কারণ আমরা এখনো নিজেদের জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকার জন্যে যুদ্ধ করছি। একটা সময় আমরা বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছিলাম। কিন্তু এখন আমাদের গতি আবার শ্লথ হয়ে গিয়েছে। কাঁচামালের দাম নিয়ন্ত্রণ, বিদেশি পণ্য নিয়ন্ত্রন এবং বাড়ি ভাড়ার বিষয়টা নিয়ন্ত্রন করতে হবে সরকারকেই। আমাদের দেশে এই সেক্টরের মাধ্যমেই অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে, বিশেষত এই দেশের অনেক নারীরই এই মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে। তাই আমাদের ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার বুটিক থাকলেও এখনো আমরা এত শক্তিশালী না। সত্যি কথা বলতে কি আমাদের এই সেক্টরের ভবিষ্যৎ এখন বলতে গেলে অন্ধকার। খুব বড় কোন কার্যকর পদক্ষেপ এখনই নেয়া দরকার।

বিবিয়ানায় কতজনের কর্মসংস্থান হয়েছে?

বিবিয়ানায় ইন হাউজ আছে দুইশ জন কর্মী। আর দশ হাজার কারিগর আমাদের সাথে আছেন। এদের ৯৫ শতাংশই নারী। ২০০১ এ এই সংখ্যা ছিলো ১৫ হাজার। দিনে দিনে এই সংখ্যা কমছে এটাই হতাশাজনক।

আমাদের দেশের অনেক ফ্যাশন হাউজ ভারত থেকে ফ্যাশন ডিজাইনার আনে। এই ব্যাপারটা আপনি কীভাবে দেখেন?

আসলে আমাদের দেশে সেই মাপের প্রফেশনাল ফ্যাশন ডিজাইনার এখনো নেই। যে কয়টি প্রতিষ্ঠান আছে সেখান থেকে এখনো তেমন বড় মাপের ফ্যাশন ডিজাইনার বের হয়ে আসতে পারেনি। তাই ওদের অনেককেই অনেকদিন ধরে শিখিয়ে পড়িয়ে নিতে হয়। অনেকেই আর এই ঝামেলায় যেতে চাননা। তাই তারা ভারত থেকে ফ্যাশন ডিজাইনার নিয়ে আসেন। তবে আমি এর পক্ষে না। যেহেতু আমাদের সব পণ্যই দেশে তৈরি হচ্ছে। আমি চাই এর সাথে জড়িত সবাই এদেশের হবে, এটাই কাম্য।

আর দেশে ভালো ফ্যাশন ডিজাইনার তৈরি করার জন্যে কী পদক্ষেপ নেয়া যায়?

দেশের ফ্যাশন ইন্সটিটিউটগুলোতে বিদেশি শিক্ষক নিয়ে আসতে হবে। দেশের ছেলেমেয়েদেরকে তারা তৈরি করবেন এবং এভাবেই আমরা এই সেক্টরে স্বনির্ভর হতে পারবো। এছাড়া আমি মনে করি এখনো যারা আছেন তাদেরকেও শিখিয়ে নিলে তারা ভালো কাজ করতে পারেন। এইজন্যে বাইরে থেকে ডিজাইনার আনার পক্ষপাতী আমি নই।

আবার বৈশাখে ফিরে আসি। এই পয়লা বৈশাখে আপনি কী পরছেন?

আমি আসলে গত তিন চার বছর পয়লা বৈশাখে কোথাও বের হইনা। কারণ এর আগে আমাদের ওপর অনেক কাজের চাপ যায়। তারপরও যদি বের হই বিকেলে বের হব। একটা প্লেইন তাঁতের শাড়ি পরবো। এখনো ঠিক করিনি সেটার রঙ। সাদা শাড়ি লাল পাড় হতে পারে, একটা সাদা থানও হতে পারে সেটা একটা লাল ব্লাউজ দিয়ে পরে ফেলবো। সেটা দুই একদিন আগে ঠিক করবো।

সারাদিন এত খাটছেন , কাজের পেছনে আপনার মোটিভেশন কী?

আমার মাধ্যমে অনেকগুলো মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে, এটাই আমার একমাত্র মোটিভেশন এখন।

সময় দেবার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

সারাবাংলাকেও ধন্যবাদ।

 

 

আলোকচিত্র- আশীষ সেনগুপ্ত

 

সারাবাংলা/জেএম/এসএস

 

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর