আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির-এর গুচ্ছ কবিতা
১১ এপ্রিল ২০২৩ ২১:৩০
মহা-সৌরভ
পরিধিময় বৃত্তাকার শহর আমাদের
মৎস্যগন্ধা পুকুরটারই কেবল ত্রিভুজ জীবন।
জলে শ্যাওলা, তিনদিকে তিন অসীম কক্ষপথ।
এই যে এখানে ফিরে আসি আহত নাগরিক,
আমাদের এক ডজন পা ভেঙে ছায়াগুলো
গলে পড়ে পৌষের জমিনে।
সমবেত সুর কণ্ঠে তুলে
এবার শীতে অবশেষে ফিরছি যখন সম্মেলনে,
হাতের বরফ তালু, ধোঁয়া কুয়াশা, চায়ের তাপে
শৈশব ছিঁড়ে প্রথম ইশকুল জ্বলছে যখন লেলিহান,
উপরে পরম আয়না প্রিয়, দেখি তিনকোনা আসমান।
শহর বৃত্তের কেন্দ্রে এখন অমর ফুলের বন
আমরা মরণশীল এক মহা-সৌরভ।
অশ্বারোহী
শীতের রাত এই দেশে আর নামবে না বলে শহরের জলে-স্থলে
পোকার ঝাঁক, কঠোর কঠিন অগ্নি-অস্ত্র।
পথিকের পায়ে উঠে যায় ব্যস্ত রেলের গাড়ি।
জ্বলে ওঠে মাছের বাজার, কুকুরের ছায়াবিশেষ।
বিদায়ের বরফ শেষে, এই ঘোলা বাংলাদেশে
শীত আর কোনদিন আসবে না বলে ভুলে যাও শরীর,
সঙ্গম, আমাদের ঘুমের উত্তাপ।
খাদির চাদর কম্বল ঘিরে অভিমান
আদি অপমানে সব চামড়া পুড়ে যাক।
বোতামবিহীন একলা আমার বুকের কাজল
লোমের দিকে তোমার নামের ভুল বানান,
ছিন্ন-ভিন্ন রক্তজবা ছুটে আসুক চাবুক খুলে যুক্ত অক্ষর।
উত্তর অধুনা
পৃথিবীর সুন্দরতম দৃশ্যগুলো এখন প্রস্তুত হয় কারখানায়।
জরুরি কিছু জিজ্ঞাসা তবু জমতে থাকে।
কবে কোথায় গোপন বনে, সমুদ্রতল, আদিম গুহায়
সর্বপ্রথম সৃষ্টি হল রূপের মায়া?
সবার আগে কার আগুনে চোখের পাতায়, মনের ভিতর
শরীরে শরীর পুড়ল প্রথম?
যাবজ্জীবন সমস্বরে একটা সুরেই জবাব আসে।
পৃথিবীর সুন্দরতম দৃশ্যগুলো
প্রস্তুত হয় এখন কেবল কারখানাতেই।
বৈশাখী আয়োজনের আরও কবিতা পড়তে:
অচিন্ত্য চয়নের কবিতা ‘জলঠোঁটে আরোপিত হাসি’
চামেলী বসুর কবিতা ‘অগাধ শূণ্যতায় ডুবে যাবার আগে’
শৈবাল তালুকদারের কবিতা ‘তৃষ্ণা’
মনিরুজ্জামান মিন্টুর কবিতা ‘জন্মদিন’
মাশরুরা লাকীর কবিতা ‘এতো অল্প বৃষ্টি’
শাশ্বতী মাথিনের কবিতা ‘একান্ত এগুলো’
হাবিব ইবনে জাহানের কবিতা ‘সাতরঙা ভালবাসা’
কুশল ভৌমিকের কবিতা ‘একাব্বর সমীপে’
মোহাম্মদ নাদিমের কবিতা ‘আমার কোনো গ্রাম নেই’
মোহসেনা শাওনের কবিতা ‘মুক্তি চাই’
সারাবাংলা/এসবিডিই
আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির কবিতা বৈশাখী আয়োজন বৈশাখী আয়োজন ১৪৩০ সাহিত্য