Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রোজায় যেসব খাবার আপনাকে সুস্থ রাখবে

লাইফস্টাইল ডেস্ক
১ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৫৩

রমজান সংযম, সহিষ্ণুতা, আত্মত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির মাস। মাসব্যাপী রোজা পালনের মাধ্যমে আত্মা ও মানসিক পরিশুদ্ধতা লাভ যেমন হয়; ঠিক তেমনি মানবদেহের বিভিন্ন তন্ত্রগুলোয় বহুবিধ ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয় বলে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে। রোজার সময় শরীরের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রমে অভিযোজন ঘটে। শরীরের তরল অংশের ভারসাম্য রক্ষার্থে রেচনতন্ত্র, শ্বাসতন্ত্র এবং খাদ্য ও পরিপাকতন্ত্র ইত্যাদিসহ সংশ্লিষ্ট হরমোন ও এনজাইমগুলোতে পরিবর্তন সাধিত হয়, যা মানবদেহকে পরিশুদ্ধ করতে সহায়তা করে।

বিজ্ঞাপন

রোজার মাসে যতটা সম্ভব সাধারণ ও স্বাভাবিক খাবার থাকা উচিত। যদিও সারাদিনের রোজার পর ইফতারে অনেক কিছুই খেতে ইচ্ছে করে। তবে ভাজাপোড়া ও ভারী খাবার খেলে পেটের সমস্যা, মাথাব্যথা, দুর্বলতা, অবসাদ, আলসার, অ্যাসিডিটি, হজমের সমস্যা ইত্যাদি হতে পারে। অনেকের ওজনও বেড়ে যায়। তাই সুস্থ শরীরে ও দেহের ওজন না বাড়িয়ে পুরো রোজার মাস ভালো থাকার জন্য একটা ব্যালেন্স ডায়েট বা সুষম খাবারের দরকার। রোজায় শরীরকে হাইড্রেট রাখতে প্রচুর পানি, মৌসুমি ফল ও সবজির জুস বা স্মুদি এই ধরনের তরল, ঠাণ্ডা খাবার ও আঁশ জাতীয় খাবার রাখতে হবে। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত জুস বা খাবার না খেয়ে প্রাকৃতিক খাবার থেকে অ্যানার্জি নেয়াই ভালো।

বিজ্ঞাপন

ইফতার

স্বাভাবিকভাবেই সারাদিন রোজার পর রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। সে জন্য ইফতারের সময় শরীর, ব্রেইন ও স্নায়ুকোষ খাবারের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক শক্তির জোগান চায়। তাই ইফতারের খাবারটা হতে হবে ঠাণ্ডা ও সহজে হজম হয় এমন। ইফতার খাবার সময়কে দুই ভাগে ভাগ করে খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত। মাগরিবের নামাজের আগে কিছুটা খেয়ে আর দ্বিতীয় ভাগ মাগরিবের নামাজের পর খেতে হবে। কারণ একসঙ্গে খেলে বেশি খাবার খাওয়া হয়ে যায়, ফলে নানারকম জটিলতা তৈরি করে শরীরকে ক্লান্ত করতে পারে।

ইফতারে রাখা যায় যে খাবার-

খেজুর ৩- ৪টি, হালকা গরম সবজি, মাশরুম, চিকেন বা ওটস স্যুপ ১ বাটি, সেদ্ধ ছোলা আধা বাটি, মুড়ি, ১টি সেদ্ধ ডিম, যে কোনও ফলের জুস যেমন আখের রস, কচি ডাবের পানি, দইয়ের লাচ্ছি, কয়েক ধরনের ফল ও দই মিলিয়ে তৈরি করা যায় স্মুদি অথবা খেতে পারেন ১ গ্লাস লাবাং।

মাগরিবের নামাজের পর কম মিষ্টির পায়েস, পুডিং বা চিড়া- দই অথবা মিক্সড ফল দিয়ে ওটস ১ বাটি, প্যানকেক, কাটা ফল, ফলের সালাদ, ফলের কাস্টার্ড অথবা খেতে পারেন বেশি করে সবজি দিয়ে নুডুলস, চিকেন মোমো, ঘরে তৈরি মুরগির হালিম।

রাতের খাবার

ইফতারের পর এশা ও তারাবির পরপরই আমাদের রাতের খাবার গ্রহণের প্রস্তুতির শুরু। খাবারের বিরতিটা স্বল্প হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ ক্ষুধা না- ও লাগতে পারে। তাই ডিনারটা হালকা হওয়া বাঞ্ছনীয়। ডিনারের পর থেকে সেহেরির সময়ের ব্যবধানটিও খুব একটা বেশি নয় এবং বেশির ভাগ সময় ঘুমেই কেটে যায়।

রোজায় রাতের মেন্যুতে থাকতে পারে যে খাবারগুলো-

রোজার মাসে রাতের খাবারটাও সেহেরির মতো কিছুটা হালকা থাকতে হবে। ভাত ১ কাপ বা রুটি ২টি, মাছ বা মুরগি ১ টুকরো, সবজি ১ কাপ ও সালাদ ১ বাটি। যদি কেউ একটু বেশি ইফতার করে ফেলেন সে ক্ষেত্রে রাতে ভাত বা ভারী কিছু না খেয়ে হাল্কা কিছু খেতে পারেন। মাছের পরিবর্তে মাংসও থাকতে পারে। ভাতের পরিবর্তে রুটি বা খিচুড়িও খাওয়া যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, রাতের খাবার পরিমাণে বেশি হলে বদহজম, পেট ফেঁপে থাকা, এসিডিটি ও ঘুমের ব্যাঘাত ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সেহরি

রোজায় সেহরির সময় অতিরিক্ত খাবার খেয়েও সারাদিনের ক্ষুধা মেটানোও সম্ভব না। কিন্তু খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু খেয়াল রাখলেই ক্ষুধাকে বিলম্বিত করা সম্ভব। আঁশযুক্ত খাবার এবং খাবারগুলো ভুনা না হয়ে কম তেল মশলার ঝোলের তরকারি হলে সবচেয়ে ভালো হয়। তাহলে সারাটা দিন ভালো যাবে।

সেহরিতে থাকতে পারে যে খাবারগুলো-

লাল চালের ভাত এক কাপ, মিক্সড সবজি যেমন লাউশাক, মিষ্টিকুমড়া, শসা, পটল, ঝিঙে, কচুশাক, কচু ইত্যাদি ১ কাপ, মাছ বা মুরগি ১ টুকরা, ডাল আধা কাপ, সঙ্গে দই বা লো ফ্যাট দুধ ১ কাপ। তখন ১- ২টি খেজুর খেলে সারাদিন কিছুটা পিপাসা কম লাগবে।

এছাড়া কেউ ভাত খেতে না চাইলে রুটি, চিড়া- দই, কর্ন ফ্ল্যাক্স- দুধও খেতে পারেন। অনেকেই সেহেরির সময় একসঙ্গে বেশি পানি খেয়ে ফেলেন, এটা করা যাবে না। ইফতারের পর থেকে রাত পর্যন্ত অল্প অল্প করে পানি বা অন্যান্য তরল খেয়ে দেহকে আর্দ্র রাখতে হবে।

সারাবাংলা/এজেডএস

রোজায় যেসব খাবার আপনাকে সুস্থ রাখবে লাইফস্টাইল ডেস্ক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর