Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ওয়াশেক সিমন-এর গল্প ‘ইলোরাকে খুঁজছি’


৩ মে ২০২২ ১৮:২২

প্রথমদিকে প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবারে ইলোরার সঙ্গে আমার দেখা হতো। দেখা করতাম ঠিক সন্ধ্যা ৭টায়। ঘড়ি ধরে কাঁটায় কাঁটায় ২ ঘণ্টা আমরা একসঙ্গে। তারপর আবার একটি মাসের জন্য আলাদা হয়ে যাওয়া। ঘড়ির সঙ্গে চলতে হবে; ছোট বেলার স্থিরকৃত এ লক্ষ্যে সে ছিল অটল!

– যদি জ্যামে আটকে যাও? বা অন্য কেউ আটকে দেয়?

– সে কারণেই তো আমি গাড়ি চড়ি না, বাসেও না। সময় একটা বড় ব্যাপার।

– সেটাই, হাঁটাও খুব ভালো। ডায়বেটিস কন্ট্রোলে থাকবে তোমার। ব্লাড প্রেশার, বুক ধরফর… একটা বেমক্কা চাঁটি খেয়ে থেমে যেতাম।

হাতের শিঙ্গারায় একটি কামড় বসালাম। ‘আউচ!’ পাশের কিউবিকালিয়ানরা একনজর দেখল, আবার নিজ নিজ ল্যাপি/পিসিতে মনোযোগ ফেরানো। ঝালের চেয়ে ঝাল লাগার ভয় বেশি আমার। তাই মরিচে কামড় পড়লেই মাথা দিয়ে ধোঁয়া আর চোখ দি্যে পানি পড়া তো বটেই, জিহ্বা বের করে হুহু করাটাও স্বাভাবিক।

– গবেট! ঝাল খেয়ে কেউ এমন করে?

– হ্যা। ঝাল এতোই খাও যে অন্যান্য খাওয়ার টেস্টও বুঝতেও পারো না। এই আমি, আমার মত যারা স্বাভাবিক মানুষ, তারা স্বাদ বুঝে, তাই তাদের জিভ ঝালে জ্বলে আর মিষ্টিতে লালায়। তোমার জন্য দুঃখ হয়। বুঝলানা, জীবনে স্বাদ কি সেইটাই বুঝলানা, শুধুই ঝালে ঝালাপালা… আবার চাঁটি! আউচ!

সন্ধ্যার রাস্তায় এত্তো গাড়ি দেখতে ভালোই লাগে। সারি সারি জ্যামবদ্ধ গাড়ি, লাল-কালো-সবুজ-সাদা রঙ, লাল ব্রেকলাইট, মৃদু হেডলাইট- শব্দটা স্তব্ধ হলেই যেন এক জীবন্ত কম্পোজিশন! রাস্তা দিয়ে হনহন করে হাঁটতে থাকা ঘরকুনো বা ঘরপ্রেমীদের জন্য রাস্তায় একটু জায়গা করে দেই। রাস্তা পার হয়ে বনানী মাঠের পাশের রাস্তা দিয়ে টুপ করে ঢুকে যাই। ধীর পদক্ষেপে রাস্তায় অনেকবার হেঁটেছিলাম আমরা।

বিজ্ঞাপন

– আচ্ছা, এ রাস্তার মাঝে যদি হঠাৎ কুমির আসে?

– কুমির? কেন? কীভাবে আসবে, পানি কোথায়?

– তাহলে বাঘ?

– বাঘশুমারীতে বাঘের সংখ্যা দশহাজারী হয়নি এখনও। আর এটা ঢাকা শহর, খুলনা না যে বাঘ এসে লাফ দিবে।

– ধ্যাৎ! একটু কল্পনা করো না বাবা! নাকি বিল্ডার্সে থাকতে থাকতে খালি সিমেন্ট-ইট নিয়েই ভাবো।

– আসে না। ভূমিকম্পে বিল্ডিং ধ্বসে যাচ্ছে মাটির নীচে `প্লাস্টিক কনসেন্ট্রিক রিং’ না বসানোয়, এইটা ভাবতে পারি।

– গবেট। আস্ত গবেট তুমি একটা!

– হইতে পারি। কিন্তু নিশ্চিত থাকো, বাঘ-ভাল্লুক, সন্ত্রাসী কিংবা ভূমিকম্পের ভাঙ্গা বিল্ডিং, কোনোটাতেই তোমার সমস্যা নাই। আমি আছি না!

– আহা, আইছে আমার হিরো! প্রশ্রয়ের ব্যাঙ্গের সাথে ভেংচি। চাঁটের বিপরীতে এবার হ্যাচকা টানে কাছে নিয়ে আসলাম শুনশান রাস্তার ফায়দা লুটে।

মাথায় এসব টুকরো টুকরো ঘটনা জট পাকায় সবসময়। মাথা থেকে নামাতে পারছি না। ইলোরাকে খুঁজছি প্রায় দুই বছর। দুঃখ প্রকাশ করব স্যরি বলে। অনেক কিছু থেকেই সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি ছিল। শুধু গাড়ি ধাক্কার অ্যাক্সিডেন্ট-টা বাদ পড়ে গ্যালো!

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

ইদ ২০২২ ইদ আয়োজন ২০২২ ইদ সংখ্যা ২০২২ ইদুল ফিতর ২০২২ ইলোরাকে খুঁজছি ওয়াশেক সিমন ওয়াশেক সিমন-এর গল্প ওয়াশেক সিমন-এর গল্প ‘ইলোরাকে খুঁজছি’ গল্প সারাবাংলা ইদ আয়োজন ২০২২