ভাষার সঠিক প্রয়োগ জানলে লেখা ঝরঝরে হয় : শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১১ নভেম্বর ২০১৮ ১০:৫৪
।। এসএম মুন্না ।।
পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতিমান সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘ভাষার সঠিক প্রয়োগ জানা থাকলে লেখা স্বচ্ছ ও ঝরঝরে হয়। সাহিত্যের ভাষা হচ্ছে বৈচিত্র্যময়। যার মধ্য দিয়ে একেক অনুভূতি একেক রকমভাবে প্রকাশ করা যায়। বাংলা ভাষা হচ্ছে অন্য ভাষার চেয়ে বৈচিত্রময় ও আলাদা ভাষা। পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সাহিত্যে বাংলার ভাষার ব্যবহার জানতে হবে। সঠিকভাবে ভাষার ব্যবহার বাড়াতে পারলে এখান থেকে নানান রসবোধ পাওয়া সম্ভব। যেমন-শহুরের জন্য এক রকম ভাষা আবার গ্রামীণ ভাষা অন্যরকম। পাঠকের কাছে রসবোধ পৌঁছে দিতে হলে ভাষা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই।
ঢাকা লিট ফেস্টের তৃতীয় ও শেষ দিনের শেষ অধিবেশনে কথপোকথনে অংশ নেন এপার-ওপার দুই বাংলার তুমুল জনপ্রিয় কথাশিল্পী শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে তার মুখোমুখি হন বাংলাদেশের জনপ্রিয় কথাশিল্পী ইমদাদুল হক মিলন। নানা রকম ঘটনা-রটনা আর হাস্যরসের মধ্য দিয়ে দুই বাংলার সাহিত্যের নানা দিক তুলে ধরেন তারা।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি লেখার জন্য সব সময় হন্যে হয়ে মনের মতো একটি লাইন খুঁজি। যদি একটা লাইন পাই তবে সেটা নিয়ে অনেক বড় লেখা লিখতে পারি। এরকম উদাহরণ অনেক আছে আমার। যেখানে যাই না কেনো আমি সব সময় লাইন খোঁজার চেষ্টা করি। আমি লিখতে ভালোবাসি। তাই দূর-দূরান্ত ছুটে যােই মনের মতো একটি লাইন পেতে।’
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় আরও জানান, ‘আমি যখন লেখালেখি শুরু করলাম তখন আমার লেখার মধ্যে কিছুটা অস্পষ্টতা ছিল। অনেকটা দুর্বোধ্য হওয়ার কারণে তখনকার সময় পাঠকরা আমার লেখা বুঝতেন না।। পরবর্তীতে যখন বিষয়টা আমি উপলদ্ধি করলাম তখন থেকে সাবলীল-সহজ ভাষায় লেখার শুরু করলাম। পরে দেখলাম পাঠকরা আমার লেখা বুঝতে পারছেন।’
শিশুতোষ লেখা প্রসঙ্গে এই লেখক বলেন, ‘লেখার মধ্যে আকর্ষন না থাকে তাহলে পাঠক কেনো পড়বে, বিশেষ করে শিশুতোষ লেখালেখির ক্ষেত্রে। তাই চেষ্টা করি সহজ সরল ভাষায় শিশুদের জন্য কিছু লিখে যেতে। কথপোকথনে ‘ভূত’ বিষয়ক কথা উঠতেই মিলনায়তনজুড়ে হাসি রোল উঠে। সেই হাসির রোলের মধ্যেই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন উঠলেন ‘ভূত’ নিয়ে এখন টানাটানি না করাই ভালো। ভূতেরা জেগে উঠলে কিন্তু খবর আছে।’
কথপোকথনের শুরুটা হয় গল্পচ্ছলে। নিজের লেখালেখির কথা দিয়ে। জানালেন একটি জনপ্রিয় পত্রিকায় ছোট গল্প প্রকাশ করতে গিয়ে তিন তিনটি গল্প লিখতে হয়েছিল তাকে। দুইবার ব্যর্থ হয়েছিলেন। তৃতীয়বার গিয়ে সফল হন তিনি।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা প্রসঙ্গে টানতেই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘তিনি শুধু একজন লেখকই ছিলেন না, একজন উঁচুমানের গল্পকথকও ছিলেন। গল্পবলার মতো করে লিখতেন বলেই এতো বছর পরেও শরৎচন্দ্র পাঠকের কাছে সমাদৃত একজন সাহিত্যিক।
সারাবাংলা/পিএম