এখনকার মত কোন প্রচার প্রচারণা ছিল না,
বাহারি রঙয়ের পোস্টার, ব্যানার ফেস্টুন
ফেসবুক বা বিলবোর্ডের প্রচলন তো ছিলই না।
হাতে গোনা দুয়েকটি খবরের কাগজে
এক কলামের ছোট্ট করে একটা বিজ্ঞাপন দেয়া ছিল
‘৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে গণ-সমাবেশ
বক্তৃতা করিবেন: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’।
বঙ্গবন্ধু ছাড়াও তখন আরো অনেক নেতা ছিল
ছিল নামকরা ডাকসাইটে সব ছাত্রনেতারা।
কেউই সেদিনের জনসভায় বক্তব্য দেননি।
সভায় আনুষ্ঠানিক কোন সভাপতিও ছিল না,
কিন্তু সারাদেশ সেদিন মিলিত হয়েছিল
ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের জনসভায়
স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন দশ লক্ষাধিক
মুক্তিকামী স্বাধীনতা প্রিয় বীর বাঙালি।
একই সাথে ছিল দ্রোহ ও উৎসবের আমেজ
সবার উপস্থিতি ছিল স্বপ্রণোদিত,স্বপ্রতিভ।
বুকে ছিল স্বাধীনতা ও মুক্তির স্বপ্ন।
সেই স্বপ্নের স্রষ্টা গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন
সারাদেশ উত্তাল, টান টান উত্তেজনা
পাকিস্তানের স্বৈরশাসকের রাষ্ট্রযন্ত্র সজাগ
ঢাকার আকাশে অযাচিত হেলিকপ্টারের মহড়া
মুক্তিকামী সাড়ে সাত কোটি নিরস্ত্র বাঙালির
চোখ কান তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে
কি বলবেন জাতির মুক্তি ত্রাতা, জননেতা,
কি বলবেন কয়েকদিন আগে ফাঁসির মঞ্চ থেকে ফিরে আসা
সারা বিশ্বের কোটি কোটি মুক্তিকামী মানুষের নয়নের মনি ও
আশা আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
উপস্থিত জনতার মাঝে টান টান উত্তেজনা
কি বলবেন, সমগ্র বাঙালির নয়ন মনি,
কি বলবেন, হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালা।
অধীর আগ্রহে রেডিওর সামনে বসে আছেন
সাড়ে সাত কোটি মুক্তি পাগল জনগণ।
উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সাথে জ্বলছে দ্রোহের আগুনে
কাঙ্খিত শব্দমালা খেলা করছে দেহ মনে
ত্বর যেন আর সইছে না, কি বলবেন তাঁদের নেতা
স্লোগান মুখরিত উত্তাল মাঠে
অবশেষে ভেসে এলো সেই কাঙ্ক্ষিত বাণী
এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।