শীর্ষেন্দুতে সমাপন লিট ফেস্টের
১০ নভেম্বর ২০১৮ ২২:০০
।। এসএম মুন্না, লিট ফেস্ট থেকে ।।
আসছে বছর আবার দেখা হবে- এই প্রত্যাশা নিয়ে শনিবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শেষ হলো অষ্টম ঢাকা লিট ফেস্ট-২০১৮। বাংলা একাডেমির সবুজ প্রাঙ্গণজুড়ে গত তিন ধরে সাহিত্যের উৎসবে দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত লেখক কবি সাহিত্যিকের যে মহামিলন ঘটেছিল তার সফল সমাপ্তি হয়েছে।
কলমই হবে সাহিত্য উদযাপনের অন্যতম হাতিয়ার এবং সাহিত্যর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হবে বাকস্বাধীনতা- এরকম আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উৎসবে অংশ নেওয়া গুণী-ব্যক্তিরা। একই সঙ্গে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন মানুষে মানুষে হিংসা, রেষারেষি পরিহার করে সুন্দর পৃথিবী গড়ার।
উচ্চারিত নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা বিষয়টিও। বাদ ছিল না #মি-টু প্রসঙ্গও। মার্কিন লেখক জনসনের অধিশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এবারের উৎসব। আর শেষটায় হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে কথাশিল্পী শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ে।
সমাপনী আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি এই উৎসবে অংশ নেওয়া সবাইকে ধন্যবাদ জানান। একই নানান বিষয়ে নিজ নিজ মতামত রেখে গতিশীল সমাজগঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আবুল মাল আবদুল মুহিত।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক জীবনে উত্থান-পতন আছে। কিন্তু রাজনৈতিক পরিবর্তনের বাতাস সংস্কৃতি এবং সাহিত্যের পালে লাগতে দেই না। নির্বাচন আমাদের খুব সন্নিকটে, পরিবেশ খুব ভালো এবং শান্ত। যারা এখানে বিদেশি অতিথিরা এসেছেন তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, আপনারা কি বুঝতে পেরেছেন যে দেশে ইলেকশন সামনে? দেয়ার ইজ নো ইলেকশন ফিভার, অ্যান্ড ইট ইজ গুড। এর মানে হলো আমরা ভালো আচরণ করছি এবং ডিসেম্বরেই নির্বাচন হবে।’
সমাপনী আয়োজনে বিশেষ বক্তা ছিলেন হলিউড অভিনেত্রী টিলডা সুইনটন। সমাপনী বক্তব্য রাখেন উৎসব পরিচালক ও প্রযোজক সাদাফ সায। এ সময় উৎসবের অপর পরিচালকদ্বয় উপস্থিত ছিলেন।
শেষ দিনে আকর্ষণ ছিলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
শেষ দিনে ৩০টি ভিন্ন ভিন্ন অধিবেশনে অংশ নেন দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত কবি লেখক সাহিত্যিক ও সম্পাদকরা। তৃতীয় ও সমাপনী দিনের মূল আকর্ষণ ছিল পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত কথাশিল্পী শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতি। উৎসবের শেষ অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথাশিল্পী ইমদাদুল হক মিলনের সঙ্গে কথোপকথনে অংশ নেন তিনি। ঘরোয়া আড্ডার ভঙ্গিমায় দুইজনেই তুলে ধরেন এপার-ওপার বাংলার সাহিত্যের অলিগলি।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘সাহিত্য আত্মাকে কোমল করে, ভালোবাসতে শেখায়।’ উৎসবের শেষ দিনেও ছিলেন ক্যান্সারজয়ী বলিউড অভিনেত্রী মনীষা কৈরালা। যেখানে তিনি কথা বলেছেন নিজের লেখা বই ‘হিল্ড’ নিয়ে।
দিনভর মুখর ছিল প্রাঙ্গণ
ঢাকা লিট ফেস্টের সমাপনী দিনটিও ছিল নানা আয়োজন মুখর। শনিবার ছুটির দিনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উৎসব প্রাঙ্গণ ছিল সাহিত্যপ্রেমীদের আনাগোনা। একাডেমিজুড়ে পাঁচটি মঞ্চে দিনভর চলে শিল্প-সাহিত্য নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনা। ফাঁকে ফাঁকে দেশ-বিদেশের লেখকদের আড্ডা। বাংলা একাডেমিতে গোটা প্রাঙ্গণজুড়ে বেশ কয়েকটি মঞ্চ।
শেষদিনেও সব মঞ্চই আলোকিত করেন বরেণ্য লেখক-কবি-সাহিত্যক, শিল্পসমালোচক, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মীসহ নানা ভুবনের উজ্জ্বল মানুষ। তাদের প্রাণোচ্ছল কথায়, আলোচনায় ছিল বিশ্ব-সাহিত্যের নানা দিক। তেমনি আবার ছিল বাংলা সাহিত্যের ভুবন। সাধারণত সাহিত্যর আলোচনা সভার হয় গুরুগম্ভীর। গভীর কোনো বিষয় নিয়ে সুগভীর আলোচনা করেন বরেণ্য ব্যক্তিরা। ধৈয্য নিয়ে তা উপভোগ করেন দর্শক-শ্রোতারা। আবার কেউ ধৈর্য হারিয়ে উঠেও যান। তবে এ উৎসবের সেশনগুলো ছিল অন্যরকম। গুরুগম্ভীর আলোচনা হলেও তার আঙ্গিকটা ছিল ভিন্ন।
তিন দিনে ৯০টি অধিবেশনে দর্শক-শ্রোতা ছিল উপচে পড়া। আগ্রহ ভরে এসব অনুষ্ঠান উপভোগ করার পাশাপাশি প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন। গতানুগতিক ধারায় না গিয়ে আলোচকরা আড্ডার ছলে, সহজভাবে মেলে ধরেছেন কঠিন কথাগুলো। বৈঠকি আড্ডার ভঙ্গিমায় তারা শিল্প-সাহিত্যকে উপস্থাপন করেছেন সাবলীল ভঙ্গিমায়।
উৎসবের যবনিকা পতনের ঠিক আগে আগে একাডেমি প্রাঙ্গণে নজরুল মঞ্চের সামনে আসতেই দেখা গেলো নানা বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভিড়। নির্ধারিত বসার আসন না পেয়ে কেউ দাঁড়িয়ে, কেউবা হোগলার পাটিতে বসে শুনছিলেন মাটির গান। লিট ফেস্টে প্রধানত একটি সাহিত্য উৎসবই বটে, তবে শুধু সাহিত্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ লোকগীতির মতো বিষয়ও এবারকার উৎসবের অর্ন্তভুক্ত ছিল। দেশ-বিদেশের যশস্বী কবি-সাহিত্যিক-অনুবাদক-নাট্যকারদের পাশাপাশি বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে লোকজ গান অংশ নেন তিন নারী বাউল কোহিনূর আক্তার গোলাপী, সূচনা শেলী ও ফকির আকলিমা।
অষ্টম লিট উৎসবে লোকসমাগম হয়েছিল অনেক বেশি। এমনটাই দাবি করলেন উৎসবের অন্যতম পরিচালক সাদাফ সায। সমাপনীতে তিনি বললেন, ‘সাধারণ অভ্যাগত ছাড়াও বিপুল উপস্থিতি ছিল এ দেশের ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের; বাংলাদেশে যাদের সহিত্যপাঠ মূলত ইংরেজি ভাষায়, তাদের উপস্থিতিও ছিল নজরে পড়ার মতো। যদিও সাধারণভাবে মনে হতে পারে লিট উৎসবটি ইংরেজি ভাষার কবি-লেখকদের উৎসব, কিন্তু সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর মনে করেন, ‘আসলে তা নয়। বাংলাদেশের বাংলা ভাষার কবি, কথাসাহিত্যিক ও প্রবন্ধকারদের উপস্থিতি আর অংশগ্রহণই ছিল সবচেয়ে বেশি।’
শেখ হাসিনাকে নিয়ে ৭১ কবিতা
গত ২৮ সেপ্টেম্বর ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭১তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে গল্পকার থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাকে নিয়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখা কবিতার সংকলন- ‘পিস অ্যান্ড হারমনি: সেভেন্টিওয়ান পোয়েমস ডেডিকেটেড টু শেখ হাসিনা’। লিট ফেস্টে বইটি নিয়ে আলোচনা করেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, মুহাম্মদ সামাদ, কামাল চৌধুরী, আবুল আজাদ, সংকলনের সম্পাদক আহমেদ রেজা, সংকলনের ইংরেজি অনুবাদক আনিস মুহাম্মদ প্রমুখ।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কবিতা সবাইকে নিয়ে লেখা যায় না, সব বিষয় নিয়েও লেখা যায় না। কিন্তু পদ্য লেখা যায়। পদ্যে শব্দের অর্থ আক্ষরিক নয়, কিন্তু কবিতায় শব্দের অর্থ আক্ষরিক। বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায়ও কবিতা লেখা হয়েছে তাকে নিয়ে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যখন তার নাম উচ্চারণ নিষিদ্ধ ছিল তখনও একজন কবি তাকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন। তিনি হচ্ছেন নির্মলেন্দু গুণ। সুতরাং আমাদের দেশের কবিদের নিয়ে যতই হাসি-ঠাট্টা, তামাশা করি না কেন, আমাদের দেশের কবিরা জাতির দুঃসময়ে সোজা হয়ে দাঁড়ান।’
প্যারাসাইটস লাইক আস
পুলিৎজারজয়ী সাহিত্যিক অ্যাডাম জনসনের প্রথম উপন্যাস ‘প্যারাসাইটস লাইক আস’। এ শিরোনামে আলোচনা করেন অ্যাডাম জনসন ও ফিলিপ হেনশার। কবি শামসুর রাহমান স্মৃতি কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মন্ময় জাফর।
অ্যাডাম জনসন বলেন, ‘সাহিত্যের অঙ্গনে ফিকশনই একমাত্র জনরা যেখানে প্রাণ খুলে সব কথা বলে ফেলা যায়। আর ব্যক্ত এই কথাগুলো বলা হয় অন্য কারো কণ্ঠে। সবচেয়ে মজার বিষয়টি হলো, পাঠক যখন এই লেখা পড়েন তখন ওই কণ্ঠটিকে নিজের কণ্ঠ হিসেবেই মনে করেন।’
ফিলিপ হেনশার বলেন, ‘কোনও সাহিত্যিক একজন সাধারণ মানুষের মতোই সমাজের বিভিন্ন স্তর প্রত্যক্ষ করেন। সব মানুষের মতো এই ঘটনাগুলোর আতিশয্য তাকেও নাড়া দেয়। সেই চরম বাস্তবতাই সাহিত্যিক তুলে আনেন ফিকশন নামের ‘মুখোশ’ পরিয়ে।
আলোচনায় ভাষার বৈচিত্র্য
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট এবং লিঙ্গুইস্টিকস সার্ভে অব বাংলাদেশের যৌথ গবেষণায় প্রকাশিত হতে যাওয়া ২০ খন্ডের ভাষা বিষয়ক গবেষণা গ্রন্থ নিয়ে ভাষার বৈচিত্র্য নিয়ে কথা বলেন কবি কামাল চৌধুরী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জীনাত ইমতিয়াজ আলী এবং ভাষা গবেষক সৌরভ শিকদার। এ আলোচনার সূত্রধর ছিলেন গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গর্গ চট্টপাধ্যায়।
# মি টু প্রভাব সাহিত্যেও
#মিটু আন্দোলনের প্রভাব নিয়ে ‘নো নোবেল: মি টু ইন লিটারেচার’ শীর্ষক আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন জার্মান লেখক ওলগা গ্রাসনোয়া, ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক অধ্যাপক ফিলিপ হেনশার, ব্রিটিশ লেখক রিচার্ড বিয়ার্ড, আমেরিকান লেখক রস পটার এবং ভারতীয় লেখক ও সমাজকর্মী হিমাঞ্জলি শংকর।
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার স্থগিতের কারণ ও এর প্রভাব নিয়ে বক্তারা বলেন, ‘সুইডিশ একাডেমির এই পদক্ষেপ তাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনে সাহায্য করবে। নোবেল পুরস্কার ও তাদের কর্তৃপক্ষের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে এই আন্দোলনের ফলাফলের ওপর। আগে অনেকেই কণ্ঠস্বর না তুললেও এখন সবাই কন্ঠস্বর তুলছে। ব্যক্তি ও শিল্পকে আলাদা করা যায় তার কাজের ভিত্তিতে। যদি কোনও পুরুষ তার কাজের ক্ষেত্রে কোনও নারীকে হয়রানি করেন, তাহলে সেটা সাহিত্যের ক্ষেত্রে হোক কিংবা সাধারণ মানুষের জীবনেই হোক, সোচ্চার হওয়া জরুরি।’ অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন সঞ্চালক ভারতীয় লেখক চন্দ্রবিভাস চৌধুরী।
এখনও কেন কবিতা
‘এখনও কেন কবিতা’ শিরোনামের আলোচনায় অংশ নেন কবি আসাদ চৌধুরি, রুবি রহমান, পশ্চিমবঙ্গের সুমন গুণ এবং ড. নিখিলেশ রায়। সঞ্চালনা করেন কবি শামীম রেজা।
আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘মানবমুক্তির শাশ্বত পথ হলো কবিতা। একমাত্র কবিতাই শেষ পর্যন্ত পথ দেখায়। মানবতার কোনও অবমাননা কবিরা মেনে নেন না।’
তৃতীয় দিনের অন্যান্য অধিবেশন
