Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আজ কবি খালেদ হোসাইনের জন্মদিন


২০ অক্টোবর ২০২০ ১৩:৪৬

আজ কবি খালেদ হোসাইনের জন্মদিন। কবি, ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, সাহিত্যের শিক্ষক, নিজের দুই সন্তান ছাড়াও হাজারো শিক্ষার্থীদের পিতৃসম, খালেদ হোসাইনের পরিচয় অনেকগুলো। ১৯৬৪ সালের ২০ অক্টোবর, অর্থাৎ আজকের দিনে, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ফাজেলপুরে জন্মেছিলেন তিনি। বাবা গোলজার হোসাইন, মা সুফিয়া খাতুন। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন নারায়ণগঞ্জে, ফতুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল ও তোলারাম কলেজে। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। স্নাতক, স্নাতকোত্তর আর শিক্ষকতা করতে করতে পিএইচডি। দীর্ঘদিন ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করছেন। বাংলা সাহিত্যের বহুমুখী অঙ্গনে তার সফল বিচরণ।

বিজ্ঞাপন

তার লেখা ছড়াগ্রন্থ ‘হাউমাউ’, ‘বৃষ্টি যদি আসে’, ‘লেজ’, ‘একা একা বানান শেখা’, ‘পায়রা উড়ে যায়’, ‘রঙগুলো সব থাক না’, ‘সাগরের জলে আছে বড় বড় ঢেউ’ শিশুদের জন্য একেকটা রসগোল্লা। আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছড়াকার ও শিশুসাহিত্যিক খালেদ হোসাইনের ছড়াসমগ্র বের করেছে অনিন্দ্য প্রকাশ ২০১২ সালে। দুই বাংলাতেই সমাদৃত হয়েছে খালেদ হোসাইনের ছড়া। ছড়ার খ্যাতি খালেদ হোসাইনকে বলা যায় কবি হিসেবে আন্ডাররেটেডও করে রেখেছে। অথচ, ‘পথ ঢুকে যায় বুকে’, ‘শিকার যাত্রার আয়োজন’, ‘জলছবির ক্যানভাস’, ‘পাতাদের সংসার’, ‘ইলামিত্র ও ‘অন্যান্য কবিতা’, ‘এ আমি অন্য কেউ’, ‘কাকে বলি অন্ধকার কাকে বলি আলো’র মতো কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে বাংলা কবিতায় এক স্বতন্ত্র কাব্যভঙ্গির স্বাক্ষর রেখেছেন খালেদ হোসাইন।

বিজ্ঞাপন

খালেদ হোসাইন যে সময়ে বসবাস করেন, সেই সময়ের চাপ ও তাপ, স্বস্তি ও সম্ভাবনা আলগোছে উঠে আসে তার কবিতায়। ব্যক্তিমানুষ ও মানসের আলো ও আঁধার মিলেমিশে যে রহস্যময়তা সৃষ্টি করে, সেই ধরনের এক ঘোর তৈরি করে তার কবিতা। বলা যায়, বাংলা কবিতার মূল সড়ক ধরে এলায়িত এক ভঙ্গিতে এগিয়ে যায় খালেদ হোসাইনের কবিতা। কবিতায় তিনি সহজ সুন্দরের পূজারী, রবীন্দ্রভক্ত এ কবি ‘ঐ যে পাতায় আলো নাচে সোনারও বরণও’ ঐ আলোটুকু ধরতে চেষ্টা করেন চিরায়ত ধ্রুপদী প্রচেষ্টায়।

খালেদ হোসাইনের কবিতাসমগ্র দুই খণ্ডে প্রকাশ করেছে অনিন্দ্য প্রকাশ। সাহিত্য গবেষণায় খালেদ হোসাইনের অবদান বড়, কিন্তু অনালোচিত। ‘মীর মশাররফ হোসেন: জীবন ও পরিবেশ’, ‘আধুনিক বাংলা সাহিত্য প্রসঙ্গ’, ‘মীর মশাররফ হোসেনের জমীদার দর্পণ : বিষয় ও শৈলী’ এসব তার নিজের করা গবেষণা।

শিক্ষকতা জীবনে হাজারো শিক্ষার্থী তার অধীনে প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণা করেছেন। সাহিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ খালেদ হোসাইন পেয়েছেন ‘আবুল হাসান স্মৃতি পুরস্কার-১৯৮৮’, ‘শ্রুতি সম্মাননা-২০১২’, জীবনানন্দ পুরস্কার-২০১৪ ও দাগ সাহিত্য পুরস্কার-২০১৬। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঋদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিচায়ক নির্মাণে নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন আর কবি মোহাম্মদ রফিকের মতোই বড় ভূমিকা আছে কবি খালেদ হোসাইনের। নামে বেনামে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সাথে সবসময়ই জড়িয়ে আছেন খালেদ হোসাইন। কত সাংস্কৃতিক সংগঠনের যে উপদেষ্টা তিনি। মানুষ হিসেবে মিশুক ও উদারমনা এ কবি জীবনের আনন্দগান গেয়ে চলেছেন প্রাণভরে, আছেন আমাদের সাহিত্যভূবনে প্রাণহর হাসি ছড়িয়ে এ –ও আমাদের এক প্রাপ্তি।

খালেদ হোসাইন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর