মুখরোচক জাংক ফুডের বদলে খাবেন কোন খাবারগুলো?
১৫ মে ২০১৮ ১৫:৫০
লাইফস্টাইল ডেস্ক।।
টিভি ছাড়লে খাবারের বিজ্ঞাপন, পেপার-ম্যাগাজিনে বড় করে ছাপা ছবি, রাস্তায় বের হলে মোড়ে মোড়ে জাংক ফুডের ছবিওয়ালা রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ড, বিরাট বিরাট বিলবোর্ডে আঁকা খাবারের ছবি দেখে নিজেকে সামলানো যে কারও জন্যই মুশকিল। দেখতে ও খেতে মুখরোচক হলেও এসব খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অতটা ভালো নয়। এসব খাবার খেতে খুব যখন ইচ্ছা করবে তখন তার বদলে অন্য কোন খাবার খেয়ে দেখতে পারেন। ক্যালরি বেশি থাকার পাশাপাশি এসব খাবার স্বাস্থ্যসম্মতও বটে।
আসুন দেখে নেই কোন জাংকফুডগুলোর বিপরীতে কোন কোন খাবার খেতে পারেন।
১. পাস্তার বদলে খান সুইট পটেটো নুডলস
নুডলস কিংবা পাস্তা খেতে মজা হলেও এটা কিন্তু খুব একটা স্বাস্থ্যকর খাবার না। ময়দার তৈরি নুডলস বা পাস্তার বিকল্প হতে পারে মিষ্টি আলুর নুডলস। বাজারে এখন সবজি স্পাইরাল করার অর্থাৎ লম্বা সিলিন্ডার আকারে কাটার নানারকম ম্যানুয়াল বা বৈদ্যুতিক যন্ত্র পাওয়া যায়। সেসব যন্ত্রের সাহায্যে যে কেউ চাইলেই মিষ্টি আলু নুডলস আকারে কেটে নিতে পারেন। আর এই নুডলস হতে পারে ময়দার তৈরি নুডলস বা পাস্তার দারুণ বিকল্প। ঠিক নুডলসের মত করেই সিদ্ধ করে নিয়ে মুরগি বা সবজি সহযোগে রান্না করতে পারেন কম ক্যালরির সুইট পটেটো নুডলস।
২. পিজ্জার ক্রাস্ট বা বেস বানান ফুলকপি দিয়ে
জাংক ফুডের মাঝে পিজ্জা অন্যতম জনপ্রিয় খাবার। পিজ্জা দেখলে লোভ সামলানো মুশকিল কিন্তু পিজ্জা ডো বানাতে ব্যবহৃত ময়দা, ডিম, লবণ কিংবা চিনি মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তাই পিজ্জা ডো হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন ফুলকপির ফুলের ক্রাস্ট। ফুলকপির ক্রাস্ট গ্লুটেন ফ্রি, লো কার্ব আবার ক্যালরিও কম।
৩. ম্যাশড পটেটোর বিকল্প ম্যাশড কলিফ্লাওয়ার
আমাদের দেশে পেঁয়াজ, মরিচ, শরিষার তেল দিয়ে মাখা আলু ভর্তা যেমন জনপ্রিয় তেমনি পশ্চিমা বিশ্বে সাইড ডিশ হিসেবে ম্যাশড পটেটো বেশ জনপ্রিয় খাবার। এই ম্যাশড পটেটো সাধারণত মাখন, ফ্রেশ ক্রিম ইত্যাদি সহযোগে রান্না করে নেওয়া হয়। যার ফলে এটা আসলে খুবই ক্যালরিবহুল একটা খাবারে পরিণত হয়। বাচ্চাদের জন্য স্বাস্থ্যকর হলেও পরিণত বয়সের কারও জন্য এই খাবার ততটা স্বাস্থ্যসম্মত না। কিন্তু ম্যাশড পটেটোর বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন ম্যাশড কলিফ্লাওয়ার। ঠিক আলুর মতই ফুলকপির শুধুমাত্র ফুল নিয়ে সিদ্ধ করে মেখে খেতে হবে। চেষ্টা করবেন সিদ্ধ ফুলকপি থেকে যতটা সম্ভব পানি ঝরিয়ে নিতে।
৪. ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের বিকল্প হিসেবে মিষ্টি আলুর ফ্রাই
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই পছন্দ করেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় বানানো হয় অর্থাৎ ডুবো তেলে ভেজে তা একদমই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই না খেয়ে মিষ্টি আলুর ভাজা খেতে পারেন। মিষ্টি আলুতে ভিটামিন এ, বি৬, বি৫ ছাড়াও আছে প্রচুর পরিমাণ নিয়াসিন ও রিবোফ্লাভিনের মত পরিপোষক। অল্প অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল মেখে ওভেন বেক করেও খেতে পারেন মিষ্টি আলু। গাজর বা জুকিনি ফ্রাইও চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
৫. প্যানকেক বানাতে ব্যবহার করুন ডিম ও কলা
প্যানকেক ব্যাটার হিসেবে ময়দা, ডিম, তেল, চিনি ও দুধের পরিবর্তে ব্যবহার করুন ডিম ও কলা। ডিম আর পাকা কলার ব্যাটারের সাথে চাইলে অল্প নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন আর সুন্দর গন্ধ পেতে মেশাতে পারেন সামান্য ভ্যানিলা ফ্লেভার।
এই খাবারে না পাবেন ময়দার গ্লুটেন না দুগ্ধজাত কোন পদার্থ। সেইসাথে কলার মিষ্টতা এই খাবারকে বানায় সুস্বাদু।
৬. আইসক্রিমের পরিবর্তে খান আইস পপস
গরম হোক কি ঠান্ডা আইসক্রিম দেখলে জিভে জল আসে কম বেশি সবারই। বিশেষত গ্রীষ্মের তীব্র গরমে হিম ঠান্ডা আইসক্রিম যেন প্রাণ জুড়িয়ে দেয়। কিন্তু মোটা হয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই আইসক্রিম এড়িয়ে চলেন। যখন আইসক্রিম খেতে ইচ্ছা করবে তখন বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন ফ্রুট আইস পপ।
আপনার পছন্দের যে কোন ফলের পাল্প বা ঘন জুস ফ্রিজারে জমিয়ে আইসক্রিমের স্বাদ উপভোগ করতে পারেন। চাইলে ফ্রুট পাল্প আর টকদই ব্লেন্ড করেও বানাতে পারেন স্বাস্থ্যসম্মত আর মজাদার আইসক্রিম।
৭. ময়দার কেকের বদলে খান ক্যারট কেক
ময়দা, মাখন বা তেল, ডিম, চিনি ইত্যাদির মিশ্রণে বানানো কেক খেতে মজা লাগলেও এগুলো খুবউ উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন খাবার। ক্যালরি মেপে খেতে হয় তাই কেক দেখলেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। পরিস্থিতি এমন হলে আপনি অনায়াসে বেছে নিতে পারেন ক্যারট কেক। বাজারে ক্যারট কেক অতটা পাওয়া না গেলেও আপনি চাইলে বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারেন। এতে ময়দা, মাখন তো থাকেই না, গাজরের মিষ্টতাই এক কেককে বানিয়ে তুলবে মজাদার মিষ্টি ডেলিকেসি।
ওজন কমাতে চান কিংবা চান স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে। অথচ জাংকফুড দেখলে লোভ সামলাতে পারেন না তারা সহজেই জাংকফুদের বদলে অন্য খাবারগুলো বেছে নিতে পারেন।
ছবি- ইন্টারনেট
সারাবাংলা/আরএফ/এসএস