খাবারে আমিষ কেন জরুরি?
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৪০
আজ বিশ্ব আমিষ বা প্রোটিন দিবস। বিশ্বব্যাপী মানুষের দেহে প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা বা প্রোটিনের অভাব দূর করতে এ সচেতনতামূলক দিনটি পালিত হয়। শরীরকে সুস্থ্য রাখতে প্রোটিনের বিকল্প নেই। অনেকেই ভাবেন গুরুত্বপূর্ণ এই পুষ্টি উপাদানটি শুধুমাত্র শরীরের ওজনবৃদ্ধির সঙ্গেই সম্পর্কিত। কিন্তু আমাদের শরীরে হজম প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে পেশী সংশ্লেষণ প্রায় সব ধরনের কাজেই প্রোটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই প্রোটিন থাকতে হবে যা আমাদেরকে একটি সুস্থ্য জীবন উপহার দিবে। শরীরে প্রোটিনের অভাব হলে যেসব সমস্যা দেখা দেয় তার মধ্যে অন্যতম হলো-
ওজন না কমা
নিরলস পরিশ্রম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি সব ধরনের চেষ্টার পরও যদি ওজন না কমে তাহলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে প্রোটিনের অভাব রয়েছে। পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ না করলে শরীরের পেশীগুলো শক্তি পাবে না। যার কারণে শরীরের চর্বি না কমে বরং পেশীগুলোর ক্ষতি ডেকে আনে। পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ না করলে আপনি ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়বেন। তাই সুস্থ্য সবল থাকতে প্রতিদিন খাবারে প্রোটিন অবশ্যই রাখুন।
মানসিক অস্থিরতা
মানসিকভাবে অস্থির দেখানো ও খিটখিটে মেজাজের কারণ হতে পারে প্রোটিনের অভাব। মেজাজের জন্য দায়ী বিভিন্ন হরমোন এবং নিউরোট্রান্সমিটার সংশ্লেষণের জন্য প্রোটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, সেরোটোনিন হরমোনের কারণে মানুষ নিজেকে মানসিকভাবে নিরাপদ ও সুখী মনে করে।
তীব্র ক্ষুধা
প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যেতে আমাদের শরীরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের পুষ্টি প্রয়োজন। চাহিদামতো প্রোটিন গ্রহণ না করলে, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। যার ফলে হঠাৎ করে তীব্র ক্ষুধা অনুভব হতে পারে। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে অবশ্যই প্রোটিনসম্মৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে।
প্রোটিন যে উপকারগুলো করে
হাড়ের গঠন শক্তিশালী করে
হাড়ের গঠনের জন্য ক্যালসিয়াম অবশ্যই প্রয়োজন, কিন্তু জানেন কি, আমাদের হাড়ের ওজনের ৫০ শতাংশই প্রোটিন। হাড়কে সুস্থ্য ও দীর্ঘদিন ভালো রাখতে তাই ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের সঙ্গে খাবারে পর্যাপ্ত প্রোটিন রাখা জরুরি।
ত্বক, চুল ও নখের সমস্যা
আমাদের শরীরের ত্বক, চুল ও নখের প্রাথমিক উপাদান হলো প্রোটিন। তাই শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে এসব জায়গা দেখে সবার আগে বোঝা যায়। প্রোটিনের ঘাটতি বেশি হলে ত্বকে লালচে ভাবসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া চুল পাতলা, বিবর্ণ হওয়া, চুল পড়া, নখ ভেঙ্গে যেতে পারে।
প্রতিদিনের জীবনযাপন এবং একেকজনের স্বাস্থ্যের নানা বিষয়ের ওপর নির্ভর করে প্রোটিনের চাহিদা ভিন্ন হতে পারে। যেমন, প্রতিদিন জিমে যান এমন একজনের প্রোটিনের চাহিদা কায়িক শ্রমে অনভ্যস্ত এমন একজনের চেয়ে আলাদা হবে। প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য ১-১.৫ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। তার মানে হলো, যদি কারো শরীরের ওজন ৬০ কেজি হয়, তাহলে তাকে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৯০ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। মাংস, ডিম, মাছ, দুধ, সয়া জাতীয় প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রোটিন গ্রহণ করা সবচেয়ে ভালো।
সারাবাংলা/এসবিডিই