এসএম মুন্না
ঢাকা: ভাঙতে চলেছে প্রাণের অমর একুশে গ্রন্থমেলা। আজ বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় নিভছে মাসব্যাপী মেলার আলো। শেষ সময়ে তাই পছন্দের বইটি এখনো কেনা বা প্রত্যাশিত বইটি এখন পাওয়া যাবে কিনা— এই দুশ্চিন্তা অনেক বইপ্রেমীর।
আজ তাই বিকেল তিনটা বাজার আগেই মেলামুখী মানুষের ঢল। দুপুর থেকেই প্রবেশদ্বারগুলো ছিল দীর্ঘ সারি। ঘড়ির কাঁটা তিনটা ছুঁতেই খুলে দেওয়া হয় মেলা গেট। আর মুর্হূতেই মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে ওঠে। ধারণা করা হচ্ছে এবারকার মেলার স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি লোক সমাগম হবে আজ শেষ দিন।
শেষ মুহূর্তে বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় বিক্রয়কর্মীদের গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। ইত্যাদি গ্রন্থপ্রকাশের অন্যতম প্রকাশক আদিত্য অন্তর সারাবাংলাকে বলেন ‘এখন কথা বলার ফুসরত নেই। শেষ বিক্রি চলছে।’
তাম্রলিপির প্রকাশক এ কে এম তারিকুল ইসলাম রনি বলেন, ‘এবার তার প্রকাশনা থেকে মুহম্মদ জাফর ইকবারের সাইক্লোন বইটি বেশ কাটতি গিয়েছে। শেষ মুর্হূতে এসেও বইটি যোগার দিতে গলর্দঘর্ম পরিশ্রম করছেন আমাদের প্রতিনিধিরা।’
অন্যপ্রকাশ, পাঞ্জেরী, আগামী, ঐতিহ্য, অবসর, প্রথমা, ইউপিএল, কথাপ্রকাশ, ইত্যাদি, অনুপম, সাহিত্যপ্রকাশ, পাঠক সমাবেশ, কাকলী, অনন্যা, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, উৎস, অ্যাডর্ন, শ্রাবণসহ বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ও স্টলে ক্রেতায় ঠাসা।
বরাবরে মতো বাংলা একাডেমির স্টলগুলো চিরায়ত ডিকসনারি কেনার জন্য প্রচণ্ড ভিড় লেগেই আছে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আটাশ দিন আগে বই নিয়ে যে মহোৎসব রাত ৯টার তার যবনিকা টানছে। এর সাথে সাথেই যবনিকা ঘটবে এবারের লেখক-পাঠক, প্রকাশক, শিল্পী-সাহিত্যিকদের পদচারণা ও আলাপ-আলোচনা-আড্ডা।
মেলার আলোচিত বই: প্রেম কাহিনী ও পতন-শওকত আলী (বিদ্যাপ্রকাশ), সেরা সাত মুক্তিযু্দ্ধ উপন্যাস-হুমায়ূন আহমেদ (অবসর), নদী কারো নয়-সৈয়দ শামসুল হক (অন্যপ্রকাশ), রাই কুঁড়িয়ে বেল-হাসান আজিজুল হক (ইত্যাদি), পা রাখি কোথায়-সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (অন্বেষা প্রকাশন), সংকট ও সুযোগ-আবুল মাল আবদুল মুহিত (সময় প্রকাশন), গল্পে গল্পে ব্যাকরণ-যতীন সরকার (আলোঘর), অবিস্মৃত স্মৃতি-শওকত আলী (ইত্যাদি), আমার ইলিয়াস-হাসান আজিজুল হক (ইত্যাদি), স্বদেশ সমাজ সংস্কৃতি-সন্জীদা খাতুন (নবযুগ), অভাজনের রবীন্দ্রনাথ-মফিদুল হক (বিদ্যাপ্রকাশ), আপন আলোয় দেখা-সেলিনা হোসেন (সময়), বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বহুমাত্রিক বিশ্নেষণ-শামসুজ্জামান খান (বাংলা একাডেমি), মুক্তবুদ্ধির চড়াই-উতরাই-যতীন সরকার (কথাপ্রকাশ), পৃথিবীর পথে হেঁটে-অলকানন্দ প্যাটেল (বেঙ্গল পাবলিকেশন্স), বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক উত্তরাধিকার-সুফি মুস্তাফিজুর রহমান (জার্নিম্যান), মিনি বিশ্বকোষ পাখি-মঈন আহমেদ (সময়), অনন্তের বাঁশি-মহাদেব সাহা (অনন্যা), কবিতা বিষয়ে অধিবিদ্যা পাঠ-পাবলো শাহি (ছোট কবিতা), মৃত মনিয়ার মত-হেনরী স্বপন (শ্রাবণ প্রকাশনী), একা এবং এক সঙ্গে নির্বাচিত আশি ১৯৬০-২০১০-হাসনাত আবদুল হাই (পাঠক সমাবেশ), ভালো থাকার নির্দেশ আছে-নাসির আহমেদ (রয়েল পাবলিশার্স), আমার নাম মুজিব ইরম আমি একটি কবিতা বলব-মুজিব ইরম (চৈতন্য), বিকস্বর কুত্রাপি-দ্রাবিড় সৈকত (পাঠক সমাবেশ), সাইক্লোন-মুহম্মদ জাফর ইকবাল (তাম্রলিপি), নিঝুম নিশিরাতে-ইমদাদুল হক মিলন (কথাপ্রকাশ), টিভি ক্যামেরার সামনে মেয়েটি এবং অন্যান্য-হাসনাত আবদুল হাই (আগামী), মহাচীনের মহাজাগরণ-সিরাজুল ইসলাম মুনির (অনন্যা), ড. এম ওয়াজেদ মিয়া-মাহফুজ সিদ্দিকী (কারুবাক), ধর্ম, ধর্মতন্ত্র ও ব্রাহ্মণ্যবাদ-বিনয় মিত্র, ইত্যাদি; ব্রাহ্মসমাজে চল্লিশ বৎসর-শ্রীনাথ চন্দ; ভূমিকা: যতীন সরকার (ইত্যাদি), ভারতবর্ষ এবং বাঙালির স্বশাসন (১ম খণ্ড) শেখ হাফিজুর রহমান (বাংলা একাডেমি), পরিবেশের প্রতিপক্ষ-মোকারম হোসেন (কথাপ্রকাশ)।
সারাবাংলা/এসএমএম/আইজেকে