Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চোখ উঠলে কী করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক
৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:০৩

ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চারপাশে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ বাড়ছে। চিকিৎসকদের মতে, গরমে আর বর্ষায় চোখ ওঠার প্রকোপ বাড়ে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটিকে কনজাংটিভাইটিস বা কনজাংটিভার বলা হয়। চোখের একেবারে বাইরের স্বচ্ছ অংশটির ডাক্তারি নাম ‘কনজাংকটিভা’। ভাইরাসের সংক্রমণে সেখানে তৈরি হয় প্রদাহ, ফুলে যায় চোখের ছোট ছোট রক্তনালি। ফুলে থাকা রক্তনালিগুলোর কারণেই চোখের রং লালচে হয়ে যায়, যেটাকে আমরা চোখ ওঠা বা ‘কনজাংকটিভাইটিস’ বলে থাকি। তবে স্থানীয়ভাবে এ সমস্যাটি চোখ ওঠা নামেই পরিচিত। রোগটি ছোঁয়াচে। ফলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

বিজ্ঞাপন

কনজাংটিভাইটিস রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে ছড়ায়। রোগীর ব্যবহার্য বস্তু যেমন রুমাল, তোয়ালে, বালিশ অন্যরা ব্যবহার করলে অন্যরাও এতে আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া কনজাংটিভাইটিসের জন্য দায়ী ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশে যারা থাকে, তারাও এ রোগে আক্রান্ত হয়।

কনজাংটিভাইটিস এর লক্ষণ

এই সংক্রমণের ফলে চোখ গোলাপি বা লালচে হয়ে যায়, একই সঙ্গে চোখে কাঁটার মতো অনুভূতি হয়। খচখচে ভাব থাকে চোখে। এছাড়া চোখ দিয়ে পানি পড়া, সাদা স্রাব বা ময়লা জমা, চোখ জ্বালাপোড়া, ব্যথা, আলোর দিকে তাকাতে না পারা, আলোতে চোখ বন্ধ হয়ে আসতে চাওয়া, চোখ ফুলে যাওয়া ইত্যাদি যন্ত্রণাদায়ক লক্ষণ দেখা দেয়।

কনজাংটিভাইটিস আক্রান্ত হলে করণীয়

যদিও চোখ ওঠার সমস্যা নিজ থেকেই সেরে যায় কিছুদিনের মধ্যে,তবে কয়েকটি ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমে এর যন্ত্রণাদায়ক লক্ষণগুলো থেকে স্বস্তি লাভ করতে পারে। চোখ ওঠা ছোঁয়াচে রোগ। বাতাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে, তবে সবচেয়ে বেশি ছড়ায় বারবার হাত চোখে দিলে। হাত ধুতে হবে সাবান দিয়ে। কনজেক্টিভাইটিসের কারণে চোখের চারপাশে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। যা যন্ত্রণাদায়ক। এক্ষেত্রে চোখের জ্বালাপোড়া, ব্যথা এমনকি ফোলাভাব কমাতে ঠান্ডা সেঁক নিন। যা প্রদাহ কমাতে ও এই লক্ষণগুলোকে প্রশমিত করতে সাহায্য করতে পারে। এজন্য ঠান্ডা পানিতে একটি পরিষ্কার রুমাল বা ছোট তোয়ালে ভিজিয়ে তার থেকে অতিরিক্ত পানি ঝরিয়ে নিন। এবার ভেজা রুমালটি কয়েক মিনিটের জন্য আক্রান্ত চোখের উপর ধরে রাখুন। তবে খেয়াল রাখবেন পরিবারের অন্য কেউ যেন ওই রুমাল আর ব্যবহার না করেন, সেক্ষেত্রে তাদের মধ্যেও কিন্তু ছড়াতে পারে কনজেক্টিভাইটিস। এমনকি এক রুমাল দ্বিতীয়বার ব্যবহার না করাই ভালো ঠান্ডা সেঁক নেওয়ার জন্য।

বিজ্ঞাপন

পিঙ্ক আইজ বা গোলাপি চোখ কিংবা কনজেক্টিভাইটিস ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে হয়। এক্ষেত্রে চোখ থেকে ঘন স্রাব বা পুঁজ বের হতে পারে। ফলে সকালে ঘুম থেকে উঠলে দেখা যায় অনেকেই চোখ খুলতে পারেন না। কারণ পুঁজ দ্রুত শুকিয়ে যায় ও চোখের পাঁপড়ির সঙ্গে তা শুক্ত হয়ে লেগে যায়। ফলে চোখ খুলতে কষ্ট হয়। এমন হলে অবশ্যই একটি হালকা গরম ভেজা কাপড় দিয়ে আলতো হাতে চোখ পরিষ্কার করতে হবে। তবে চোখ জোরে জোরে ঘষা যাবে না।

একই সঙ্গে চোখের এই সংক্রমণের ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু বিষয়ের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে। চোখ ঘষা বা চুলকানো থেকে বিরত থাকতে হবে। চোখের পানি সাবধানে টিস্যু দিয়ে মুছে নিতে হবে। ব্যবহার করা সেই টিস্যু সাবধানে ফেলতে হবে। যাতে করে রোগ না ছড়ায়। চিকিৎসকের পরামর্শে আই ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে। বাইরে গেলে রোদচশমা ব্যবহার করতে হবে। নিজের প্রসাধনসামগ্রী অন্যদের ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না। আই ড্রপ অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন না। এক চোখে সমস্যা দেখা দিলে অন্য চোখকে সংক্রমণ থেকে নিরাপদে রাখতে হবে। সমস্যা এক সপ্তাহের মধ্যে না সারলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

চোখ ওঠার সমস্যায় স্বস্তি পেতে ব্যবহার করতে পারেন চোখের ড্রপ। চোখের জ্বালাপোড়া, পানি পড়া, ব্যথা বা কাঁটার মতো অনুভূতি সারাতে ওটিসি চোখের ড্রপ কিনে ব্যবহার করতে পারেন। চোখের ড্রপগুলো তাদের জন্য বিশেষ সহায়ক, যদি কেউ অ্যালার্জির কারণে কনজেক্টিভাইটিসে ভোগেন। এক্ষেত্রে ড্রপ চোখ পরিষ্কার করতে ও অ্যালার্জেন পদার্থগুলো অপসারণে করতে সহায়তা করে।

সারাবাংলা/এসবিডিই

চোখ উঠলে কী করবেন লাইফস্টাইল সুস্থ থাকুন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর