Saturday 10 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বইমেলায় বিদায়ের সুর


২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৭:২৬ | আপডেট: ১০ মে ২০২২ ১৫:১৩

এসএম মুন্না ।।

সারা বছর ধরে সংস্কৃতিকর্মী আর বইপ্রেমীরা প্রতীক্ষায় থাকেন কবে আসবে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। কবে সবাই মিলবেন প্রাণের উৎসবে। বাংলা একাডেমির মাসব্যাপী অমর একুশের বইমেলা আমাদের সংস্কৃতির অন্যতম মূল কেন্দ্র। কাল বুধবার ( ২৮ ফেব্রুয়ারি) ভাঙছে সেই প্রাণের মেলা। মেলায় তাই লেগেছে বিদায়ের সুর। আবার একটি বছরের প্রতীক্ষা। তার জন্য অপেক্ষা শুরু হবে পরশু বৃহস্পতিবার (১ মার্চ) থেকে।

বিজ্ঞাপন

এ বছর বইমেলার শুরু থেকেই ক্রেতা-পাঠকের সমাগম ছিল বেশি। তবে মেলায় প্রবেশের জন্য অনেকগুলো প্রবেশ পথ থাকায় এ বছর ক্রেতা-দর্শক-পাঠকদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি।

আজ মেলার ২৭তম দিন। মেলার শেষের আগের দিন। স্বভাবতই ভিড় থাকার কথা। আছেও তাই। বিকেল তিনটায় মেলার দুয়ার খোলার পর থেকে মানুষের ঢল নামে বাংলা একাডেমি ও সোহারওয়ার্দীর দুই অংশেই। যদিও আগের রাতে আকস্মিক ঝড়ের তাণ্ডব পুরোপুরি মুছে যায়নি। এখানে সেখানে জমে আছে পানি। ঝড়ের তাণ্ডবে বেশ কয়েকটি স্টল ও প্যাভিলিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ইতিমধ্যেই তা সামলিয়ে নিয়েছেন তারা। শেষ বেলায় এসে এখন কোনো প্রকাশকেরই হাত গুটিয়ে বসে থাকার সময় নেই। যে কয়েক ঘণ্টা আছে তা কাজে লাগাতে হবে। তাই প্রকাশকরা সাত-সকালেই তাদের প্রতিনিধি পাঠিয়ে মেলা শুরুর আগে সব ঠিকঠাক করে নিয়েছেন। একাধিক প্রকাশক জানান, বৃষ্টি বাগড়া না দিলে আজ এবং আগামীকাল শেষ দিনেও বিক্রি ভালো হবে।

এখন পর্যন্ত মেলায় নতুন বই এসেছে ৪ হাজার ১৩৪ টি। এবারও কবিতার বই সর্বাধিক। যার সংখ্যা ১ হাজার ৩৩৫ । এরপরই গল্প ৬১৫। তৃতীয় অবস্থানে উপন্যাস ৫৮৭টি। কবিতার বইয়ের সংখ্যা বেশি হলেও এবছর প্রতিষ্ঠিত কবিদের কাব্যগ্রন্থ এসেছে তুলনামূলক কম। তবে জনপ্রিয়তার দিক থেকে উপন্যাসই এগিয়ে। গত কয়েক বছরের তুলনায় বিক্রি-বাট্টা বেড়েছে কয়েকগুণ। এবার বাংলা একাডেমির স্টলে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুই থেকে সোয়া দুই লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। বিশেষ দিনগুলোতে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কয়েকগুণ। ২১ ফেব্রুয়ারিতে একাডেমির স্টলে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ বই বিক্রি হয়েছে। এটিই ছিল চলতি মেলার একদিনের সর্বোচ্চ বিক্রি।

বিজ্ঞাপন

হঠাৎ বৃষ্টিতে ছন্দপতন : বলার অপেক্ষা রাখে না মেলার শেষ দিকে জমজমাট বিক্রি হয়। এই সময়টাতেই হাজারো মানুষ  দু’ হাত ভরে বই কিনে থাকেন। এবারও তার কোনো ব্যতয় হয়নি। গত সোমবারও হাজারো ক্রেতা-পাঠকের হাতে হাতে ছিল বইভর্তি ব্যাগ। কিন্তু বিপত্তিটা ঘটে রাত সোয়া ৮টার দিকে। নামে ঝুম বৃষ্টি। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া। হঠাৎ বৃষ্টির তোড়ে অনেক প্রকাশনীর বই পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত প্রকাশনা সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে জার্নিম্যান, প্রথমা, পাঞ্জেরি, অন্বেষা, ইত্যাদি গ্রন্থপ্রকাশ, চারুলিপি, নালন্দা, কথাপ্রকাশ, অবসর, বিদ্যাপ্রকাশ, সাহিত্যদেশ, চন্দ্রাবতি একাডেমি, শ্রাবণ, প্রিয়মুখ, আগুন্তুক, শিখা প্রকাশনী, মনন, আলেয়া বুক ডিপো, আদর্শ, আহমদ পাবলিশিং, বিজয় প্রকাশ, মিজান পাবলিশিং হাউস, গতিধারা।

এমনিতেই একদিন পরে একুশে গ্রন্থমেলা শেষ হয়ে যাচ্ছে। চারপাশে যখন বিদায়ের সুর, সেখানে মঙ্গলবার দেখা গেলো অগোছালো ও বিষণ্ণময় এক মেলা। তারপরেও বিক্রয়কর্মীরা গলদর্ঘ্ম পরিশ্রম করে ক্ষতিগ্রস্ত স্টল আর প্যাভিলিন সারাই করে পাঠক-ক্রেতাদের হাতে কাঙ্খিত বই তুলে দিচ্ছেন।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে আজ ও কাল এই দুইদিন বিক্রি হবে প্রচুর। শেষ দিনে মেলা প্রাঙ্গণে পাঠক ক্রেতাদের আগমনে জনসমুদ্রে পরিণত হবে এমনটাই আশা করছেন প্রকাশকরা।

 

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর