Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পিলপিল পিলপিল… !


৮ আগস্ট ২০১৮ ১৬:৫১

অরুণ কুমার বিশ্বাস ।।

তিলোত্তমা শহর ঢাকায় পিলপিল পিলপিল রিকশা চলে। কোনোরকম গুঁতোগুঁতি হুড়োহুড়ি নেই, অকারণ পাড়াপাড়ি হাউকাউ নেই। এমনভাবে এগোচ্ছে যেন পিঁপড়ার সারি। লাল পিঁপড়া। কুট্টুস করে কামড়ালে বেজায় ব্যথা। কিন্তু সারিবদ্ধ ও বিধিবদ্ধভাবে বাহন চালিয়ে রিকশাঅলা অভ্যস্ত নয়, বরং রাস্তার বুকে একচিলতে জায়গা পেলেই অমনি সামনের চাকা বাড়িয়ে দিয়ে বাকি সব্বাইকে জিম্মি করে গাড়ি চালায় দুরন্ত দুর্বার রিকশাঅলারা। রাস্তায় দুঃসহ জ্যাম ও দুর্ঘটনা ঘটার পেছনে এও এক কারণ বৈকি।

বিজ্ঞাপন

কী করে এসব হল! মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন, সন্দেহ নেই। এর পেছনে আছে এক রক্তাক্ত ইতিহাস। শহরের এক নামি কলেজের দুজন ছাত্রছাত্রীর জানের বিনিময়ে আমরা পেলাম পিলপিল পিলপিল! কিন্তু জামরুলের এসব পছন্দ নয়। সে পেশায় রিকশাঅলা, নেশায় গাঞ্জাখোর। সে ধুপধাপ দুটান মেরে যাত্রী গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে যে ভাড়া পায় তা নিয়ে ছুটে যায় কড়াইল বস্তিতে, যেখানে কিনা সুলভে মাদক মেলে। আইন মেনে লেইন মেনে গাড়ি চালানো কি তার ধাতে সয়!

কিন্তু কিচ্ছুটি করার নেই, কারণ ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় নেমে পড়েছে আমাদের ছাত্রছাত্রীরা। তারা যে শুধু আইন আর লেন মানাচ্ছে তা নয়, নানা লোককে মৃদু হুমকিধমকি বকাঝকাও করছে। শুরুর দিকে বেশ লাগতো, কিন্তু ক্রমশ তাদের এই আন্দোলনে ফেউ ঢুকে পড়েছে। রাজনীতিতে যেমন পলিটিকস ঢোকে, ঠিক সেরকম কেউ কেউ ছাত্রদের এই সুমহান ইচ্ছাকে বানচাল করার উদ্দেশ্যে উল্টোপাল্টা বাড়াবাড়ি করছে। ফলে পাবলিক ক্রমশ উষ্ণ হয়, তাও কিছু বলে না। চুপ মেরে থাকে। দেখা যাক, আন্দোলনের গতিপথ কোন দিকে যায়।
জামরুল আইনে অভ্যস্ত নয়, সারি বেঁধে পিঁপড়ার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে সে ইচ্ছুকও নয়। একই অবস্থা বহরম সাহেবের। তিনি মেলা টাকার মালিক, বিজনেস টাইকুন। তার পরিবারে একুনে সাতখানা গাড়ি রয়েছে। গাড়ি যত সহজে কেনা যায়, চালক কি তত সুলভে মেলে বলুন তো! বহরম সাহেব ইচ্ছে খুশি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান। কোনো কোনো গাড়ির ট্যাক্সও দেননি, সিস্টেমে কাগজ বের করে এনেছেন। সিস্টেম জানলে এদেশে কী না হয়! সব সম্ভবের দেশ বলে কথা!

বিজ্ঞাপন

বহরমের গাড়ির কাগজ ভুয়া। ধরা খেলেন ছাত্রসমাজের হাতে। একের পর এক প্রশ্ন- এত টাকা কই পেলেন, ট্যাক্স ঠিকঠাক দেন কিনা, নিজের গাড়ি চালাচ্ছেন কিন্তু সিটবেল্ট বাঁধেননি কেন, কেন্নোর মতো গাড়ি নিয়ে মোড়ামুড়ি করেন কেন, রাস্তা আপনার বাপের নাকি- ইত্যাকার মেলা কথাবার্তা শুনে বহরমের ধৈর্যের বাঁধ চুঁইয়ে পানি গড়ায়। ব্যস, আর যায় কোথায়! টাকার গরমে বহরম উতলা হয়, ছাত্ররা তার উপর হামলে পড়ে। এই মর্মে শাসায় যে, টাকা থাকলেই আপনি ইচ্ছেখুশি গাড়ি চালাতে পারেন না। আপনাকে আইন মানতে হবে। নইলে গাড়ি নিয়ে জাদুঘরে যান। পাবলিক দেখে মজা পাবে।

হু আর ইউ? হুংকার দেন বহরম সাহেব। সত্যিই তো! ছাত্রানাং অধ্যয়নং তপঃ! ওরা রাস্তায় কেন! এই কেন’র উত্তর দিতে দিতে কেউ আবার বহরমের গায়ের উপর এসে ওঠে। সহবত ভুলে যায়। ওরা বয়সে কাঁচা, তাই ভাল-মন্দ, ছোট-বড়র হিসাব ভুলে যায়। ছাত্রদের কাছ থেকে এমন আচরণ কেউ আশা করে না। কেউ না। ফলে তাদের আন্দোলন ক্রমশ বিতর্কিত হতে থাকে। বস্তুত, বিড়াল দিয়ে হাল চাষ হয় না, তাতে গরু যত রোগাই হোক, ওটা তাদের কাজ। বিলাইয়ের নয়।

সরকারি দপ্তরের বড়কর্তা রহমান মিঞা। মেলা ক্ষমতা তার। আর ক্ষমতা মানেই দূষণ, সেখানে মমতার বালাই তাকে না। নবনির্মিত শেরাটন হোটেলের মোড়ে কর্তাকে থামায় ছাত্ররা। ওদের কাছে ছেলেবুড়ো নানি-খুড়ো সব সমান। কীসের কর্তা কীসের কী! পারলে সব ভর্তা বানিয়ে খেয়ে ফেলে। কর্তার গাড়ির চালক বালকের মতো মাথা নাড়ে, সে গাড়ির কাগজ দেখাতে ব্যর্থ হয়। শেষে চাপের মুখে স্যারের দিকে কাঁচুমাচু মুখে তাকায়, যেন দুবলা বাছুর!

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কর্তা চালকের দিকে চায়। বড় করুণ বড় অসহায় সেই দৃষ্টি। গাড়ির কাগজ নাই। ছাত্ররা একযোগে হাততালি দেয়। যেন বেলাশেষে একটা রাঘববোয়াল পাওয়া গেছে। স্যারের কাগজ নাই, স্যার আইন মানে না। এমন স্যারের খেতা পুড়ি! ছাত্রদিগের কড়া ধাতানির ফলে জানা গেল, দীর্ঘ চার বছর কাগজ ছাড়াই গাড়ি চাপছেন বড়কর্তা। তিনি উচ্চপদে আসীন, তার গাড়ির কাগজ কে চেক করবে! কিন্তু জামানা বদল গায়া। ‘বিচারপতি, তোমার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে সেই জনতা’!

একবার শুধু মিউ মিউ করে রহমান মিঞা বললেন, আমি অমুক। ছেড়ে দাও। দরকারি কাজ আছে। কাঁচাবাজারে গিয়ে তরকারি কিনতে হবে।
উঁহু! ছাড়াছাড়ির দিন শেষ মিস্টার। আপনি কীসের বড়কর্তা শুনি! আপনি তো আইন মানেন না। বেআইনি কাজে লিপ্ত, আপনি একজন অপরাধী। আপনি ডিফল্টার। আজ আপনার বিচার হবে। আমরাই করবো। নামুন, গাড়ি থেকে নেমে আসুন। এই গাড়ি যাবে না।
ব্যস, কিছুক্ষণ মোড়ামুড়ি মুলামুলি করলেন বটে রহমান মিঞা, কিন্তু ছাত্রজনতার ইচ্ছের বাইরে যেতে পারলেন না। মজার ব্যাপার এই, বড়কর্তার গাড়িচালকেরও কোনো লাইসেন্স নাই। তবে তার ‘লাই-সেন্স’ মানে মিছে বলার আদত আছে। বলে কিনা লাইসেন্স গতকালই চুরি গেছে।
ওকে ভায়া, লাইসেন্স নাম্বার বলো। একজন তার পিঠে আয়েশি গুঁতো মেরে বলল।
মনে নাই। নম্বর ভুইল্যা গেছি। চালক আবারও বালকের মতো বলল।
উঁহু! এমন ভুলোমনা লোক দিয়ে গাড়ি চালানো যাবে না। তুমি তো ডিভাইডারকে ব্রিজ মনে করে তার উপর দিয়ে গাড়ি তুলে দেবে। তুমিও নেমে এসো বাছাধন। গাড়ি এখানেই থাকবে। তোমাকে নিয়ে আমরা এক্ষুণি একটা শর্টফিল্ম বানাবো। লোক দেখবে আর তালিয়া বাজাবে।
গাড়ি থেকে নেমে পদব্রজে সামনে এগোলেন বড়কর্তা, তার পিছে পিলপিল করে হাঁটছে তার গাড়িচালক। জীবনে এই প্রথম বোধ হয় তিনি বুঝলেন, বাপেরও বাপ আছে। আইনের চোখে বড়কর্তা ছোটোকর্তা সকলেই সমান। গাড়ি চাপতে গেলে গাড়ির কাগজ চাই, আর গাড়ি ড্রাইভ করতে গেলে লাইসেন্সও দরকার হয়। এটুকু বোধবুদ্ধি বোধ করি ননসেন্সেরও থাকে।
এইসকল ডামাডোলের মধ্যে অঘটন কিন্তু থেমে নেই। হঠাৎ জানা গেল ফার্মগেট ক্রসিংয়ে একখানা মাইক্রোবাস দিশা হারিয়ে পার্কে ঢুকে পড়েছে। অমনি শোরগোল ওঠে, গেল গেল, গেল রে, পাবলিক মারা পড়লো!

কিন্তু কী করে এমন হল! গাড়ি হঠাৎ রাস্তা ছেড়ে পার্কে! হাওয়া খাওয়ার ইচ্ছে হয়েছে বুঝি! ছাত্রজনতা হৈ হৈ করে এগিয়ে যায়। গিয়ে দেখে ব্রেক ফেল, গাড়ির ইঞ্জিনে গন্ডগোল। ওরা গাড়ির কাগজ হাতে নিয়ে দেখে সেখানে সব ঠিক আছে। ফিটনেসে কোনো গাফিলতি নেই। তাহলে নতুন গাড়ির ব্রেক ফেল কী করে হল!
আহা হা, ওখানেই তো গন্ডগোল। এই গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট বা সুস্থতার বিষয়ে যিনি রায় দিয়েছেন সেই মহামান্য বিআরটিএ পরিদর্শককে ডাকা হল। ছাত্রদের চাপে একসময় তিনি মানতে বাধ্য হন যে, ফিটনেস প্রদান কালে গাড়িটি তার সামনে প্রদর্শিত হয়নি। না দেখেই তিনি খসখস করে ফিটনেসের কাগজে সই করেছেন। বস্তুত, কিঞ্চিত উপরি পাবার সম্ভাবনা দেখা দিলে তার কলমের নিব বড্ড সুড়সুড় করে। সই মারার জন্য একেবারে যাকে বলে মুখিয়ে থাকে। নতুন তথ্য জানা গেল, রোগী না দেখেই ডাক্তার আজকাল রোগের দাওয়াই বা প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। তাই তো মাইক্রোগাড়ির আজ এই অবস্থা। লক্কড়-ঝক্কড়মার্কা রদ্দি গাড়িকেও এরা চলাচলের উপযোগী বলে সার্টিফিকেট দিয়ে দেন। এদেশে সড়ক দুর্ঘটনা হবে না তো হবে কোথায়!

ওদিকে এই সুযোগে কিছু দুষ্টু পোলাপান মাছ শিকারে ব্যস্ত। এদের উদ্দেশ্য বিধেয় ঠিক বোঝা না গেলেও এটুকু জানা যায়, এরা যেনতেনপ্রকারেণ সরকার বাহাদুরকে বিপাকে ফেলতে চায়। কিছু ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল। সেখানে দেখা যাচ্ছে উচ্ছৃঙ্খল পোলাপান রাস্তায় নেমে যাত্রীসাধারনকে অযথা হয়রানি করছে, যা নয় তাই বলে গালাগাল দিচ্ছে, তাদের আইন শেখাচ্ছে, আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে।
কেসটা কী! বাধ্য হয়ে গোয়েন্দা বাহিনী মাঠে নামে। দেখা যায় কিছু অছাত্র-কুছাত্র সাধারণ জামার উপরে সাদা রঙের স্কুলড্রেস বা অ্যাপ্রন পড়ে মিশে গেছে প্রকৃত ছাত্রদের মাঝে। এরা অতি উৎসাহী হয়ে গাড়ি ভাঙছে, চালকের গলা টিপছে, আবার কখনও বা সরকারের বিরুদ্ধে আপত্তিকর শ্লোগানও দিচ্ছে। স্কুলড্রেসের নিচে অন্যবিধ পোশাক দেখেই অনুমান করা যায়, এদের আসল উদ্দেশ্যটা কী! ঘোলাপানিতে মৎস্য শিকার! বাহ রে বাহ! দিনে দিনে আরো কত রঙ্গ যে দেখতে হবে কে যানে! এই জন্যই বলে, যশ থাকতে কেত্তন থামাতে হয়, নইলে ধনেপ্রাণে মারা। ছুঁচোর কেত্তন বেশিক্ষণ কে শোনে বলুন! সাধে কি আর চাণক্য পণ্ডিত বলেছেন, অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি মানেই বিষ। সীমা লঙ্ঘনকারীকে স্রষ্টাও পছন্দ করেন না। ইয়ার্কি নাকি! থামো, এবার ক্ষ্যামা দাও।
মওকা বুঝে আরেকটা গেম খেলছে দেশের পরিবহন মালিকসমিতি। এদের বোধবুদ্ধি চিরকালই কম, পরিস্থিতির মর্ম বোঝে না, শুধু মাল্টু কামায়, মাল্টু। একজন অপেশাদার নির্বোধ রাজনীতিকের ইশারায় নেতারা উঠবস করে, বালবাচ্চার যেটুকু বুদ্ধি তাও এদের ঘটে নেই।

বিনা নোটিশে তারা সারা দেশের গাড়িঘোড়া সব বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে দেশ একরকম অচল। বাপ মরে যাচ্ছে, অথচ তাকে ঢাকায় আনা যাচ্ছে না। চাকরির সাক্ষাতকার আছে, কিন্তু প্রার্থী আসবে কী করে! ঘোড়ায় চেপে! গাড়ি তো নেই। এদের ধরে ধরে লালপিঁপড়ে দিয়ে কামড়ানো উচিত। দেশদ্রোহী বেইমান!
গাড়ি বন্ধ ক্যান? জানতে চাইলে বস্তিবাসীর মতো মুখ করে বলে, সড়কে নিরাপত্তা নাই, গাড়ি ভাঙচুর করছে। কথা একেবারে মিছে নয়। কিছু কিছু গাড়ি ভাঙা হয়েছে ঠিক, কিন্তু সে তো সেই কবেকার কাহিনী। হাইওয়ে কর্তারা কী করেন কে জানে! গাড়ির নিরাপত্তা প্রদান তাদের সুমহান দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। নইলে বসে বসে বেতন খাচ্ছেন যে! কিন্তু আমরা তো জানি, ওই বিশেষ ব্যক্তিটির ইশারা ছাড়া কোনো গাড়ির চাকা ঘুরবে না। মুখ থুবড়ে পড়ে থাকবে গুলিখাওয়া হায়েনার মতো।

ওদিকে সরকার বাহাদুর সত্যি সত্যি এবার বেকায়দায় পড়ে গেছে। সামনে পোল মানে ইলেকশন। পোলের অন্য অর্থ খুঁটি। সরকারের খুঁটির ভয়ও আছে বৈকি। এইসময় অহেতুক গুঁতোগুঁতি ঠিক নয়। তাতে ভোটে ভরাডুবি হবে। বিরোধীপক্ষ এই আন্দোলনে স্বভাবতই নাক গলাবে। দীর্ঘদিনেও সরকারকে বেকায়দায় ফেরার মতো যুতসই কোনো উপলক্ষ পায়নি। কার্যকরী একটা ইস্যু তৈরি করতে গিয়ে তাদের হিসু বেরিয়ে যাবার জোগাড়। তাই এমন মওকা সে ছাড়ে কী করে! আগুন দিয়েছে অন্যে, ওরা জাস্ট একটু ইন্ধন মানে অগ্নিতে ঘৃতাহুতি দিল। কইয়ের তেলে কই ভাজলো।

ব্যস, অমনি ট্রাফিক আন্দোলনের রূপরেখা গেল বদলে। ছাত্র আন্দোলনে রাজনীতি ঢুকে গেলে কি আর তার গ্রহণযোগ্যতা থাকে! আমরা আমজনতা, গাড়ি নেই বাড়ি নেই, আবালের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা দেখি। তবে হাততালি দিই না, পাছে কেউ ভিডিও করে ওটা ভাইরাল করে দেয়। পরে বিশেষ বাহিনী ডেকে নিয়ে গিয়ে..! না না, আর ভাবতে চাই না। তখন পায়ে হেঁটে নয়, পিপীলিকার মতো পিলপিল করে ঘরে ফিরতে হবে। কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর আর তাগত থাকবে না।

তবে আপনারা যে যাই বলুন, ট্রাফিক পুলিশ ভায়াদের অবস্থা দেখে ভারি মায়া হয়। মরামাছের চোখের মতো ঘোলাটে সেই দৃষ্টি। পোশাক আছে কিন্তু দাম নাই, মাইনে আছে কিন্তু কাম নাই। সব কাজ করছে দাপুটে ছাত্রছাত্রী। অসহায়ের মতো তাকিয়ে দেখছে পুলিশ, রিকশাগুলো কত সুন্দর পিঁপড়ার মতো সার দিয়ে চলছে! নানান রকম স্টিকারধারী হানাদার গাড়িরা মোটেও উল্টো মারছে না, উল্লুকের মতো ছুটে এসে ঘ্যাঁষ করে ব্রেক কষছে না কোনো বাহিনীর চতুর্চক্রযান। সোঁ সাঁ মিহি শব্দে এগিয়ে চলছে আমাদের ট্রাফিকব্যবস্থা। দেশটা রাতারাতি বৈদেশ হয়ে গেল নাকি!

কিন্তু তাতেও স্বস্তি নেই ভায়া। সাময়িক উত্তেজনায় কতো কী হয়! কিন্তু সে তো দুদিনের যোগী, ভাতকে সে অন্ন বলতেই পারে। যাকে তাকে রাজার পার্ট দিয়ে দিলে আসল রাজার কী হবে! তারা তো কাজ না করে কুঁড়ে হয়ে যাবে। তাই আসুন, আমরা যাদের চক্ষু উন্মীলনের জন্য এসব করে দেখিয়েছি, তাদেরকেই না হয় কাজটা এবার করতে দিই। দেখি আদতে তারা কতখানি কী শিখলো! নাকি তারা কখনোই শিখবে না, তাহলে এবার পুরো সিস্টেমের খোলনলচে বদলাতে হবে!

লেখক : কথাসাহিত্যিক ও রম্যলেখক

সারাবাংলা/পিএম

অরুণ কুমার বিশ্বাস পিলপিল পিলপিল রম্যগল্প

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর