প্রগাঢ় মায়ার কবি আবুল হাসান
৪ আগস্ট ২০২১ ১০:৪৬
ষাটের দশকের জনপ্রিয় কবি আবুল হাসান। ডাক নাম আবুল হোসেন মিয়া। মাত্র এক দশকের কাব্যজীবনে দ্যুতি ছড়িয়েছেন বাংলার সাহিত্য অঙ্গনে। বাংলা সাহিত্যের আধুনিক এ কবির জন্মদিন আজ।
১৯৪৭ সালের এই দিনে তৎকালীন ফরিদপুর জেলার টুঙ্গিপাড়ার বর্নি গ্রামে নানার বাড়িতে জন্ম এ কবির। ঢাকার আরমানিটোলা সরকারি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও বরিশালের বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি অনার্সে ভর্তি হলেও তা শেষ না করেই চাকরিজীবন শুরু করেন। দৈনিক ইত্তেফাক, গণবাংলা এবং দৈনিক জনপদ-এ কাজ করেন তিনি।
ক্ষণজন্মা এ কবি খুব অল্প বয়সেই কবি হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। বিষন্নতা, বিচ্ছিন্নতা, মানবজীবন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্থান পেয়েছে তার কাব্যে। বারে বারে এসেছে প্রগাঢ় মায়া আর জীবনের গহীণ বিষাদ। সে কারণেই মাত্র এক দশকের ব্যবধানে বাংলাসাহিত্যে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।
১৯৭০ সালে এশীয় কবিতা প্রতিযোগিতায় প্রথম হন আবুল হাসান। পরে সেই কবিতাই কলকাতা থেকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত কবিতা-সংকলন ‘পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিতা’ (১৯৭০) শীর্ষক গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়। পৃথিবীর প্রতিনিধিত্বশীল কবিদের কবিতা নিয়ে করা সেই সংকলনে তৎকালীন পাকিস্তানের একমাত্র প্রতিনিধি ছিলেন কবি আবুল হাসান।
বেশকয়েকটি কাব্যগ্রন্থ, কাব্যনাটক, ছোটগল্প ও পান্ডুলিপি লিখেছেন তিনি। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘রাজা যায় রাজা আসে’, ‘যে তুমি হরণ করো’, ‘পৃথক পালঙ্ক’, ‘ওরা কয়েকজন’ ইত্যাদি। মৃত্যুর ১০ বছর পর প্রকাশিত হয় ‘আবুল হাসানের অগ্রন্থিত কবিতা’।
ছোটবেলা থেকেই আবুল হাসান বাতজ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। মাত্র ২৩ বছর বয়সে তার শরীরে হৃদপিণ্ড সম্প্রসারণজনিত রোগ সনাক্ত হয়। এরপরের দিনগুলো কখনো সুস্থ্য, কখনো অসুস্থ্য অবস্থায় কেটেছেে এ কবির। ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে অনেক বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন আবুল হাসান। সেসময় হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুযন্ত্রণার মধ্যেও লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। সেবছর ২৬ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
গুণী এ কবিকে মৃত্যুর পর ১৯৭৫ সালে তাকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ১৯৮২ সালে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।
সারাবাংলা/এসএসএস