যার যার তার তার
৩০ মে ২০১৯ ২১:২৬
যার যার তার তার। ব্যাপারটা লেখালেখির ক্ষেত্রে খুবই প্রাসঙ্গিক বিষয়। একেক লেখকের লেখার একেক ধরন-ধারণ। একটা লেখা লিখবো বলে বসলাম আর লেখা হয়ে গেলো ব্যাপারটা মোটেও সেরকম না। একেকজন লেখক তার নিজস্ব পদ্ধতিতে লেখেন। আমার ধরণটা বলি।
আমার লেখালেখির শুরুটা কবিতা দিয়ে। তাই নাটক লিখতে গিয়েও আমি কবিতার আশ্রয় নিই। আমার রঙের মানুষ নাটকটা লেখার শুরুতে আমি রঙের মানুষ কারা, তারা কেমন ধরণের মানুষ তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ভাবলাম। আশ্রয় করলাম কবিতার ক্রোড়ে। দু’ লাইন কবিতা লিখলাম ‘রঙের মানুষ হইলেন তারা/রঙ দেখেন যা কিছু রঙ ছাড়া।’
আমার গুরু সেলিম আল দীন-কে বললাম এরকম একটা ভাবনা আমি ভাবছি আপনাকে এই ভাবনার পূর্ণতা দেওয়ার জন্যে বাদবাকি যা করার করতে হবে। তিনি এই ভাবনার সাথে আরো ক’টা লাইন লিখলেন-
‘অচিন মানুষ পাবো আমি কোনখানে/জোড়দীঘির ধারে নয়/ঘরের খাট পালঙ্কে নয়/ছাতিম গাছের তলে নয়/অচিন মানুষ পাবো আমি কোনখানে।’
রঙের মানুষ নাটকের মুল সুর আমি বাঁধলাম এই কয়টা লাইনের উপর ভিত্তি করে। রঙ ছাড়া মানুষে বা জিনিসে যারা রঙ খুঁজে পার তারাই আমার রঙের মানুষ। তারা অচিন মানুষ। তাদেরকে খুঁজতে হবে। তাই রঙের মানুষ-এর বস্তানি শাহ (এটিএম শামসুজ্জামান) ফকিরান্তিতে বেরিয়ে পড়েন। হামেলা খাতুন (ওয়াহিদা মল্লিক জলি)-এর বাধা উপেক্ষা করে অন্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বস্তানি বেরিয়ে পড়েন ফকিরান্তিতে। অচিন মানুষকে চিনে নেওয়ার জন্যে। পথে তার সাথে কত কত মানুষের সাথে দেখা হয়। শহরালী (আহমেদ রুবেল) ঝড়– ম-ল (আনিসুর রহমান ম-ল) পকেটমার (ফজলুর রহমান বাবু) কুসুম (ফেরদৌস আরা রুমী) আরো কত কত মানুষের সাথে।
আমি যে লেখাটা লিখি তার একটা দার্শনিক ভিত্তি দাঁড় করানোর চেষ্টা করি। যে ভিত্তিটা আমি কবিতা দিয়ে প্রকাশ করি নিজের ভেতরে। আর কয়েকটা লাইন টুকে রাখি নোটবুকে। যেমন আমার ‘ভবের হাট’ নাটকটার কথা বলি; ভবের হাট নাটকে আমি খোঁজার চেষ্টা করেছি মানুষে মানুষে যে আত্মিক যোগাযোগ উপরের বৈরি সম্পর্ককে সামান্যও ম্লান করতে পারে না। আমার সাথে আমার বাল্যবন্ধু বা আমার সহোদরের যে সম্পর্ক তা কোনো কারণে নষ্ট হয়ে গেলে কী ঐ সম্পর্কের যে এসেন্স তাও নষ্ট হয়ে যায়? এই প্রশ্ন থেকে আমার ভবের হাট লেখা শুরু।
‘ক্রমশ তুমি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাও/একভাগ চিরদিনের, আরেক ভাগ যদি বা হারাও।’ ভবের হাট-এর শেষে আমি সেটাই দেখাই বড় ভাই (এটিএম শামসুজ্জামান) এবং ছোটভাই (হুমায়ূন ফরীদি) দুজন দুজনের সাথে কথা বলেন না, একজনকে রাস্তা দিয়ে আসতে দেখলে অন্যজন অন্য রাস্তা ধরেন। কিন্তু কোনো এক মূহূর্তে তাদের অন্তরের যে সম্পর্ক সেটাই বিজয় অর্জন করে।
প্রখ্যাত পরিচালক সাইদুল আনাম টুটুল আমার অনেকগুলো নাটক নির্মাণ করেছেন। সেগুলোর ভিতরে সেকু সেকান্দার অন্যতম। বাংলা টিভি নাটকে চলচ্চিত্রের স্বাদ পেয়েছিলেন দর্শকরা। নাটকটিতে আমি বলতে চেয়েছিলাম অর্থ বিত্তশালী নয় নির্মোহ মানুষেরাই শেষ হাসিটা হাসে। দুটো লাইন টুকে ফেললাম ‘যাকে তুমি ছোট করতে চাও/তার পাশে তার চেয়ে বড় হয়ে দাঁড়াও। সেকু সেকান্দার নাটকে দানু কোম্পানি (আলী যাকের) লবণ ঘেরের মালিক। বিশাল সম্পত্তি তার। তার কেয়ারটেকার সেকু (জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়) নিতান্তই একজন সারাধরণ মানুষ। যার কোনো মোহ নাই। বিত্তবান হওয়ার জন্যে অন্যায় পথে যাওয়ার ইচ্ছা নাই। তার স্ত্রী মইরন (তানিয়া আহমেদ) কে নিয়ে তার সংসার। মইরন সন্তানসম্ভবা। তাই সেকুর সময় কাটে মইরনের দেখাশোনার ভেতর দিয়ে। দানু কোম্পানির এক সন্তান যে বেশ ক’বছর আগে নিরুদ্দেশ হয়েছে। তার আর ফেরার কোনো আশা দেখে না দানু কোম্পানি। ফলে নিরূপায় হয়ে দানু তার সমস্ত সম্পত্তি সেকুকে লিখে দেয়। কিন্তু গোল বাধে যখন দারু’র ছেলে ফিরে আসে হঠাৎ করেই। দানু ভাবে সেকু হয়তো এখন তাকে দেওয়া সম্পত্তির দলিল আর ফেরত দেবে না। কারণ সেকুকে হঠাৎ করেই আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একসময় এমন দাঁড়ায় যে দানু কোম্পানি পেশাদার খুনি আকাই মালতে (কামাল আহমেদ) কে সেকুকে খুঁজে দরকার হলে খুন করে দলিলটা ফেরত আনার নির্দেশ দেয়। কিন্তু দুদিন পরে দেখা যায় সেকু নিজেই দলিল ফেরত দিতে এসেছে। সে মইরন কে নিয়ে হসপিটালে গিয়েছিলো মইরনের ডেলিভারির জন্যে। ফিরে এসে মইরনকে ঘরে রেখেই দলিল নিয়ে ছুটে আসে কোম্পানির কাছে। কোম্পানি হাতে দলিল পেয়ে বিস্ময়ে হতবাক। এত সম্পত্তির দলিল হাতে পেয়েও সে এইরকম অনায়াসে তা ফিরিয়ে দিলো! কোম্পানি তার বিস্ময় থেকেই জিজ্ঞেস করে ‘যদি কখনো শুনিস যে আমি তোকে খুন করার জন্যে আকাইরে লাগিয়েছিলাম? সেকু ছোট্ট একটা উত্তর দেয় বিশ^াসই করবো না। দানু কোম্পানি অবাক তাকিয়ে থাকে। সেকু জানে তার কাছে সম্পত্তি নয় বিশ^াসই সবচেয়ে বড় সম্পদ। তখন দানু কোম্পানি প্রকৃত অর্থেই ছোট হয়ে যায়।
আরো একটা নাটক ‘বীজমন্ত্র’। নিজের লেখা নাটকের মধ্যে প্রিয়তম একটি নাটক। এই নাটকটার কাহিনী আসতে শুরু করলে আমি নেজেকে প্রশ্ন করলাম নাটকটা আমি কেনো লিখবো। নিজের প্রশ্নের নিজেই উত্তর দিলাম। নাটকটা এই কারণে লিখবো যাতে করে দর্শকেরা এইটুকু অনুধাবন করতে পারেন যে ‘অন্যের সম্ভাবনাকে ঈর্ষা করে সেই সম্ভবনাকে বিনষ্ট করতে গেলে নিজেই বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়।’ বীজমন্ত্র নাটকে তাই পাখি (তৌকির আহমেদ) এর মুখ থেকে সংলাপ আসে নিজের কাটা কুপে আপনি নিজেই পড়েছেন গেরস্ত মা…।
নাটকে গেরস্ত মা (ওয়াহিদা মল্লিক জলি একজন বন্ধ্যা নারী। যখন তিনি লক্ষ করেন যে তার স্বামী (জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়) সন্তান না থাকার কারণে একটু বিষন্নতায় ভোগেন। একটু বহির্মুখী হয়ে পড়ছেন তখন বড় বৌ স্বামীকে দ্বিতীয় বিবাহে রাজি করান এবং বিবাহ হয়। ছোট বৌ (তাজিন আহমেদ) যথাসময়ে গর্ভবতী হন। বড় বৌ তখন গভীর উদ্বেগে লক্ষ্য করেন যে তার প্রতি তার স্বামীর ভালোবাসা ক্রমে শূন্যের কোটায় চলে যাচ্ছে। শুরু হয় তার ছোট বৌয়ের প্রতি ঈর্ষা। এমন একটা সময় আসে যখন বড় বৌ সিদ্ধান্ত নেয় যে সে তার পরিচিত কবিরাজের কাছ থেকে ভ্রুণ নষ্টের দাওয়াই এনে ছোট বৌয়ের গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট করবে। ঔষধ নিয়েও আসে। কিন্তু পাখি ও তার প্রেমিকা জোসনা (বিপাশা হায়াত) দু’জনে মিলে এই অপরাধ ঘটতে দেয় না। একসময় দেখা যায় বড় বৌ নিজেও গর্ভবতী। সবাই খুশি হয়। কিন্তু বড় বৌ নিজে খুশি হতে পারে। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। কারণ সে জানে যখন ছোট বৌ ভ্রুণ নষ্টের দাওয়ায় মেশানো চাটনির খেতে চায়না তখন বড় বৌ তাকে আশ^স্ত করতে নিজেই সেই চাটনি খায় আর বলে খুব ভালো স্বাদ হয়েছে খা ছোট। এইভাবে ছোট বৌ খেতে না চাইলে সে নিজেই অনেকখানি খেয়ে ফেলে। দেখা দেয় বিশাল এক সংকট।
আমার নাটক লেখার নিজস্ব কৌশলের ভেতরে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে যেটা মানার চেষ্টা করি তাহলো আমার নাটকের শেষ কী হবে তা যেনো কোনোভাবেই দর্শক আগাম ধারণা করতে না পারেন। অবশ্য প্রত্যেক লেখকই হয়তো তার নিজের মত করে অন্য কোনো কৌশলে এই ব্যাপারটাকে মেনে চলেন। সে জন্যেইতো বলছি যার যার তার তার।
সম্প্রতি আমি একটা নাটক লিখে শেষ করলাম যার নাম ‘পেন্ডুলাম’। একজন একাকী বৃদ্ধের সময় কীভাবে কাটে তার উপর ভিত্তি করে। নাটকটা লেখার আগে আমার নিজের ভেতরে আমার কৈশোর এসে বারবার হানা দিচ্ছিলো। আমি ক্রমেই কৈশোরাক্রান্ত হয়ে পড়ছিলাম। কৈশোরের নানান ঘটনা গল্প আমাকে পীড়িত করছিলো। আমার কৈশোরের বন্ধু, প্রেম, প্রত্যাখান সবকিছু যেনো চোখের সামনে সিনেমার পর্দার মতো ভেসে উঠছিলো। আমি বুঝতে পারছিলাম একটা গল্প হয়তো ক্রমশ দানা বাঁধছে। একজন একাকী বৃদ্ধ মাথায় এলেন। আমি তাঁকে দেখতে পেলাম তিনি মদের গ্লাস হাতে নিয়ে কেবল মদের গন্ধ নিচ্ছে কিন্তু চুমুক দিচ্ছেন না। কারণ ডাক্তার তাঁকে মদ খেতে বারণ করে দিয়েছেন। আমি দেখতে পেলাম দূরদেশ থেকে তার ছেলে মেয়েরা তাঁকে ফোন করে খোঁজ খবর নিচ্ছে। তাঁর স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে গেছেন অনেক আগেই। অন্য পুরুষের ঘরে। তিনি কেবল তাঁর কৈশোর আর কৈশোরের বন্ধুদের নিয়ে কল্পনায় মগ্ন থাকেন। মিথ্যে ডাইরি লেখেন। যা ঘটেনি তাও সত্যের মতো করে ডাইরিতে লিখে রাখেন। একজন তরুণী নার্স ঘণ্টাখানের জন্যে দেখাশোনা করতে আসেন। এভাবেই কেটে যাচ্ছে তার জীবন।
এই নাটক লেখার আগে আমার মাথায় কবিতা আসতে শুরু করলো। নাটক লেখার আগে আমি পুরোটা নাটক কবিতায় লিখলাম। ‘রুদ্রাক্ষ তোমার দরজায় একটা সাধারণ ছোট্ট গোলগাল কলিংবেল লাগিও…। রোজ রাতে তোমার দরজার কড়া নাড়লে, ভেতর থেকে যে দরজা খোলে সে আমি নিজে। রুদ্রাক্ষ, রুদ্র, রুদ্রাক্ষ দরজায় একটা কলিংবেল লাগিও। স্তনের বোটার মতো বোতামে চাপ দিয়ে দেখবো আমার বদলে রুদ্রাক্ষ তুমিই দরজা খোলো কিনা? জীবনের যতটা পথ হেঁটেছি পুরোটা পথ জায়নামাজের মতো গুটিয়ে আমি তোমার হাতে তুলে দেবো বলে বারবার তোমার দরজার কড়া নাড়ি। বারবার আমিই দরজা খুলি। দরজার দু’পাশেই আমাকে রেখে তুমি কোথায় যাও রুদ্রাক্ষ? জীবনের ভুগলে তুমি কৈশোরহাটায় একটা বাড়ি বানিয়েছো শুনলাম। এই বয়সে তুমি ওখানে বাড়ি বানাতে গেলে কেনো? এই বাড়িতে আমাকে অরক্ষিত রেখে তুমি ও বাড়িতে পড়ে থাকো আজকাল। কাদের সাথে সময় কাটাও কিছুই বলো না তুমি। মুচিপাড়ার শিতু আসে তোমার ওখানে? ওর বাবা বিয়ের আসরে ঢোল বাজাতো। শিতু বাজাতো কাঁসা, বিয়েবাড়িতে গেলে শিতু বেশ পেট পুরে খেতো আর বাকি দিনগুলো শিতু কেবল একবেলা ভাত আর দুবেলা উপোস খেয়ে থাকতো। এক মিলাদের আসরে মওলানা সাহেব যখন বললেন হিন্দুরা সব দোজখের আগুনে পুড়বে। তিনি দোজখের তীব্র আগুনের বর্ণনাও দিয়েছিলেন সেদিন। আমি