Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাসি কেন খুব প্রয়োজনীয়?

লাইফস্টাইল ডেস্ক
৭ মে ২০২৩ ১৬:৪৪

প্রতিবছর মে মাসের প্রথম রবিবার বিশ্ব হাসি দিবস উদযাপন করা হয়। চলতি বছরে আজ বিশ্ব হাসি দিবস। বিশ্বব্যাপী ‘লাফটার ইয়োগা’ বা হাসির মাধ্যমে যোগব্যায়াম আন্দোলনের উদ্যোক্তা ভারতীয় চিকিৎসক মদন কাটারিয়া ১৯৯৮ সালের ১০ মে সর্বপ্রথম এই দিন উদযাপনের সূচনা করেন। আজ বিশ্ব হাসি দিবস উপলক্ষে জেনে নেই সুস্বাস্থ্যের সাথে হাসির যোগ নিয়ে কিছু কথা।

টিভিতে প্রচারিত কমেডি শোগুলোতে এত হাসির ফোয়ারা বয়ে যায় কারণ হাসি সংক্রামক। খেয়াল করে দেখবেন আপনি যখন একা আছেন তার চাইতে অনেক লোকের মাঝে থাকলে হাসি আসে বেশি। আর আপনি যত বেশি হাসবেন, তত বেশি আপনি নিজে ও আপনার চারপাশের মানুষরাও ভালো থাকবে।

বিজ্ঞাপন

কৌতুক শুনে আমরা যতটা না হাসি তার চাইতে বেশী হাসি পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটালে। আর এটাই হাসির সামাজিক প্রভাব যা আসলে আমাদের স্বস্থ্যের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে কারও সাথে সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় না হলে হাসাহাসি করা সম্ভব হয়না। যখন আপনি কারও ব্যপারে সত্যিকারে মনযোগী হবেন, যখন মোবাইলটা একপাশে সরিয়ে রেখে কারও সাথে মুখোমুখি আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন, তখন আপনার স্নায়ুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় থাকবে ও আপনি দ্বন্দ্ব সংঘাত থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন। হাসলে স্বতস্ফূর্ততা তৈরি হয়। বিরক্তিভাব দূর হয়। অন্যকে জাজ করা বা বিচার করার মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসা যায়। সমালোচনা করার মনোভাব কমায় ও সন্দেহ দূর হয়। এভাবেই হাসি পারস্পারিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটায়।

কৃত্রিম হাসি

কি হবে যদি কোনকিছু হাস্যকর মনে না হয় আপনার কাছে? কৌতুককর মনে না হওয়ায় হাসতে পারছেন না- জেনে রাখুন কৃত্রিম হাসি সত্যিকার হাসির মতই কার্যকরী। জর্জিয়া স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে হাসির মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্কদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এমনকি অন্যকে হাসতে শুনলেও কোন কারণ ছাড়াই সত্যিকার হাসির উদ্রেক ঘটে।

বিজ্ঞাপন

নিজের জীবনে কৃত্রিম হাসি আনতে লাফ ইয়োগা ও লাফ থেরাপি গ্রুপগুলো বেশ কার্যকরী। এমনও হতে পারে কোন কৌতুক শুনে হাসি না পেলেও আপনি হাসতে পারবেন। এতে আপনার সাথে অন্যের সম্পর্ক সহজ হয়ে স্বাভাবিক হাসির উদ্রেক ঘটাবে।

জীবনে কীভাবে আরও রসবোধ যোগ করবেন?

নিজের প্রতি হাসা

নিজের বিব্রতকর মূহূর্ত নিয়ে অন্যের সামনে কথা বলুন। যখন আপনি গম্ভীর ছিলেন, সেসব দিন নিয়ে স্বতস্ফূর্তভাবে কথা বললে দেখবেন নিজেকে আর তত গম্ভীর লাগছেনা।

জটিল পরিস্থিতি নিয়ে আক্ষেপ না করে হেসে ফেলতে চেষ্টা করুন। খারাপ মুহূর্তে হাস্যরসের উপাদান খুঁজে বের করা সহজ নয়। নেতিবাচক কিছু ঘটতে দেখলে তার থেকে হাস্যকর কিছু খুঁজে বের করতে চেষ্টা করুন। এতে পরিস্থিতি সামলানো সহজ হয়ে যাবে।

কাছেই রাখুন মন ভালো করার উপাদান

নিজের ডেস্কে বা গাড়িতে খেলনা রাখুন। সম্ভব হলে অফিসে হাস্যকর কোন পোস্টার রাখুন। কম্পিউটারে এমন কোন স্ক্রিনসেভার রাখুন যেটা দেখলে আপনার হাসি পাবে। পরিবার ও বন্ধুদের সাথে হাসছেন বা মজা করছেন এমন মুহূর্তের ছবি বাঁধিয়ে রাখুন।

হাস্যকর ঘটনা মনে রাখতে চেষ্টা করুন

মজাদার কোন কৌতুক বা মজার ঘটনা শুনলে তা লিখে রাখুন বা কাউকে বলুন যাতে তা মনে থাকে।

নেতিবাচক বিষয় এড়িয়ে চলুন

নেতিবাচক মানুষ, ঘটনা, গল্প কিংবা আলোচনা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন যতটা সম্ভব। জীবনে সবকিছু আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে তা না, বিশেষত অন্যের আচরণ। দুনিয়ার ভার সব নিজের কাঁধে চাপালে অন্যের প্রশংসা পাওয়া সহজ মনে হলেও এটা আসলে অবাস্তব আর অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস।

নিজের ভেতরের শিশুসত্তাকে জাগ্রত করুন

আপনার আশপাশে থাকা বাচ্চাদের দেখুন ও তাদেরকে অনুকরণ করতে চেষ্টা করুন। কারণ তারাই জীবনকে সহজভাবে নেয় ও সাধারণ বিষয়ে হেসে ফেলতে ওস্তাদ।

মানসিক চাপ কমান

মানসিক চাপ হাসি ও রসবোধের পথে দারুণ অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। তাই মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিৎ সবসময়। তাতক্ষনিকভাবে মানসিক চাপ কমানোর ভালো উপায় হচ্ছে হাসির কোন ঘটনা বা মুহূর্ত মনে করা। সেটা হতে পারে আপনার বাচ্চা, বন্ধু বা পরিচিতের করা কোন হাস্যকর কাজ কিংবা বলা কোন কথা।

হাসি ছাড়া একদিনও নয়

হাসিকে ব্যায়াম কিংবা সকালের নাস্তার মত নিয়ম বানিয়ে ফেলুন। দিনের কোন না কোন সময়ে হাসির জন্য কোন না কোন উপলক্ষ খুঁজে বের করুন। দশ থেকে পনেরো মিনিট সময় বের করে হাসুন প্রতিদিন। প্রতিদিন যত হাসবেন তা তত বেশি অভ্যাসে পরিণত হবে।

রসবোধ ব্যাবহার করে জীবনে চ্যালেঞ্জ উত্তীর্ণ হোন

হাসি, মজা ও আনন্দ করার মাধ্যমে জীবন শুধুমাত্র আনন্দময় হবে তা নয় বরং এতে নানা সমস্যার সমাধান করা সহজ হবে। সমস্যাকে তাই জটিলভাবে না নিয়ে যতটা সম্ভব সহজভাবে দেখা উচিৎ। এতে সমস্যা থেকে উত্তীর্ণ হতে আপনাকে মানসিক চাপের মুখোমুখি হতে হবে না আবার নতুন নতুন অনেককিছু শিখতেও পারবেন।

হাসি, রসবোধ আর খেলাধুলা জীবনের অংশ হয়ে গেলে বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী, প্রিয়জন বা পরিবারের লোকের সাথে আনন্দময় হাসিখুশির সাথে সময় কাটানো রোজকার ব্যাপার হয়ে যাবে। এতে জীবনকে আপনি আরও ইতিবাচক, আনন্দদায়ক ও নিরুদ্বেগের সাথে দেখতে পারবেন।

সারাবাংলা/এসবিডিই

লাইফস্টাইল সুন্দর যাপন হাসি কেন খুব প্রয়োজনীয়?

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর