Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৯৯ টাকার রেডিও ও বাংলাদেশ ক্রিকেট


৩০ মে ২০১৯ ২১:৪৭

৯৯ টাকা দামের সেই রেডিও কি এখনো পাওয়া যায়?

এরপর বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস পায়। কালে কালে ওয়ানডে ক্রিকেটের পরাশক্তি হয়ে ওঠে। চোখে চোখ রেখে এখন লড়াই করে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড-ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে। কখনো জেতে কখনো হারে। তবে কখনোই আর পরাজয়কে নিয়তি ভেবে মাঠে নামার আগে হেরে যায় না। প্রতিটি ম্যাচ বরং খেলতে নামে জয়ের প্রবল বিশ্বাস নিয়ে। এই যেমন এবারের বিশ্বকাপ অভিযানও তো শুরু করছে ট্রফি জয়ের লক্ষ্যে!
বাংলাদেশ ক্রিকেটের এমন প্রতিটি অর্জন কিংবা সম্ভাবনায় আমি ফিরে যাই প্রায় দুই যুগ আগে। সেই ১৯৯৭। সেই আইসিসি ট্রফি। সেই আমার রঙিন শৈশবের ৯৯ টাকার রেডিও।

বিজ্ঞাপন

সেবার আমাদের এসএসসি পরীক্ষা। পড়ালেখা নিয়ে তাই দিনমান পড়ে থাকা। ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ হোস্টেলের আনন্দময় জীবনে তখন সব বন্ধুদের একটাই লক্ষ্যÑ ভালো ফল করতে হবে। পারলে বিকেলে নিজেদের খেলা বাদ দিয়ে বইয়ে মুখ গুঁজে থাকার অবস্থা। এরই মধ্যে জানতে পারি, বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলার জন্য আরেক দফা সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ; আইসিসি ট্রফিতে। নিজেদের দেশ কোনো একটি খেলায় বিশ্বকাপ খেলবে, এই সম্ভাবনা অবশ্যই আনন্দের। তবে সত্যি বলতে কী, আমাদের শৈশব-কৈশোরে ক্রীড়াপ্রেমের বড় অংশজুড়ে যে ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট’ ছিলÑ এমনটা বললে মিথ্যা বলা হবে। কেন?
নব্বই দশকের সে সময়টা বাংলাদেশ ফুটবলের। আবাহনী-মোহামেডানের। বন্ধুদের এক পক্ষ মনে করছি, সাব্বির-কায়সার হামিদ বিশ্বকাপ খেলার যোগ্য। আরেক দল আবার তাঁদের ফুটবলারই মনে করেন না; মোনেম মুন্না, আসলামরা তাঁদের কাছে ‘ফুটবল ঈশ্বর’। সাদা-কালো কিংবা আকাশি-হলুদ পতাকা বানাই ফুটবল মৌসুমে। হোস্টেল থেকে ছুটির সময় বাবা-চাচা-মামাদের কাছে আবদার ধরি, স্টেডিয়ামে নিয়ে যাবার জন্য। সে আর্জি একবার পূরণ হলেই হলো; হোস্টেলে ফিরে সে গল্প আর শেষ হয় না।

বিজ্ঞাপন

ক্যাবল টিভিতে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবল তখনো ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়নি। আমাদের আন্তর্জাতিক ফুটবলের ভালোবাসা তাই বিশ্বকাপকেন্দ্রিক। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাকে ঘিরে বন্ধুদের কতো মারামারি! কতো বার এ পক্ষ ও পক্ষের মুখ দেখাদেখি, কথা বলাবলি বন্ধ!

ক্রিকেট তখন ফুটবলের সঙ্গে পাত্তা পায় না। বাংলাদেশের ক্রিকেট তো আরো নয়। হ্যাঁ, ১৯৯৪ আইসিসি ট্রফির খেলার ধারাবিবরণী রেডিওতে শুনেছি। কেনিয়ার সঙ্গে ম্যাচটি যে রোজার দিনে হয়েছিল, তা-ও মনে আছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটিতে হেরে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ খেলার আশা শেষ হয়ে যাওয়ায় একেবারে ভেঙেচুরে যাইনি। কারণ আমাদের মূল ক্রিকেটপ্রেমও তখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবর্তিত। সিংহভাগই ভারত কিংবা পাকিস্তানের সমর্থক। আমরা গুটিকয়েক কেবল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য এই যে, ’৯৪-র আইসিসি ট্রফি থেকে বাংলাদেশের বাদ পড়ার চেয়ে ’৯৬ বিশ্বকাপ থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ভারত-পাকিস্তানের বাদ পড়ায় আমাদের বন্ধুদের মন খারাপ হয় বেশি।
তখনকার বাস্তবতা ছিল তেমনই।

তবু বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের যখন বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা তৈরি হয়, সে হাওয়ায় আমরা না ভেসে পারি! সে সময় তো আর টিভিতে খেলা দেখাত না। ভরসা তাই রেডিওর ধারাবিররণী। সে রেডিও-ই বা পাই কোথায়! প্রথমত, সেটি কেনার জন্য অর্থ প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, হোস্টেলে রেডিওসহ ধরা পড়লে শিক্ষকের বেদম পিটুনির সঙ্গে টিসি’র আশঙ্কা। অবশ্য সে বয়সে এত কিছু ভাবতে বয়েই গেছে! কে যেন খবর দিল, মাত্র ৯৯ টাকায় ছোট এক রেডিও পাওয়া যায়। এত ছোট্ট যে, হাতের তালুতে লুকিয়ে রাখা যায়। ফুলহাতা শার্ট পরলে হঠাৎ স্যার এলে হাতার ভেতরেও চালান করে দেয়া যাবে চটপট। ব্যস, বন্ধুরা সবাই মিলে পাঁচ-দশ টাকা করে দিয়ে কেনা হয়ে গেল রেডিও। এরপর আমাদের আর পায় কে!

প্রকাশ্যে পড়ালেখা আর লুকিয়ে আইসিসি ট্রফির ধারাবিবরণী শোনা চলতে থাকে। আকরাম খানের দল একের পর এক বাধা টপকায়; আমরাও যেন একটু একটু করে ভারত-পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে ‘বাংলাদেশ’ হতে থাকি। আর অধিনায়কের রূপকথার এক ইনিংসে যেদিন নেদারল্যান্ডকে হারাই, এরপর তো নিজেদের ভাবতে শুরু করি অজেয়। দিনটি ছিল শুক্রবার। যথারীতি হোস্টেলের এক রুমে বন্ধুরা গোল হয়ে বসে ধারাবিবরণী শুনছি। রেডিওর আওয়াজ কমানো। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে বাইরে একজন করে পালাক্রমে পাহাড়ায়। হাউস মাস্টার বা হাউস টিউটর আসার আওয়াজ দিলেই দ্রুত সবাই বই খুলে পড়ায় ব্যস্ত। স্যার চলে যাবার পর আবার রেডিওতে কান পেতে রাখা। সে ম্যাচটি বাংলাদেশের জিততেই হত। কিন্তু মাত্র ১৫ রানে চার উইকেট পড়ে যাবার পর তা কিভাবে সম্ভব? কুসংস্কারাচ্ছন্ন মনের আমরা ভাবলাম, কিছুক্ষণ খেলা শুনব না। রেডিওটি তালাবন্দী করে রাখি লকারে। খানিক পর দলবেঁধে চলে যাই জুমার নামাজ পড়তে। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা, এবার যেন বাংলাদেশকে আর হতাশ না হতে হয়। নামাজ শেষে ফিরে ভয়ে ভয়ে ঘোরাই রেডিওর নব। কে জানে, হয়তো আরো কয়েক উইকেট পড়ে গেছে! না, পড়েনি তো। তখনই মনে হয়, আমাদের প্রার্থনা বৃথা যাবে না। ঠিকই এরপর আকরাম খানের অকল্পনীয় এক ইনিংসে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

ম্যাচ জিতেছি কিন্তু বিশ্বকাপ-যাত্রা তখনো নিশ্চিত হয়নি। তা হয় সেমিফাইনালে স্কটল্যান্ডকে হারানোর পর। পুরো দেশের রংমিছিলের অংশ হতে চাই আমরা। কিন্তু হোস্টেলের বন্দিজীবনে কিভাবে তা করব? কেউ একজন দৌড়ে ডাইনিং হল থেকে নিয়ে আসে ডালভর্তি বড় বাটি। সবার সাদা শার্টে তা ছুঁড়ে মেরে সবাই হয়ে যাই হলুদে মাখামাখি। ভীষণ রাগী হাউস মাস্টার প্রলয় কুমার গুহনিয়োগী স্যার তা দেখলেন, কিন্তু কিছু তো বললেন না। স্যারের ঠোঁটের কোণার বরং প্রশয়ের মুচকি হাসি। কিছু কিছু বিশেষ দিনে কোনো অপরাধই যে অপরাধ না! এরপর ১৯৯৯ বিশ্বকাপ। আমাদের শিক্ষাজীবনের আরেক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এইচএসসি পরীক্ষা। সে পরীক্ষার মধ্যেই বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপ অংশগ্রহণ। ৯৯ টাকার রেডিওর দিন তখন শেষ। টিভিতে দেখায় খেলা। আর কড়া নিয়মকানুনের আমাদের কলেজও তা দেখার ব্যাপারে দেয় ছাড়। জাতীয় জীবনে এমন আনন্দময় ঘটনা যে খুব বেশি ঘটেনি! আর পাকিস্তানকে হারানো দিনটি? কোনোরকম সন্দেহ ছাড়াই আমাদের জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন। শুধু কি তাই? এরপর তো ক্রিকেটে দু’কূল উপচানো কত সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ! কত কত পরাশক্তি পরাভূত লাল-সবুজের সৈনিকদের সামনে! কিন্তু ’৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর আনন্দের সঙ্গে তুলনীয় কিছু আছে? এখনো নয়। কে জানে, হয়তো এবারের বিশ্বকাপ জিতলেই কেবল সে আনন্দ ছাপিয়ে যেতে পারে!

বব মার্লি আর বুড়ো হন না, কিন্তু আমরা বড় হতে থাকি। প্রথম বিশ্বকাপ অংশগ্রহণের পর একটু একটু করে যেমন এগোয় বাংলাদেশের ক্রিকেট। শুরুর সে পথ কেমন ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’! ’৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর পরের প্রায় পাঁচ বছর জয়ের দেখা পায় না বাংলাদেশ। ৪৯ ওয়ানডের জয়খরার পাশাপাশি টেস্ট ক্রিকেটের সেই হাঁটি হাঁটি পা পা যুগে কী নিদারুণ দশাই না ছিল! মাঝে ২০০৩ সালে আরেক বিশ্বকাপ অংশগ্রহণে কানাডা-কেনিয়াসহ সব ম্যাচ হেরে পূর্ণ ব্যর্থতার ষোলোকলা।

সময় এরপর আমাকে টেনে আনে ক্রীড়া সাংবাদিকতায়। বাংলাদেশের ক্রিকেট হয়ে যায় আমার ঘরবসতি। যে ক্রিকেটারদের মনে হত দূর আকাশের তারা, তাঁরা চলে আসেন স্পর্শের দূরত্বে। ক্রিকেটারদের কীর্তি-বীরত্ব, ব্যর্থতা-পরাজয়ের কতো কতো গল্প লেখা হতে থাকে কলমে! তাতে উচ্ছ্বসিত হন কেউ কেউ; আবার রাগ-অভিমানের বুদবুদ যে কারো মনে কখনো জমেনি, তা নয়!

ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে আমার সক্রিয় অংশগ্রহণ সর্বশেষ তিন বিশ্বকাপ ক্রিকেটে। এর কোনোবারই বিশ্বকাপের আবহে বিশ্বকাপ জয়ের বিশ্বাস ক্রিকেটারদের ভেতর দেখিনি। নিজের মনের গোপন গহীন কোণেও অমন স্বপ্নের রোদ্দুর উঁকি দেয়নি। ২০০৭ আসরের প্রথম ম্যাচে ভারতকে হারানোটা ছিল বড় চমক। পরে সুপার এইটে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলের বিপক্ষেও জয় পায় হাবিবুল বাশারের দল। ২০১১ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপ ছিল আনন্দ-বেদনার যুগলবন্দী। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৮ রানে অলআউট হওয়া বাংলাদেশ পরের খেলায় ইংল্যান্ডকে কিনা হারিয়ে দেয়! ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ কাভার করার জন্য আমি তখন নাগপুরে। মনে আছে, ইংল্যান্ডকে হারানোর পর দিন নাগপুরের মিডিয়া সেন্টারে সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে দেখা হতেই বলে ওঠেন, ‘তোমাদের দলের এমন অবস্থা কেন, বলো তো দেখি? এক দিন দেখি কিছুই পারো না, পরের দিন আবার যাকে-তাকে হারিয়ে দিচ্ছ!’

তবে সত্যিকার অর্থে ‘যাকে-তাকে’ হারিয়ে দেবার দিনে পৌঁছতে আরো একটি বিশ্বকাপ সময় লাগে বাংলাদেশের। ২০১৫ আসরে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়াটা ছিল অবিশ্বাস্য সাফল্য। এরপর থেকেই উত্থানরথে চেপে বসা। পাকিস্তান-ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জেতা। ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে ওঠা। ২০১৯ বিশ্বকাপ বাংলাদেশ শুরু করছে তাই স্বপ্নঘুড়ি আকাশে উড়িয়ে। স্বপ্নের রঙ ৫৬ হাজার বর্গমাইলে ছড়িয়ে দেবার প্রত্যয়ে। বিশ্বকাপের জন্য দেশ ছাড়ার আগে কম-বেশি তো কথা হয়েছে সব স্বপ্নসারথীদের সঙ্গে। তাঁদের কথায় কী প্রতিজ্ঞা! তাঁদের উচ্চারণে কী আত্মবিশ্বাস! ফরম্যাটের কারণে সেমিফাইনালে যাওয়া বড় চ্যালেঞ্জ বলে মানেন। কিন্তু বিশ্বকাপ জেতা অসম্ভব বলে মানতে নারাজ তাঁরা। ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে প্রথম অংশ নেয় যে বাংলাদেশ, সে স্কোয়াডের ১৫ জনের সম্মিলিত ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল ১৯৯টি। সেখানে এবারের দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার পেছনে ২০৯ ওয়ানডের বিনিয়োগ। মুশফিকুর রহিম ২০৫,  সাকিব আল হাসান ১৯৮, তামিম ইকবাল ১৯৩, মাহমুদ উল্লাহ ১৭৫ ম্যাচের অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ। ২০ বছর আগের দলটির সাকুল্যে রান ছিল ২৯৯৩। এবার এক তামিমেরই ওয়ানডে রান ৬৬৩৬। সেবার পুরো দলের ওয়ানডে উইকেট ৮৬। এবার মাশরাফিরই ২৬৫, সাকিবেরই ২৪৯।

বাংলাদেশ ক্রিকেট যে কতো পথ পাড়ি দিয়েছে, এ পরিসংখ্যানে তার প্রমাণ। এবার তাই বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন দেখবে না তো দেখবে কবে! এসবেরই আঁতুরঘর সেই ১৯৯৭। সেই আইসিসি ট্রফি। আর আমার জন্য সেই ৯৯ টাকার রেডিও। বদলে যাওয়া এ সময়ে অমন রেডিওর প্রয়োজনীয়তা হয়তো ফুরিয়েছে। এখন হাতে হাতে মোবাইল, ঘরে ঘরে টেলিভিশন। ইন্টারনেটের সৌজন্যে পুরো পৃথিবী যেন বড় এক গ্রাম। আমি তবু খুব করে অপেক্ষায় থাকব। কানে রেডিও ধরে রাখা শহুরে কোনো রিকশাওয়ালার তালাশ করব। অথবা টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে সবচেয়ে কমদামী মোবাইল কিনেছে যে ছাত্রটি শুধুমাত্র তার রেডিওতে বাংলাদেশের খেলা শোনার জন্যÑতার অনুসন্ধান করব। কিংবা ক্ষেতে কাজ করার ফাঁকে বটের ছায়ায় বসে যে কৃষক রেডিওতে বাংলাদেশের খেলার ধারাবিবরণী শুনবেন, তাঁকে খুঁজে বের করব ঠিক।

তাঁদের সঙ্গেই যে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জয়ের রংমিছিলের উৎসব করব আমি!

৯৯ টাকার রেডিও ও বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলা নোমান মোহাম্মদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর