আগামীকাল
২৩ এপ্রিল ২০২৩ ২০:৪০
এক.
বাবার সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে তার কথা হয়। প্রথমে হতো স্কাইপে, এখন হোয়াটসএপে। কথা বলার সময় দুজনে দুজনের ছবি দেখতে পায়। বাবা সজীবকে দেখে বলেন, তোমার মুখ শুকনো দেখাচ্ছে। তুমি কি ঠিক মত খাওয়া-দাওয়া করছো না?
এ কথা তিনি প্রায়ই বলেন তাকে।
সজীব হেসে বলে, ভিডিওতে অমন দেখায় ঠিকই আছি আমি। খাওয়া-দাওয়া চলছে আগের মতই। কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু আপনি যেন কেমন শুকিয়ে যাচ্ছেন। মনে হচ্ছে আপনারই খাওয়া-দাওয়া ঠিকভাবে হচ্ছে না।
শুনে তার বাবা বলেন, খেতে রুচি হয় না।
সজীব বলে, কেন রুচি হয় না, বাবা? কোনো অসুবিধা হচ্ছে?
তার বাবা বলেন, বয়স, বুঝলা না। বয়স হয়েছে তো। আগের সেই এপেটাইট কি আর আছে?
সজীব বলে, না না। বয়সের কথা ভেবে কম খেলে চলবে না। শরীরের নিউট্রিশন রিকোয়ারমেণ্ট অনুযায়ি খেতে হবে। মঞ্জু যে চার্ট করে দিয়েছে সেই অনুযায়ী আমেনার মা রান্না করছে তো?
শুনে তার বাবা হেসে বলেন, সে তার নিজের খাওয়া নিয়েই বেশি ব্যস্ত। এখন আবার একা খায় না। দারোয়ানকেও দাওয়াত দিয়ে খেতে নিয়ে আসে।
সজীব অবাক হয়ে বলে, সে কি! দারোয়ানকে খেতে আনে কেন? তার আত্মীয় না কি?
তার বাবা বলেন, বলে দেশের লোক। মায়া লাগে দেখে।
সজীব বলে, বাহ! বললেই হলো, মায়া লাগে! আত্মীয় হলে না হয় কথা ছিল। দেশের লোক! দেশের লোক তো সবাই। তাই বলে সবাইকে বাড়িতে ডেকে খাওয়াতে হবে? তা ছাড়া আমেনার মা কি নিজের খরচে খাবার রান্না করে খাওয়ায়! প্রায়ই এমন করে নাকি?
মাঝে মাঝেই দেখি দারোয়ানকে নিয়ে একসঙ্গে খায়। বলে বাবা একটা শ্বাস ফেলেন।
না, না বাবা এটা ওর বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে, ওকে নিষেধ করেন না কেন? মগের মুল্লুক পেয়েছে? যা ইচ্ছা তাই করবে? সাবধান করে দিন। বাড়াবাড়ি একদম সহ্য করবেন না। লাই পেলে মাথায় উঠবে।
তার বাবা বলেন, আমি কি আর সাবধান করবো? আমেনার মা- ই আমাকে মাঝে মাঝে নোটিশ দেয়। বলতে পারো ভয় দেখায়।
সজীব অবাক হয়ে বলে, নোটিশ দেয়? ভয় দেখায়? কিসের নোটিশ? ভয় দেখায় কিসের?
তার বাবা বলেন, গ্রামের বাড়ি চলে যাবে বলে। সে চলে গেলে আমার কি হবে ভেবে চুপ করে থাকি। দেখেও না দেখার ভান করি। বুঝলে না, আমার হেল্পলেসনেসের এডভান্টেজ নিচ্ছে। সবাই নেয়। আমেনার মাও নিচ্ছে। কি আর বলব বাবা।
না না। এটা বরদাস্ত করা যায় না। আপনি ওকে সাবধান করে দিন। খাবে, পরবে, বেতন নেবে। তার ওপর এইসব অনাচার! না, মোটেই বরদাস্ত করবেন না। সে কি একাই কাজের বুয়া বাংলাদেশে? কি মনে করেছে সে! সাবধান করে দিন বাবা। না হলে মাথায় চড়ে বসবে।
শুনে তার বাবা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, কাজের বুয়া হয়তো আছে। খুঁজলে পাওয়াও যাবে। কিন্তু সে যে আমেনার মায়ের চেয়েও বেশি খারাপ হবে না, তার গ্যারান্টি কি? আমেনার মা-এর স্বভাব জানা হয়ে গিয়েছে। এতদিন থেকে আছে এ বাসায়। নতুন কেউ এলে তার মতিগতি বুঝতেই জীবন শেষ হয়ে যাবে। তাই মুখ বুজে আছি। কি কিরবো বলো? তোমরা তো কাছে নেই।
শেষের কথা বলে কি খোঁচা দিলেন বাবা? ভাবলো সজীব। তারপর বলল, আমরা আসছি সামারে। তখন মঞ্জু আর আমি মিলে একটা ব্যবস্থা করবো। কিন্তু আপনি আমেনার মাকে বেশি বাড়াবাড়ি করতে দেবেন না। বলবেন, আমরা আসছি।
শুনে তার বাবা খুশি হয়ে বললেন, তোমরা আসছো? দাদাভাইদের আনছো তো সঙ্গে?
সজীব বলল, রুনু আর মিতু, দুজনই আসবে। সামারে ওদের ক্লাস নেই।
কিচেনে গিয়ে সজীব দেখলো মঞ্জু ব্রেকফাস্ট করছে। কাছেই সিনকের পাশে দাঁড়িয়ে জেনি ডিশ ওয়াশিং-এ গত রাতের ময়লা বাসনপত্র ধুয়ে র্যাকে সাজিয়ে রাখছে। চেয়ারে বসতে বসতে সে জেনির দিকে তাকিয়ে বলল, এই সব ধোয়ামোছা কাল রাতেই সেরে নেয়া উচিত ছিল না? সকালে করছো।
জেনি তার দিকে না তাকিয়ে বলল, এতে তোমাদের ব্রেকফাস্ট করতে তো কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। ব্রেকফাস্টের বাসন- পিরিচ, বোল, কাপ-পিরিচ পরিস্কার ছিল। এই সব বাসনকোসন লাঞ্চে কিংবা ডিনারের সময় লাগবে। সজীব একটু অসন্তুষ্ট হয়ে বলল, কিন্তু আমরা ডিস্টার্ব বোধ করছি। খেতে বসে এ রকম শব্দ হলে মনোযোগ ক্ষুণ্ণ হয়।
জেনি এবার তাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে বলল, আই টেক নোট অফ ইট। জানা ছিল না, তোমরা ছুটির দিনে কিচেনে বসে খাও। বাচ্চারাও কি এখানে খাবে?
মঞ্জু বলল, সেটা ওদের মর্জি। এই কদিনে দেখেছো তো তারা তাদের খেয়ালখুশি মত নিয়ে খায়। কখনও নিজেদের ঘরে। কখনও টিভি রুমে। মাঝে মাঝে ডাইনিং টেবিলে। তোমার কাজ সব গুছিয়ে রাখা। আমাকে রান্নায় সাহায্য করা।
জেনি মঞ্জুর দিকে তাকিয়ে হেসে চোখ টিপলো। দেখে মঞ্জু অবাক হয়ে সজীবের দিকে তাকিয়ে বলল, দেখলে জেনি কি করলো?
সজীব বলল, দেখেছি। সে আমাকে দেখেও সে দিন চোখ টিপেছিল।
মঞ্জু চোখ কপালে তুলে বলল, বলো কি? ওয়াজ সি ফ্লার্টিং?
সজীব কিছু বলার আগেই জেনি বলল, আই ডোন্ট ফ্লার্ট। আই মিন বিজনেস।
শুনে মঞ্জুর চোখ কপালের আরো ওপরে উঠে গেল। সে একবার সজীব আর একবার জেনির দিকে তাকিয়ে থাকল। তার মুখের হা বড় হয়ে গিয়েছে।
সজীব মঞ্জুর দিকে তাকিয়ে বলল, হয়ত মজা পায় এমন করে। বেচারি কাজ ছাড়া তো আর কিছু জানে না। ঘুম নেই, খাওয়া-দাওয়া নেই। টিভি দেখে না। গান শোনে না। হয়ত মাঝে মাঝে একটু বেয়াড়া হয়ে নিজের বিনোদনের জন্য এ রকম করে। মানুষের ব্রেন আছে না ওর মধ্যে?
জেনি বলে, ঠিক বলেছ সজীব।
শুনে দুজনেই অবাক হয়ে জেনির দিকে তাকায়। সে তখন মিটিমিটি হাসছে। মঞ্জু সজীবের দিকে তাকিয়ে চোখ ঘোরায়। সজীব চোখ টেপে।
প্রসঙ্গ পাল্টে সে বলে, ঢাকায় কথা বললাম।
মঞ্জু বলল, কেমন আছে বাবা?
সজীব বলল, এমনিতে ভালই আছেন। অসুখ- বিসুখ নেই। কিন্তু মনে হচ্ছে আমেনার মা ঝামেলা করছে।
কেন? কি করছে সে?
সজীব খুলে বলল বাবার সঙ্গে কি কথা হয়েছে তার কিছুক্ষণ আগে। শুনে মঞ্জু বলল, কি করতে বললে তাকে?
সজীব বলল, তাকে আর কি করতে বলবো? তার বয়স হয়েছ, আমরা কেউ সঙ্গে নেই। আমেনার মা তার এডভান্টেজ নিচ্ছে।
তাহলে? এইভাবেই চলবে?
সজীব বলল, না। একটা কিছু বিহিত করতে হবে। বলেছি আমরা আসছি ক’মাস পর। তখন একটা ব্যবস্থা করবো। তারপর বলল, খেয়ে নাও। বের হবো। একটা আইডিয়া এসেছে মাথায়। বলে সে জেনির দিকে তাকাল।
মঞ্জু চোখ বড় করে বলল, নো!
সজীব বলল, হোয়াই নট?
জেনি তখন ডিশ ওয়াশার থেকে বাসনকোসন বের করে র্যাকে রাখছে।
শপিং মলে ‘এট ইওর সার্ভিস’-এর ম্যানেজার তাদের দেখে বলল, হাউডি? এনিথিং আই ক্যান ডু?
তার পিছনে স্মার্ট কয়েকজন তরুন- তরুনী দাঁড়িয়ে আছে। সবার মুখে একই মাপের হাসি। চোখে বিদ্যুতের ঝিলিক। মুখের ত্বক, গায়ের চামড়া জোছনার মতো মসৃণ।
সজীব তরুন-তরুনীদের দিকে তাকিয়ে বলল, সেটাই জানতে এলাম।
ম্যানেজার বিনয়ের সঙ্গে বলল, ট্রাই মি। তারপর মঞ্জুর দিকে তাকিয়ে বলল, নাথিং রং উইথ জেনি আই হোপ।
সজীব সব বলার পর ম্যানেজার বলল, ঢাকা? বাংলাদেশ? আই হ্যাভ টু চেক।
বলে সে তার টেবিলে বসে কম্পিউটারে গুগল সার্চ করে দেখার পর হাসিমুখে বলল, আই হ্যাভ গুড নিউজ ফর ইউ। আমরা সম্প্রতি ঢাকায় সেলস ব্রাঞ্চ খুলেছি। সব জেনারেশনের জেনি পাওয়া যাবে সেখানে। উইথ কাটিং এজ এ আই।
সজীব বলল, উইথ আফটার সেল সার্ভিস?
ম্যানেজার এক গাল হেসে উঠে এসে বলল, ইয়া। ফ্রম ক্রেডল টু গ্রেভ।
সজীব ভ্রু কুচকে বলল, গ্রেভ? হোয়াট ডু ইউ মিন?
ম্যানেজার বলল, রিপ্লেসমেন্ট।।
সজীব বলল তার কি দরকার হবে?
ম্যানেজার বলল, আই হোপ নট। বাট ইন কেইস। বলে সে আকর্ণবিস্তৃত হাসিমুখে তাকিয়ে থাকল তাদের দিকে।
দুই.
ডিনারের পর সজীব ঢাকায় ফোন করলো। ভিডিওতে বাবাকে দেখা গেল একটু পর। তাকে বেশ হাসি-খুশি দেখাচ্ছে। সজীব কিছু বলার আগেই তিনি বললেন, তোমাদের ডিনার হয়েছে?
সজীব বলল, হয়েছে? আপনার?
জানই তো এখানে মাত্র সকাল। নাস্তা করলাম। কফি খাচ্ছি। চমৎকার কফি বানায় মিনি।
মিনি কাজ- কর্ম কেমন করছে? সব ঠিকঠাক আছে তো?
সব ঠিকঠাক আছে। কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। তারপর জিজ্ঞাসা করলেন, এ কথা বললে কেন বাবা? ঠিকঠাক কি থাকার কথা না?
তিন বছরের ওপর হয়ে গেলো তো, তাই ভাবলাম জিজ্ঞাসা করি। আছে না, কত কিছু হতে পারে। আমেনার মায়ের মতো না হলেও একই কাজ করছে তো মিনু। কাজ করতে করতে কি বিগড়ে যায় না মানুষ, গাড়ি, ফ্রিজ, এই সব? তাই আপনাকে প্রশ্নটা করি মাঝে মাঝে। মিনিকে আমিই এনে দিয়েছিলাম তো তিন বছর আগে।
সজীবের বাবা প্রফুল্ল স্বরে বললেন, পারফেক্ট। ঠিক প্রথম দিন যেমন ছিল এখনো তাই। বরং বেটার। মাচ মাচ বেটার।
সজীব বলে, আপনার মুখের কথা জড়িয়ে যায় বলছিলেন। মিনি আপনার সব কথা বুঝতে পারছে তো?
তার বাবা বলেন, সব বুঝতে পারে। মুখ খুলে বলতেও হয় না এখন। জানে কখন কি করতে হবে। অনেক সময় আমি ভুলে গেলে সেই এসে জানিয়ে দেয়।
সজীব বলে, খুব ভাল কথা। দ্যাটস নাইস। তারপর বলে, আপনার খাওয়া- দাওয়া হচ্ছে তো ভাল ভাবে? কম খাচ্ছেন না তো?
আরে না। কম খাব কেন? কি যে চমৎকার রান্না করে মিনি। দেশী- বিদেশী নানা পদের রান্না জানে। আমাকে বলতেও হয় না আজকাল। নিজেই বদল করে মেনু। একেকবেলা একেক রকম। মনে হয় ফাইভস্টার হোটেলের শেফ।
শুনে খুব খুশি হলাম বাবা। আপনার এখন ঠিক মত খাওয়া-দাওয়া করা খুব প্রয়োজন। আমরা দূরে থাকি বলে বেশ গিলটি ফিল করি।
না না গিলটি ফিল করবা কেন? নিয়মিত খোঁজ- খবর নিচ্ছ। মিনির মতো একজনকে দিয়ে গিয়েছ। এ কি যথেষ্ট না? ডোন্ট ফিল গিল্টি। আই এম ফাইন। তোমরাই বরং কষ্ট করে থাকো। ভাল থাকার চেষ্টা করো। ওদেশে তো সবই নিজেকে করতে হয়। চাকরির পর নিজে ড্রাইভ করে আসা-যাওয়া। কেনাকাটা, বাজার করা। রান্না করা। ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা কত কিছু নিয়ে কত কাজ করতে হয় তোমাদের। তার ওপর আমাকে নিয়মিত ফোন করে কুশল জিজ্ঞাসা করা। এ সব কি চাট্টিখানি কথা?
সজীব বলে, আমরা এ বছরও আসতে পারছি না বাবা। তিন বছর হয়ে গেল লাস্ট আপনাকে দেখতে গিয়েছি। না জানি আপনি কি ভাবছেন।
সজীবের বাবা প্রায় হা হা করে উঠলেন। বললেন, না না। এখানে আসবার জন্য এত অস্থির হবে কেন? বললাম না, আমি খুব ভাল আছি। কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। মিনি আসার পর আমার জীবনটাই বদলে গিয়েছে। বলতে পারো, আমার নবজন্ম হয়েছে।
সজীব বলে, আপনার ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে তো? ইনসোমনিয়া ছিল আগে।
খুব ভালো ঘুম হয় আজকাল। না হয়ে উপায় আছে! ভালো খাওয়া-দাওয়া, মিনির এতো যত্ন-আত্তি। জানিস, মিনি ঘুমের আগে আমাকে ছড়া শোনায়। লালাবাই।
সজীব অবাক হয়ে বলে, ঘুমপাড়ানি গান? সুইং লো?
আরো কত গান জানে সে। দেশি, বিদেশী।
বাহ! খুব গুণী মেয়ে তো মিনি। জানতাম না।
গুণী বলতে গুণী। তার বাবার মুখে হাসি ধরে না। ভিডিওতে বেঁকে যায় হাসি ভরা মুখ।
আচ্ছা রাখি বাবা। আবার কথা হবে। ভাল থাকবেন।
তোমরাও ভাল থেকো।
রাতে শোবার সময় মঞ্জু বলল, বাবা কি দেশে যাবার কথা বললেন?
সজীব বলল, না। তারপর মঞ্জুর দিকে ফিরে বলল, এ কথা জিজ্ঞাসা করলে কেন?
মঞ্জু বলল, তিন বছর হয়ে গিয়েছে আমরা লাস্ট গিয়েছি।
সজীব বলল, আগামীবছর যাব।
তিন.
বেল টিপতেই সজীবের বাবা দরজা খুলে দিলেন। যেন তাদের আসার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন। হাসিমুখে বললেন, এসো এসো।
ঘরে ঢুকে সজীব আর মঞ্জু ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাকে সালাম করলো।
সজীবের বাবা বললেন, ভালো আছ তো তোমরা সবাই? বসো, আরাম করে। জিনিসপত্র টানাটানি করতে হবে না। মিনিই করবে।
সজীব বলল, মিনি কোথায়? তাকে দেখছি না।
মনে হয় কিচেনে। তোমাদের রিফ্রেশমেণ্টের জন্য কিছু তৈরি করছে। তারপর বললেন, কি লম্বা জার্নি করে এসেছ তোমরা। মাঝখানে দুবাই না কোথায় যেন ছয় ঘন্টার বিরতি। কি ঝামেলা আর ঝক্কি এই লং ডিস্ট্যান্স ট্রাভেলে। ইয়াং বলেই পারো তোমরা।
তারা কথা বলতে বলতে মিনি ঘরে ঢুকল। তার হাতে নাস্তার ট্রে। ট্রেতে কয়েকটা প্লেটে খাবার। পানি। কোল্ড ড্রিংকস।
সে ঘরে ঢুকেই বলল, গুড মর্ণিং। মুখে স্মিত হাসি।
সজীব আর মঞ্জু কিছু বলার আগেই মিনির পিছু পিছু দু’জন বাচ্চা এলো। মিনির মতো দেখতে। দুজন একই সাইজের।
সজীব জিজ্ঞাসু চোখে তাকাতে তার বাবা বললেন, আওয়ার চিল্ড্রেন। টুইন। তারপর হেসে বললেন, তোমার ভাই, বোন।
সজীব ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকল। মঞ্জুর মুখের হা বড় হতে থাকল ক্রমে।
চা- নাস্তা খেয়ে নিজেদের থাকার ঘরে গিয়ে মঞ্জু ধপাশ করে বিছানায় শুয়ে সজীবকে বলল, জেনিকে ফোন করো।
সজীব অবাক হয়ে বলল, কেন?
জেনিকে চলে যেতে বলো। জানিয়ে দাও ওকে আমাদের দরকার নেই।
সজীব অবাক হয়ে বলল, বাড়ির এতো কাজ করবে কে?
মঞ্জু বলল, আমি করবো।
সারাবাংলা/এসবিডিই
আগামীকাল ঈদুল ফিতর সংখ্যা ২০২৩ সায়েন্স ফিকশন হাসনাত আবদুল হাই হাসনাত আবদুল হাইর সায়েন্স ফিকশন 'আগামীকাল'