Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জ্যৈষ্ঠের ঝড়


২৪ মে ২০১৮ ১৯:২১

এসএম মুন্না ।।

জন্ম ১৩০৬, মৃত্যু ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ। অঙ্কের হিসাবে কাজী নজরুল ইসলামের জীবনকাল ৭৭ বছরের। কিন্তু সৃষ্টিশীল ছিলেন মাত্র ২৩ বছর। এই ২৩ বছরের সাহিত্য-জীবনে তাঁর বিপুল সৃষ্টিকর্ম বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। তাঁর ছড়ানো দ্রোহী চেতনা কাঁপিয়ে দিয়েছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের ভিত।

‘আমি চির বিদ্রোহী বীর/ বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির উন্নত শির’-নিজের লেখা কালোত্তীর্ণ কবিতা ‘বিদ্রোহী’-তে এভাবেই আত্ম-পরিচয় তুলে ধরেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। তাই খ্যাতি পেয়েছেন বিদ্রোহী কবির। অভিষিক্ত হয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদায়।

বিজ্ঞাপন

তাঁর সাহিত্যকর্মে ভালবাসা, মুক্তি এবং বিদ্রোহ  প্রাধান্য পেলেও ধর্ম- লিঙ্গভেদের মানুষের অনুভূতিও প্রকাশ পেয়েছে। তাঁর এই সাহসী লেখনী ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে উজ্জীবিত করেছে। প্রবল প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ, ছন্দবৈচিত্রময় কাব্য সৃষ্টি, আবেগমিশ্রিত গান ও নানা রচনাবলী তাকে করেছে বাংলা শিক্ষিত সমাজে অলোকসামান্য প্রতিষ্ঠা-দান।

‘বিদ্রোহী’ কবিতার মধ্য দিয়ে তিনি চিরস্থায়ী জয় করেছেন বাঙালির হৃদয়। পেয়েছেন ‘বিদ্রোহী’ কবির খেতাব। তবে ‘বিদ্রোহী কবি’র মর্যাদা পেলেও মূলত তিনি চিরকালের প্রেমের কবি। তাঁর এই প্রেম ছিল সব অর্গলমুক্ত, সর্বব্যাপী। যার কেন্দ্রে ছিল উদার মানবিকতা। এ কারণে সব ধর্মের মানুষের কাছে তিনি পেয়েছেন সমান মর্যাদা।

বাংলা সাহিত্যে তার অবদান অসামান্য। মহাপ্রয়াণের ৪২ বছর পরেও তার প্রয়োজনীয়তা এতটুকু ম্লান হয়নি। বরং চিরস্থায়ী হয়ে আছেন কোটি-বাঙালি হৃদয়ে। শুধু তাই নয়, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক নতুন ধারার জন্ম দিয়েছেন অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী ও সাম্যের এই কবি। সেটি হলো ‘ইসলামী সঙ্গীত’ তথা ‘গজল’। নজরুল প্রায় তিন হাজার গান রচনা এবং সুর করেছেন। জীবদ্দশায় তিনি সর্বদা হিন্দু-মুসলাম মিলনের গান গেয়েছেন। তাই তো তার ইসলামী সঙ্গীত ও গজল আজও হৃদয় হরণ করে নেয়।  ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষ এলো খুশি ’ গানটি তারই রচনা। যেটি ঈদের গান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। পাশাপাশি তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন হিন্দুদের শ্যামাসঙ্গীত রচনার ক্ষেত্রেও।

বিজ্ঞাপন

তবে তার রচনায় বিশেষভাবে প্রকাশ পায় শোষিত, বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষের আর্তি। গণমানুষকে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছেন সাম্য ও ন্যায়ের বন্ধনে একত্রিত হয়ে শোষণ, বঞ্চনা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হতে। তাই তিনি গেয়েছেন ‘গাহি সাম্যের গান/ মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান’।

অসাম্য, অসুন্দর ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন অকান্ত বিদ্রোহী-চির উন্নত শির। দ্রোহ-প্রেম-মানবিকতায় অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও প্রগতির এক উজ্জ্বল প্রেরণার  শ্রেষ্ঠতম পুরুষ। তিনি লিখেছেন ‘যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না’-বিদ্রোহী রণ-কান্ত/ আমি সেই দিন হব শান্ত।’ তার এ লেখনিই শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির পক্ষে সোচ্চার কণ্ঠের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে।

বাংলা কাব্যে এক নতুন যুগের স্রষ্টাও বলা হয় নজরুলকে। যিনি পরাধীন ব্রিটিশ ভারতে মুক্তির বাণী বয়ে এনেছিলেন তার কাব্যে। সূচনা করেছিলেন এক নতুন যুগের। ‘অগ্নিবীণা’, ‘বিষের বাঁশী’ আর ‘ভাঙ্গার গান’ গেয়ে জাগিয়ে তুলেছিলেন তিনি গোটা উপমহাদেশের মানুষকে। তবে উল্কার মতো এসে আবার উল্কার মতো মিলিয়ে গেলেন বাকশক্তি হারিয়ে। দীর্ঘায়ু পেলেও তার সাহিত্যজীবন মাত্র ২৩ বছরের। এ স্বল্প পরিসর জীবনে নজরুলের বিপুল সৃষ্টিকর্ম বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।

