Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কর্তৃত্ববাদের স্বরূপ সন্ধানে

তানভীর আহমেদ
২০ মে ২০২২ ১৩:৩১

‘অথরিটারিয়ানিজম’ শব্দটার বাংলা অর্থ করা হয়েছে কর্তৃত্ববাদ। অভিধান ধরে খুঁজতে গেলে অর্থ দাঁড়ায় কোনো দল বা ব্যক্তির শাসন, যেখানে নাগরিকদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বা মতামতের কোনো মূল্য নেই। সোভিয়েত কমিউনিজমকে আমরা কর্তৃত্ববাদী বলতে পারি, একজন স্তালিন বা কমিউনিস্ট পার্টি সেখানে জাতীয় স্বার্থের দোহাই দিয়ে অনায়াসে ব্যক্তির অধিকার বা স্বাধীনতাকে উপেক্ষা করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে কর্তৃত্ববাদের প্রকাশ ঘটেছে প্রবল ক্ষমতাধর শাসকের উত্থানের ভেতর দিয়ে। ফিলিপাইনের দুতার্তে, তুরস্কের এরদোয়ান, হাঙ্গেরির উরবান অথবা উত্তর কোরিয়ার কিম জং–উন ঠিক যে রকম ক্ষমতাধর শাসক।

বিজ্ঞাপন

কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলো বাস্তব এবং সন্দেহভাজন বিরোধীদের নিরীক্ষণের জন্য আধুনিক নজরদারি কৌশল ব্যবহার করছে একবিংশ শতকের আধুনিক যুগে এসে। সভ্য পৃথিবীর আদি যুগেও যে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করবার জন্য কর্তৃত্ববাদী সরকার বিরোধীদের প্রতি নজরদারিমূলক আচরণ করেনি তা নয়। এই নজরদারি কমবেশি সব যুগেই হয়েছে। তবে হাল সময়ে অনেক দেশেই বিরোধীদের প্রতি নজরদারিমূলক আচরণের প্রতিবাদ আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। এই নিয়ে নতুন গবেষণায় অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করলে দেখা যাবে যে, পৃথিবীর বহু কর্তৃত্ববাদী সরকার জনগণকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করছে এরকম নজরদারি আচরণের জন্য। তথাপি ডিজিটাল মনিটরিংসহ অত্যাধুনিক নজরদারি কৌশলগুলোর বর্ধিত ব্যবহার, কর্তৃত্ববাদী রাজ্যের ভিন্নমতাবলম্বীদের পক্ষে অতিব কঠিন হয়ে যাচ্ছে ওই সকল শক্তিমালী আধুনিক নজরদারি রাডার সমূহকে মোকাবিলা করা। যেমন- বেলারুশ, চীন, রাশিয়া এবং অন্যান্য অনেক দেশে হাজার হাজার গোপন পুলিশ এজেন্টরা শাসনের বিরোধী এবং সন্দেহভাজন বিরোধীদের কার্যক্রমের উপর বিশেষ নজর রাখে। একটি বৈশ্বিক গবেষণা তথ্যমতে অনুমান করা হয়, ২০১৯ সালে পৃথিবীর প্রায় ৩৯% সরকার তাদের নাগরিকদের গোপনীয় অধিকারের আংশিক বা সম্পূর্ণ লঙ্ঘনের জন্য নজরদারিমূলক অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে।

