যন্ত্রনগরে আমার এক টুকরো সবুজ বারান্দা
১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৪:০৪
শাহানা হুদা রঞ্জনা
আমরা যারা ঢাকায় বা অন্যান্য শহরে ফ্লাটবাড়িতে থাকি, তাদের ঘরবাড়ি সাজানোর যা কিছু শখ আহ্লাদ তা মেটানোর উপায় ছোট পরিসর থেকেই খুঁজে বের করতে হয়। আমি সবসময় চাই আমার সামর্থ্যের মধ্যে থেকে বাড়ি-ঘর, বারান্দাটা একটু সাজিয়ে গুছিয়ে রাখি।
বারান্দা একই সাথে ভীষণই দরকারি আর রোমান্টিক একটি জায়গা। একবার ভাবুনতো- এক চিলতে বারান্দা, দু’খানি চেয়ার আর একটা ছোট্ট টেবিল পাতা, আপনার বন্ধুর সাথে বসে চা কিংবা কফির কাপ হাতে গল্পে মেতে উঠেছেন। অথবা ঘরের কোণের খুব ছোট্ট একটা পরিচ্ছন্ন বারান্দায় দাঁড়িয়ে মা-মেয়েতে বৃষ্টির পানিতে হাত ভেজাচ্ছেন। ঝিরিঝিরি বৃষ্টির পানি এসে শরীরে পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে। নাগরিক জীবনে অনেকের জন্যই এটা একটা কল্পনা মাত্র। কারো কারো জন্য তো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এরপরেও কারো কারো রয়েছে ঘরের সাথে একটা বা দু’টো ছোট বারান্দা। আমরা চাইলেই কিন্তু এই বারান্দাটিকে সাজিয়ে রাখতে পারি, যেন আমাদের চোখে একটু আরাম হয়।
নিজের গৃহকোনে এক টুকরো শান্তিময় জায়গা গড়ার ভাবনা থেকেই মূলত আমি বারান্দা সাজানোর কথা ভাবি। ঘরের বাইরে একটু সবুজ, একটু সুন্দর। আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে দেখে এসেছি হয় বারান্দায় বাসার সব আবর্জনা জমিয়ে রাখে বা স্টোর রুম বানায়। কখনো কখনো তো পর্যাপ্ত রুম না থাকলে একটা খাট ফেলে থাকার জায়গা বানানো হয়। আমি বরাবরই এর বিরুদ্ধে ছিলাম। যখন নিজের সংসার হয় তখন এসে নিজের মত করে বারান্দা সাজানোর শখ পূরণ করতে চেষ্টা করি। মোট কথা নিজের আনন্দ থেকেই এমনটা করতে চেয়েছি।
আপনাদের মাঝে অনেকেই হয়তো আমারই মতন নিজের এক চিলতে বারান্দাকে সাজিয়ে তুলতে চান। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তাদের জন্য কিছু বিষয় তুলে ধরব আজ।
• সবার প্রথমে ঘর বা বারান্দা সাজানোর জোরালো ইচ্ছা থাকতে হবে।
• এসব করতে গেলে কিছু না কিছু ঝামেলা হবেই, সেটা পোহানোর ধৈর্য থাকতে হবে।
• যে বারান্দা সাজানোর পরিকল্পনা করেছেন সেখানে পারতপক্ষে কাপড় মেলা কমাতে হবে বা একদমই বন্ধ করতে হবে।
• বারান্দার আকার অনুযায়ী কিছু গাছ কিনে সাজাতে পারেন।
• গাছ লাগাতে বেশ কম দামেই সুন্দর সুন্দর ডিজাইন বা রঙের টব পাওয়া যায়, সেগুলো সংগ্রহ করুন,
• গাছের নিয়মিত পরিচর্যা লাগে, সেটা করার ধৈর্য থাকা প্রয়োজন। যেমন পাতা পরিষ্কার করুন, টবের থেকে কোন মাটি বা পানি যেন মেঝেতে না পড়ে সেটা খেয়াল রাখুন। পড়লেও সাথে সাথে মুছে ফেলুন।
• গাছের সাথে মিলিয়ে ছোট বা বড় শো পিস রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে এমন শো পিস বেছে নিন যেগুলো বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও নষ্ট হবেনা।
• বারান্দার আকার অনুযায়ী দেওয়ালে ছোট কিংবা বড় পেইন্টিং, ফটোগ্রাফ বা আয়না ঝোলাতে পারেন।
এভাবে বারান্দাকে সাজিয়ে নিন মনের মত করে। ক্লান্ত শরীর আর মনকে একটু তাজা করতে দিনশেষে এসে বসুন বারান্দায়। সব ক্লান্তি ডানা মেলে দেবে দূরে। ঘরের ভিতরেই নিজেকে রিচার্জ করার এই কৌশল জেনে নিলেন তো? এখন আপনার বারান্দা হয়ে উঠুক নিজেকে ঝরঝরে সজীব করে তোলার আনন্দ নিকেতন।
লেখক- কোঅর্ডিনেটর, মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
সারাবাংলা/এসএস