কোরবানির পর ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ
৯ জুলাই ২০২২ ১৭:৩৯
কোরবানি তো হয়েই গেলো। এইবার ঘরের অন্যতম বড় কাজ ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ। ফ্রিজে আবার মাংস যেনতেনভাবে রেখে দিলে হবে না। ঠিকভাবে সংরক্ষণ না করতে পারলে মাংস নষ্ট হওয়াসহ ফ্রিজে সমস্যা হওয়ার উদাহরণ আছে ভুরি ভুরি। এছাড়া ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আরেকটা জরুরী প্রশ্ন- ফ্রিজে কতদিন ভালো থাকে মাংস? সাধারণত কাঁচা মাংস ফ্রিজে ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। এই সময়ের মধ্যে মাংসের পুষ্টিগুণে খুব একটা হেরফের হয় না। তবে এর চেয়ে বেশি সময় মাংস সংরক্ষণ করলে পুষ্টিগুণ আর স্বাদ-দুইই কমে যেতে পারে।
কিন্তু ফ্রিজে মাংস যেনতেনভাবে রেখে দিলেই হবে না। কিছু নিয়ম মেনে মাংস সংরক্ষণ করলে মাংসের গুনাগতমান ভালো থাকবে আবার ফ্রিজও থাকবে গোছানো। আসুন জেনে নেই কোরবানির পর ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণের কিছু উপায়-
* পরিষ্কার ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ করতে হবে। আর এই ফ্রিজ পরিষ্কারের কাজটা তো সবাই কোরবানির আগেই সেরে নিয়েছেন। পরিষ্কারের পরে ফ্রিজে নতুন করে বরফ জমাতে হবে। এতে মাংস দ্রুত ঠাণ্ডা হবে এবং মান ভালো থাকবে। আর পরিষ্কার ফ্রিজে সংরক্ষণের ফলে ফ্রিজে জমে থাকা ময়লা ও জীবাণু মাংস নষ্ট করতে পারবে না।
* ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণের সময় সংরক্ষণের পদ্ধতি এবং তাপমাত্রার বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। মাংস কাটার পর ঘরে এনেই মাংস ফ্রিজে ঢুকিয়ে ফেলা যাবে না। কারণ মাংস অনেকটা গরম থাকে এসময়। তাই তাপমাত্রা স্বাভাবিক হওয়ার পর ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ করা উচিত।
* কোরবানির মাংস বাসায় আনার পর রান, সিনার অংশ, পায়ের মাংস এভাবে ভাগ করে ফেলতে হবে। চর্বিসহ মাংসগুলো আলাদা রাখুন। ফ্রিজে গরুর মাংস এবং খাসির মাংস পাঁচ থেকে ছয় মাস পর্যন্ত রেখে খাওয়া যায়। কলিজা ও মগজ ফ্রিজে না রেখে সঙ্গে সঙ্গে রান্না করে ফেলাই ভালো। এগুলো বাসি রান্না করলে স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়।
* ঘরে আনার পর মাংসে অবশ্যই ধুয়ে পরিষ্কার করে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এতে মাংসে থাকা ময়লা, অতিরিক্ত রক্ত পরিষ্কার হয়ে যায়। তারপর ফুড গ্রেডের প্লাস্টিকের ব্যাগ বা জিপলক বায়ুরোধক ব্যাগে ভরে মাংস সংরক্ষণ করতে হবে।
* ফ্রিজে চাকা মাংস না রেখে, ছোট ছোট প্যাকেট করে রাখা ভালো। প্রত্যেকবার বড় বড় প্যাকেট বের করে বরফ ছাড়িয়ে অল্প একটু নিয়ে বাকিটুকু আবার রেখে দিলে মাংসের স্বাদ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মাংসের প্যাকেট এমনভাবে করতে হবে যেন প্যাকেটের মোটামুটি অর্ধেক অংশ খালি থাকে।
* প্যাকেটগুলো থামের মতো সমান ও সুন্দর করে ভাঁজ করতে চেষ্টা করুন। মাংস যখন রাখা হবে তখন একটি প্যাকেটের মাঝে কাগজ দিয়ে আরেকটি প্যাকেট রাখতে হবে। এতে দীর্ঘদিন ফ্রিজে থাকলে একটির সাথে আরেকটি প্যাকেট আটকে যাবে না। ফ্রিজ থেকে সহজেই মাংসের প্যাকেট বের করে নিতে পারবেন।
* মাংস সংরক্ষণের পর ফ্রিজের তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি ফারেনহাইট বা মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নিচে রাখা উচিত। কারণ এতে তাড়াতাড়ি মাংস জমবে। এই তাপমাত্রায় মাংসের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, ইস্টসহ জীবাণুগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
* মাংস ফ্রিজে রাখার আগে মার্কার দিয়ে পলিথিনের প্যাকেটে তারিখ লিখে রাখুন। এতে মাংস কত দিন ধরে ফ্রিজে আছে, তা সহজেই বের করতে পারবেন। মাংসের প্যাকেটের লেভেল করে বা ট্যাগও লাগিয়ে রাখতে পারেন। যেমন কিমা, কলিজা, মগজ ইত্যাদি। এতে পরবর্তীকালে খুঁজে বের করতে সুবিধা হবে।
* ফ্রিজের ওপরের দিকের তাকে মগজ, কিমা, কলিজা, ছোট মাংস ইত্যাদি রাখুন। বড় মাংস ও হাড়ের প্যাকেটগুলো রাখুন নিচের দিকে। বড় হাড়ওয়ালা মাংসের নিচে চাপে পিষ্ট হতে পারে, এমন কিছু নিচে না রাখা ভালো।
* কোন প্যাকেটটা আগে বের করা লাগবে আর কোনটি পরের দিকে তাও মাথায় রাখুন প্যাকেট গোছানোর সময়। খুব আঁটসাঁট করে মাংসের প্যাকেট ফ্রিজে রাখা যাবে না। পরে বের করতে সমস্যা হতে পারে। ফ্রিজ টইটুম্বুর করে ফেলাও ঠিক নয়।
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি
অংকিতা চৌধুরী কোরবানির পর ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ লাইফস্টাইল সুন্দর যাপন