ধূসর দিনের রঙিন বইমেলা
২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২০:২৫ | আপডেট: ১০ মে ২০২২ ১৫:৩০
মাকসুদা আজীজ
কোনো কোনো স্টল এখনও গুছিয়ে উঠেনি। টানাটানি চলছে আলোর সংযোগ কি নামফলকের। এর মধ্যে বুঝি দেখা গেলো কোনো একজন লেখককে, ওমনি তার অনুসারী পাঠকরা দৌড়ে যাচ্ছেন অটোগ্রাফ নিতে। হালের পাঠকরা আবার শুধু অটোগ্রাফে খুশি নন। ফটোগ্রাফ তোলার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। লেখককে না পেলে কেউ কেউ গোস্বা করে বই না কিনেই চলে যাচ্ছেন। কেউবা দাঁড়িয়ে আছেন অপেক্ষায় কখন আসবেন তার প্রিয় লেখক।
মেলায় হাঁটতে হাঁটতে যারা ক্লান্ত তাদের জন্য এবার আছে বসার জায়গাও। এক ব্লক অন্তর অন্তরই মরূদ্যানের মতো দেখা মিলবে সাদা বেঞ্চির। বিশাল মেলায় হেঁটে ক্লান্ত পাঠকরা খানিক জিরিয়ে নিচ্ছেন এখানে। তবে কেউ একবার বসলে আর উঠার নাম নেয় না। কেউ কেউ তো বেঞ্চে বইয়ের ব্যাগ প্যাটরা তুলেই বসে আছেন। অন্যদের যে সুযোগ দিতে হবে সে খেয়ালই নাই।
বর্গাকার একটি মঞ্চ। ছুটির দিন সকালে সেখানে শিশুদের প্রিয় চরিত্ররা এসে দাপিয়ে যাবেন পুরো মাস। রাতে সে মঞ্চ শুধুই শিশুদের রাজত্ব। জুতো খুলে নিচে রেখে কাঠের পাটাতনে মনের খুশিতে ধুমধাম লাফাচ্ছে তারা। এক দুইজন শিশুর বাবা মা যদি তাকে সেখানে লাফাতে না দিচ্ছে, চিৎকার করে ধনুকের মতো বাঁকিয়ে প্রতিবাদ মুখর হচ্ছে সে। বাবা সালাম বরকত রফিকের প্রতিবাদের ধারার উত্তরাধিকারী না সে? এত সহজেই বাধা মেনে নিবে নাকি?
বইমেলার শেষ প্রান্তে আছে দুইটি খাওয়ার স্টল। বাণিজ্যমেলার মতো প্রাণঘাতী দাম না হলেও সুলভ তাও নয়। অত্র এলাকায় খাওয়া বাদ পানির জন্যেও সেই একটিই জায়গা। দাম না মেনে উপায়ও নেই কোনো।
আঁধার নামাতেও কমে না ভিড়। বইমেলা মাত্র নয়টা পর্যন্ত। এর পরই ফুরিয়ে যাবে আরও একটি দিন। তারপর মেলার বাকি থাকবে মোটে ২৬ দিন। অন্যদের জন্য তা অনেক মনে হলেও পাঠক জানে এক একটি দিন কত মূল্যবান!