ডিম্বাশয়ে সিস্ট কেন হয়? প্রতিরোধে কী করবেন?
৩০ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:৩৪
আমাদের দেশে নারীদের প্রধান শারীরিক সমস্যাগুলোর মধ্যে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বা ডিম্বাশয়ে সিস্ট অন্যতম। ওভারি বা ডিম্বাশয়ের ভেতর অনেক সিস্ট থাকলে তাকে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বলে। সাধারণত হরমোনজনিত সমস্যাই এই রোগের জন্য দায়ী। তবে জিনগত ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণেও ডিম্বাশয়ে সিস্ট হতে পারে।
এদেশে উল্লেখযোগ্যভাবে এই সমস্যা বাড়ছে। ডিম্বাশয়ে সিস্ট থাকলে গর্ভধারণের ক্ষেত্রেও নানা জটিলতা দেখা দেয়। বন্ধ্যাত্ব রোগের অন্যতম একটি কারণও হলো এই রোগ। অতিরিক্ত ওজন, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, পুষ্টিকর খাবার কম খাওয়া, ফাস্ট ফুডের প্রতি আশক্তি ও ব্যায়াম না করাসহ নানা কারণে এই রোগ হতে পারে।
রোগের লক্ষণ:
অনিয়মিত পিরিয়ড, পিরিয়ডের সময় পেটে প্রচন্ড ব্যথা, মাথার চুল পাতলা হওয়া, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কালো দাগ হওয়া, বুক ও পেটে অতিরিক্ত লোম, গর্ভপাত, বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি।
সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ডিম্বাশয়ে সিস্টের সমস্যায় ভুগছেন তাদের খাদ্যতালিকা হতে হবে ‘ভালো’ । অর্থাৎ পুষ্টিকর খাবারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। পাশাপাশি কিছু পানীয় নিয়মিত খেলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
অ্যালোভেরা জুস
অ্যালোভেরা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এটি শরীরের টক্সিন (ক্ষতিকর পদার্থ) বের করতে সাহায্য করে। হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখে। ডিম্বাশয়ে সিস্ট প্রতিরোধে নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস খাওয়া ভালো। সকালে খালি পেটে অ্যালোভেরা জুস খেতে হবে।
অ্যাপল সিডার ভিনেগার
নানা কাজে অ্যাপল সিডার ভিনেগার ব্যবহৃত হয়। ডিম্বাশয়ে সিস্ট প্রতিরোধেও এটি কার্যকর বলে গবেষণায় বেরিয়ে আসে। অ্যাপল সিডার ভিনেগারে আছে অ্যালকালিন নামে এক ধরনের পদার্থ যা শরীরে পিএইচ (আয়রনের মাত্রা) ভারসাম্য বজায় রাখে। বিপাক প্রক্রিয়া ভালো রাখে। এছাড়া জরায়ু সিস্ট প্রতিরোধেও এটি বেশ কার্যকর। উষ্ণ গরম একগ্লাস পানিতে দুই থেকে তিন চা চামচ অ্যাপল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেতে হবে।
মেথি ভেজানো পানি
যারা ডিম্বাশয়ে সিস্ট সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য মেথি ভেজানো পানি বেশ উপকার করে। এই পানি ডিম্বাশয় সুরক্ষিত রাখে এবং অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে। একটি গ্লাসে কিছু মেথি ভিজিয়ে সারারাত রেখে দিন। সকালে এই পানি পান করুন।
ক্যামোমাইল টি
ক্যামোমাইল টি স্নায়ুতন্ত্রের উপকার করে এবং অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে। ডিম্বাশয়ে সিস্ট এর সমস্যা দীর্ঘদিন থাকলে অনেক নারী বিষণ্নতায় ভোগেন। এতে শরীরে অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ক্যামোমাইল টি দুশ্চিন্তা দূর করে সতেজতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বা ডিম্বাশয়ে সিস্ট সমস্যাকে কোনভাবেই অবহেলা করা ঠিক না। এই রোগের যেকোন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সময়মতো এই রোগের চিকিৎসা না হলে পরে নানা জটিলতা হতে পারে।
(টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে)
সারাবাংলা/এসবিডিই