বিজ্ঞাপন

প্রথমত, রাষ্ট্রীয় নজরদারির প্রধান উদ্দেশ্য হলো ভিন্নমত দমন। সর্বোপরি, ভিন্নমত তথা সরকারবিরোধী বা বিরোধিতার জন্যে যথেষ্ট পরিমাণে সম্মিলিত প্রচেষ্টা, দক্ষ সমন্বয় এবং কঠোর গোপনীয়তার প্রয়োজন। কারণ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যদি এই ধরনের ভিন্নমত পোষণকারী সংগঠন বা গোষ্ঠী না থাকে তবে গণতান্ত্রিক চর্চা হবে কোন প্রকারে? এমন পরিবেশে ভিন্নমতের কোনো রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা এবং টিকিয়ে রাখা প্রায় অসম্ভব, যেখানে শাসকগোষ্ঠী ভিন্নমত পোষণকারী রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীদের যোগাযোগে নির্ভরযোগ্যভাবে অ্যাক্সেস করতে পারে এবং তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে পারে। অনেক পণ্ডিত এই উপসংহারে পৌঁছেছেন যে, নজরদারিমূলক ব্যবস্থা প্রতিবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ক্ষমতা কমাতে অধিকতর কার্যকর পন্থা। যা কর্তৃপক্ষকে প্রধান বিরোধী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে এবং নির্মূল করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি জনগণের মধ্যে ভয় জাগিয়ে তোলে। যার ফলে সাধারণ জনগণ রাজনীতি বিমুখ হতে পারে। এরকম নজরদারি আইন দ্বারা সিদ্ধ কিনা সে বিষয়ে আইনজ্ঞদের মতামত বা বিশ্লেষণ প্রয়োজন। যেমন কমিউনিস্ট-যুগে পোল্যান্ডের ভিন্নমতাবলম্বী ইউজেনিউস গ্যাটনার তার স্মৃতিচারণে বর্ণনা করেছেন- “আমি জানতাম যে গোপন পুলিশ আমাকে অনুসরণ করছে। আমি সবসময় নিজেকে বলতাম, লাল আলোতে রাস্তা পার হবেন না, ট্রামে টিকিট যাচাই করুন।”

বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে, “জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে সমিতি বা সংঘ করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে। সেক্ষেত্রে ‘রাজনৈতিক দল’ হলো সভা, সমিতি, সংগঠন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের মতই এক ধরণের প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী অনুসারে প্রত্যেক নাগরিকের সমিতি বা সংঘ করবার অধিকার আছে। এটি তার মৌলিক অধিকার।” ১৫২ নম্বর অনুচ্ছেদে রাজনৈতিক দলের সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে এভাবে, “রাজনৈতিক দল বলতে এমন একটি অধিসঙ্ঘ বা ব্যক্তিসমষ্টিকে বুঝাবে, যে অদিসঙ্ঘ বা ব্যক্তিসমষ্টি সংসদের ভিতরে বা বাহিরে স্বাতন্ত্রসূচক কোনো নামে কাজ করে এবং কোনো রাজনৈতিক তৎপরতা পরিচালনার উদ্দেশ্যে অন্যান্য অধিসঙ্ঘ থেকে পৃথক কোনো অধিসঙ্ঘ হিসেবে নিজেদেরকে দাবি করে।”

ম্যাকাইভারের মতে, ‘রাজনৈতিক দল বলতে সেই জনসমষ্টিকে বুঝায় যারা বিশেষ কোনো কর্মসূচির ভিত্তিতে একত্রিত ও সংগঠিত হয়েছে এবং যারা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকার গঠনে প্রয়সী।’ রাজনৈতিক দল সমাজের অন্তর্গত বহুবিধ দল বা গোষ্ঠীর অন্যতম, যার উদ্দেশ্য হলো নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে স্বীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন। রাজনৈতিক দলের সেই নিয়মতান্ত্রিক উপায়কে যদি নজরদারি ব্যবস্থা দমন করা হয় তবে সেটা সংবিধান বিরোধী এটা স্বীকার করতেই হবে। অবশ্য কোনো রাজনৈতিক দল অনিয়মতান্ত্রিক পন্থায়ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের প্রয়াস চালিয়ে যেতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে প্রচলিত আইন দ্বারা প্রতিহত করা যেতে পারে।

রাষ্ট্রীয় নজরদারি পন্থা নাগরিকদের আতঙ্কিত করা এবং বিরোধী রাজনৈতিক সংগঠনের আন্দোলনকে সমর্থন করা থেকে তাদের নিরুৎসাহিত করার বাইরেও, নজরদারি পন্থা একটি শাসনকে বিরোধী সংগঠনে অনুপ্রবেশ করতে এবং ভিন্নমতাবলম্বী নেটওয়ার্কগুলোকে ব্যাহত করতে সক্ষম ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও শাসক সরকার নজরদারির মাধ্যমে বিরোধীদের গোপন তথ্য সংগ্রহ করে এর বিপরীতে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে বিরোধী দলগুলোর পরিকল্পনা ব্যর্থ করতে সরকার অত্যন্ত সক্ষম হয়। এ প্রসঙ্গে কয়েকটা উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। সাম্প্রতিক হাই-প্রোফাইল কেস আধুনিক নজরদারির নাগাল প্রদর্শন করে। ২০২০ সালের আগস্টে মধ্য রাশিয়ায় একটি নির্বাচনী ইভেন্টের পরে রাশিয়ান ভিন্নমতাবলম্বী আলেক্সি নাভালনিকে বিষ প্রয়োগ করার পরে, দ্য ইনসাইডার এবং বেলিংক্যাটের যৌথ তদন্তে জানা যায় যে নাভালনিকে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ান গোপন পরিষেবা অনুসরণ করেছিল। এজেন্টরা ধৈর্য সহকারে নাভালনিকে পর্যবেক্ষণ করেছিল, তার পোশাকে একটি নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগ করার সুযোগের অপেক্ষায়।

বেলারুশিয়ান ব্লগার এবং সরকারের সমালোচক রোমান প্রোটাসেভিচকে আটক করা আরেকটি আকর্ষণীয় উদাহরণ। মে মাসে, বেলারুশিয়ান নিরাপত্তা কর্মকর্তারা প্রোটাসেভিচকে এথেন্সে ট্র্যাক করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে। লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াস থেকে তার নিজ দেশে একটি বাণিজ্যিক যাত্রীবাহী ফ্লাইটে ফিরছিলেন। বেলারুশিয়ান আকাশসীমা দিয়ে ভ্রমণ করবার সময় বিমানটিকে মিনস্কে অবতরণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল এবং তাকে বান্ধবীসহ ঘটনাস্থলেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

একই রকম পরিণতি হয়েছে পল রুসেসবাগিনার। যিনি একজন স্পষ্টভাষী রুয়ান্ডার সরকারের সমালোচক। যিনি ১৯৯৪ সালের গণহত্যার সময় এক হাজারেরও বেশি জীবন বাঁচানোর জন্য কৃতিত্বপ্রাপ্ত। ৩১ শে আগস্ট ২০২০, রুসেসবাগিনাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই ভ্রমণে রুয়ান্ডার এজেন্টরা অনুসরণ করেছিল এবং পরবর্তী ফ্লাইটে বুরুন্ডি পৌঁছানোর চেষ্টা করার সময় তাকে অপহরণ করেছিল। কিন্তু ভিন্নমতাবলম্বীরা এই ব্যাপক নজরদারির মুখে অসহায় নন। ইতালিয়ান বুদ্ধিজীবী ক্রজিসটফ ক্রাকভস্কি ও আনসেলম হেগার সাম্প্রতিক এক যৌথ গবেষণায় বলেন, ‘নজরদারির অধীনে ভিন্নমতাবলম্বী সংগঠনগুলোর উল্লেখযোগ্য স্থিতিস্থাপকতা প্রকাশ করে। কমিউনিস্ট-যুগের পোল্যান্ডের গোপন পুলিশ সংরক্ষণাগারগুলো বিশ্লেষণ করে, আমরা আবিষ্কার করেছি যে গত শতাব্দির ৮০’র দশকে গোপন পুলিশ দ্বারা সবচেয়ে বেশি নজরদারি করা এলাকাগুলোই ধর্মঘট এবং সমাবেশের আয়োজন করেছিল। আমাদের গবেষণা ইঙ্গিত করে মূলত সলিডারিটির ভিত্তিতে আন্দোলন বা প্রতিবাদের তরঙ্গের প্রতি। সেই যৌক্তিক আন্দোলনের উপর ভিত্তি করেই ১৯৮৯ সালে পোল্যান্ডের তৎকালীন শাসক গোষ্ঠীর পতন ঘটেছিলো।’ তারা গবেষণায় আরও উল্লেখ করেন, ‘নিবিড় পর্যবেক্ষণ সত্ত্বেও বিরোধী দলগুলো কীভাবে উন্নতি করতে থাকে তা নির্ধারণ করার জন্য আমরা প্রথমে পরীক্ষা করেছিলাম কেনো লোকেরা তাদের সাথে যোগ দিতে থাকে। আমরা দেখেছি যে নজরদারির ভয় অন্য আরও শক্তিশালী আবেগ দ্বারা তুচ্ছ হয়েছে; রাগ – যা আমাদের গবেষণায় প্রকাশ করা হয়েছে যে নজরদারি নিয়ে আলোচনা করার সময় বিরোধী সদস্যদের দ্বারা প্রকাশ করা সবচেয়ে সাধারণ অনুভূতি। কিছু পোলিশ ভিন্নমতাবলম্বী যুক্তি দিয়েছিলেন যে, ক্রমাগত নজরদারি করা এমন একটি অপমানজনক অভিজ্ঞতা ছিল যে তারা রাস্তায় নেমেছিল।’

কমিউনিস্ট পোল্যান্ডের একজন সুপরিচিত বিরোধী লেখক লিওপোল্ড টাইরম্যান্ড যেমন বলেছিলেন- ‘আমি নভেম্বরে কী করছিলাম এবং আমার এগারোটি অন্তর্বাসের মধ্যে কোনটি আমি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করতাম তা গোপন পুলিশ আমার চেয়ে ভালোভাবে জানে।’

এই রাগই সলিডারিটির সাফল্যকে পুরোপুরি ব্যাখ্যা করে না। তারা এটাও পরীক্ষা করেছিলো যে কীভাবে নজরদারি করা ভিন্নমতাবলম্বী সংগঠনগুলো অনুপ্রবেশ এবং সদস্যদের দুর্নীতি থেকে নিজেদের রক্ষা করেছে। অপ্রত্যাশিতভাবে, তারা দেখতে পেলেন যে কমিউনিস্ট শাসনব্যবস্থায় নজরদারির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো বেসামরিক তথ্যদাতাদের উপর অত্যধিক নির্ভরতা। পোল্যান্ডে, তথ্য দাতাদের ব্যাপক ব্যবহারের অর্থ হল যে কেউ ঘনিষ্ঠ পরিচিত বা আত্মীয়সহ নজরদারি পরিচালনা করতে পারে। মূলত, প্রত্যেকেই একটি সম্ভাব্য শাসন সহযোগী ছিল। কেউ হয়তো আশা করতে পারে যে সামাজিক অবিশ্বাসের ফলে বিরোধীদের সংগঠিত করা কঠিন হয়ে উঠত। যার ফলে নাগরিকদের জনসমক্ষে প্রকৃত আনুগত্য প্রকাশ করবার জন্য উদ্দীপনা প্রদান করে। প্রকাশ্যে শাসনের বিরুদ্ধে কাজ করে, লোকেরা তাদের বন্ধু এবং পরিবারের কাছে প্রমাণ করতে পারে যে তারা সহযোগিতা করছে না। সেসময় একজন সাধারণ ভিন্নমতাবলম্বী নাগরিক অনশনের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে সন্দেহের জবাব দেন। আরও অনেকে অনুসরণ করেছিলো। কর্তৃত্ববাদী শাসন ভয় এবং ব্যাঘাতের মাধ্যমে ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রতিরোধ করতে নজরদারি ব্যবহার করে। কিন্তু একথাও মনে রাখতে হবে যে, নজরদারি মানুষকে শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেও উৎসাহিত করতে পারে। আবার অতি নজরদারি ভয়ের চেয়ে বেশি বিরোধীমতকে শক্তিশালী ও সংগঠিত করতে পারে। অবিশ্বাস ভিন্নমতাবলম্বীদেরকে তাদের আনুগত্য প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে উত্সাহিত করে। এ প্রক্রিয়াই শাসন-বিরোধী আন্দোলনকে শক্তিশালী করে। নজরদারির মুখে বিরোধী সংগঠনের অসম্ভাব্য স্থিতিস্থাপকতাও তুলে ধরা হয়।

লেখক: শিক্ষার্থী, ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগ ও সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম।

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

কর্তৃত্ববাদের স্বরূপ সন্ধানে তানভীর আহমেদ প্রবন্ধ সাহিত্য

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর