তুলসীতলা
১০ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:৩৮
তুলসীতলার দিকে তাকালেই মৃত্যুভয়ের কথা হৃদয় জুড়ে শিহরিত হয়ে ওঠে। তুলসীতলায় এই জীবনে কত রকমের ঘটনা ঘটেছে। তা মনে ছিল না। শেষের একটা ঘটনার জন্য আজ সব ঘটনার কথাগুলো মনে পড়ছে। আসলে কী কী ঘটনা ঘটেছে। ভাবছেন, মৃত ব্যক্তিকে উত্তর দিকে মাথা দিয়ে চোখে তুলসীপাতা, বুকে গীতা আর নাকে তুলা দিয়ে রাখা হয়েছে। যদি মৃতব্যক্তি হয় তা হলে এই ব্যক্তি নিশ্চয় এই পরিবারের কেউ! কিন্তু না। আসলে না জেনে, না শুনে, না দেখে অনেকেই অনেক কিছু ভেবে বসি। কখনও ভাবনার সাথে বাস্তবে মিলে যায় আবার কখনও ভাবনার সাথে আংশিক মিলে যায়। আবার কখনও কখনও ভাবনার জগতের সাথে পুরোটাই মিলে যায়। কিন্তু আপনি নিশ্চিত থাকুন, তুলসীতলায় পরিবারের কোনও মৃতব্যক্তিকে রাখা হয়নি।
তাহলে কী এমন ঘটনা ঘটেছে? এবার হয়তো ভাবছেন, তুলসীগাছটাই কি তুলে ফেলেছে বাড়ির কোনও শিশুসন্তান। না সে রকম ঘটনার জন্য শিশুসন্তান এই পরিবারে নেই। এই বাড়ির বড় ছেলের স্ত্রীর সন্তান হয়েছিল। সাত দিনের মাথায় মারা গেছে। তাকে অবশ্য এই তুলসীতলায় রাখা হয়েছিল। এই বাড়ির ছোট সন্তানের স্ত্রীর সন্তান হয়নি এখনও। চিকিৎসা চলছে। এখন বুঝলেন তো এই বাড়িতে ছয় জন সদস্য। বাবা-মা, দুই ভাই আর দুই বউ। এই বাড়িতে কোনও ছোট শিশু নেই। তাই তুলসীগাছ তুলে ফেলার কোনও প্রশ্নই আসে না।
এবার হয়তো আপনি ভাবতে পারেন দুই সন্তানের দুই স্ত্রী। দুই স্ত্রী নিশ্চয় সন্ধ্যায় তুলসীতলায় সন্ধ্যাপ্রদীপ দিতে গিয়ে ঝগড়া বেধেছে। সন্ধ্যায় সলতে প্রদীপের আলো দেখা বাদ দিয়ে তাদের ঝগড়া দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। না সে রকমের ঘটনা ঘটেনি। কারণ তুলসীতলায় দুই বউমা সন্ধ্যাপ্রদীপ দেন না। তাদের শাশুড়ি মা প্রতি সন্ধ্যায় সন্ধ্যাপ্রদীপ দেন। শাশুড়ির অনুস্থিতিতে প্রথম দিন বড় বউমা, দ্বিতীয় দিন ছোট বউমা দেন। সেজন্য এ বিষয় নিয়ে এখনও কোনও ঝগড়া হয়নি।
এবার আপনার মাথায় আসতে পারে দুই ভাইয়ের কথা। নিশ্চিত জায়গাজমি নিয়ে দ্বন্দ্ব বেধেছে। সেজন্য জমিজমা ভাগবাঁটোয়ারা করে নিতে হচ্ছে। আমিন এসে মাপ দিচ্ছেন কিন্তু দেখা গেল, তুলসীগাছটা এমন জায়গা পড়েছে। একজনের ভাগ্যে পড়েনি। সেজন্য হতাশ হয়েছে। এমন খবর শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। কিন্তু আসলে তা নয়। এখনও জমিজমা নিয়ে কিছুই হয়নি। যদিও দুই ভাই প্রতিজ্ঞা করেছে। বাবা-মা জীবিত থাকা অবস্থায় কোনও জমি ভাগাভাবি হবে না। আমরা যৌথ পরিবার ভাঙব না। তাই এ বিষয় নিয়ে কোনও রকমের চিন্তা না করাই ভাল।
ঠাকুরমার কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনেছিলাম। কত রকমের ঘটনার স্মৃতি আছে তার। কিন্তু একটা ঘটনার কথা এখন না বললেই নয়। পাকিস্তানি আর্মি আর রাজাকারদের হাত থেকে জীবন বাঁচাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য বাধ্য হয়েছিল ওই গ্রামের অনেকেই। ঠাকুরমা বাড়ি থেকে বের হওয়ার শেষ মুহূর্তে বাড়ির তুলসীতলায় কিছু সময় প্রার্থনা করে বললেন, ‘ঠাকুর, কোথায় যাব জানি না। তবে মনে হচ্ছে অজানা পথ পাড়ি দিতে পারব কি না। পথের মাঝে জীবন নাশ করে ফেলে কি না পাকিস্তানি আর্মিরা। ঠাকুর পথের মাঝে আমাদের যেন কোনও রকমের বিপদ না হয়। বিপদ থেকে তুমি রক্ষা করবে ঠাকুর। তোমার গাছের মালা পরে আছি। তুলসীর মালা পরলে বিপদ হয় না, সেই যে শৈশবে শুনেছি, এখনও বিশ্বাস করি। তুমি আমার সাথে দৃশ্য ও অদৃশ্যে আছ ঠাকুর। আর জীবিত হিসাবে তোমাকে বাড়িতে রেখে যাচ্ছি। তুমি আমাদের রক্ষা করবে। আর বাড়িটা রক্ষা করবে। যুদ্ধ শেষে যেন সুস্থভাবে ফিরে আসতে পারি। এসে জীবিত অবস্থায় তোমাকে জীবিত দেখতে পারি। এখন তোমার নাম যপ করতে করতে যাই ঠাকুর।’
নয় মাস পর যুদ্ধ শেষ বাংলাদেশ স্বাধীন হলো। ঠাকুরমাসহ সবাই বাড়ি ফিরে দেখে তুলসীগাছ জীবিত আছে। তুলসীতলায় সাষ্টাঙ্গ হয়ে প্রমাণ করেছিলেন সবাই।
এটা তো ঠাকুরমার একটা ঘটনা। এবার আমার একটা ঘটনার কথা বলি। একা থাকি। অনেক অনিয়ম করে ফেলি। কিন্তু হঠাৎ সর্দি, সাথে কাশিজ্বর। শহরে যাদের সাথে থাকি। তার কেউ নেই বাসায়। শুক্রবারের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গেছে। ঢাকা শহরের অভিভাবক আমার জয়শ্রী দিদিকে আমার সর্দি ও কাশির কথা রাতে বললাম। তিনি পরের দিন নিজের বাসায় টবে তুলসীগাছ লাগিয়ে ছিলেন। সেই তুলসীগাছের পাতা আর সিরাপ নিয়ে এসে হাজির হলেন। দিদিকে ধন্যবাদ দিয়ে তুলসীপাতা চিবিয়ে খেলাম। আর তখনই আবারও প্রমাণ পেলাম তুলসীপাতার অনেক গুণ আছে।
তুলসীগাছকে দেবীরূপে পূজা করা হয়! শৈশবে তখনই বুঝেছি, যখন প্রতিদিন সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বালানো দেখি। একবার আমাদের বাড়িতে চৈত্র মাসে চড়ক পূজার ঠাকুর নিয়ে এসেছে। একটি লম্বা কাঠের তক্তা। তাতে সিঁদুর, ত্রিশূল, তেল, বেলপাতাসহ তুলসীতলায় রাখা হলো। আমি জিনিসটা চিনতাম না। মাকে বললাম, মা বলেন ‘শিবের পাটা’ বলা হয়। একজন শিব ও দুইজন সখী সেজেছে। সখীদের পায়ে ঘুঙুর। তাদের সঙ্গে থাকে ঢোল-কাঁসরসহ বাদকদল। ঢাকের তালে তালে সখীরা গান গাইছে আর নাচছে। একজনকে সাজানো হয় হনুমানের মতো লম্বা লেজ দিয়ে। তার লেজ ঢাকের তালে তালে নড়াচ্ছে, তা দেখে মজা পাচ্ছি খুবই। আবার হুনুমান উপস্থিত বাচ্চাদের ভয় দেখাচ্ছে।
তুলসীতলায় বসে একজন শিবের পাটাকে পূজা দিল। পূজা শেষ তখন ওটা নিয়ে উঠে গেল। তখন সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাড়ির সবাই মাটিতে গড়াগড়ি করতে লাগল। এটা নাকি নিময়। তুলসীতলায় বসে গড়াগড়ির কথা খুবই মনে পড়ে গেল। তুলসীগাছের উপস্থিতি যে কোনও মন্দ ও নেতিবাচক শক্তিকে দূরে রাখে। এ কথা জানার পর থেকে আমার বিশ্বাস কাজ করে। আর সুযোগ পেলেই বাড়িতে তুলসীগাছ লাগাতে বলি। অন্যকে উপহার দিই। উপহার দেওয়া নিয়ে একটা ঘটনা ঘটল। আমি আমাদের গ্রামে পরশ কাকাকে একটা তুলসীগাছ উপহার দিতে চাইলাম। কারণ আমি তার বাড়িতে কয়েক দিন আগে গিয়ে দেখে এসেছি। তার বাড়িতে কোনও তুলসীগাছ নেই। আমি তুলসী গাছ- যেই দিতে চাইলাম তখন তিনি বললেন, ‘তুমি কি আমার মৃত্যুর কথা চিন্তা করে এই তুলসীগাছ উপহার দিচ্ছ। মৃত্যুর পর আমাকে আত্মীয়স্বজন ও কাছের মানুষ না আসা পর্যন্ত তুলসীতলায় রাখা হবে। তারপর শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হবে। আমি এত তাড়াতাড়ি মরতে চাই না। তোমার কাছ থেকে তুলসীগাছ নেব না। কারণ তুলসীগাছ দেখলেই আমার মৃত্যুচিন্তা মাথায় আসে।’
তবুও বললাম, আপনার বাসায় তো কোনও তুলসীগাছ নেই। তুলসীগাছ বাড়িতে থাকলে আপদ-বিপদ কম হবে। জানেন না?
জানি, তবুও আমি রাখতে দেব না।
বুঝতে পারলাম তিনি মৃত্যুভয় বেশি করছেন। তাই আর তাকে বিরক্ত করলাম না।
আমাদের বাড়িতে যে তুলসীগাছটা আছে। সেটা ইট-সিমেন্ট দিয়ে বাধানো হয়েছে। মাঝে মাটি দিয়ে তুলসীগাছটা লাগানো হয়েছে। মায়ের খুব ইচ্ছা হলো তুলসীগাছের শান বাঁধাইয়ের চারপাশে রাধা-কৃষ্ণের ও নিত্যনন্দ ঠাকুরের ছবি লাগাবেন। আমাকে বলা হলো। মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতে রাজমিস্ত্রিকে বলে সব নিয়ে এসে ব্যবস্থা করে দিলাম। মা-বাবা মনে মনে ভেবে রেখেছিলেন হয়তো অনেকদিন থেকে। তারা এক মন্দিরে কীর্তন শ্রবণ করতে গিয়ে এমন তুলসীর ম-প দেখেছিলেন। তাই অবশেষে আমাকে বলাতে কাজটা হয়েছে। আমিও ভীষণ খুশি হয়েছি। তবে খুশির মাঝেও তাদের একটা কথা আমাকে ভীষণভাবে আহত করে। শোকাবহ হৃদয় বইতে শুরু হয়েছে।
কীসের শোকাবহ বইছে?
বাবা বলেছিলেন, মৃত্যুর পর ঘরে তো রাখবে না। মৃত্যুর আগ মুহূর্তে তুলসীতলায় নিয়ে আসবে। সেখানেই যেন আত্মা দেহ ত্যাগ করে চলে যায়। তুলসীতলায় আমার বাড়ির শেষ ঠাঁই।
মা বলেছিলেন, বাড়ির শেষ ঠাঁই হবে এই তুলসীতলা। এই জায়গাটা সুন্দর করে গড়ে তুলতে হবে। মানুষের নিঃশ্বাসের বিশ্বাস নেই। কখন কে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় কে জানে।
বাবা-মায়ের কথাগুলো শুনে কিছু বলতে পারলাম না। শুধু বললাম, তোমরা এমন কথা আর কখনও বলবে না। কিছু বাস্তবতার চিরন্তন সত্যি জানার পরও মন ভীষণ খারাপ হয়ে যায়। তুলসীতলায় শুধু প্রার্থনা করবে আমরা যেন সুস্থ থাকি, ভাল থাকি। বাবা-মা আমার কথা শুনে বুঝতে পারলেন আমার মন ভীষণ খারাপ হয়েছে। তাই আর কিছু বললেন না।
শহর থেকে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছি। কার্তিক মাসের শুরু দিন। গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নগরকীর্তন শুরু হয়েছে। সকালে ঘুমাচ্ছিলাম। খোল করতালের শব্দে আমার ঘুম ভেঙে গেল। দরজা খুলে দেখি গ্রামের অনেক মানুষ হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ করে গান করছেন। এত ভোরে সুমধুর কণ্ঠ ভাল লাগল আমার। রুম থেকে বের হয়ে ওদের সাথে হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ গাইতে লাগলাম। কীর্তন করা দেখে বাবা-মা অনেক খুশি হয়েছিলেন। ওইদিন ওদের সাথে কীর্তন করতে করতে সারা গ্রাম ঘুরলাম।
শৈশবে একদিন আমি আর বন্ধু সজল শ্মশানের পাশ দিয়ে বাজার থেকে সন্ধ্যায় ফিরছিলাম। হঠাৎ দেখি একটা গাছের পাতা জোরে জোরে নড়ছে। সজলকে ইশারায় দেখালাম। সজল বলল, ‘আরে ওটা তো তুলসীগাছ। ওই গাছে মনে হয় কোনও দেবতার আর্বিভাব হয়েছে। তুলসী দেবীকে বিরক্ত করা যাবে না। ওখানে না যাই। বিপদ হতে পারে। তার চেয়ে চল দ্রুত পালিয়ে যাই।’
বললাম, না না সত্যি যদি দেবতা হয়ে থাকে তাহলে চল দেখে আসি। তুলসীগাছটাকে একটু প্রণাম করে আসি। আমাদের মনোবাসনা পূর্ণের জন্য প্রার্থনা করে আসি।
সজল বলল, ‘না না। আমার ভয় করছে!’
কিছুই হবে না। চল তো!
আমার কথা শুনে সজল সাহস পেয়ে বলল, ‘চল, কিন্তু সামনে তুই থাকবি। আর পেছনে আমি থাকব।’
ঠিক আছে। তবুও চল, দেখি কী রহস্য।’
আমরা দুজন ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম। গিয়ে দেখি গাছের নিচে একটা কাছিম তুলসীগাছের সাথে মাথা নড়াচ্ছে। আর তুলসীগাছ নড়ছে। আমি সাহস করে ধরতে যাব? এমন সময় সজল বলল, ‘ধরতে যাসনে। এটা মনে হয় ভূতরূপী কাছিম।’
সেহেতু শ্মশান একটু ভয় কাজ করল।
বাবা-মা তীর্থ দর্শনে গয়া কাশি বৃন্দাবন ও মথুরায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে অনেক রকমের জিনিস কিনে নিয়ে এলেন। সেগুলোর আমি আবার ফেসবুকে ছবি তুলে পোস্ট করলাম। শাঁখা সিন্দুর আর তুলসীর মালা চেয়ে বসল অনেকেই। কিন্তু সবার তো আর ইচ্ছা পূরণ করার সম্ভব নয়। ফেসবুকের কমেন্টস আশার বাণী শুনিয়ে দিলাম সবাইকে। কিন্তু আমি যাদের পছন্দ করি তাদের কয়েক জনকে দিলাম।
একজন বান্ধবী বলল, ‘আমাকে তুলসীর মালা গলায় পরিয়ে দিতে হবে।’
বললাম, পরিয়ে দিতে হবে কেন?’
‘স্বপ্ন দেখেছি, তুমি যদি তুলসীর মালা পরিয়ে দাও। তাহলে আমার দাম্পত্য জীবনে বিপদ আসবে না। জীবনে তো আমার কোনও স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারলাম না। তুমি পরিয়ে দিয়ে আমার স্বপ্নটা বাস্তবায়ন করো।’
আচ্ছা ঠিক আছে। বাস্তবায়নের মালিক যেহেতু আমি। তাহলে অবশ্যই স্বপ্নটা পূরণ করে দিচ্ছি। এই বলে তুলসীর মালাটা পরিয়ে দিলাম। আজ পর্যন্ত সে তুলসীর মালাটা গলা থেকে খোলেনি। অথচ আমার ইচ্ছা আজও পূরণ হয়নি!
শহর থেকে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছি। কয়েকদিন থাকলাম। মা আদর-যত্ন করে কত রকমের প্রিয় রান্না করে খাওয়াল। বাড়ি গেলে মায়ের হাতের রান্না খেলে মনে হয় এতদিন না-খেয়েছিলাম। আসলে মায়ের হাতের রান্নার তুলনা হয় না। গ্রামের বাড়িতে গেলে মা রান্না করেন, আমি মায়ের পাশে বসে গল্প করি। আর মা কখন কোন তরকারিতে লবষ-মসলা, তেল কী পরিমাণ দিচ্ছেন তা মনোযোগসহ দেখি। দেখতে দেখতে রান্না করাও শিখে গেছি। রান্না দেখলেই একটা তুলসীগাছের কথা মনে পড়ে। আমাদের বাড়িতে কাকার বিয়েতে বাড়ির উঠোনে চুলা তৈরি করেছিল কয়েকটা। একটা চুলার পাশে ছিল তুলসীর গাছ। সে গাছটা আগুনের তাপে পুড়ে গিয়েছিল। গাছটা দেখে আমার খুব কষ্ট হয়েছিল। সে গাছটা পরের দিন মাকে বলে নদীর জলে ভাসিয়ে দিয়েছিলাম। পরদিন আমি বাড়ি থেকে বের হব। শহরে আসব। ঘরের ঠাকুরের মন্দিরে প্রণাম করে বাইরে এসে তুলসীতলায় দাঁড়িয়ে গাছটা স্পর্শ করলাম। তখনই মা তুলসীগাছ ঝাঁকিয়ে দিল। কয়েকটা তুলসীপাতা গাছ থেকে পড়ল। সেই পাতাগুলো আমার কানের ভেতর গুঁজিয়ে দিলেন মা। আর আমার বাঁ হাতের কনিষ্ঠা নখটা কামড় দিলেন। পথে যেন বিপদ না হয়। আমিও মাথা নিচু করে মায়ের দুই পায়ে দুই হাত দিয়ে স্পর্শ করে প্রণাম করছি। এমন সময় তুলসীতলায় পড়ে গেলেন মা…!
সারাবাংলা/এসবিডিই