অঞ্জনা সাহার ৪টি কবিতা
১৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:২৮
আমি শুধু পান করি
তোমার কবোষ্ণ ঠোঁটে পান করি মধুর মদিরা
আহা পাপ কেন বলো, কেন বলো পদস্খলন
দ্বিধার পাহাড় ঠেলে এসো আজ ভেসে যাই সমুদ্রের জলে।
তোমার তীক্ষ্ণতম জ্বলন্ত মশালে এসো
আমূল বিদ্ধ করি অপাপবিদ্ধ এই উষ্ণ দেহখানি।
প্রজ্বলিত মশালের অভিভূত বিচ্ছুরিত আলো দেবে
অন্ধকারে নতুন এক পথের নিশানা।
স্খলন যদি হয় অনির্বচনীয়, তবে ধিক;
বিশুদ্ধ জীবনচরিতে তবে পূর্ণ হোক সন্তের ভাঁড়ার
ব্যাপৃত থাক তারা শুদ্ধ কাজে, শুদ্ধ যতো মানুষ-মনীষী।
স্খলিত শিথিল দেহে আমি শুধু পান করি
অমৃতগরল এই মধুর মদিরা।
প্লাবিত জ্যোৎস্নালোকে
প্লাবিত জ্যোৎস্নালোকে আমি আজ বড়ো বেশি উদ্বেল
চাকভাঙা মধুর মতো পান করি কবোষ্ণ ঠোঁটের মদিরা।
আমাকে জড়িয়ে নাও সকরুণ বাহুর বন্ধনে
হে করুণাসজলঘন দয়িত আমার
আমি তোমার আলিঙ্গনের সুখে
যদি মূর্ছা যাই, তুমি ভয় পেয়ো না।
তোমার আতপ্ত মদির স্পর্শে জেগে উঠব হয়তো আবার।
অহল্যা-শরীর
যতো পারো দিয়ে যাও পাথর-আঘাত
আমি সয়ে যাব।
অবিচল দেহে আছে সহ্যের অতল ভাঁড়ার।
অভিশপ্ত অহল্যা-শরীরে আহা পিছলে যায়
দুর্ধর্ষ ব্যাধের তীক্ষ্ণ তীর
আঘাতের কথা তাই আমি তো ভাবি না;
যতো পারো দিয়ে যাও পাথর-আঘাত
আমি সয়ে যাব।
সন্তর্পণে
ধীরে ধীরে সে এসেছিল খুব সন্তর্পণে
যেন হেমন্তের অরণ্য থেকে উড়ে চলে এসেছিল
ঝরা পালকের মতো একটি সুবর্ণ হলুদ পাতা।
তাকে খুব যত্ন করে তুলে রেখেছিলাম
আমার গোপন কৌটোয়।
এখন আমার চেতনা জুড়ে প্রিয়তর
এক অনুভব ছুঁয়ে আলোড়ন জাগায়!
তা শুধু আমিই বুঝতে পারি।
আমার ব্যক্তিগত পুঁজিতে
পূর্ণ আছে কালের খেয়ার ভাঁড়ার।
মগজের কোষে কোষে ধরে আছে যেন
একমুঠো সুবাসিত কোরক।
তারই সৌগন্ধ্যে উন্মাতাল হলো আমার নাবিক হৃদয়!
অলৌকিক সাম্পানে চড়ে এখন তাকে
শূন্যে ভাসাই দিকচিহ্নহীন পথে।
লুণ্ঠিত আত্মার জবানবন্দি দিতে পারে একমাত্র
ওই দূর-আকাশের মহাজাগতিক সময়।
যা আমার মনে জাগায় আপাত-স্পন্দিত বিস্ময়!