হরেক উপকারের ক্যাস্টর অয়েল
৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:০৭
ক্যাস্টর অয়েল যুগ যুগ ধরেই সারাবিশ্বে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রাচীন মিশরে এই তেল ব্যবহার করা হতো প্রদীপ জ্বালাতে। এছাড়াও গর্ভবতী মায়ের প্রসব ব্যথা কমাতে ও চোখের বাহ্যিক সমস্যাগুলো এড়াতে মিশরে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের প্রচলন ছিল। পরবর্তীতে সারাবিশ্বে ওষুধ ও প্রসাধন তৈরিতে এই তেলের ব্যবহার বেড়ে যায়।
আজকাল ত্বক, চুল ও দেহের নানা সমস্যায় ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করছেন অনেকেই। সঠিক মাত্রায় খেলে বা ব্যবহার করলে এই তেলের উপকারিতা অনেক।
মনে রাখা ভালো, ক্যাস্টর অয়েল খুব ভারী এবং স্বাদেও ভালো নয়। তাই অন্য খাদ্য উপাদানের সাথে মিশিয়ে খেতে হয়। তবে ত্বক ও চুলে সরাসরি কিংবা অন্য তেলের সাথে মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। জেনে নেই, ক্যাস্টর অয়েলে স্বাস্থ্যগত উপকারিতা সম্পর্কে-
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
যাদের দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, ক্যাস্টর অয়েল তাদের জন্য খুব ভালো। লেবু পানির সাথে ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে কোষ্ঠকাঠিন্যসহ পেটের অন্যান্য সমস্যা দূর হবে। তবে ক্যাস্টর অয়েল খেতে হবে অল্প পরিমাণে। বেশি খেলে মাথা ঘোরা, বমি কিংবা ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শমতো ক্যাস্টর অয়েল খেতে হবে।
প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে
ক্যাস্টর অয়েলে আছে রিসিনোলেইক ও মোনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড। এগুলো ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। পরিবেশগত কারণে আমাদের ত্বকের আর্দ্রতা হারিয়ে যায়। ক্যাস্টর অয়েল ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে। এজন্য কিছু মেকআপ, লোশন ও ক্লিনজারে ক্যাস্টর অয়েল মেশানো থাকে।
ক্যাস্টর অয়েল নারকেল তেল, আমন্ড তেল ও অলিভ ওয়েলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক পরিষ্কার করে এই তেল ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।
ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারে কারো কারো অ্যালার্জি হতে পারে। তাই প্রথমদিনই সরাসরি মুখ বা সারা শরীরে ব্যবহার করবেন না। শরীরের ছোট একটি অংশে ব্যবহার করুন। সমস্যা বেশি হলে ব্যবহার না করাই ভালো।
ব্রণের সমস্যা দূর করতে
ত্বকের প্রদাহ ও ব্যাকটেরিয়া দূর করতে ক্যাস্টর অয়েল খুব কার্যকরী। যাদের ব্রণের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত এই তেল ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া ব্রণের কারণে জ্বালাপোড়া থাকলেও কমে যাবে।
ভালো ফল পেতে, রাতে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এরপর গরম পানির ভাপ নিন কিছুক্ষণ। এতে লোমকূপের মুখ খুলে যাবে। এবার মুখ ভালোভাবে মুছে নিন। একটু তুলায় বা হাতের তালুতে ক্যাস্টর অয়েল নিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। সারারাত এভাবে রেখে সকালে ফেসওয়াস দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এই পদ্ধতিতে নিয়মিত ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করলে ব্রণের সমস্যা কমে যাবে।
ছত্রাক প্রতিরোধে
এক ধরনের ছত্রাক আছে, যা দাঁতের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই ছত্রাক মাড়ির সংক্রমণ ঘটায়। ক্যাস্টর অয়েল এই ছত্রাক প্রতিরোধ করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স্কদের দাঁতে যে সমস্যাগুলো দেখা দেয়, সেগুলো প্রতিরোধ করতে ক্যাস্টর অয়েল উপকারি।
চুলের যত্নে
চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে ক্যাস্টর অয়েল বেশ জনপ্রিয়। আপনার কন্ডিশনারের সাথে (বোতলে) এক টেবিলচামচ ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পু করার পর এই কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এতে চুলের রুক্ষতা দূর হবে। আর চুলে আর্দ্রভাব বজায় থাকবে।
এছাড়া চুল পড়া ও আগা ফেটে যাওয়ার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে ক্যাস্টর অয়েল উপকারি। নারকেল কিংবা অলিভ অয়েলের সাথে ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করতে পারেন। খুশকি দূর করতেও ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করা যায়। খুশকি হলে মাথার তালুতে এই তেল ভালোভাবে লাগাতে হবে।
ক্যাস্টর অয়েল কতটুকু মাত্রায় আপনার শরীরের জন্য উপযোগী তা চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন।
সারাবাংলা/এসবিডিই