Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ব্যাধি পরবর্তী খাদ্যাভ্যাস

লাইফস্টাইল ডেস্ক
৬ জুলাই ২০২২ ১৪:১৩

প্রচণ্ড গরম ও ঋতুপরিবর্তনের এই সময়ে মৌসুমী জ্বরসহ ও নানা অসুখবিসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। সঙ্গে আবারও বাড়ছে করোনার প্রকোপ। জ্বর থেকে ক্রমে অনেকেই সুস্থ হচ্ছেন বটে কিন্তু পুরোপুরিভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে বেশ সময় লাগছে। অনেকেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। পুষ্টিবিদরা বলছেন, এই সময়ে বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে সুস্থ্য হওয়ার পর একটি ভালো খাদ্যাভ্যাস দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে অনেক বেশি সাহায্য করে। তাই ব্যাধি পরবর্তী কোন খাবার এবং খাবারে কোন উপাদানগুলো আপনার জন্য জরুরি তা নিয়েই আজকের আলোচনা।

পুষ্টিচাহিদা অনুযায়ী পরিমাণমতো ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে

পুষ্টিচাহিদা অনুযায়ী পরিমাণমতো ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে

ক্যালরির হিসাব রাখুন
যে কোনও রোগীকে পুষ্টিচাহিদা অনুযায়ী তাকে পরিমাণমতো ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। শুধু কম ওজনই নয়, ওজন বেশি এমন মানুষদের মধ্যেও অপুষ্টি দেখা যায়। যেমন, যাদের ওজন বেশি তাদের শ্বাসকষ্ট, কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, পেশীশক্তি ও ফুসফুসের পরিমাণ কম হতে পারে। এসব লক্ষ্মণ নিউমোনিয়া ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। আবার ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন বেশি হলে বিষয়গুলো আরো জটিল হয়ে পড়ে। সেজন্য সুস্থ্য হওয়ার পর চাহিদা অনুযায়ী রোগীকে ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকেরও পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

হজমের ওপর ভিত্তি করে প্রোটিনের পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত

হজমের ওপর ভিত্তি করে প্রোটিনের পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত

পর্যাপ্ত প্রোটিন নিশ্চিত করুন
খাবারে পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি জোর দেন পুষ্টিবিদরা। প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১.২ থেকে ১.৩ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করার কথা বলেন তারা। এটি পেশীর ক্ষয় রোধ এবং শ্বাসযন্ত্রের পেশীকে শক্তিশালী করে। সুস্থ্য হওয়ার প্রথম দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত খাবারে প্রোটিনের দিকে নজর দিন। প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে খাবারে মাছ-মাংসের পাশাপাশি দই, পনির, ডিম খাওয়া যেতে পারে। তবে অবশ্যই একেকজনের পুষ্টির চাহিদা, কায়িক শ্রম এবং হজমের ওপর ভিত্তি করে প্রোটিনের পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত।

শ্বাসযন্ত্রের ওপর চাপ কমানোর জন্য অবশ্যই কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে

শ্বাসযন্ত্রের ওপর চাপ কমানোর জন্য অবশ্যই কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে

কার্বোহাইড্রেট মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন
প্রতিদিন কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের পরিমাণ অবশ্যই ১০০ থেকে ১৫০ গ্রামের বেশি হওয়া যাবে না। কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের ওপর কার্বন ডাই অক্সাইডের উৎপাদন নির্ভর করে। তবে শ্বাসযন্ত্রের ওপর চাপ কমানোর জন্য অবশ্যই কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিয়ম করে গ্লুকোজ পরীক্ষা করতে হবে।

শরীরে ক্যালরির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, চর্বির মাত্রা বাড়ানো যেতে পারে

শরীরে ক্যালরির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, চর্বির মাত্রা বাড়ানো যেতে পারে

জেনে বুঝে চর্বি গ্রহণ
শরীরে ক্যালরির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, চর্বির মাত্রা বাড়ানো যেতে পারে। মিডিয়াম চেইন ফ্যাটি এসিডকে প্রাধান্য দিন এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের মাত্রা বাড়ান। কারণ, রোগপ্রতিরোধে এগুলো খুব ভালো কাজ করে। শরীরে চর্বির মাত্রা বাড়াতে নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল, রাইস ব্র্যান অয়েল, বাটার, ঘি, বাদাম, বাদাম তেল খাওয়া যেতে পারে।

ভিটামিন বি, সি, ডি, জিঙ্ক, সেলেনিয়ামসহ মাল্টিভিটামিন ও মিনারেল খাওয়া অনেক বেশি জরুরি

ভিটামিন বি, সি, ডি, জিঙ্ক, সেলেনিয়ামসহ মাল্টিভিটামিন ও মিনারেল খাওয়া অনেক বেশি জরুরি

প্রতিদিন ভিটামিন ও মিনারেল
প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন বি, সি, ডি, জিঙ্ক, সেলেনিয়ামসহ মাল্টিভিটামিন ও মিনারেল খাওয়া অনেক বেশি জরুরি। সেইসঙ্গে কারো আয়রন স্বল্পতা অথবা অ্যানিমিয়া থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

নির্দিষ্ট পুষ্টি আছে যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক বেশি সাহায্য করে

নির্দিষ্ট পুষ্টি আছে যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক বেশি সাহায্য করে

রোগ প্রতিরোধে সহায়ক পুষ্টি
কিছু নির্দিষ্ট পুষ্টি আছে যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক বেশি সাহায্য করে। যেমন, আরজিনিন, গ্লুটামিন ইত্যাদি। এগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিপাকক্রিয়ায়ও অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে পেঁপে, স্ট্রবেরী, বাদাম, দুধজাতীয় খাবার ইত্যাদি।

ব্যাকটেরিয়াগুলো শরীরকে সুস্থ্য রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে

ব্যাকটেরিয়াগুলো শরীরকে সুস্থ্য রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে

রোগপ্রতিরোধে প্রোবায়োটিকস
প্রোবায়োটিকস হচ্ছে জীবিত ব্যাকটেরিয়ার মিশ্রণ। আর এ ধরনের ব্যাকটেরিয়াগুলো শরীরকে সুস্থ্য রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে। দই, আচার ইত্যাদি প্রোবায়োটিক খাবারগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে পুণরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।

জ্বর হলে শরীরে তরল পদার্থের পরিমাণ কমে যায়

জ্বর হলে শরীরে তরল পদার্থের পরিমাণ কমে যায়

তরল খাবার ও লবণ
জ্বর হলে শরীরে তরল পদার্থের পরিমাণ কমে যায় যার ফলে শরীর ডিহাইড্রেট হয়ে যেতে পারে। তরল বাটারমিল্ক, স্যুপ, নারিকেলের পানি (যদি পটাশিয়ামের নিষেধ না থাকে) এবং লবণযুক্ত লেবু পানি এক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ করে। তবে, হৃদরোগ ও কিডনী রোগীদের জন্য তরল খাবার, সোডিয়াম এবং ইলেকট্রোলাইটস নির্দিষ্ট পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে।

নরম ও হাল্কা গরম খাবার বেশি খেতে হবে

নরম ও হাল্কা গরম খাবার বেশি খেতে হবে

খাবারের ধরণ গুরুত্বপূর্ণ
রোগীর শুকনো কাশি এবং গলার ক্ষত অনেক বেশি হলে, শক্ত ধরনের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। নরম ও হাল্কা গরম খাবার বেশি খেতে হবে।

ব্যায়াম আপনাকে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে অনেক বেশি সাহায্য করবে

ব্যায়াম আপনাকে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে অনেক বেশি সাহায্য করবে

নিয়মিত ব্যায়াম
অনেক দিন ধরে বাড়িতে এবং আইসোলেশনে থাকার কারণে শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে। তাছাড়া দীর্ঘদিন কায়িক পরিশ্রম না করার কারণে অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সুস্থ্য হওয়ার পর ধীরে ধীরে ব্যায়াম শুরু করুন। এটি আপনাকে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

খাবার ব্যাধি পরবর্তী খাদ্যাভ্যাস লাইফস্টাইল সুস্থ থাকুন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর