‘আলোকচিত্রীদের অভিভাবক ছিলেন ড্যাডি’
৮ নভেম্বর ২০২২ ১৭:০১
ঢাকা: আলোকচিত্রী হিসেবে বহুল পরিচিতির আড়ালে গল্পকার হিসেবে গোলাম কাসেম ড্যাডির অবদান চাপা পড়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন গবেষক, কথাসাহিত্যিক, আলোকচিত্রীসহ বক্তারা। তারা বলেছেন, আলোকচিত্রশিল্পী হিসেবে ড্যাডি যেমন সফল, তেমনি ছোটগল্পকার হিসেবেও তার অবদান অনেক।
সোমবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাঁটাবনে পাঠক সমাবেশে আয়োজিত ড্যাডিসমগ্রের পাঠ প্রতিক্রিয়ায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘বই বের না করার জন্য গল্পকার হিসেবে ড্যাডি প্রতিষ্ঠিত হননি। তবে তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ গল্পকার ছিলেন। ১৯৬৪ সালে ‘ক্যামেরা’ ও ১৯৮৬ সালে ‘একনজরে ফটোগ্রাফি’— এই দুটি বই তার জীবদ্দশায় প্রকাশিত হয়। ‘সহস আলোকচিত্রণ’ প্রকাশিত হয় তার মৃত্যুর চার বছর পর। ড্যাডি তার বইগুলোর মাধ্যমে দুই-তিন কালের আলোকচিত্রের বিষয় এবং মানুষ যেন সহজভাবে চর্চা করতে পারে, সে বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন। বাংলার সংস্কৃতিতে ছবি ধারণকে শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সংগ্রাম করেছেন তিনি।’
কথাসাহিত্যিক মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘গোলাম কাসেম ড্যাডি শুধু আলোকচিত্রী নন, তিনি শব্দচিত্রীও ছিলেন। তিনি দেশের সাধারণ মানুষের জীবনধারণের ছবি তুলেছিলেন। মুসলিম ছোটগল্পকার হিসেবেও তার সার্থকতা রয়েছে। ড্যাডি বাংলার ইতিহাসের চাক্ষুষ সাক্ষী। শত বছরের জীবনে তিনি ৫০টির মতো ছোটগল্প লিখেছেন। এসব গল্পে বাংলার মানুষের দুঃখ-কষ্টের জায়গাগুলো উঠে এসেছে। তবে লেখকরা তাকে সেভাবে দেখেননি, বরং তিনি লেখকদের দ্বারা বঞ্চিত হয়েছেন।’
দৃশ্যগল্পকার সুদীপ্ত সালাম বলেন, ‘গোলাম কাসেম ড্যাডি আমাদের আলোকচিত্রীদের অভিভাবক। তার ছবিতে বিন্দুমাত্র প্রতারণার ছোঁয়া ছিল না। ড্যাডির জীবনাচরণ ও ছবিতে সেই সব সত্যতা ফুটে উঠেছে। এমন একজন সাদামাটা আলোকচিত্রী অভিভাবককে ভুলে গেলে আমরা অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ব।’
ড্যাডির প্রবন্ধ নিয়ে আলোকচিত্রী ও শিক্ষক জান্নাতুল মাওয়া বলেন, ‘প্রাবন্ধিক হিসেবে গোলাম কাসেম ড্যাডি একজন সার্থক মানুষ ও শিক্ষক ছিলেন। ছবি তোলার জন্য উপকরণ বিষয়ে ৫০ বছর আগেই ড্যাডি তার প্রবন্ধের মাধ্যমে লিখে গেছেন। সে কালের একজন মানুষের লেখা বই পড়ে আধুনিক যুগে এসে আমরা ছবির বিষয়বস্তু শিখছি। তিনি আলোকচিত্রীদের সফল শিক্ষকও।’
কবি ও গবেষক ইমরান মাহফুজ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। আলোচকরা ড্যাডিসমগ্রের সম্পাদক সাহাদাত পারভেজকে ধন্যবাদ জানান। পাঠকদের মধ্য থেকে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন গবেষক ইসরাইল খান, আলোকচিত্রী পল ডেভিড বারিকদার, কাউন্টার ফটোর অধ্যক্ষ সাইফুল হক অমি ও মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম খান।
সারাবাংলা/আইই