সকালটা হোক আরেকটু মিস্টি
৩০ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:৪৮ | আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:৫১
রাস্তার জ্যাম, যানবাহনের অনিশ্চয়তা, অফিসে কাজের চাপ— সব মিলিয়ে সারাদিন ঝক্কি-ঝামেলার কমতি নেই। এর মধ্যেও যদি অন্তত সকালটা একটু চাপমুক্ত কাটানো যায়, তাহলে সারাদিনের এসব চাপের ভার সামলানোও অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। তবে চাইলেই তো আর মনের মতো মিষ্টি একটা সকাল এসে ধরা দেবে না। এর জন্যও চাই প্রস্তুতি, তার কিছুটা সেরে রাখতে হবে আগের রাতেই। আসুন দেখে নেই, কোন ৫ উপায়ে সকালটা মধুর বানানো যায়।
কিছু কাজ সারতে হবে রাতেই
ঘুমানোর আগে যতটা সম্ভব পরদিনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন। পরদিন যে পোশাক পরবেন, সেটা গুছিয়ে রাখুন। সম্ভব হলে দুপুরের খাবারটাও প্যাক করে ফ্রিজে রাখুন।
প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন— জুতা, চাবি, ছাতা, রেইনকোট, ইত্যাদি বাড়ির প্রধান দরজার পাশে গুছিয়ে রাখলেও সকালে অনেকটাই চাপমুক্ত থাকবেন। আগের দিন রাতেই ক্যালেন্ডারের পাতা বদলে রাখুন। ত্বক পরচর্যা, নখ কাটা, নেইল পলিশ দেওয়া বা এমন কাজগুলো রাতে করে রাখলে সকালে খানিকটা নির্ভার থাকতে পারবেন।
অ্যালার্ম ঘড়ির স্নুজ বাটনকে বলুন না
ঘুম ভাঙতেই অ্যালার্ম ঘড়ি বন্ধ করুন। আর ১০ মিনিট ঘুমাই ভেবে স্নুজ বাটন চাপবেন না। যখন ঘুম ভাঙা প্রয়োজন, তখনই অ্যালার্মের সময় সেট করুন।
প্রতিবার অ্যালার্মের শব্দ আমাদের শরীরের কর্টিসল নামক হরমোনে নাড়া দেয়। কর্টিসল হরমোন এক ধরনের গ্রাহক হিসেবে কাজ করে, যা শরীরের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে প্রভাব ফেলে। এটা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, লবণ ও চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রক্তচাপ নাগালে রাখে, হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে, ত্বকের প্রদাহ কমায় ও স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
তাই কর্টিসল হরমোন যেন স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট সময়ে অ্যালার্ম দিন ও সেই সময়েই উঠুন। প্রয়োজনে অ্যালার্ম ঘড়ি বিছানা থেকে দূরে রাখুন যেন ঘুম থেকে জেগে হেঁটে গিয়ে অ্যালার্ম বন্ধ করতে হয়।
ছোট ছোট জিনিস এক জায়গায় রাখুন
বাইরে বের হওয়ার আগ মুহূর্তে তালা-চাবি খুঁজতে গিয়েই অফিসে দেরি হয়ে গেল— এমন ঘটনা আপনার ক্ষেত্রে কখনো ঘটেনি, তা বিশ্বাস করতে বলবেন না। বরং অনেকেই আছেন যাদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা নিয়মিত। সকালে তাড়াহুড়ার সময় কিভাবে সময় নষ্ট হওয়ার এই ঘটনা এড়াবেন? উপায়টা হলো— সকালে অফিসে বা অন্য কাজে বের হওয়ার আগে যা কিছু প্রয়োজন, রাতেই সেগুলো কোথাও গুছিয়ে হাতের কাছে রাখুন। ভালো হয় এগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে না রেখে কোনো নির্দিষ্ট একটি জায়গায় রাখলে। প্রয়োজনে ড্রয়ার, ছোট ট্রে, বাটি বা একটি ঝুড়ি বরাদ্দ রাখুন এই কাজে। ঘরে ফেরার পরও এসব ছোট-খাটো জিনিস ঠিক ওই জায়গাটিতেই নামিয়ে রাখুন। এই অভ্যাস রপ্ত করতে পারলে সকালে বের হওয়ার আগে আর খোঁজাখুঁজিতে সময় নষ্ট হবে না।
সকালের নাস্তার প্রস্তুতি রাখুন আগেই
অনেকেই তাড়াহুড়ায় সকালের খাবার না খেয়েই বের হয়ে যান। এই প্রবণতা শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। সম্ভব হলে সকালের নাস্তা আগের দিনই তৈরি করে রাখুন। ওটস, খিচুড়ি, স্যান্ডুইচ, নুডলস, রুটি, সবজি— এসব আগেই রান্না করে রাখা যায়। সকালে উঠে গরম করে খেয়ে নিতে পারবেন। আবার দুপুরের খাবার হিসেবে প্যাক করেও নিতে পারেন।
চা কিংবা কফি খাওয়ার জন্য পাত্র, টি-ব্যাগ, চা পাতার কৌটা, কফির পাত্র, দুধ, চিনি সব নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন। এতে দ্রুত কাজ করতে সুবিধা হবে।
কিছুটা সময় নিজের সঙ্গে
ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল হাতে নেবেন না। কিছুটা সময় নিজের সঙ্গে কাটান। ঘুম ভেঙেই করুন যোগ ব্যায়াম বা খালিহাতের কোনো ব্যায়াম।
দিনের প্রথম চা বানিয়ে আস্তে ধীরে চুমুক দিন, লিখে ফেলুন সারাদিনের কাজের তালিকা। কিছুটা সময় নিরিবিলিতে কাটান। চা বা কফি পান করতে করতে চোখ বুলাতে পারেন সংবাদপত্রেও। সারাদিন চাপমুক্ত থাকার জন্য সকালে নিরিবিলিতে কাটানো এই সময়টা আপনাকে যথেষ্ট সাহায্য করবে।
সারাবাংলা/এসবিডিই