দেখলাম তুমি কাঁদছো কারণ জানতে চাইলে তুমি ফিসফিস করে বললে, শিতুর জন্যে খারাপ লাগছে। শিতু দোজখের আগুনে পুড়বে। সেই প্রথম কোনো মিলাদের আসর থেকে বাতাসা না নিয়েই তুমি কাঁদতে কাঁদতে চলে এসেছিলে। শুনেছি কৈশোরহাটায় ঠিক সেরকম একটা ঘর তুলেছো তুমি, তোমার বাবা বাগানের ভেতরে তোমার জন্যে যেমন একটা ঘর তুলে দিয়েছিলেন, খড়ের ছাউনির ঘর তার একটা জানালা। আহ! স্বর্গীয় সে জানালা খুললেই আরেক জানালা দেখা যেতো। আনন্দ নিকেতনের বড় মেয়ে জ্যোতির ঘরের জানালা। কৈশোরহাটার সেই ঘরের জানালা খুলে এখনো মাঝে মাঝে জ্যোতিকে দেখতে পাচ্ছো কি রুদ্র? মেয়েটার প্রেমে পড়েছিলে তুমি। কলেজের সাইকেল স্ট্যান্ডের ভিতরে নিজেকে লুকিয়ে নিজের ক্লাসের তোয়াক্কা না করে জ্যোতির ক্লাসে যাওয়া দেখতে প্রায় প্রতিদিন। সংকোচ ও প্রত্যাখানের ভয়ে তুমি বলতে পারোনি, জ্যোতি ভালোবাসি তোমাকে। একদিন কী মনে করে কলেজের ক্লাসরুম থেকে চুরি করে একটা নীল চক নিয়ে ফিরলে বাড়িতে। তোমার জানালার একটা পাল্লার বাইরের দিকে চক দিয়ে ‘ভালোবাসি’ শব্দটা লিখে জানালা বন্ধ করে দিলে। দু’দিন দিন কাটলো অজানা শঙ্কায়। এক বিকেলে জ্যোতি ওর বারান্দায় দাঁড়িয়ে তোমাকে দেখে মিটিমিটি হেসেছিলো। তুমি আরো ভয় পেয়ে দ্রুত ফিরে এসেছিলে ঘরে। ভালোবাসি শব্দটা মুছে ফেলবে বলে, একটা ভেজা কাপড় হাতে জানালাটা খুলতেই দেখলে সেই অভাবনীয় দৃশ্য! জ্যোতির বন্ধ জানালার এক পাল্লায় লেখা ‘আমিও’। অভিধান থেকে নেমে এসে ‘আমিও’ শব্দটা তখন তোমার পকেটে ঢুকে পড়েছিলো’।
কবিতাটা আরো দীর্ঘ। আমার কৈশোরাক্রান্ত হওয়ার সময় আমার মনের অবস্থা ও গল্পটা তৈরি করার পদ্ধতি বলার জন্যে এটুকুই যথেষ্ট। পেন্ডুলাম নাটকটা এখনো প্রস্তুতি পর্যায়ে আছে। তবে যারা পাঠ করেছেন তাদের প্রত্যেকের মতেই এটি তার নিজের কৈশোরের গল্প। সবাই গল্পটার সাথে নিজের কৈশোরকে রিলেট করতে পেরেছেন। কী লিখবো কেনো লিখবো কার সম্পর্কে লিখবো এই প্রশ্নগুলির উত্তর ঠিক না করে আমি লেখা শুরু করতে পারি না। হয়তো একটা গল্প মাথায় এসেছে বা খবরের কাগজে পড়েছি। গল্পটা ভালো করে হয়তো লিখতেও পারবো কিন্তু লিখে কী হবে? দর্শকরা কেনো গল্পটাতে আগ্রহী হবে সেটা নির্ধারণ না করে লিখতে বসলে আমি কেবল শব্দ সংলাপ দৃশ্য হাতড়ে বেড়াই। শব্দ সংলাপ দৃশ্য যদি আপনা থেকে এসে ধরা না দেয় আমার কাছে তাহলে লেখা বড় কঠিন হয়ে যায়। সে লেখায় কোনো প্রাণ থাকে না। সে লেখায় আমি আমাকে খুঁজে পাই না।