কসমিক টেন্টে আসলাম সানীর সঞ্চালনায় ছিল ‘কিশোর মনন ও আবৃত্তি’। একই মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘মুভিং পিকচারস অ্যান্ড বর্ডার’ আলোচনা অনুষ্ঠান। সাল ইমামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন প্রবর রিপন ও সাবাহাত জাহান। নভেরা প্রদর্শনালয়ে রিচার্ড বেয়ার্ডের পরিচালনায় ছিল কর্মশালা। নজরুল মঞ্চে শিশুদের বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকজ গল্প বিভা সিদ্দিকী। কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে মাহরুখ মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় ছিল ‘ডেডলি লিগাসি অব ইন্ডিয়াস পার্টিসন’ আলোচনা। এতে অংশ নেন-নিশিদ হাজারি।
উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ছিল ‘বাংলা সাহিত্য : নারী ও পুরুষ’ শিরোনামের অধিবেশন। এতে সঞ্চালনা করেন শামীম রেজা। আলোচক ছিলেন সেলিনা হোসেন, সালমা বানী, শাহনাজ মুন্নী ও অদিতি ফাল্গুনী।
নভেরা প্রদর্শনালয়ে অনুষ্ঠিত হয় স্যালি পমির শিশুতোষ পরিবেশনা ‘দ্যা কিং উইথ ডার্টি ফিট’। এ কে রহিমের গবেষনামূলক পরিবেশনা ‘দ্য রোহিঙ্গা: এ লিঙ্গুস্টিক হিস্টোরি’ অধিবেশন বসে কসমিক টেন্টে। কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে ছিলো ‘টেকনোলজি অ্যান্ড দ্য ফিউচার’ শিরোনামের অধিবেশন। এতে রুবায়েত খানের সঞ্চালনায় আলোচনা করেন ডেভিড বিয়েলো।
উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ‘রিবেল, রোল মডেল’ শিরোনামের অধিবেশন। এতে মুনিজে মানজুরের সঞ্চালনায় আলোচনা করেন জয়শ্রী মিশ্র। নভেরা ভাস্কর প্রদর্শনালয়ে ছিলো ‘টেলস অব এন আর্ট লাভার’ শিরোনামের অধিবেশন। সঞ্চালনায় ছিলেন ফকরুল আলম। আলোচক ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত মারিও পালমা, কথাশিল্পী সৈয়দ মনজরুল ইসলাম ও মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির। আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ছিল অস্কারজয়ী অভিনেত্রী ও লেখিকা টিল্ডা সুইন্টনের ‘অন ড্রামদোয়ান হিল’ শিরোনামে কথোপকথন। তার সঙ্গে অংশ নেন উৎসবের অন্যতম পরিচালক আহসান আকবর।
উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে কবিতা পাঠের আসর ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’ অংশ নেন এদেশের বেশ কয়েকজন কবি। সঞ্চালনা করেন হাসান মাহমুদ। নভেরা ভাস্কর প্রদর্শনালয়ে ‘পেন : লেখকের মুক্তি, লেখার স্বাধীনতা’ শিরোনামের অধিবেশন সঞ্চালনা করেন উদিসা ইসলাম। আলোচক ছিলেন করেন কুমার চক্রবর্তী, আখতার হোসেন ও মুম রহমান।
আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘রাইটস ইন দ্যা এইজ অব ফেক নিউজ’ শিরোনামের অধিবেশনে অংশ জাফর সোবহান, আফসান চৌধুরী, হুগো রেস্টল ও অ্যানি জায়েদি। সঞ্চালনা করেন চন্দ্রহাস চৌধুরী।
‘আফটার দ্য ফল’ শিরোনামের অধিবেশন ছিল কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে। সঞ্চালনা করেন কেলি ফকনার। আলোচক ছিলেন ওলগা ওজানোয়া, আরিফ আনোয়ার ও অ্যানি জায়েদি। উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ছিল ‘ছয় নারী’ শিরোনামের অধিবেশন। সঞ্চালনা করেন জ্যাকি কবির। অংশ নেন ফরিদা হোসেন, শাহনাজ মুন্নী, জাহানারা পারভীন, আফরোজা সোমা ও সাকিরা পারভীন।
নভেরা ভাস্কর প্রদর্শনালয়ে ছিল পাঠের আসর। যাতে অংশ নেন রুমানা হাবীব ও ডোমিনিকং গোমেজ। কসমিক টেন্টে ‘রোহিঙ্গা : সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স টেস্টিমোনিস’ শিরোনামের অধিবেশনের সঞ্চালনা করেন সাদাফ সায। আলোচক ছিলেন রাজিয়া সুলতানা, শিরিন হক, গুয়েন রবিনসন ও মারিয়াম মোল্লা।
এ বছর ঢাকায় এ উৎসবে যোগ দিতে ২৫টি দেশ থেকে এসেছিলেন ৫০ জন কবি, লেখক, অভিনেতা, অনুবাদক, প্রকাশক ও সাংবাদিক এসেছিলেন। তাদের মধ্যে ইংরেজির পাশাপাশি ছিলেন জার্মান, ফরাসি, স্প্যানিশ, হিন্দি, ভাষার লেখক-কবিরাও।
সারাবাংলা/এমও