নজরুলই এদেশের সমাজচেতনা ও রাজনৈতিক জগতের সর্বোত্তম কবি, যিনি গণমানুষের সাথে এদেশের সাহিত্যের যোগসূত্র স্থাপন করেছেন। দেশের বৃহত্তর জনসাধারণ বাংলা সাহিত্যের দ্বারা এত গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হয়নি, নজরুলের আবির্ভাবে যেনো বাংলা সাহিত্যের একটা নতুন দিক খুলে গেলো। নজরুল ছিলেন কর্মে ও চিন্তায় স্বাধীন। দাসত্বের বন্ধনমুক্তি ও প্রাচীন সংস্কারের শৃঙ্খল-ভঙ্গ করবার কামনা উন্মাদ। তার সৃজনশীল জগতে এসব প্রকাশ পেয়েছে পরতে পরতে। কাব্যের বাণী, গানের কথা কিংবা ক্ষুরধার লেখনি বুলেটের চেয়ে শক্তিশালী ছিল। তৎকালীন সময়ে তার বাণী, কথা ছিল বিরোধীদের কাছে চক্ষুশূলের মতো।

ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন-শোষণ থেকে উপমহাদেশের মুক্তির আন্দোলন এবং একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নজরুলের কবিতা ও গান ছিল অফুরন্ত প্রেরণার উৎস। সঙ্কট ও সম্ভাবনায় নজরুলের সৃষ্টিকর্ম বাঙালির জীবনে জুগিয়ে চলেছে নিরন্তর প্রেরণা।

পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার পাশাপাশি তিনি সামাজিক বৈষম্য,  শোষণ, বঞ্চনা, কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা, হীনম্মন্যতার বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করেছেন -‘গাহি সাম্যের গান-/যেখানে আসিয়া এক হ’য়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান/যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-ক্রীশ্চান’। তিনি এমন একটা শোষণহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন যেখানে-সকল কালের সকল দেশের সকল মানুষ আসি/ এক  মোহনায় দাঁড়াইয়া শোনে এক মিলনের বাঁশী।

জন্মস্থান ভারতের বর্ধমান হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে কবি নিবিড় সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কৈশোরের একটা সময় কেটেছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল-দরিরামপুরে। কুমিল্লায় তার শ্বশুরবাড়ি। ঢাকা ও চট্টগ্রামে কেটেছে তার আনন্দ-বেদনার অনেক দিন। শৈশবে পিতৃহারা হন নজরুল। তারপর বাধার দুর্লংঘ্য পর্বত পাড়ি দিতে হয়েছিল তাকে। অতঃপর একদিন সকলকে চমকে দিয়ে বাংলার সাহিত্যাকাশে দোর্দন্ত প্রতাপে আত্মপ্রকাশ করেন কবি। কবিরূপে নজরুলের এ অভ্যূদয় ধূমকেতুর সঙ্গেই তুলনীয় কেবল। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সম্পর্কে যথার্থ বলেছেন, ‘‘কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু, আয় চলে আয়রে ধূমকেতু/ আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু, দুর্দিনের এই দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন।’’

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার কাছে সমান প্রিয় তিনি। অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে নজরুল লিখে গেছেন অবিরাম। বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে তার অজস্র কবিতা, বাংলা গানের জগৎকে গীত সুধারসে ভরিয়ে দিয়েছে তার গানের কলি, তাতে যোগ করেছে নতুন মাত্রা ও স্বাদ। তার লেখা গান বাংলা গানকে আরও আধুনিক করেছে। গান ও কবিতার মাধ্যমে তিনি অবহেলিত, বঞ্চিত মানুষের পাশে যেমন দাঁড়িয়েছেন, তেমনি বিরল শিল্প-সুষমায় ভরিয়ে তুলেছেন বাঙালির সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারকে। প্রজন্ম পরম্পরায় এই কবির জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা আকাশচুম্বী।

কাজী নজরুল ইসলাম দুই বাংলায় সমভাবে সমাদৃত। তার প্রসঙ্গে কবি অন্নদাশঙ্কর রায় বলেছেন, ‘ভুল হয়ে গেছে বিলকুল/আর সবকিছু ভাগ হয়ে গেছে/ভাগ হয়নিকো নজরুল/এই ভুল টুকু বেঁচে থাক/বাঙালি বলতে একজন আছে/দুর্গতি তাঁর ঘুচে যাক।’

কাজী নজরুল ইসলামের যুগান্তকারী এক কবিতা হলো ‘বিদ্রোহী’। এই কবিতার মধ্য দিয়ে নজরুল সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। একই সময় রচিত তার আরেকটি বিখ্যাত কবিতা হচ্ছে ‘কামাল পাশা’। এই কবিতাটিতে ভারতীয় মুসলিমদের খিলাফত আন্দোলনের অসারতা সম্বন্ধে নজরুলে দৃষ্টিভঙ্গি এবং সমকালীন আন্তর্জাতিক ইতিহাস-চেতনার পরিচয় পাওয়া যায়। ১৯২২ সালে তার বিখ্যাত কবিতা-সংকলন ‘অগ্নিবীণা’ প্রকাশিত হয়। এই কাব্যগ্রন্থটি বাংলা কবিতায় এক নতুন ধারার সৃষ্টি করে।

কাজী নজরুলের প্রথম গদ্য রচনা ‘বাউণ্ডুলের আত্মকাহিনী’। ১৯১৯ সালের মে মাসে এটি সওগাত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার লেখা অন্যান্য গদ্যের মধ্যে রয়েছে ‘হেনা’, ‘ব্যাথার দান’, ‘মেহের নেগার’, ‘ঘুমের ঘোরে’। ১৯২২ সালে নজরুলের একটি গল্প সংকলন প্রকাশিত হয়; যার নাম ‘ব্যথার দান’। এছাড়া একই বছর প্রবন্ধ-সংকলন ‘যুগবাণী’ও প্রকাশিত হয়।

নজরুলের সাহিত্যকর্মের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য তার গান। তার লেখা গান নজরুল গীতি বা নজরুল সঙ্গীত বলে পরিচিত। তার লেখা গানগুলো ১০টি ভাগে বিভাজ্য। এগুলো হলো-ভক্তিমূলক গান, প্রণয়গীতি, প্রকৃতি বন্দনা, দেশাত্মবোধক বা দেশের গান, রাগপ্রধান গান, হাসির গান, ব্যাঙ্গাত্মক গান, সমবেত সঙ্গীত, রণ সঙ্গীত এবং বিদেশিসুরাশ্রিত গান। তার রচিত ‘চল চল চল, ঊর্ধগগনে বাজে মাদল’ বাংলাদেশের রণসঙ্গীত।

কবি নজরুল ধ্যানে-জ্ঞানে, নিশ্বাসে-বিশ্বাসে, চিন্তা-চেতনায় ছিলেন পুরোদস্তুর অসাম্প্রদায়িক। যখন সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষে জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি হচ্ছে, তখনই কবি ঘৃণাভরে তাদের প্রতি অভিসম্পাত বর্ষণ করেছেন তার লেখনির মধ্য দিয়ে। কাব্য করে তিনি বলেন ‘ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল বৈশাখীর ঝড়/ তোরা সব জয়ধ্বনি কর’।

১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট (২২ শ্রাবণ ১৩৪৮) বিশ্বকবি রবি ঠাকুরের মহাপ্রয়াণ হয়। তার মৃত্যুতে শোকাহত নজরুল তাৎক্ষণিকভাবে রচনা করেন ‘রবিহারা’ ও ‘সালাম অস্তরবি’ কবিতা এবং ‘ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবিরে’ শোকসঙ্গীত। এর মধ্যে ‘রবিহারা’ কবিতাটি নজরুল স্বকণ্ঠে আবৃত্তি করেন কলকাতা বেতারে, গ্রামোফোন রেকর্ডে। ‘ঘুমাইতে দাও’ গানটিও কয়েকজন শিল্পীকে নিয়ে স্বকণ্ঠে গেয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের মহাপ্রস্থানের বছরখানেকের মধ্যেই নজরুল নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক্রমশ নির্বাক ও সম্বিতহারা হয়ে যান। ১৯৪২ সালের জুলাই থেকে ১৯৭৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৪টি বছর কবির এ অসহনীয় নির্বাক জীবনকাল অতিবাহিত হয়।

তিনি ‘দুখু মিয়া’র দুঃখ-দারিদ্র্যে জর্জর জীবন অতিক্রম করে বাংলা আর বাঙালির প্রাণের কবি হয়ে গেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনলেন তাকে (১৯৭২ সালের ২৪ মে)। অধিষ্ঠিত করলেন ধানমণ্ডির ‘কবি ভবনে’। তিনি মহিমান্বিত হলেন বাংলাদেশের ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে।

বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে কবির অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক বিশেষ সমাবর্তনে কবিকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে নজরুলকে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান এবং ২১ ফেব্রুয়ারি ‘একুশে পদক’ এ ভূষিত করা হয়।

১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ অবিভক্ত বাংলার বর্ধমান জেলার চুরুলিয়ায় জ্যৈষ্ঠের ঝড় হয়ে আবির্ভাব ঘটেছিল উনিশ শতকের অন্তিমলগ্নে যে কবির, সে ঝড় চিরতরে থেমে গিয়েছিল ঢাকার তৎকালীন পিজি হাসপাতালের কেবিনে ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্রে।

‘মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই’ গানের বাণীর এই আকাঙ্খা বাংলাদেশ ভোলেনি। কবির আকাঙ্খাই পূরণ করা হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গণে তাকে চির-সমাহিত করা হয়েছে।

সারাবাংলা/পিএম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর